নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah
ভাড়া ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বাড়ির মালিকের সাথে দ্বন্দ্বের বিষয়টি নিয়মিত ঘটনা। অনেক ক্ষেত্রেই বাড়ি ভাড়া বাড়ানো হয় অযৌক্তিকভাবে। থাকতেই হবে সেজন্য ভাড়াটেরা বাধ্য হয়ে বর্ধিত ভাড়া দিয়ে যান।
বিশেষ করে ব্যাচেলর দের জন্য করা হয় যেনতেন নিয়ম। অথচ আমাদের দেশে বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত একটি আইন রয়েছে যেটা প্রায় কেউই জানেন না।
▶বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন–১৯৯১ এর প্রয়োজনীয় কিছু অালোচনা।
▶অগ্রিম ভাড়ার বিধান:
বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯১-এর ১০ ও ২৩ ধারা মোতাবেক:
➡ কোনোভাবেই বাড়ি মালিক তার ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ এক মাসের বাড়ি ভাড়ার অধিক কোনো প্রকার ভাড়া, জামানত, প্রিমিয়াম বা সেলামি গ্রহণ করতে পারবেন না।
▶ভাড়ার রসিদের বিধান:
➡আপনার পরিশোধকৃত বাড়ি ভাড়ার রসিদ সংশ্লিষ্ট বাড়ির মালিক বা তার প্রতিনিধি দিতে বাধ্য।
▶ভাড়া বাড়ানোর নিয়ম:
➡বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৬ ধারায় স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
✔ মানসম্মত ভাড়া কার্যকরী হবার তারিখ হতে দুই বছর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
✔ দুই বছর পর মানসম্মত ভাড়ার পরিবর্তন করা যাবে।
✔এই আইনের ৮ ধারা এবং ৯ ধারায় বর্ণিত রয়েছে যে, মানসম্মত ভাড়া অপেক্ষা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অধিক বাড়ি ভাড়া আদায় করলে সে ক্ষেত্রে প্রথমবারের অপরাধের জন্য মানসম্মত ভাড়ার অতিরিক্ত যে অর্থ আদায় করা হয়েছে তার দ্বিগুণ অর্থদণ্ডে বাড়ি মালিক দণ্ডিত হবেন এবং পরবর্তী প্রত্যেক অপরাধের জন্য এক মাসের অতিরিক্ত যে ভাড়া গ্রহণ করা হয়েছে তার তিনগুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ডে বাড়ি মালিক দণ্ডিত হবেন।
▶মানসম্মত ভাড়া নির্ধারণ করা:
➡মানসম্মত ভাড়া সম্পর্কে আইনের ১৫ (১) ধারায় বলা হয়েছে,
➡ভাড়ার বার্ষিক পরিমাণ সংশ্লিষ্ট বাড়ির বাজার মূল্যের শতকরা ১৫ ভাগের বেশি হবে না।
▶বাস উপযোগী বাসস্থান দেওয়া:
➡বাড়ি মালিক তার বাড়িটি বসবাসের উপযোগী করে রাখতে আইনত বাধ্য। ➡বাড়ির মালিক ইচ্ছা করলেই ভাড়াটিয়াকে বসবাসের অনুপযোগী বা অযোগ্য অবস্থায় রাখতে পারেন না। ➡স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বসবাসের উপযোগী করে বাড়িটি প্রস্তুত রাখতে বাড়ির মালিকের উপর এই বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ২১নং ধারায় বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে।
অর্থাৎ
▶ ভাড়াটিয়াকে পানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ সরবরাহ, পয়ঃপ্রণালী নিষ্কাশন ইত্যাদি সুবিধা প্রদান করতে হবে। এমনকি প্রয়োজনবোধে লিফটের সুবিধাও দিতে হবে। কিন্তু উক্তরূপ সুবিধা প্রদানে বাড়ি মালিক অনীহা প্রকাশ করলে কিংবা বাড়িটি মেরামতের প্রয়োজন হলেও ভাড়াটিয়া নিয়ন্ত্রকের কাছে দরখাস্ত করতে পারবেন।
