নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব... নচেত চুপ থাকিব...

সত্য তখনই দাম পায়, যখন তার পাশে মিথ্যা নামক অদৃশ্য বস্তুটি স্থান পায়......

নহে মিথ্যা

নহে মিথ্যা › বিস্তারিত পোস্টঃ

অদ্ভুত প্রানী চিকিৎসা

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২

মানব সভ্যতার সূচন লগ্ন থেকে মানুষ না না উপায়ে প্রকৃতির সাহায্য নিয়েছে। আর চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রকৃতির এই অবদান অপরিসীম। শুধু যে লতা আর গুল্ম এর উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞান তা কিন্তু নয়, এর পিছে প্রানী কূলের অবদান নেহাত কম না।

পাথর যুগে শরীরের কোথাও কেটে গেলে ভেড়ার লোম পেচিয়ে সুতা বানিয়ে সেলাই করার যেমন প্রমান মিলে তেমনি বিংশ শতাব্দিতে পেনিসিলিনের আবিস্কার ছিল ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে এক বিরাট জয়। এর পরে ধাপে ধাপে অনেক দূর এগিয়েছে আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞান। কিন্তু এখনও এমন কিছু চিকিৎসা ব্যাবস্থা প্রচলিত আছে যা অনেকটা আশ্চর্যকর বিষয়ের পর্যায়ের পরে। যেমন, কম্বোডিয়ায় গরূর প্রশ্রাবকে এখনও ঔষধ মনে করা হয় এবং তা অনেকেই খেয়ে ফেলে নির্দিধায়, আর তা গরম গরম খাওয়াটাই শ্রেয়!! এছাড়াও আরো অনেক পরীক্ষা নিরিক্ষার মধ্য দিয়ে উন্নতি সাধন হয়েছে আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞানের। যেমন, আজকের দিনে হার্ট, লিভার, কিডনি এগুলা পরিবর্তন করিয়ে নেওয়া খুব একটা বড় ব্যাপার না হলেও এর আবিস্কার হয়েছিল এক মজাদার পরীক্ষার মধ্য দিয়ে। সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের কিছু চিকিৎসক চেষ্টা করছিলেন একটি কুকুরের মাথা পরিবর্তন করে অন্য কুকুরের মাথা বসানোর জন্য বা একই সাথে দুই মাথাওয়ালা কুকুর বানাতে আর এটা করতে তারা সফল না হলেও তারা এটা আবিস্কার করে বসেন যে, "মানুষের শরীরের অঙ্গ পরিবর্তন করা সম্ভব।"

এসব ইতিহাস না হয় অন্য আরেক দিন শোনাব। আজ আপনাদের সামনে যে বিষয় নিয়ে আলোচন করব, তা হল কিছু অদ্ভুত চিকিৎসা ব্যাবস্থা যার সাথে প্রতক্ষ্য ভাবে জড়িত আছে জীবিত প্রানি। এরকম মোট ১০টি চিকিৎসার কথা তুলে ধরব আপনাদের কাছে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

মাছ চিকিৎসাঃ



এই চিকিৎসা ব্যাবস্থার উৎপত্তি হয় তুর্কিতে। এই চিকিৎসা ব্যাবস্থায় ব্যাবহার করা হয় চিকিৎসক মাছ বা Garra rufa obtusas প্রজাতির মাছ। এটি মূলত দেওয়া হয় চর্ম রোগের ক্ষেত্রে। এই চিকিৎসা ব্যাবস্থায় মাছ গুলি মরা চামড়া খেয়ে ফেলে, আর অবশিষ্ট থেকে যায় শুধু মাত্র ভাল চামড়া গুলি। এর ফলে চর্ম রোগ খুব তারাতাড়ি ঠিক হয়ে যায়। এই ব্যাবস্থা আমেরিকাতে নিষিদ্ধ হলেও ইংল্যান্ড সহ অন্যান্য দেশে এখনও চালু আছে।

