নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা ব্লগ ভালবাসি আর সুযোগ পেলেই পড়ি। অনেক কিছু লিখতে মন চায়, কিন্তু লেখার যে হাত!...চেস্টা করে যেতে হবে তবুও।

কাতিআশা

বই এর পোকা, স্কেচ এর নেশা, পেশায় স্থপতী আর বাংলাদেশের প্রতি অসীম ভালবাসা

কাতিআশা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুয়েট স্মৃতি---২

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ২:০৩

আমার রুমমেট দের কথা আগের পর্বে লিখেছিলাম, ওদের মধ্যে "ত" ছিল খুব মজার---যেমন মেধাবী, তেমন ক্রিয়েটিভ আর প্রচুর সেন্স অফ হিউমার..এক কথায় প্রানবন্ত একটা মেয়ে! ও এমন হাসাতে পারত, যে মাঝেমাঝে বিব্রত অবস্থায় পড়ে যেতে হত---এমন একটি ঘটনা বলছি।
আমাদের এক স্যার হিস্ট্রি অফ আর্কিটেক্চার পড়াতেন..সুন্দর মত, লম্বা, খানিকটা গ্রীকদের মত দেখতে। ওনার ক্লাসে আমার বান্ধবি "ত" আমাকে কি যে বিপদে ফেলেছিলো! এখনো মনে পড়লে হাসি পায়.. ফার্স্ট ইয়ারের ওনার ক্লাসের দ্বিতীয় দিনে উনি ভারতের স্থাপত্যকলা পড়ানোর কথা, উনি যেই শুরু করলেন "কুতুব মিনার" এর স্থাপত্যশৈলী পড়াবেন,--ওমনি আমার সেই বান্ধবি "ত" ফিসফিসিয়ে আমাকে গম্ভীর ভাবে বলতে লাগল--"এই স্যারের আরেকটা নাম আছে জানিস?" ওর কথার ভংগিতেই আমার হাসি পাওয়া শুরু হল (আমার আবার হাসি পেলে খুবি কস্ট হয় থামাতে!) আমি নীচু স্বরে বললাম ওকে কিছু না বলতে। আমি যতই না না করছি, ও বলবেই স্যারের আরেকটা নাম! রাগের বদলে কেন জানি আরো হাসি পেতে লাগল, যখন ও কাগজে লিখলো স্যারের আরেকটা নাম হচ্ছে "ভন্ড কুতুব"! ---


(আমার একটি স্কেচ দিলাম...মলাসইলমুইনা ভাইয়ের অনুরোধে!)

কিভাবে যেন স্যার টের পেয়ে গেলেন, আর আমাদের দুজনকে খুব বিনয়ী ভংগিতে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বললেন! ইস্‌ কি এমবেরাসিং অবস্থা--আশ্চর্য্য, "ত" এমন ভাবে বের হয়ে যেতে লাগল, যেন কিছুই হয়নি! ----
ও আসলে এমন টাইপই ছিল, কিছুটা দার্শনিক দের মত! বাইরে যেয়ে ওকে খুব বকলাম, কেন এমন করল ও, মাঝখান থেকে একটা ইমপর্ট্যান্ট লেকচার মিস করলাম! "ত" উদাসী ভংগিতে জানালো, কোন ক্ষতিই হয়নি এই ক্লাস মিস করে---আমার রাগ হল, মেজাজ খারাপ করে হলের দিকে পা বাড়ালাম। সে দৌড়ে এসে আমাকে থামালো আর বলল, "আগে শোন! কেন স্যারের আরেকটা নাম আছে, তাহলে বুঝবি কেন কোন লেকচার আজকে অন্তত মিস্‌ হয়নি.." স্যারের আরেকটা নাম সংক্রান্ত ঘটনা শুনে আমি হাসতে হাসতে পড়ে গেলাম!
ঘটনা হলো, কোন এক পুরনো ব্যচের (খুব বিত্‌লা/ফাজিল ছিলো তারা!) ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাসে সেই স্যারের কুতুব মিনার এর স্থাপত্যকলা পড়ানোর সময় এই নাম উনি পেয়েছিলেন--ক্লাসে এসে উনি গম্ভীর, আবেগী গলায় বলেছিলেন---
"তোমাদের আমি আজ এক অপুর্ব স্থাপত্যকলা পড়াবো! (ক্লাসের সবাই নড়েচড়ে, বিপুল আগ্রহ নিয়ে, হা করে স্যারের কথা শুনতে শুরু করল),..কুতুব মিনার! আহ্‌, কি এর সৌন্দর্য্য, কি এর মাধুর্য্য!..কি আর বলবো"...উনি কিছু সময় pause নিলেন, আবার চোখ বুজে কাঁপা কাঁপা গলায় শুরু করলেন (সবাই আরও নড়েচড়ে, আরও কান খাড়া করে আছে, স্যার কি বর্ণনা দেন কুতুব মিনারের!) " ... অপুর্ব, অদ্ভুত সুন্দর এই কুতুব মিনার, আহ্‌!.." আবার pause নিলেন, এবার একটু বেশী সময় নিয়ে..ছাত্রছাত্রীরা অধৈর্য হয়ে পড়ল, আবার ঐ একই কথা..কাঁপা কাঁপা গলায় সেই একই জিনিস বলতে লাগলেন---সময় শেষ হয়ে আসল, পরের ক্লাসের ডিজাইন টীচার এসে উঁকি মারতে লাগলেন, ওনার গলা খাঁকারির শব্দে হিস্ট্রী স্যার বের হয়ে যেতে যেতে বলতে লাগলেন..."পরের ক্লাসে ডিটেইলে তোমাদের কুতুব মিনারের স্থাপত্য গঠণ পড়াবো, আহ্‌!..কি সৌন্দর্য্য!"-- সেই থেকে স্যারের নাম হয়ে গেল "ভন্ড কুতুব"!
যাহোক, খুব একটা মিস করিনি সেদিন, কারন স্যারের কোন পরিবর্তন হয়েছিলোনা এই নাম দেবার পরেও!

