![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি প্রথম যেবার সিনেমা হলে গিয়েছিলাম, তখন নিতান্তই বাচ্চা মানুষ ছিলাম। একজন বাদে বাকি সবাই আমার চাইতে ছিল বড়। সিনেমা হলে গিয়ে সেবার খুব বেশী কিছু বুঝিনি, কারণ তখনও সিনেমা বুঝতামনা। তবে অনেক কষ্টে মনে করতে পেরেছি সিনেমার নাম, সেটা হল “আপন ঘর”। হলে যেয়ে এই সিনেমাটি দেখবার পর সিনেমা হল থেকে মোটামুটি চার বছরের ছুটি নিয়েছিলাম। ক্লাশ ফোরে থাকতে রাজশাহী থেকে মুন্সীগঞ্জ এলাম নানী বাড়িতে ঈদ করবার জন্য। অবশ্য তখন প্রতি বছরই ঈদ করবার জন্য নানী বাড়ি যেতাম। সেবার আমার মামাতো ভাইয়ের সাথে ঠিক হল ঈদের দিন হলে যেয়ে ছবি দেখব। কিন্তু বাড়িতে কেউ যেন না জানে সেজন্য খালা বাড়িতে যাবার উছিলা নেওয়া হল। ঈদের দিন সকাল বেলায় সময় যেন আর কাটেনা। চিন্তাও হচ্ছিল, দুজনের হাতেই টাকা নেই। মায়ের কাছ থেকে লুকিয়ে ঈদের বকশিশ সাথে নিলাম একটু বেশী। তারপর দে ছুট। সে কি উত্তেজনা, রাস্তায় খালি রিক্সা ছিলনা। তারপরেও থামিনি। দেড় কিলো পথ অতিক্রম করে চলে এলাম হলে, কিন্তু টিকিট কাটতে যেয়ে বাধল বিপত্তি। দুটো একই ক্যাটাগরীর টিকিট চাইলেও দুটো দুই রকম দেয়া হয়েছিল। মামাতো ভাই রিফাত আমার চাইতে একটু বড়, সে বুঝেছিল একটু পরে। কিন্তু তখন কিছুই করার ছিলনা। সিনেমা দেখতে হলে দুইজনকে দুই জায়গায় বসতে হবে। একা সিনেমা দেখতে হবে ভেবে ভয় পেয়ে গেলাম। রিফাত আমাকে বুঝিয়ে বলল, কিছু হবেনা। আমার হাতে ভাল ক্যাটাগরীর টিকিট ধরিয়ে দিয়ে সে চলে গেল খারাপ টিকিট নিয়ে এক্কেবারে পর্দার সামনের বেঞ্চিতে। আমি ছোট ছিলাম, চেয়ারে কিভাবে বসতে হয় জানতামনা। সিনেমা হলের চেয়ারে ব্যালেন্স করে বসতে হয়। আমি অসাবধানতা বশত বসতে গিয়ে মেঝেতে পরে গেলাম। পাশের একজনের সাহায্যে আবার উঠে বসেছিলাম। যথারীতি সিনেমা শুরু হল। নায়ক সালমান শাহের ‘কন্যাদান’। জমজমাট কাহিনী, বেশ মজা হচ্ছিল আমার। কিভাবে সময় কেটে গেছে বুঝতে পারিনি। মনের আনন্দে হাতে থাকা সিনেমার টিকিট ডলে মুচড়ে বিচ্ছিরি অবস্থায় নিয়ে এসেছিলাম। অঘটন ঘটল তখনই যখন টিকিট কালেক্টর এসে আমার হাতের টিকিটের এই অবস্থা দেখল। দিল কষে একটা থাপ্পর, আমার সব আনন্দ মাটি হয়ে গেল। তবে আমি কেঁদেছিলাম কিনা মনে নেই।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪২
হাসান মাহবুব বলেছেন: আহারে বেচারা!