নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একুশ

তানভীর তুষার

আসসালামু আলাইকুম।

তানভীর তুষার › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিখ্যাতদের মৃত্যুভাবনা

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২৮

পবিত্র কোরআনের ৩ নাম্বার সুরা, সুরা আলে-ইমরানে মহান আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিন ঘোষণা করেন, “কুল্লি নাফসিন যাইকাতুল মা’ঊত”
প্রত্যেক প্রাণিকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।
এটা সকলেরই জানা যে হই আমরা মুসলিম, নয় হিন্দু বা অন্য কোনো ধর্মের বা অন্য কোনো জাতের, মৃত্যু একটা কমন বিষয়। মরতেই হবে।
আমিহীন পৃথিবীটা কেমন ছিলো, তার তুলনায় আমি শুন্য পৃথিবীটা ঠিক কেমন হবে, তা নিয়ে আমাদের কৌতুহল সবসময়ই বেশি। আরো আগ্রহ থাকে আমরা যে নতুন জগতে যাচ্ছি, তা নিয়ে।
আমাদের মধ্যে কারো কারো মৃত্যু হয় আকাস্মিত, কারো বা পূর্ব নির্ধারিত দিনক্ষণ ঠিক করে (দন্ড প্রাপ্ত মৃত্যু) অথবা নিশ্চিত মরণব্যাধির কবলে।
বিখ্যাতদের অনেকেই মৃত্যু নিয়ে ভেবেছেন, কেউ কেউ মৃত্যুকে সাজিয়েছেন নিজের মতো করে। তাদেরই ক্ষাণিক এখানে আলোচিত হলো।
কার্ল মার্কসঃ বিখ্যাত এই জার্মান দার্শনিকের কীর্তির সাথে পরিচিত নন, এমন মানুষ কিন্তু খুঁজে পাওয়া ভার। মজার ব্যাপার হচ্ছে তিনি “শেষ কথা” বলতে কিছুতে বিশ্বাসী ছিলেন না। তার আভাস পাওয়া যায় মৃত্যুর আগে তার শেষ উক্তিতে।
তিনি বলেছিলেন “শেষ কথা জিনিষটা কেবল বোকাদের জন্য, যারা যথেষ্ট বলতে পারেনি।

কোকো শ্যনেলঃ বিখ্যাত ব্রান্ড শ্যানেলের নাম হয়তো জানা আছে অনেকেরই। এই শ্যানেলেরই প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন কোকো শ্যানেল। তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন নারীবাদী আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকার জন্য। অনেকেই আমাদের অনেক কিছু কিভাবে করতে হয় তা শেখান,তবে ফ্রেঞ্চ এই ভদ্রলোক আমাদের কিছু অদ্ভুতই শিখিয়েছেন। তিনি মৃত্যুর আগের শেষ কথাটা বলেছিলেন, “এই দেখো, এভাবেই মারা যায়”

রাজা ১৪শ লুইঃ ফ্রান্সের সূর্য রাজা খ্যাত ষোড়শ লুই মৃত্যু আগ মূহুর্ত পর্যন্ত নিজ পদে বহাল ছিলেন। তিনি মৃত্যুর ঠিক আগে তার স্বজনের উদ্দেশ্যে অবাক হয়ে বলেছিলেন “তুমি কাঁদছো কেনো? তুমি কি ভেবেছিলে আমি অমর হবো?”

ডারউইনঃ বিবর্তনবাদের প্রবক্তা ডারউইন ছিলেন নাস্তিক একজন মানুষ। মৃত্যুর মূহুর্তেও তিনি নির্ভিকভাবে বলেছিলেন “আমি মরতে এতোটুকুও ভয় পাই না”

আচ্ছা, মৃত্যু কি কারো কাম্য? হয়তো কারো কাছে কাম্য। কিন্তু সবার কাছে নয়। এমনই একজন ছিলেন বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল। তিনি তাই ক্ষোভ ঝেড়ে বলেছিলেন “আমি এটার উপর পুরোপুরি বিরক্ত”

হাইনরিখ হাইনেঃ জার্মান সাহিত্যের টুকটাক খবর যারা রাখেন, তারা নিশ্চয় চিনবেন এই জার্মান কবিকে। তিনি কিন্তু মৃত্যুর ব্যাপারে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তিনি আত্মবিশ্বাস নিয়েই বলেছিলে, “ঈশ্বর আমাকে ক্ষমা করে দেবেন; এটাই তার কাজ”

