নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালবাসি সকলকে

তৌফিক মাসুদ

আমি মানুষকে ভালবাসতে চাই।

তৌফিক মাসুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশুতোষ গল্প : পিউ ও রাজহাঁস মাতার গল্প

১১ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২২

নিমকাটা বনের ধারে মিঠা পানির একটি পুকুর। কবে কোন রাজা তার আদরের রাজকন্যার আবদার মেটাতে সেখানে পুকুর কেটেছিল কে জানে?



বনের পশুপাখিরা, এমন কি মাছেরাও জানে এই পুকুর সবার জন্য উন্মুক্ত। পানি একটু বেশি মিঠা হওয়ায় সবাই এখানে পানি পান করতে আসত। গরমের সময় সব পশু পাখি যখন খুব ক্লান্ত, তাদের সেই ক্লান্তি মেটাতে এই পুকুরপাড় একবার আসা চাইই চাই। সাধারণত সে সময় কেউ কাউকে আক্রমণ করতো না। মাঝে মাঝে ব্যতিক্রমও হত।



সে মিঠা পুকুরের পাড়েই বাসা বেধেছিল একজোড়া রাজহাঁস। সে সময়ের প্রচন্ড গরমে তাদের ঘর আলো করেছিলো একটি তুলতুলে রাজহাঁস ছানা। যদিও তাদের আরও বেশি রাজহাঁস ছানা থাকার কথা ছিল, গরমে খাবারের অভাবে শেয়াল আর নেউলেরা অধিকাংশ ডিম চুরি করেছিল। আর বাকিগুলো নষ্ট হয়েগিয়েছিল।



একমাত্র ছানাটিকে বাবা মা আদর করে নাম দিয়েছিল পিউ। পিউ দেখতে অন্য রাজহাঁস ছানাদের চাইতে বেশ সুন্দর। তার বাবা -মা তাকে অনেক ভালবাসতো। এক পলকের জন্যেও তাকে চোখের আড়াল হতে দিতনা। পিউয়ের মায়ের বিশ্বাস মিঠা পুকুরের ওপাশে যে নতুন ধারি নেউলটা বাসা বেধেছে সে পিউকে নজরে রেখেছে। একটু সুযোগ পেলেই খপ করে ধরে নিয়ে যাবে। তারপর সে তার পিউকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে নেউল বাচ্চাদের খাওয়াবে। সেকথা ভাবতেই পিউয়ের মা তাকে দুই ডানা দিয়ে ঝাপটে ঢেকে রাখে।



রাজহাঁস মাতা নেউলের ভয়ে থাকলেও তার সাহস জোগাত পিউয়ের বাবা। সে এই পুকুর পাড়ের সবচেয়ে বড় যোদ্ধা। দিনের বেলায় শেয়াল -বনবিড়ালেরাও ভয় পেয়ে চলত। সে হিসেবে পিউ বেশ গর্বভরে বাবার সাথে ঘুড়ে বেড়াতো। একসাথে পুকুরে সাঁতার কাটতো। ছোট ছোট পোকামাকড় আর মাছ খেয়ে রাতে মায়ের ডানার তলায় নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ত।



ইদানীং গরম একটু বেশি পড়ায় পিউ মায়ের ডানার তলায় না থেকে একাই নিজের ইচ্ছেমত ঘুমিয়ে থাকত। এতেই হল বিপদ। একদিন রাতে ঘুমের ঘোরে পিউ বাবা -মায়ের কাছ থেকে একটু দুরে চলে গেল। এদিকে শেয়াল চোরেরা রাতের আধারে এসেছে পাশের রাজহাঁস পরিবারের ডিম চুরি করতে। সেটা টের পেয়ে তারা চেঁচামেচি শুরু করল। এদিকে পিউয়ের বাবা-মা ঘুম থেকে জেগে পিউকে খুঁজতে থাকল। পিউ তো তখনো বেঘোর ঘুম ঘুমাচ্ছে। শেয়ালেরা পিউয়ের খুব কাছ দিয়ে দৌড়ে পালানোতে তারা ভাবল, পিউকে শেয়ালেরা নিয়ে গেছে। যেই ভাবা সেই কাজ। শেয়ালের পিছুপিছু দুজনেই দিল ভোঁ দৌড়। রাতের আধারেই দুজনে শেয়ালদের বিরুদ্ধে অযথা যুদ্ধে লিপ্ত হল। শেয়ালেরাও একজোট হয়ে লড়াই শুরু করল। বেশ কিছুক্ষণ পরে লড়াই থামল। কিন্ত ততক্ষণে যা হবার তা হয়ে গেছে। পিউয়ের বাবা আহত হয়ে শেয়ালদের কাছে ধরা পড়েছে। শেয়ালেরা গর্তে পালিয়েছে। আর তার মা কাউকে না পেয়ে ক্লান্ত অবস্থায় রাত ভর কাঁদতে থাকল।



