নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালবাসি সকলকে

তৌফিক মাসুদ

আমি মানুষকে ভালবাসতে চাই।

তৌফিক মাসুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাটা বাবা (পূর্ববর্তি অংশের পরে)

১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৪

চাটা বাবার কাহিনী চারদিকে প্রচার হয়ে যাবার কয়েকদিনের মধ্যেই রহিমা বুড়ির চেহারায় বেশ পরিবর্তন দেখা গেল। আগের দিনের চাটা বাবার জীবন্ত সাক্ষী সে। আবার এই চাটা বাবার কেরামতি থেকে সেই প্রথম আরোগ্য লাভ করেছে। এমন ভাগ্যবান মানুষটিকে গ্রামের মহিলারা কাছে পেলেই জোড় করে বসিয়ে সে গপ্প শুনতে চাইত। আর সেও নানা সত্য মিথ্যে বলে বেলা পার করত। গ্রামের মহিলারা না খেয়ে যেতে দিতোনা। নিজের চার সন্তানের কাছ থেকে যথেষ্ট খাবার না জোটলেও অন্যের ঘরে বেশ পেট পুরেই সে খেতে পেত। তাই এমন চাটা বাবার আগমন রহিমা বুড়ির চাইতে আর কে বেশি আকাংখা করত ?

চাটা বাবাকে নিয়ে রহিমা বুড়ির প্রচারের পুরো সুবিধাটাই নিত মধু মিয়া। দিন দিন তার বাড়ির আশে পাশে লোক জনের ভীড় বাড়ছিলই। এত্ত লোক সামাল দিতে না পেরে সে তার শ্যালক হাসুকে এ বাড়িতে নিয়ে আসল। এই ছোকরাটি ছিল বদের হাড্ডি। সে মাথায় কু-কর্মের বুদ্ধি যেন আগে থেকেই Install করা থাকে। শুধু একটু টাচ দিলেই হল।

দিন দুয়েকের মধ্যেই মতি মিয়ার বাড়ির সামনে মোমবাতি, আগড় বাতি্‌ গোলাপ জল ও হড়েক রকমের পন্যের পসরা বসে গেল। সুতরাং মধু মিয়ার ব্যবসা দ্বিগুণ। কিন্তু সবাই তো আর মধু মিয়ার চাটা বাবায় মেতে নেই। তার উন্নতি অনেকের ঈর্ষার কারণ হয়ে গেল।

মধু মিয়ার পাঁচ ঘর পরেই মতি মিয়ার বাড়ি। সে অনেক চেষ্টা করেও নিজেকে পীরজাদা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। এজন্যে সে মধু মিয়াকে দোষারোপ করে। তার অপপ্রচারের কারনেই নাকি মানুষ তার বাবার মাজারের ধারে কাছেও ভীড়েনা। যদিও তার বাবা ঐ অঞ্চলের স্বনামধন্য ডাকাত ছিল। কিন্তু মতির মা সকলকে বলে বেড়াত, তিনি নাকি একজন কামেল লোক। গ্রামে গ্রামে ঘুরে মানুষকে বিভিন্ন কেরামতি দেখাইতেন তিনি।

যাই হউক, চাটা বাবার মূল রহস্য কি হতে পারে সেটা নিয়ে কারো মাথা ব্যথা না থাকলেও মতি মিয়ার যে ঘুম হাড়াম হয়ে গেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সে রাত বিরাতে মধু মিয়ার বাড়ির আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতে লাগল। ব্যপারটা মধু মিয়ার চোখ এড়ায় নি। সে আরও সাবধান হয়ে গেল। কিন্তু একজন যে শপথ করে বসে আছে্‌, সে কি দমবার পাত্র?

মিথ্যে জিনিসের কোথাও না কোথাও গলদ থেকেই যায়। মিথ্যে প্রকাশ হওয়ার জন্য সে গলদ জায়গা কারো না কারো হাতে ধরা খায়।

মধু মিয়া , তার স্ত্রী ও শ্যালক ধুরন্দর প্রকৃতির হলেও তার ছেলে কিছলু নিতান্তই হাবাগোবা প্রকৃতির। সুযোগের অপেক্ষায় থাকা মতি মিয়া একদিন কিছলুকেই একা পেয়ে গেল।

কিছলু রাস্তার ধারে উচু জমি থেকে ঘাস কাটছিল। মতি মিয়া তার বেশ কাছে এসে একটু গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করল, “কিরে কিছ্যু? ঘাস কি তগো বাবার লাইগ্যা কাটস নাকি?”
হঠাৎ এমন প্রশ্ন শুনে সে ভড়কে গেল। নিজের অজান্তেই মুখ দিয়ে বেড় হয়ে এল “হু”। সাথে সাথেই আবার জিহ্বায় কামড় বসিয়ে বলল , “না গো মতি কাকা , আমাগো বাবায় ঘাস খায়না । তয় চাটে”।

এ কথা বলেই দুই হাতে কাটা ঘাসে এক খাবলি দিয়ে যতটুকু আসে ততটুকু নিয়েই হন হন করে হেঁটে চলে গেল। পেছনে মতি মিয়া ভাবতে লাগল, চাটা বাবা আবার ঘাস চাটে কেমনে? এটা মানুষ না জন্তু-জানোয়ার ?

চলবে...............

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১১

প্রামানিক বলেছেন: চাটা বাবার এ পর্বও ভাল লাগল। ধন্যবাদ

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৯

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। যেখানেই থাকবেন, ভালো থাকবেন।

২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: চাটা বাবা গরু নাকি?

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪০

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: আরণ্যক, আপনি খুব কাছে চলে এসেছেন। তবে আগামী শেষ পর্বেই সব জানিয়ে দেব।

৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ কবি, আপনার মত পাঠক পেয়ে আমি এখনো লেখার অনুপ্রেরণা পেয়ে যাচ্ছি।

৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৫

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: চাটা বাবা রহস্যময় এক মানুষ। তবে পর্বগুলো বেশি ছোট হয়ে যাচ্ছে। একটু বড় করে আরো তাড়াতাড়ি দিলে ভাল হত।

৫| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৭

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ রক্তিম, আপনি সব সময় অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন। আশা করি আগামী পর্বেই শেষ হবে গল্প।

৬| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৭

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ রক্তিম, আপনি সব সময় অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন। আশা করি আগামী পর্বেই শেষ হবে গল্প।

৭| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:

বিদঘুটে নাম দিয়েছেন পোস্টের।

৮| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০১

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: খারাপ ভাবে নেয়ার কোন কারন দেখিনা। তবে খারাপ দিক থাকলে আমি নিজেই সরে আসব।

৯| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০৩

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: আমি এই নাম দিয়ে খাজা বাবা, ভন্ড বাবাদের ব্যাংগ করেছি যারা এগুলো নিয়ে ব্যবসা করছে প্রতিদিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.