![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রিয় অ্যাডাম,
অ্যাডাম বলবো? নাকি বাংলায় পুরুষ বলবো কিংবা তার প্রতিশব্দগুলো- নর, মর্দ, পুমান; যাই বলি না কেন, বুঝে ফেলেছো তোমাকেই উদ্দেশ্য করে লেখা এই চিঠি। এখন কি মনে মনে জিজ্ঞেস করছো, আমি কে? কেন লিখছি এই চিঠি? বলতে দাও। আমার স্বত্ত্বার পরিচয়টা নাহয় শেষেই দেবো।
শুরু থেকে শুরু করি, কেমন? গর্ভ থেকে যখন জন্ম নাও, তখন তো তুমি স্রেফ একটা রক্ত-মাংসের দলা। বোধ-অনুভূতি বলতে তখন ছিলো স্রেফ পেটের তাগিদ। আর তো কিছুই বুঝতে না। তুমি নারী না পুরুষ- সেটা বোঝার ক্ষমতাই ছিলো না তোমার। সম্ভবত ঠিক তখনই আমরা এক ছিলাম- সমান ছিলাম, একই অধিকারের অধিকারী, ছিলো না মাতৃত্বের আর সমাজের আদর আর ভালোবাসায় ভেদাভেদ।
আচ্ছা, বলো তো? ঠিক কখন থেকে আমরা দুজন মানুষ থেকে দুজন নারী-পুরুষ হয়ে গেলাম? যখন থেকে বাবা-মা’রা বলা শুরু করলেন- ‘ওই ছেলেটার সাথে খেলবে না!’ কিংবা তোমার মা-বাবা বলা শুরু করলেন- ‘ওই মেয়েটার সাথে খেলবে না’। তখন? নাকি যখন থেকে আমরা স্কুল থেকে বাড়ি ফিরতাম আর পেছন থেকে লোকজন কানাকানি করতো আমাদের নিয়ে? আমমমম......না; তখন না ঠিক। কারন নিজেকে তো তখন ‘নারী’ হিসেবে দেখতে শুরু করিনি। নারী বলে নিজেকে আলাদা করে দেখতে হবে-সেটাও জানতাম না।
নারী হিসেবে নিজেকে চিনলাম সেদিন সকালে। ঘুম থেকে আতঙ্কিত হয়ে দেখলাম আমার পাজামা রক্তে ভেজা! তীব্র ভয় নিয়ে মা’র কাছে দৌড়ে গিয়েছিলাম সেদিন। ভয়টা থেমেছিলো মা’র সান্তনা বাক্যতে, বুঝিয়ে বলার পরে। সেদিন কেন যেন নিজেকে নিয়ে ভয় ভয় লাগছিলো, আশংকা লাগছিলো, নিজেকে অন্যরকম লাগছিলো- ক্ষমতাবান লাগছিলো। হ্যাঁ! ঠিকই পড়েছো। কারন সেদিনই জানতে পারলাম, আমার রক্তের বিনিময়ে গড়ে ওঠা যোনি দিয়েই তোমাদের মত ‘পুরুষ’রা জন্ম নেয়। সম্ভবত সেদিনই নিজেকে ‘নারী’রূপে আবিস্কার করেছিলাম।
আর সেদিন থেকেই যেন তোমাদের মত ‘পুরুষ’রা আমাকে আলাদা করে দিলো। আমি মেয়ে-আমি কিশোরী-আমি তরুনী-আমি নারী; কিন্তু আমি মানুষ নই। তোমাদের সমান নই। কিন্তু দেখো ঠিকভাবে তাকিয়ে- আমারও তো আছে দুটো হাত-পা-চোখ-কান। কোনটা ভিন্ন?
ওহ হ্যাঁ! ভুল বলে ফেললাম! এখনই তো তোমাদের ভেতরের পুরুষত্ব জেগে উঠবে! সত্যিই তো ভিন্ন! একদিকে দুপায়ের মাঝে তোমাদের বৈষম্যের দন্ড আর অন্যদিকে আমাদের স্তনের উত্থানই তোমার-আমার পার্থক্যের দেয়াল গড়ে দিয়েছে।
তোমরা বলো যে আমরা তোমাদের অর্ধাঙ্গী। আমরা তোমাদের অর্ধেক। তোমাদের অর্ধেক অংশ। তোমরা মুখে মানো। কিন্তু অফিস-আদালতে-রাস্তাঘাটে কিন্তু অন্য অর্থে চলতে হয় আমাদের।
কোন অর্থে? বলি-
আমরা তোমাদের বুদ্ধির অর্ধেক, শক্তির অর্ধেক, অধিকারের অর্ধেক, ক্ষমতার অর্ধেক- তোমার মনের; তোমার অস্তিত্বের অর্ধেক নই। কেন নই সত্যি করে বলো তো? ঠিক কোন কারনে আমরা মানুষ হতে পারছি না? কেবল হচ্ছো তোমরা। কারনটা কি সেই একই? এগার মিনিটের উত্তেজনার পরের কয়েক ফোঁটা বীর্যের শক্তি কি বেশি হয়ে গেছে নয় মাসের পেটে ধরে রাখা নতুন জীবন বয়ে বেড়ানোর কষ্টের চাইতে? বুঝি না!
