![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০০৮ এর বর্ষাকাল। এক অভিনেতার মেয়ের প্রথম জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠান, ঢাকা ক্লাবে। টিভিবাকশো ও সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির লোকজন, সব মিলিয়ে তখন অতিথি হয়তো ৩০/৪০ জন। অনেকেই এসে গেছেন, অনেকে তখনো আসেননি। সেই সন্ধ্যায় ঢাকায় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছিল। আমি ও আমাদের প্রডাকশনের স্টিল ফটোগ্রাফার রিচার্ড রোজারিও নির্দিষ্ট বিল্ডিংয়ের সামনে পৌঁছে দেখি, বিল্ডিংয়ের সামনেই, সিঁড়ির কাছে বাইরে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছেন ধ্রুব এষ, গায়ক মাকসুদ ভাই ও তার বিদেশিনী গার্লফ্রেন্ড। হোস্ট অভিনেতা দম্পতি ক্লাবের দারোয়ানদের খুব অনুরোধ করলেও কাজ হচ্ছে না, কারণ, মাকসুদ ভাই ও ধ্রুব দা ড্রেসকোডের বাইরে আছেন। মাকসুদ ভাই শরীরে শার্ট পরা থাকলেও পায়ে চটি, চটি কোডের বাইরে; ধ্রুব দা তার লাইফটাইম স্টাইলে অর্থাৎ টি-শার্ট ও পায়ে চপ্পল। আমার গায়েও টি-শার্ট, পায়ে স্যান্ডেল। ধ্রুব দা আমাকে দেখে খুশি হলেন, কারণ, দলে ভারি হওয়া গেল, আসামি এখন তিনজন। প্রায় সব্বাই চেনা অতিথি, তাদের কেউ কেউ আমাদের তিনজনের বেহাল দশা দেখে মুখ টিপে খানিকটা হাসি চেপে হলঘরে ঢুকে পড়ছেন। ধ্রুব দাকে বললাম, চলেন চলে যাই। অভিনেতা দম্পতি বললেন, একটু ওয়েট করেন, দেখি কী করা যায়! মাকসুদ ভাইয়ের গালফ্রেন্ড বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে ভেজা উদযাপন করছেন মনে হলো। কিন্তু আমাদের তিনজনের তো তখন অপমানের মধ্যে দাঁড়িয়ে, বৃষ্টিতে ভিজতে হচ্ছে, সেটা অন দ্য স্পট কেমন লাগে! দারোয়ানদের চাকরির চাপে শেষে একটা রফা হলো। হোস্টদের চাপাচাপিতে আমাদের তিনজনকে দারোয়ানরা তিনজোড়া বেল্টওলা স্যান্ডেল এনে দিলেন, আমাকে ও ধ্রুব দাকে দারোয়ানদের কলারবেল্ট শাদা শার্ট পরতে দিলেন, আমরা তা পরলামও। মাকসুদ ভাইয়ের গায়ে তো শার্ট ছিলই। তারপর আমাদের তিনজনকে দাঁড় করিয়ে রিচার্ড ছবি তুলে নিল। এমন সময় দেখি, হুমায়ুন আহমেদ, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, তার গায়ে পাঞ্জাবি, তিনি গাড়ি থেকে নেমেই হন হন করে গেট বরাবর ঢুকে পড়ছেন। ভাবলাম, দেখি, এবার কী হয়!! কারণ, পাজ্ঞাবিও অ্যালাউ না। হুমায়ূন আহমেদকে আটকানোর জন্য দারোয়ানরা 'স্যার' স্যার' বলে দরজায় দাঁড়ালেও হুমায়ূন স্যার উল্টো একটা ধমকের সঙ্গে দারোয়ানদের ভড়কে দিলেন, বললেন, 'সরো সরো..স্যার মানে কি, স্যার আবার কি...সরো।' হুমায়ূন স্যারের ধমক-ম্যাজিকে হতভম্ব দারোয়ানরা হা করে দেখলেন, মজার এক মাস্তানি। আমরা হলঘরের ভেতরে ঢুকলাম। হুমায়ূন স্যার ডাক দিলেন, 'সাবের?' মইনুল আহসান সাবের তাকালেন, তাদের চোখাচোখি হলো,তারা দোতলায় চলে গেলেন কিছুক্ষণের জন্যে। ততক্ষণে নিচতলাতেই মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে।
একদিন দেখলাম, ফরহাদ মজহারও লুঙ্গি-ফতুয়া পরে ঢাকা ক্লাবে ঢুকতে গিয়ে গণমাধ্যমের সংবাদ হলেন। আমি নিশ্চিত, আজকে যদি রবীন্দ্রনাথ বা কবি লালন ফকিরও যদি ঢুকতে চান এই ক্লাবে, ড্রেসকোডের কারণেই তারা ঢুকতে পারবেন না। ১৯৪৭ সালেই ব্রিটিশরা চলে গেছে। কিন্তু কিছু চরম হাস্যকর ব্যাপার এখনো রয়েই গেছে। জানি না, মননে ঔপনিবেশিকতা কত বর্ষে যায়, যাবে?