▶ভাড়া বাসা থেকে উচ্ছেদের পদ্ধতি :
➡ ভাড়াটিয়া যদি নিয়মিতভাবে ভাড়া পরিশোধ করতে থাকেন
এবং
➡বাড়ি ভাড়ার শর্তসমূহ মেনে চলেন তাহলে
➡ যতদিন ভাড়াটিয়া এভাবে করতে থাকবেন ততদিন পর্যন্ত উক্ত ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করা যাবে না।
➡এমনকি ১৮(২) ধারা মতে:
》 বাড়ির মালিক পরিবর্তিত হলেও ভাড়াটিয়া যদি আইনসম্মত ভাড়া প্রদানে রাজি থাকেন তবে তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না।
》চুক্তিপত্র না থাকলে যদি কোনো ভাড়াটে প্রতি মাসের ভাড়া পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করেন, তাহলেও ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করা যাবে না।
》》যুক্তিসংগত কারণে ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করতে চাইলে যদি মাসিক ভাড়ায় কেউ থাকে, সে ক্ষেত্রে ১৫ দিন আগে নোটিশ দিতে হবে।
》》 চুক্তি যদি বার্ষিক ইজারা হয় বা শিল্পকারখানা হয়, তবে ছয় মাস আগে নোটিশ দিতে হবে।
▶ভাড়া বাবদ ভাড়াটিয়ার আসবাবপত্র ক্রয়:
আইনের ১২ নং ধারায় বলা হয়েছে,
>> কোনো বাড়ি ভাড়ার জন্য বা
>>তার নবায়ন বা মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য কোনো ব্যক্তি তার আসবাবপত্র ক্রয়ের কোনো শর্ত আরোপ করতে পারবেন না। অর্থাৎ
>>কোনো বাড়ির মালিক তার বাড়ি ভাড়া বাবদ ভাড়াটিয়ার আসবাবপত্র ক্রয় করতে পারবেন না।
>> তদুপরি ভাড়া নবায়ন কিংবা মেয়াদ বৃদ্ধির শর্ত যদি বাড়ি ভাড়া চুক্তিতে থেকেও থাকে তা সত্ত্বেও ভাড়াটিয়া বাড়ি ভাড়া নবায়ন না করে, তাহলেও বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়ার আসবাবপত্র আটক বা ক্রয় করতে পারবেন না।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইনের প্রয়োগ হবে না ভেবে বেশিরভাগ মানুষ এরকম হয়রানিগুলো মেনে নেন।অথচ, প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সবাই সচেতন হলে এ ধরণের সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
বাড়িভাড়া সংক্রান্তে সংক্ষুব্ধ পক্ষ আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন। বিশেষ করে ভাড়াটিয়ারা চাইলে উচ্ছেদ এড়িয়ে আদালতের মাধ্যমেও মাসিক ভাড়া দিতে পারেন আবেদন করে। অবশ্য তার জন্য নির্ধারিত পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়।
এডভোকেট এম টি উল্যাহ
০১৭৩৩৫৯৪২৭০
২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৭
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ভাড়ার বার্ষিক পরিমাণ সংশ্লিষ্ট বাড়ির বাজার মূল্যের শতকরা ১৫ ভাগের বেশি হবে না। এই ধারার কাড়নে বাড়িওয়ালারা ইচ্ছা মত ভাড়া বাড়ায়। খেয়াল করে দেখুন- বাড়ির মূল্য যদি ১০ কোটী টাকা হয় এই টাকা ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে প্রায় সাত বছরে মালিক ভাড়া হিসাবে আদায় করে নিতে পারবে।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশে একজন মানুষের প্রচুর টাকা থাকলে আইন কোনো ব্যাপার না।