তবে!
তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ এমন না, কাউকে মনে হয় সে ভিন্ন কেউ। আমার-আমাদের জীবনের স্বপ্নের পুরুষ। কল্পনার পেগাসাস নামের ঘোড়া ছুটিয়ে আসা শুভ্র রাজপুত্র না হলেও কম নয় সে। তার হাতে হাত রেখে আমরা স্বপ্ন দেখি; স্বপ্ন দেখতে সাহস করি। তার কাঁধে আলতো করে মাথা দিয়ে চোখ বোজার পরে অনুভব করতে পারি- হ্যাঁ! আমিই! আমিই এই অ্যাডামের ইভ! নতুন জগতে আমাদের প্রবেশ হবে একসাথে, প্রস্থানও হবে মুঠিতে মুঠি রেখে।
ইতি,
ইভ।
পুনশ্চঃ আমার পরিচয়? আমি তো তোমার চারপাশে থাকা কেবলই একজন নারী। কিংবা কুহকিনী, ছলনাময়ী,মায়াবিনী; আরো কত নাম দিয়েছো তোমরা কবিরা তোমাদের কবিতায়। খুঁজে নাও আমাকে।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:০৫
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: কথাটা ভুল বলেননি। চিঠির দিন আসলেই ফুরিয়েছে। তবু আবেদন রয়েই যায়।
প্রশংসার জন্য ধন্যবাদ জুনিয়র!
২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৩
শায়মা বলেছেন: আডামের কাছে ইভের চিঠি!!!!!
অনেক অনেক সুন্দর!
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:০৮
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: এতক্ষনে তোমার আগমন!
কবে থেকে বলছি!
৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৯
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ইভের কাছে অ্যাডামের চিঠি কেমন হতে পারে ....
পরুষের চোখে তার কাঙ্খিত নারী অসামান্য কেউ তাই তো জানি !!
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:০৯
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: আমরা ছেলেরা তো জানিই, সেই চিঠিতে অ্যাডাম কি বলবে তার ইভকে। তাই আর লিখিনি। অ্যাডামদের কথা অ্যাডামদের মনেই থাকুক।
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
৪| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:২১
মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: প্রথমবার ব্লগে ঘুরে গেলেও কি মন্তব্য করব বুঝতে পারছিলাম না।
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: পরুষের চোখে তার কাঙ্খিত নারী অসামান্য কেউ তাই তো জানি !!
যথার্থই বলেছেন।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৮
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: আরেকবার এসে মন্তব্য করে গেলেন, সম্মানিত বোধ করছি।
আসলেই, আমাদের কাঙ্ক্ষিত নারীটি অসামান্যই আমাদের চোখে। সবার থেকে আলাদা।
৫| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩১
শায়মা বলেছেন: হা হা তাতে কি !!!!!!!
এখন তো এলাম ভাইয়ু!!!!!!
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৯
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: তুমি পচাআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআ!
৬| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১২
মলাসইলমুইনা বলেছেন: ঠিক বুঝলাম না, কি মিস করলাম | চিঠিটা মনে হয় 'শেষ হয়েও হইলো না শেষ' -এর মতো লাগলো | মনে হচ্ছে কি যেন ঠিক বলা হয়নি | কি যে সেটাও বুঝতে পারছি না | কিন্তু একটা জিনিস শিওর, খুব ভালো লাগলো | অনেক ধন্যবাদ |
০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:০৪
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: একটূ ভেবে বলে ফেলেন। আমিও নাহয় যোগ করে দেবো! ভালো লাগার মাত্রাটাও আরেকটু বেড়ে যাবে আপনার-আমার।
আপনার আন্তরিক মন্তব্য দেখে খুব ভালো লাগছে নাইমুল ভাই
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:৪৯
জুনিয়ার ব্লগার বলেছেন: চিঠির বেল শেষ
আপনার লেখা চিঠিটা খুব সুন্দর হয়েছে।