মৌ মাছির চিকিৎসাঃ



মৌমাছির হুলের দংশন ব্যাথাদায়ক হলেও প্যারালাইসিস চিকিৎসায় এর ব্যাবহার হয়। অর্থাৎ যাদের প্যারালাইসিস আছে তাদের প্যারালাইসড অংগে এর দংশন দেওয়া হয়। এর ফলে সে স্থানে যেমন হালাকা ব্যাথা অনুভূত হয় তেমনি অনেক ক্ষেত্রে কিছু কিছু রুগি সামান্য পরিমানে তাদের প্যারালাইসড অঙ্গ নড়াতে সক্ষম হয়। কিন্তু এর সম্পূর্ন ফলাফল এখন পর্যন্ত পাওয়া সম্ভব হয় নাই। অনেকের মতে এই চিকিৎসা দীর্ঘ কালিন সময় ধরে করা হলে প্যারালাইসিস সম্পূর্ন ভাবে সেরে তোলা সম্ভব। এই চিকিৎসার আদি প্রোয়গ পাওয়া যায় চায়নাতে।

সাপ দিয়ে শরীর মালিশঃ



আমি এর আগেও এটি নিয়ে একবার বিস্তারিত "সাপ দিয়ে শরীর মালিশ" আলোচনা করেছিলাম।

শূককীট দিয়ে চিকিৎসাঃ



এই চিকিৎসা ব্যাবস্থায় মাছির শূককীট ছেড়ে দেওয়া হয় যে কোন ক্ষত বা পচে যাওয়া ঘা তে। এই শূককীট গুলি খুবই কার্যকর ভাবে ঘা থেকে পচে যাওয়া টিস্যু গুলিকে সর্বাধিক কার্যকর উপায়ে খেয়ে ফেলে। এর ফলে খুবই সল্প পরিমানে ঘা অবশিষ্ট থাকে। যা ঘা শুকাতে অনেক বেশী কার্যকর ভুমিকা পালন করে। এই ব্যাবস্থা অনেকের কাছে নোংরা মনে হলেও এর প্রচল অনেক আগের থেকেই চলে আসছে। আফ্রিকার কিছু কিছু আদি জনগোষ্টির কাছে এর প্রথম প্রোয়গ পাওয়া গেলেও লেপোলিয়ানের আমলে চিকিৎসকের এর মুলত প্রসার ঘটায় এছাড়াও আমেরিকার সিভিল যুদ্ধের সময় এই ব্যাবস্থায় বহুল প্রয়োগ দেখে গিয়েছিল। ফ্রান্সে ২০১২ সালে একটি জড়িপে দেখা যায় যে মাছির শূককীটেরা খুবই কার্যকর ভাবে মরা বা আক্রান্ত টিস্যু গুলিকে সরাতে পারে যা খুবই উপকারি, আর এতে কোন প্রকার ব্যাথা অনুভব না হওয়ায় এর প্রতি অনেকের আকর্ষন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার পরেও চিকিৎসা বিজ্ঞানিরা একে সমর্থন জানাতে অসীকৃতি জানিয়ে যাচ্ছে।

ডলফিল চিকিৎসা ব্যাবস্থাঃ



ডলফিনদের আমরা সকলেই চিনি। স্তন্নপায়ি মাছদের মধ্যে বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে এদের অবস্থান সবার উপরে। ২০০৫ সালে একটি জড়িপে দেখা যায় যে, যারা খুব বেশি মানষিক অবসাদে ভোগেন তারা যদি ডলফিনের সহচার্যে আসেন তাহলে তারা কোন প্রকার ঔষধ নেওয়া বাদেই অনেক সহজেই এই অবশাদ থেকে মুক্তি পান। এছাড়াও এটি কিছু প্রতিবন্ধি শিশুদের উপর এই জড়িপ চালনো হয়, যাতে অবিশ্বাস্য ভাবে দেখা যায়, যে সকল শিশু প্রতিবন্ধি তারা ডলফিনের সাথে পানিতে খেলা করলে খুব সহজেই তারা সমাজে যে কারো সাথে মিশতে পারে। যা তাদের জন্য খুব বেশী দরকার। এছাড়াও কয়েকজন বিজ্ঞানির দাবি, ডলফিন যে আওয়াজ করে তাতে ক্যন্সার তৈরি করা সেল গুলিও ধ্বংস হয়।

