![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফেরদৌসকে আমার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলা যাবে না, তবে ওর সাথে খাতির ভালই। গলায় গলায় না থাকলেও ভার্সিটিতে তথাকথিত সাপ-খোপের তুলনায় ওকে নির্বিবাদীই বলা যায়। তবে ছেলেটা একটু অদ্ভূত। কীরকম অদ্ভূত বললেই বুঝবে যে কেউ- ফেরদৌস মেসে থাকে জানি। কিন্তু কখনো বলে না কোন মেসে। একেকবার একেক এলাকার মেসের ঠিকানা বলে জিজ্ঞেস করলে। বন্ধুদের বাসায় আসা-যাওয়া ঠিকই করে, নিজে দাওয়াত দেয় না কখনো। দেখতে আহামরি কিছু না ও। গায়ের রঙ ময়লা, শুকনা-পাতলা, কাপড়চোপড় সাদামাটা থাকে সবসময়। সারাক্ষণ সিগারেট ফুঁকে; পড়ালেখায় অবশ্য দুর্দান্ত, বিব্রতকর রকমের বেশি সিজি। সবার আগে চোখে পড়বার মতো ব্যাপার হচ্ছে ওর ধবধবে সাদা বত্রিশ পাটি দাঁত। হাসলে অন্ধকারেও চকচক করে উঠে।
ফেরদৌসের একটা ব্যাপার ভীষণ হিংসা জাগায় ফ্রেন্ড সার্কেলের সবার মনে, সেই সাথে আমারও- ক’দিন পর পর কাইল্লাটাকে নতুন নতুন মেয়ে নিয়ে ঘুরতে দেখি। সেটা শুধু ভার্সিটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ না। কখনো শুনি চট্টগ্রাম, কখনো সিলেট আবার কখনো খুলনা গেছে গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে। তবে কোনো রিলেশনেই ব্যাটা বেশিদিন থাকে না। প্রাক্তনদের নিয়েও মুখ খোলে না কোনোদিন, বর্তমানকে নিয়েও খুব বেশি কথা বলে না। যদি কখনো জিজ্ঞেস করি- “কী রে ব্যাটা? এত মাইয়া নিয়া ঘুরোস কেমনে? কাহিনী কী?” জবাবে বড় বড় দাঁত বের করে হাসি দিয়ে ফেরদৌস বলে, “খায়া দেই মামা! মজা লাগে…” উত্তর শুনে প্রথমে হাসাহাসি করলেও প্রত্যেকবার একই জবাব শুনে বিরক্ত লাগে বৈকি! শালা ফাকবয় কোথাকার!
সেমিস্টার শেষ। নতুন সেমিস্টারের প্যারা শুরু হতে দেরি আছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাশতা খেতে খেতে ফেরদৌসকে কল করলাম। বান্দরবান ট্যুরের প্ল্যান করছি বন্ধুরা মিলে। যাবে কিনা জিজ্ঞেস করে দেখি। ফোন বন্ধ। বেশি মাথা ঘামালাম না, ওর স্বভাবই এমন। কখনো করে ফোন বন্ধ করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডুব দেয়, আবার কখনো সিমই বদলে ফেলে। মোবাইল রেখে পত্রিকাটা তুলে নিলাম। প্রথম পৃষ্ঠার নিচের দিকে চোখ পড়তেই বুকের ভেতর ছ্যাঁত করে উঠল। রঙিন ছবিতে হাতকড়া পরা অবস্থায় ফেরদৌসকে দেখতে পাচ্ছি! পাশে দু’জন র্যাব সদস্য কঠিন মুখে গার্ড দিচ্ছে রাইফেল হাতে। দ্রুতবেগে শিরোনাম পড়লাম- “মোহাম্মদপুরের মেস থেকে নরখাদক গ্রেফতার!” বুকটা ধক ধক করছে, মূল খবর পড়তে লাগলাম রুদ্ধশ্বাসে- “গোপন সূত্রে পাওয়া খবরে রাজধানীর মোহম্মদপুরের তাজমহল রোডের একটি মেস থেকে নরখাদক ফেরদৌস খন্দকার-কে (২৭) গ্রেফতার করে র্যাবের একটি টিম। দলনেতা মেজর মোঃ শাইখ সিদ্দিকী জানান তারা বেশ কিছুদিন ধরেই নিখোঁজ মেয়েদের তালিকা নিয়ে কাজ করছিলেন। সেখান থেকে তারা দেখতে পান নিখোঁজদের সবার সাথে একজন নির্দিষ্ট বর্ণনার তরুণের যোগাযোগ ছিলো। দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত করে সেই অজ্ঞাতনামা তরুণকে তারা খুঁজে বের করতে সক্ষম হন। তার রূমের ফ্রিজ থেকে উদ্ধার করা হয় পলিথিনে প্যাঁচানো প্রায় পনেরো কেজি মানুষের মাংস। অপহৃত নারীদের খুন করে টুকরো টুকরো করে কেটে ফ্রিজে ভরে সংরক্ষণ করে রাখার মতো বিকৃত মানসিকতার মধ্যেই তার নিষ্ঠুরতা থেমে থাকেনি। জেরার মুখে ফেরদৌস স্বীকার করে সে নরমাংস খেতে ভালোবাসে তাই প্রেমের ফাঁদে ফেলে মেয়েদের খুন করতো সুযোগ বুঝে।”
কাঁপা কাঁপা হাতে পত্রিকাটা রেখে দিলাম। কার বন্ধু ছিলাম এতদিন! বুকে কে যেন প্রবল শক্তিতে হাতুড়ি পিটছে, মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। ফেরদৌস তাহলে মিথ্যে বলতো না! কানে ওর কণ্ঠ ভাসছে স্পষ্ট। কল্পনায় দেখতে পাচ্ছি- ধবধবে সাদা দাঁত বের করে হাসতে হাসতে বলছে- “খায়া দেই মামা! মজা লাগে…”
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩০
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: যাক! তাহলে উদ্দেশ্য সফল!
২| ০২ রা জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:৩৪
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ইন্নালিল্লাহ ঘটনা সত্যি না গল্প
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩১
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: গল্প! নিছক গল্প আপু!
৩| ০২ রা জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৩৬
নেওয়াজ আলি বলেছেন: বাস্তব এক ভয়ংকর
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩২
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: ইয়ে বাস্তব না ভাই! ফিকশন মাত্র।
৪| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস। লেখাটা ভালো লাগলো।
আকর্ষন করার উপাদান আছে।
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩১
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: থ্যাংকু ভাই
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:২১
আজাদ প্রোডাক্টস বলেছেন: গা শিউরানো!