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৪৯

নূর-ই-হাফসা বলেছেন: মজার ছিল ঘটনা টা । বেশ ভালো লাগলো ।
আপু কাতিআশা অর্থ কি ? অন্য রকম নাম ।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৪৮

কাতিআশা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগার জন্য..কাতিয়াশা একটি রাশিয়ান নাম, আমার খুব প্রিয়..অর্থ জানিনা!

২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ২:১৮

ওমেরা বলেছেন: হা হা হা হা হা ———- আপু লিখাটা পড়ে আমি তো হাসতে হাসতে শেষ —— খুব মজা পেয়েছি আপু। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এক মজার একটা ঘটনা শেয়ার করার জন্য।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৩:৫১

কাতিআশা বলেছেন: আসলেই খুব মজার ছিলো ঘটনা টা!..স্যারকে দেখলেই হাসি পেত ভীষন!

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৫৩

মলাসইলমুইনা বলেছেন: মজার বর্ণনা পাওয়া গেলো আপনার বুয়েটের জীবনের | তবে এরকম কিছু টিচারের জন্যই কিন্তু আমাদের নানান পর্যায়ে পড়াশোনাগুলো মজার হয় |ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে আমাদেরও এরকম টিচার ছিল | যাদের ব্যাপারে হাসাহাসি করতেই আমাদের বেশি ভালোলাগতো পড়াশোনার কথা বলার চেয়ে | আরো ভালো করে আমার কথাগুলো বলতে গেলে ওমেরার কথাগুলোর হেল্প নিয়ে হবে | আপনার লেখায় আমার নামটা দেখে গর্বিত হলাম | আপনার চমৎকার লেখা পড়তে এসে আমার নামটা সবাই দেখতে পাবে বলে অনেক ভালোলাগায় ভাসলাম | স্কেচটা খুবই সুন্দর হয়েছে | আপনার হাতে ক'টা আঙ্গুল ? পাঁচ আঙুলের হাত দিয়ে পেন্সিল ধরে এমন সুন্দর স্কেচ কি করে আঁকা যায় !

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:০১

কাতিআশা বলেছেন: এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ!..কি রঙিন ছিল সেই দিনগুলি! হ্যা, আপনার অনুপ্রেরনাতেই স্কেচটা দিয়েছিলাম...তবে একটু বাড়াবাড়ি প্রশংসা করে ফেললেন! :``>> ব্লগে বেশী লিখতে পারিনা, সময় পাইনা বলে..সুযোগ পেলে পড়ি ভালো লেখাগুলো। তিন দিনের লং উইকেন্ডের পর আজকে অফিসে এসে শুধু হাই পাচ্ছে...

৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৪৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: হাহাহাহাহা
বিশ্ব বিদ্যালয় জীবনের এমন কত মজার ঘটনাই যে থাকে !!!!
চমৎকার লিখেছেন,আর তারচাইতেও অপূর্ব আপনার স্কেচ !!!
মুগ্ধতা আপু :)

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৭

কাতিআশা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ মনিরা আপু!..ফেলে আসা দিনের স্মৃতিগুলো মনিমুক্তার মত জ্বলতে থাকে হৃদয়ে...

৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৫৭

জুন বলেছেন: খুব মজা লাগলো কাতিউশা আপনার বুয়েটের কাহীনি পড়ে । আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেও এমন অনেক মজার স্মৃতি আছে যা এখোনো এলুমনাইতে সব বন্ধুরা এ নিয়ে এখোনো হাসি ।
ভালোলাগা জানবেন :)
+

৬| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৪৩

কাতিআশা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জুনাপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য! :)

৭| ১৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৫

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: আপনার নাম আশাতিকা?

পড়ে ভাল লাগল। নতুন কিছু লিখুন।

১৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৩০

কাতিআশা বলেছেন: না, কাতিয়াশা..নতুন কিছু লেখার সময় পাচ্ছিনা একেবারেই..মাঝেমাঝে অন্যদের লেখাগুল পড়ি, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৮| ১৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৩৫

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: ও!
আপনি একটা সুন্দর প্রোপিক দেন। তাহলে পিকচার মুডে বোঝা যাবে।

সময়, কাউকেই সময় দেয় না! সময়কে টেনে হিচড়ে বের করে নিতে হয়।

৯| ২০ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:১৮

রোকসানা লেইস বলেছেন: কুতুব স্যার কি এখনও কুতুব মিনার স্থাপত্য পড়িয়েই যাচ্ছেন।

২১ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১:০৮

কাতিআশা বলেছেন: জানিনা আপু!.।তবে সেই দিনগুলি খুব মিস করি..

১০| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:২৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
স্কেচ সুন্দর হয়েছে।

লেখাও ।

ধন্যবাদ।

১১| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:২২

কাতিআশা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!

১২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৪

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: স্কেচের মতোই সুন্দর লেখা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.