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৫৪
মিজভী বাপ্পা বলেছেন:
৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৪৭
*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: ২০০ বছরের গোলামীর রক্ত এত সহজে কি আর পরিষ্কার হয়! দেখেননা বাজারে রঙ ফর্সাকারী ক্রিমের কত জমজমাট ব্যবসা!!
৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৫২
মাহবু১৫৪ বলেছেন: +++
৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:১৯
htusar বলেছেন: ভাল বলেছেন
৬| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:৩৫
ঝটিকা বলেছেন: দারুন কাহীনি তো! আপনি দেখছি অনেক অভিজ্ঞতার ভান্ডারে ভরা। আমাদের সাথে আরো কিছু শেয়ার করেন।
৭| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৩৭
ভাঙ্গাচুরা যন্ত্রপাতি বলেছেন: *কুনোব্যাঙ* বলেছেন: ২০০ বছরের গোলামীর রক্ত এত সহজে কি আর পরিষ্কার হয়! দেখেননা বাজারে রঙ ফর্সাকারী ক্রিমের কত জমজমাট ব্যবসা!!
৮| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:২৮
পুংটা বলেছেন: জেনটেলম্যান ভাবা আর হওয়া... দুটো আলাদা জিনিস
৯| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:০২
তিক্তভাষী বলেছেন: ঢাকা ক্লাবের এই নিয়মটা না থাকলে মজাদার এই কাহিনী থেকে বঞ্চিত হতাম!
১০| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৭
শূন্য পথিক বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদকে আটকানোর জন্য দারোয়ানরা 'স্যার' স্যার' বলে দরজায় দাঁড়ালেও হুমায়ূন স্যার উল্টো একটা ধমকের সঙ্গে দারোয়ানদের ভড়কে দিলেন, বললেন, 'সরো সরো..স্যার মানে কি, স্যার আবার কি...সরো।'
হাহা! হুমায়ূন স্যার আসলে এমনই ছিলেন!
১১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৮
ছোট দা বলেছেন: Humayun Sir k miss kori :'(
১২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৫
মনিরা সুলতানা বলেছেন: যা কইছেন ...
মননে ঔপনিবেশিকতা কত বর্ষে যায়, যাবে?
১৩| ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৫৫
ঠান্ডা বরফ বলেছেন: সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা শপথ নেবার সময় এখনো সাদা পরচুলা লাগায়.........
১৪| ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:০৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ১৯৪৭ সালেই ব্রিটিশরা চলে গেছে। কিন্তু কিছু চরম হাস্যকর ব্যাপার এখনো রয়েই গেছে। জানি না, মননে ঔপনিবেশিকতা কত বর্ষে যায়, যাবে?
!
১৫| ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:১৪
লিন্কিন পার্ক বলেছেন:
মজার ঘটনা
১৬| ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৩৭
শিপু ভাই বলেছেন:
আমার কথা হইল- যাগো ক্লাব তাগো মনমতোই চলবো। আমার পছন্দ না হইলে গেলামনা সেই ক্লাবে!!!
আর হুমায়ূন আহমেদের বই থেকে জেনেছি যে, ওনাকেও ধার করা জুতা পরে ঢুকতে হয়েছে।
১৭| ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:০১
বইয়ের পোকা বলেছেন: ফরহাদ মজহারের ঘটনাটাতো পেপারেও আসছিলো। এরা নিজেদের কি ভাবে, কে জানে???
১৮| ২৫ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:০৩
আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
হায় ঢাকা ক্লাব!
হায় বাঙ্গালিয়ানা!
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৫৩
বোকামন বলেছেন: মজার স্মৃতির অংশীদার করার জন্য ধন্যবাদ । অনেক ভালো থাকবেন