সকাল না হতেই পিউকে তার মা খুজে পেল। তাকে পায়ে আনন্দ যেন ধরেনা। রাতে তার পুরুষ সংগীটিকে হারাবার বেদনা যেন ভুলে গেল। সন্তানকে ডানা দিয়ে জাপটে আতংকিত ভাবে এদিক ওদিক দেখতে থাকল। পিউ বুঝল না এর হেতু। সে তার বাবাকেও দেখছিল না।



সেদিন দুপুর গড়িয়ে গেলেও পিউয়ের পেটে কিছুই পড়েনি। সে খেতে চায়। কিন্তু তার মা তার বাবাকে হারিয়ে মনমরা হয়ে বসেছিল। পিউকেও কোথাও যেতে দিচ্ছিল না। পিউ সুযোগ খুজছিল বাইরে বের হবার। একসময় সে সুযোগ বুঝে মায়ের কাছ থেকে দুরে সরে গেল। আর সাথে সাথেই তার উপরে বিপদ এসে পড়ল। সেই ধাড়ি নেউলটা ওর উপরে হামলা করে বসল। পিউ চেঁচামেচি শুরু করলে তার মা তাকে বাঁচাতে চলে এল। শুরু হল নেউল ও রাজহাঁসের লড়াই। রাজহাঁস মাতা চায় তার ছানা বাঁচাতে, আর মাদী নেউলটা চায় তার ক্ষুধার্ত বাচ্চাকে খাওয়াতে।



দুই মায়ের যুদ্ধ দেখে তাদের সন্তানেরা আতংকিত। পিউ ও নেউলের বাচ্চাটা একসাথে আটোসাটো হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল। দুজনেই ভাবছে তাদের মা তাদের কাছে ফিরে আসুক। কিন্ত কেউ ভাবছেনা প্রতিপক্ষ মারা যাক।



এক রাজহাঁস বিপদে পড়ায় আশেপাশের অন্যরাও চেঁচামেচি শুরু করল। এতে নেউলটা ভয় পেয়ে গেল। সে আহত অবস্থায় বেশ কষ্টে পালাল। মায়ের পিছু নিল নেউলের বাচ্চাটাও। পিউ ততক্ষণে অবাক কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছে। সে জীবনে এই প্রথম মাছ ধরেছে। নেউলের বাচ্চাটা যখন ওর পাশ থেকে চলে গেল। ঠিক তখনই একটা ছোট মাছ লাফ দিয়ে পুকুর পাড়ে উঠে এল। পিউ অবচেতন মনেই মাছটিকে ধরে ফেললো। তারপর তার খুশি দেখে কে। কিন্তু সে মাছ একা খাবে কেন? তাই মায়ের কাছে নিয়ে গেল।

রাজহাঁস মাতা বেশ আহত। সে নড়তে পাড়ছেনা। কিন্তু নিজের ছানার এরূপ কাণ্ডে সেও হতবাক। পিউ মাছ এনে তার মায়ের সামনে রাখল। ভাবল তার মায়ের খাওয়া জরুরী। কিন্তু রাজহাঁস মাতা তার অভুক্ত ছানাকে রেখে কি খেতে পারে?

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৯

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: ++++

২| ১১ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:৩৬

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ১২ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:০৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: সুন্দর।

১৪ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:১১

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ, হাসান মাহবুব।

৪| ১২ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:২০

প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ

৫| ১৪ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:০৪

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: শুভকামনা রইল।

৬| ১৪ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:৩৩

দীপংকর চন্দ বলেছেন: অনেক ভালো লাগা ভাই।

শিশুমন বিকাশে সহায়ক লেখার প্রয়োজন খুব বেশি।

আমার শুভকামনা অনিঃশেষ জানবেন।

ভালো থাকবেন। সবসময়। অনেক।

৭| ১৪ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:০৮

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: শুভকামনা জানবেন দাদা।

৮| ১৪ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:১৩

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: যেখানেই থাকুন ভাল থাকবেন।

৯| ১৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


গল্পে, কোন না কোন ভাবে পুরুষ রাঝাসটিকে বাঁচানোর দরকার।

১০| ১৯ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:১১

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ, গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.