নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সামাজিক আন্দোলন ও রাজনীতি; সংকট কিসের?

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০৩

যে কোন অধিকার প্রতিষ্ঠা, সুরক্ষা ,সচেতনতা কিংবা সামাজিক পরিবর্তনের তাগিদে শক্তিশালী সামাজিক আন্দোলনের উপস্থিতি আবশ্যক। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশে সুশীল সমাজ এবং স্বেচ্ছাসেবী-সামাজিক সংগঠনের সমন্বয়ে কার্যকর আন্দোলনের উপস্থিতি লক্ষণীয়। বিভিন্ন নামে,বিভিন্ন রুপে ,স্ব স্ব সুনির্দির্ষ্ট উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের তাগিদে তারা যুগের পর যুগ,শতকের পর শতক কাজ করে যাচ্ছে। সফল হচ্ছে। টিকে আছে।

পক্ষান্তরে, আমাদের দেশে সামাজিক আন্দোলন একটা সময় প্রবল জনপ্রিয়তা লাভ করলেও পর্যায়ক্রমে নানা ধরনের সংগঠনের বিস্তৃতি লাভ করলেও কমেছে গ্রহণযোগ্যতা। সামাজিক সংগঠনগুলো কোন সুনির্দির্ষ্ট সামাজিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেয়ে যখন রাজনৈতিক আনুগত্য কিংবা নেতৃত্ব দানকারীদের রাজনৈতিক উচ্চ বিলাসিতা প্রাধান্য পেয়ে যায় কিংবা রাজনৈতিক বিতর্কের লেবাস জড়িয়ে দেওয়া গেলে তখন তারুণ্য বিদ্রোহ করে । সরে যায়। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের সচেতন তরুণ সমাজের বৃহৎ একটি অংশ চরমভাবে রাজনীতি বিমুখ। তারা রাজনৈতির বাহিরে কোন প্লার্টফর্মে কাজ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে,সুযোগ খুঁজে বেড়ায়। এটাই তারুণ্যের চাহিদা।

তাই কোন সামাজিক, মানবাধিকার কিংবা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শুরুতে ব্যাপক সাড়া কিংবা জাগরণ সৃষ্টি করতে পারলেও তা ধরে রাখতে না পারার কারণে অগ্রণযোগ্য হয়ে পড়ে। ফলাফল হিতে বিপরীত হয়। আমাদের জাতীয় পর্যায়ে কিছু আন্তর্জাতিক সংগঠনের অঙ্গসংগঠন থাকলেও , ব্যক্তিগতভাবে আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকেও দেখেছি এমনটা। নেতেৃত্ব দানকারীদের অসৎ কিংবা রাজনৈকতক উচ্চবিলাসিতার চিত্র যখন সামনে চলে আসে কিংবা রাজনৈতিক ব্যক্তি/সংগঠনের আনুগত্যের আধিক্যতার চিত্র অত্যন্ত লজ্জাজনক। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এমন সংগঠনগুলোর ভূমিকা অনেকাংশে প্রশ্নবিদ্ধ হয়। যার ফলে , কেউ এটার সাথে খাপ খেয়ে যায় এবং এ পথেই এগিয়ে চলতে থাকে কেউবা বরং সরাসরি রাজনীতি করাটাকেই উত্তম মনে করে আর বিশাল অংশ বিরক্ত হয়ে সরে দাঁড়ায় এবং তাদের মনে চিরস্হায়ী ঘৃণা তৈরী করে।

যার একটি উদাহরণ এমন “একদিন একটি গ্রামে একটি বিমান আছড়ে পড়ল। গ্রামবাসী বিমানের সকল যাত্রীকে মৃত ভেবে কবর দিয়ে দিল। সেই বিমানে বাংলাদেশের এক সুশীলও ছিল। এখন এই খবর পেয়ে সাংবাদিকরা সেই গ্রামে গেল খবর সংগ্রহ করতে। ওই গ্রামের সবচেয়ে গন্য-মান্য ব্যক্তি কে প্রশ্ন করল, “সকল যাত্রীই মারা গেছে, এই ব্যাপারে কি আপনারা নিশ্চিত?”
লোকটি বলল,“কবর দেওয়ার সময় যদিও সুশীল শ্রেণীর দাবি করে একজন বলছিলেন যে উনি জীবিত। কিন্তু সুশীল বলায় তাকে বিশ্বাস করি নাই। কবর দিয়া দিছি!

