![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুগ্যা স্কুল মাস্টারনি। একটু আগেই তিনি তার ফুলটাইম মদপিয়াসি স্বামী নীলকণ্ঠ বাগচীর কাছ থেকে শিশু পুত্রকে নিয়ে গুড বাই করে গেলেন। বউ চলে যাবার পর, নীলকণ্ঠ তার ইন্জিনিয়ারিং পড়া সাঙাত নচিকেতাকে বললেন, ফ্যানটা পেড়ে আনো। ওটা বেচে বোতল আনো। সাঙাত বোতল আনতে গেছে। এ-সময়, ঘরের দরজার দিকে কাচের চুড়ির শব্দ, কেউ এসে হাঁপাচ্ছে। নীলকণ্ঠ মদের ঘোর ভেঙে তাকালেন, শুধোলেন, 'কে, কে ওখানে? যেই হও, ভেতরে আসো তো হে।'
তখন টালমাটাল সময়। বাংলাদেশ থেকে যুদ্ধকালীন শরণার্থী হয়ে আসা যুবতী মেয়েটি কাঁপা-কাঁপা,ভীত-সন্ত্রস্থ; সে আশ্রয়ের সন্ধানে আকুতি জানাল, 'আমি বঙ্গবালা। ওপার থেইকা আইছি। পুইড়া-ধুইড়া সব শ্যাষ...'
নীলকণ্ঠ তার অ্যালকোহলিক উচাচারণেই, মাথাটা নিচু থেকে ওপরে ঘুরিয়ে কেমন যেন অসহায়ত্ব থেকেই হতে পারে ঝাপসা আর্তনাদ করে উঠলেন, 'আশ্রয়! আশ্রয়!! আশ্রয়ের সন্ধানে আরেকটি নীড়হারা পাখি, যে পাখির নাম...বাংলাদেশ...'
একটু মেলোড্রামাটিক, স্বীকার করে নিতে হবে। কিন্তু তিনি তখন মদ্যপ। এবং তার ইমোশনটা খুব খাঁটি। নিজের ভাষায় তিনি 'কোলকাতার ব্রোকেন ইন্টেলেকচুয়াল।' আদতে তার বুকের মধ্যে ছিল বাংলাদেশ, তিনি পাবনা-রাজশাহীর মানুষ। তার যমজ বোন প্রতীতি দেবী এখনো থাকেন বাংলাদেশেই।
(নিজের নির্মিত শেষ চিত্র 'যুক্তি তক্কো আর গপ্পো'তে ফুলটাইম মদ্যপ নীলকণ্ঠ চরিত্রে ঋত্বিক নিজে অভিনয় করেছেন। দুগ্যা, তৃপ্তি মিত্র, বঙ্গবালা চরিত্রে শ্যাঁওলী মিত্র আর নীলকণ্ঠ-দুগ্যার শিশুপুত্র চরিত্রে ঋতবান ঘটক কাস্ট)
শালার ছবি একটা। সেন্ট্রাল ক্যারেক্টার সারাক্ষণ মদ খাওয়া চরিত্রে থাকবেন বলে ঋত্বিক নিজেই ক্যামেরার সামনে এবং এইসঙ্গে পেছনে দাঁড়ালেন! মৃত্যুর আগমুহুর্তে বোতল উপুড় করে বাকি মদ ঢেলে দিলেন ক্যামেরার লেন্সের ওপর। হয়তো এনার্কি। তবু এরকম এনার্কির অধিকার অর্জন একটা অর্জন বটে! শালার একটাই তো জীবন...
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩০
জেনো বলেছেন: অযান্ত্রিক ছবিটা মাস্টারপিস।