পিপড়া চিকিৎসাঃ



আফ্রিকার চালক পিঁপড়ার ব্যাবহার শত শত বছর ধরে চলে আসছে। এই পিঁপড়া গুলির চোয়াল অনেক শক্তিশালী হয়। বলা হয় প্রকৃতির সব থেকে ভংকর কামড়। কেননা একবার কামড় দিলে তা ছাড়ানো অসম্ভবের পর্যায়ের পরে। কেননা আপনি যদি এদের টেনে তুলতে যান তাহলে এদের শরীর থেকে মাথা আলাদা হয়ে যাবে কিন্তু কামড় ছাড়বে না। এখন বুঝে দেখুন কেমন কামড় দিতে সক্ষম এরা। এদের ব্যাবহার করা হয় কোথাও কেটে গেলে অর্থাৎ সেলাইয়ের বিপরিতে। বেশী কেটে গেলে সেলাই দিতে হয়, কিন্তু এই পিঁপড়া আপনার কাছে থাকলে শুধু ধরে কোন মতে কেটে যাওয়া দু'অংশের মাঝখানে ধরবেন। এর পর আগলা হয়ে যাওয়া চামড়া কামড়ে ধরলেই টান দিন। দেখবেন মাথা কামড়ে আছে। এই ভাবে আদিকালে সেলাই দেওয়া হত। আর এই কামড় সপ্তাহ ক্ষানেকের আগে ছাড়বে না, তাই নিশ্চিন্তে থাকা যায়। সেলাইয়ের কাজ পিপড়া দিয়ে। কি অসাধারন তাই না?

জোক চিকিৎসাঃ




এই চিকিৎসা ব্যাবস্থা প্রাচিন ব্যাবস্থা গুলির মধ্যে একটি। এটি সাধারনত ব্যাবহার করা হয় ঘায়ের উপরে। বিশ্বাস করা হয় যে এর ফলে ঘা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এর কোন উপকার না থাকায় এই ব্যাবস্থা অনেক আগেই উঠিয়ে নেওয়া হলেও অতিসম্প্রতি এর আর এক নতুন প্রয়োগ আবিস্কার হয়েছে। হাতে বা পায়ের কোথাও যদি রক্ত জমাট বেঁধে যায় তাহলে সেই অংশে জোক লাগিয়ে রাখলে খুব সহজেই এই জমাট বাধা রক্তের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এছাড়াও অনেক সময় যাদের হার্টের ব্লক আছে তাদের এই চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। কেননা জোক যখন কামড় দেয় তখন খুবই কার্যকর Anti clotting agent নিঃসরণ করে যা অনেক সময় ব্লক খুলতে কার্যকর ভূমিকা পারন করে।

মাছ দিয়ে হাঁপানি চিকিৎসাঃ



এই চিকিৎসা চর্চা করা হয় ভারতে। শোল মাছ দিয়ে। বলা হয়ে থাকে ১৬০ বছর আগে কোন এক সাধু স্বপ্নে দেখেছিল ছোট শল মাছ জুয়ান্ত খেলে হাঁপানি রোগ দূর হয়। এটি মোট তিনবার খাওয়া লাগে, ১৫ দিন পর পর। এর ফলে হাঁপানি রোগ সম্পূর্ন নিরাময় সম্ভব। যদিও বিজ্ঞান কোন ভাবেই একে সমর্থন করে না। তারপরেও প্রতিদিন শত শত রুগী সাধুর হাতে জ্যান্ত শোল মাছ খেতে হাজির হন। অবশ্য সাথে একটু ঘি মেখে দেন সাধু বাবা।