মৃত্যুর আগে সবাই যে শুধু গুরুগম্ভীর উক্তিই দেবেন, এমনটা ভাবাও কিন্তু অর্থহীন। অনেক বিখ্যাত ব্যাক্তি মৃত্যুর আগে মজার মজার উক্তি করে গেছেন।

১৫৫৩ সালে রাজদ্রোহের অপরাধে সাহিত্যিক থমাস মুরের শিরোচ্ছেদের আদেশ দেওয়া হয়। মঞ্চ প্রস্তুত, থমাস মুরকে তোলা হলো ফাঁসির মঞ্চে। এমন সময় হঠাৎ তিনি বললেন “দাড়াও! আমাকে একটু সময় দাও।” তারপর সযত্নে তার বাবরী চুল সরিয়ে বললেন, “দেখো, এগুলো যেনো না কাটে”

১৮৯৬ সালে চেরোকি নামের একজন রাজনীতিবিদকে মৃত্যুদণ্ডদেওয়া হয়। মৃত্যুর ঠিক আগ মূহুর্তে তাকে কিছু বলতে বলা হলে তিনি বলেন “আমি এখানে মরতে এসেছি, ভাষণ দিতে নয়”

কার্ল পানযরা নামে এক শিল্পীকে ফাঁসিতে ঝোলাতে গিয়ে কোনো কারণে জল্লাদের একটু দেরী হচ্ছিলো। তাতে তিনি চটে গিয়ে বলেন “জলদি কর বেজন্মা কোথাকার, তোর জায়গায় আমি হলে এতোক্ষণে এক ডজনকে ঝুলিয়ে দিতাম”
জর্জ আপেল নামের এক খুনির মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয়া হয় ইলেক্ট্রিক চেয়ারে বসিয়ে। সেই চেয়ারে নিজেকে কল্পনা করুন তো! একটু পরেই আপনি শেষ হতে চলেছেন। সেখানে বসে আপনি কি বলতেন? মিলিয়ে নিন তার কথার সাথে আপনার কথা কতোটা মেলে। তিনি বলেছিলেন “বন্ধুরা,আপনার একটু বাদেই এই চেয়ারের উপর একটি সেদ্ধ আপেল দেখতে পাবেন”
প্রাচীন রোমে সুববিয়াস ফ্লেভাস নামক একজনকে শিরোচ্ছেদের মাধ্যমে মৃত্যুদন্ড প্রদানের কিছুক্ষণ আগে জল্লাদ তাকে স্থির থাকার পরামর্শ দেন। এতে তিনি ক্ষেপে গিয়ে বলেন “আমি ঠিকই আছি গাধা, তোর হাত স্থির থাকলেই হয়”
কুখ্যাত সন্ত্রাসী গ্যাংস্টার জেমস ডব্লিউ রজারকে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে শেষ ইচ্ছে জানতে চাওয়া হলো। তিনি ঠাট্টাচ্ছলে জবাব দিলেন “একটি বুলেট প্রুফ পোশাক চাই”
রুশ বিপ্লবী কাউন্ট পাসটেলকে ফাঁসিতে ঝোলানোর সময় প্রথম চেষ্টায় জল্লাদ ব্যার্থ হয়। তাতে তিনি মারাত্মক ক্ষেপে গিয়ে বলেন “স্টুপিড দেশ, কেমন করে ফাসি দিতে হয় এরা তাও জানে না!”

কবি হেনরী রীচার মৃত্যুর আগে বলেছিলেন “শুরু হলো রহস্যের……”

ফরাসি বিপ্লবী জিয়ান সেলভেইন বেইরিকে যখন বধ্যভূমিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো, তখন তিনি কাঁপছিলেন। উপস্থিত একজন এ বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্‌্যন করলে তিনি বিরক্ত হয়ে উত্তর দেন "“বুদ্ধু কোথাকার, ঠান্ডায় কাঁপছি”

কেমন লাগলো জানাবেন আশা রইলো।

লেখক:তুষার
লেখকের ব্লগঃএকুশ
তথ্যসূত্রঃবিবিসি
যুগান্তর

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.