ঘটনার গভীরে গিয়ে যদি আমরা দেখি এমনটা কেন হচ্ছে? সামাজিক সংগঠনের আদলে কাজ করার কিংবা সামাজিক সংগঠনের সাথে কাজ করার দৃঢ়তা কেন ঠিকে থাকতে পারছে না? যারা সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব দেয় তারা কেনই বা রাজনৈতিক আনুগত্যের পিছনে ছুটে? নাকি রাজনীতিই এসবকে গ্রাস করে? প্রভাবিত করে? কিংবা তারুণ্যের রাজনৈতিক বিমুখতার কারণ কি? রাজনীতি কি যে কোন সামজিক আন্দোলনের/পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ নিতে পারে না? সমাজের মেধাবীরা কি রাজনীতিক করার চ্যালেঞ্জ নিতে পারে না? রাষ্ট্রবহির্ভূত সংগঠন, রাজনৈতিক দলের বাইরে অবস্থান এবং ঘোষিত কর্মসূচির পক্ষে প্রকাশ্য ও স্বচ্ছ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেই বা সামাজিক/সুশীলরা সাহস পান না? সুশীল সমাজ তার মেধা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও শক্তি কেন অদৃশ্যে রাজনীতির পিছনে ব্যবহার করবে? রাজনৈতিক আদর্শের চর্চার সংকটের সুযোগটা তারা নিচ্ছেন না তো? সুরক্ষিত ক্ষমতাবানদের পক্ষে তদবির করা কিংবা ক্ষমতাহীন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্যও লড়াই করা ভিন্ন জিনিস।

তাই সামাজিক গণমাধ্যম ছাড়া তারুণ্যের আস্হার জায়গা আর নেই বললেও চলে। সুর্নিদির্ষ্ট প্লাট ফরমের (সামাজিক/রাজনৈতিক) সংকট বিদ্যমান থাকায় সামাজিক মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে সংগঠিত এ দশকের আন্দোলনের চিত্র তাই বলে।

সামাজিক সংগঠনের স্হায়ী সামাজিক সংকট সমাধানে সচেষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতৃত্বেরও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করা উচিত। তাতেই চেঞ্জ আসবে। কারণ দিনশেষে চেঞ্জ এর চাবিকাঠি রাজনীতির হাতেই। আর আমাদের নেতৃত্ব যেন নিম্নে কৌতুকের মতো না হয় এ কামনাই শেষ করছি “সংসদের গেটের সামনে ভাঙাচোরা একটা সাইকেলে তালা মেরে রেখে যাচ্ছিল এক লোক। তা দেখে হুট হাট করে ছুটে আসে সংসদের দারোয়ান। সরকারি কর্মচারী বলে কথা। সেই একটা ভাব নিয়ে ধমকের সুরে লোকটিকে বলল, ‘ওই ব্যাটা, এখানে সাইকেল রাখছিস কী বুঝে? জানিস না, এ পথ দিয়ে মন্ত্রী-মিনিস্টাররা যান??’
লোকটা একগাল হেসে জবাব দিল, ‘কোনো সমস্যা নাই ভাইজান, সাইকেলে তালা মাইরা দিছি!”

মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ (MT Ullah)
আইনজীবী ও লেখক
[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: একটি গ্রামে বিমান আছড়ে পড়লো - এই কৌতুক টা আগে পড়েছি।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৬

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.