কচ্ছপ দিয়ে চিকিৎসাঃ



আগে বলেছিলাম কম্বোডিয়ায় গরুর গরম গরম প্রশ্রাব খাওয়া হয়। কেননা মনে করা হয় এতে কোন এক প্রকার শক্তি আছে যা শরীরকে সুস্থ রাখে। তেমনি থাইল্যান্ডে একটা চিকিৎসা প্রথা আছে আর তা হল কচ্ছপের স্পর্স। কচ্ছপ মেরে তেলে ভিজিয়ে রেখে তারপর সেই কচ্ছপের ছোয়া নিলে শরীর ভাল থাকে এই বিশ্বাস থেকে এই চিকিৎসার প্রচলন। যদিও এর কোন নির্দিষ্ট ব্যাবহার এখন পর্যন্ত পাওয়া সম্ভব হয় নাই।

ডায়াবেটিকস চিকিৎসায় কুকুরঃ



আমরা সকলেই জানি যে কুকুরের এমন কিছু ইন্দ্রিয় রয়েছে যা সত্যিকার অর্থে অসাধারনের পর্যায়ে পরে। ঠিক এরকম একটি ইন্দ্রিয় হল তাদের ঘ্রান শক্তি। তারা মালিকের ঘ্রান শুকে বলে দিতে পারে তাদের ডায়াবেটিকস কোন পর্যায়ে আছে। এর জন্য অবশ্য কুকুরকে আলাদা ভাবে প্রশিক্ষন দিতে হয়। আর এই কাজটির জন্য রিতীমত প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা কুকুরদের এই প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে। এর সর্বাধিক ব্যাবহার হয় সেই সকল শিশুর ক্ষেত্রে যাদের জন্মগত ডায়াবেটিকস আছে। কেননা ঘুমের মধ্যে যদি শিশুর শরীরে গ্লুকজের মাত্রা বেড়ে যায় বা কমে যায় তাহলে হয়ত সেই শিশুটি ঘুম থেকে উঠতে পারবে না। আর এই ক্ষেত্রে এই কুকুর গুলি তা টের পেলে বাবা মাকে ডাকা ডাকি শুরু করে। এর ফলে বাবা মাকে ২৪ ঘন্টা কিছু সময় পর পর সন্তানের গ্লুকোজ লেভেল মাপা লাগে না।

জানলেন তো আমাদের চারপাশের প্রানি দিয়ে কিভাবে আমরা সুস্থ থাকার জন্য তাদের ব্যাবহার করে থাকি। তবে দুঃক্ষের বিষয় অনেক সময় অনেক বিরল প্রজাতির প্রানিকে মেরে ঔষধ বানানো হয়ে থাকে যার কোন উপকারিতাই নাই। আর রাস্তার মোড়ে মোড়ে পশরা বসিয়ে চলে এর বিকি-কিনি। আমাদের সচেতনতাই পারে এগুলিকে রুখে দিতে।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক AKA নহে মিথ্যা।

বিঃদ্রঃ লেখাটি দেখলাম ২০১২ সালের ডিসেম্বরে লেখা এই লেখাটি অনেকেই কপি করেছে... তাতে আমার অভিযোগ নেই... কিন্তু লেখকের নাম ব্যাবহার না করা এক কথা আর সেখানে নিজেকেই লেখক হিসেবে দাবি করা আরেক কথা। যা হোক মূল লেখাঃ Bizarre Animal Treatment

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৩

নিজাম বলেছেন: ধন্যবাদ

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৫

নহে মিথ্যা বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ :)

২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৪৩

কাবিল বলেছেন: "সাপ দিয়ে শরীর মালিশ" ভয়ঙ্কর ।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৫

নহে মিথ্যা বলেছেন: দেখেতো আমারো তাই মনে হয়েছে B:-)

৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩২

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: সব সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা !

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৪০

নহে মিথ্যা বলেছেন: সব কিছুই তার বেঁধে দেওয়া নিয়মেই চলে :)

৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:০৭

বটের ফল বলেছেন: জানতে পারলাম অনেক কিছুই । ধন্যবাদ আপনাকে।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৪০

নহে মিথ্যা বলেছেন: জানাতে পেরেছি জেনে ভাল লাগছে :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.