![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইসলামের কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রোয়েছে যার মধ্যে আজান অন্যতম। জুম’আ, হজ্জ, ঈদ, কোরবানি ইত্যাদি এবাদত যেমন আল্লাহর হুকুমত, সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত আজানও তেমনই একটি বিষয়। প্রতিদিন মো’মেনদেরকে সুবহে সাদেক থেকে শুরু কোরে রাতের বেলায় এশা পর্যন্ত আজানের মাধ্যমে মোট পাঁচবার সালাহর জন্য আহ্বান করা হয়। আজান মোমেনের অন্তরে আল্লাহর কথা স্মরণ কোরিয়ে দেয়। স্মরণ কোরিয়ে দেয় তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা। পাশাপাশি এ আহ্বান মো’মেনের অন্তরে একটি চেতনার সৃষ্টি করে। তাই আজান শুনেই মো’মেন মাত্রই মসজিদে যাওয়ার জন্য উদ্বেলিত হোয়ে উঠেন। আল্লাহর সার্বভৌমত্ব কোন এলাকায় প্রতিষ্ঠিত আছে তার প্রমাণ হয় আজানের ঘোষণার মাধ্যমে। একবার রসুলাল্লাহ খায়বার অভিযানের আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে যদি ফজরের সময়ে গিয়ে ঐ জনপদে আজান শুনতে না পাও তাহোলে আক্রমণ কোরবে, আর যদি আজান শুনতে পাও তাহোলে বিরত থাকবে।
আজানের ইতিহাসঃ আজানের প্রচলন হোয়েছে রসুলাল্লাহ (সাঃ) এর মদিনায় হেজরতের পর। তিনি মক্কায় সালাহ কায়েম কোরতেন আজান ও ইকামাত ছাড়াই।” সহিহ ইবনে খুজাইমাঃ (১/১৮৯)। মদিনা জীবনের শুরুতে সালাতের সময় হোলে মো’মেনগণ নিজের পক্ষ থেকে মসজিদে এসে উপস্থিত হোতেন। আজান, আহবান বা অন্য কোন মাধ্যমে ডাকাডাকি ছাড়াই। ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “মো’মেনগণ যখন মদিনায় আগমন কোরে জড়ো হোতেন, তখন সালাতের সময়ের জন্য প্রতীক্ষা কোরতেন। এসময় সালাতের জন্য ডাকাডাকি হতো না। একদিন সবাই এ নিয়ে আলোচনা কোরলেন। কেউ বোললেন, তোমরা নাসারাদের ন্যায় ঘণ্টার অনুসরণ করো। কেউ বোললেন- না, বরং শিঙ্গা বাজাও যেমন ইহুদিরা বাজায়। ওমর (রাঃ) প্রস্তাব কোরলেন, একজন লোক পাঠানো হোক, সে ‘সালাত’ ‘সালাত’ বোলে ঘোষণা দেবে। কিন্তু এর কোনটাই গ্রহণ করা হোল না। রসুলাল্লাহ (সাঃ) এ বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তিত হোয়ে বাড়ি ফিরলেন। এরই মধ্যে আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ বিন আবদে রাব্বিহিও (রাঃ) বাড়ি ফিরলেন। বাড়ি গিয়ে তিনি স্বপ্নযোগে আজান শিক্ষালাভ করেন। তিনি সত্ত্বর রসুলাল্লাহর (সাঃ) কাছে গমন কোরলেন এবং তাঁকে আজান বিষয়ে স্বপ্ন সম্পর্কে সংবাদ দিলেন। তিনি রসুলাল্লাহকে (সাঃ) বোললেন, “হে আল্লাহর রসুল, আমি অর্ধ ঘুম ও নিদ্রাবস্থায় ছিলাম, আমার কাছে এক আগমনকারী আসলেন অতঃপর আমাকে আজান শিক্ষা দিলেন। এ বিষয়ে ওমর (রাঃ) ও একটি স্বপ্ন দেখতে পান। অতঃপর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জানানো হয়। তিনি বোললেন ঃ “তুমি আমাকে কেন সংবাদ দাও নি?” ওমর (রাঃ) বোললেন, “আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ আমার আগে বোলে ফেলেছে, তাই আমার বোলতে লজ্জা বোধ হোল।” রসুলাল্লাহ (সাঃ) বোললেন, “হে বেলাল! দাঁড়াও, দেখ আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ কি বলে, তুমি তার অনুসরণ করো।” অতঃপর বেলাল (রাঃ) সর্বপ্রথম আজান দিলেন।
আজানের বাণী
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
আশহাদু আল্লাহ এলাহ এল্লাল্লাহ, (২)
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসুলাল্লাহ (২)
হাইয়্যা আলাস সালাহ, (২)
হাইয়্যা আলাল ফালাহ, (২)
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
লা এলাহ এল্লাল্লাহ।
আজানের তাৎপর্যঃ আজানের প্রথম লাইন ‘আল্লাহু আকবর’ এর অর্থ হোল আল্লাহ বিরাট, বিশাল। ‘আকবর’ শব্দটি এসেছে কবীর থেকে। কবীর অর্থ বিরাট বিশাল, সুউচ্চ ও মহান। বাস্তবক্ষেত্রে এর প্রয়োগ হোল আল্লাহর এই বিরাটত্ব স্বীকার কোরে নিয়ে সার্বিক জীবনে অন্যকারো হুকুমকে অস্বীকার কোরে একমাত্র তারই দেয়া হুকুমকে মেনে নেয়া। বাস্তবিক ক্ষেত্রে মানুষ যদি তাঁর হুকুমকে প্রত্যাখ্যান কোরে অন্য কারো বিধান মেনে নেয় তাহোলে তাকে আকবর মেনে নেয়ার কোন অর্থ থাকে না। তাই আজান আমাদেরকে আল্লাহর এই বিরাটত্বের শিক্ষা দেয়। যিনি এই ঘোষণা দেবেন তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ বলার মাধ্যমে উচ্চ স্বরে মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের, সার্বভৌমত্বের, বড়ত্বের ঘোষণা দিচ্ছেন। যারা এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দিলো তাঁরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব, বড়ত্ব, মাহাত্ম্য মেনে নিয়েই ঐক্যবদ্ধ হবে। বাস্তবিক যে স্থানে এই ঘোষণা দেয়া হয় সেই স্থানে আর অন্য কোন শক্তির শ্রেষ্ঠত্ব থাকতে পারে না। এই জন্যই সালাহ কায়েমের সময়- রুকু, সাজদায় যাওয়ার সময়ও এই ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিয়ে রুকু সাজদা করা হয়। অর্থাৎ ঐ শ্রেষ্ঠত্বের, মাহাত্মের সামনে মস্তক অবনত, বিনীত এবং মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়। শুরুতেই যে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কোরলাম, পরে তাঁর সার্বভৌমত্ব ছাড়া অন্য সার্বভৌমত্ব, আইন, বিধান অস্বীকার কোরে শ্রেষ্ঠত্বের বাস্তব নমুনা দেখালাম। এই জন্য এসলামের প্রবেশের শুরুতেই অন্য সমস্ত আমলের আগেই প্রথমে তওহীদের এই ঘোষণা দিতে হয়।
বাকি অংশ শেষ পর্বে দেখুন ………………………………
©somewhere in net ltd.