নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেম্বার-চেয়ারম্যানরা চোর আর আমরা সাধু!

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৯

করোনার উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতিদিন বাড়িতে সাহায্যপ্রার্থী মানুষজন আসে। বিশেষ করে মহিলারা। চেষ্টা করি তাদের সাথে আলাপ করে নিতে। সম্ভব হলে স্ব-স্ব স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে তাদের আবদার শেয়ার করি সাহায্য প্রার্থীর সামনেই। একদিন দেখি আমার বাড়ি থেকে দশ মাইল দূরেরও এক মহিলা সাহায্যের জন্য আসছে রমজান মাসে। মেম্বার- চেয়ারম্যানদের কথা বলাতেই মহিলাটি আর মুখের সংযম রক্ষা করতে পারলেন না।

ঠিক পরের দিনও এক বয়স্ক ভদ্র মহিলা এসেছেন। আমি তাকে পূর্ব থেকেই চিনতাম। আবার একই কাহিনী। মেম্বার- চেয়ারম্যানের কথা বলতেই তিনি সংযম হারিয়ে ফেললেন। অভিযোগ করছেন গরীবের হক মেরে খাওয়ার। আমি বললাম, মেম্বার- চেয়ারম্যান সাহেবদেরকে বকা দিচ্ছেন কেন, আপনার পাশের বাড়ির হাজী সাহেব আর আপনার খালতো বোনের ছেলে মাস্টার সাহেবও তাহলে গরীবের হক মারার সাথে জড়িত । উনি মন খারাপ করে কথা না বাড়িয়ে মা'র দেওয়া সাহায্য নিয়ে চলে গেলেন।

মা আমাকে বকা দিলেন। বললেন, বেশি কথা বলছ। স্বাভাবিকভাবেই মেম্বার- চেয়ারম্যান এর সাথে হাজী সাহেব আর মাষ্টার সাহেবকে জড়ানোতে ওনাদের খারাপ লাগছে। যে কারোরই লাগার কথা।
কিন্তু আইন কি বলে? বিচার হলে শুধু চোর নয় সহযোগিদেরও হতে হবে। অভিযোগ ওঠলে শুধু মেম্বার-চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে কেন, ইচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায় হোক তাদের কাজের সহিত সম্পৃক্ত দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বাদ যায় কেন!

বিষয়টি আরো সহজ করে বলি, আমরা সাধারণত ত্রাণ সহ সরকারি সহায়তার বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার নয়ছয় হলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে আত্মসাৎ এর অভিযোগ করে থাকি। অথচ, দেশের প্রতিটা ইউনিয়নে "মানবিক সহায়তা কমিটি" নামে একটা বডি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সভাপতি, সদস্য হিসেবে ওয়ার্ড সমূহের মেম্বারগণ এবং ১৭ জন বিশিষ্ট ক্যাটাগরির ব্যক্তিবর্গ ( শিক্ষক-১ জন, মুক্তিযোদ্ধা-১ জন, ইমাম/যাজক/ পুরোহিত -২জন, সমাজের বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তি -২ জন, এনজিও প্রতিনিধি ৩ জন, কৃষক/ মৎস্যজীবী -২ জন, ১ জন করে আনছার ও ভিডিপি প্রতিনিধি, ইউ. পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, রেড ক্রিসেন্ট প্রতিনিধি, সিপিপি প্রতিনিধি, দুঃস্থ মহিলা এবং ইউ. পরিষদ সচিব) সহ এ কমিটি গঠিত হয়।

এবং সরকার নিয়মিত/অনিয়মিতভাবে (কিছু নিয়মিত স্বল্প পরিসরে, কিছু জরুরি পরিস্থিতিতে বৃহৎ পরিসরে) দুঃস্থ, হতদরিদ্র, কায়িক শ্রমের উপর নির্ভরশীল কর্মহীন, সাময়িক সংকটে পতিত (Lean period) বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত শ্রমজীবী মানুষকে এবং
জরুরি ভিত্তিতে ঘোষিত যে কোন প্রকার মানবিক সহায়তা প্যাকেজ প্রদান করে। যার মধ্যে ভিজিএফ (খাদ্য সহায়তা) , জিআর ( নগদ অর্থ সহায়তা) , জিআর (টেউটিন সহায়তা) , জিআর (শীতবস্ত্র সহায়তা), জিআর ( গৃহ বাবদ নগদ মজুরী সহায়তা ) অন্যতম। আর এ সকল সহায়তার নিমিত্তেই " ইউনিয়ন মানবিক সহায়তা কমিটি"।

এলাকার কারা সাহায্য পাওয়ার যোগ্য সে তালিকা প্রণয়ন,যাচাই-বাচাই সহ মানবিক সহায়তা বাস্তবায়নে এই কমিটির মাধ্যমে করাই হচ্ছে বিধান। অর্থাৎ মানবিক সহায়তা কমিটির সদস্যরা ওতপ্রোতভাবে বিষয়টির সাথে সম্পৃক্ত। তাহলে কোন অনিয়ম হলে তাহলে তারা কেন জবাবদিহিতার উর্ধ্বে থাকবে!
এমন কয়েকজনকে আমি জিঞ্জাসা করলে কেউ কেউ বলে, আমাদের নিকট থেকে শুধু স্বাক্ষর নিয়ে যায় কাজ শেষে!, সিস্টেমে নিজের মতো করে অধিকাংশ সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়ে মিটিংয়ের কোরাম করে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়! এটা কোন যৌক্তিক কথা? তাহলে আপনারা কি দায়িত্বে থেকেও দায় এড়াতে পারেন?। মেম্বার- চেয়ারম্যান সাহেবরাই শুধু চোর হয়ে যাবেন আর আমরা সাধু থেকে যাবো!

আসুন শুধুমাত্র কাউকে একচেটিয়া দোষারোপ না করে নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে নিশ্চিতের পাশাপাশি তথ্য প্রবাহের মাধ্যমে জনসেবা নিশ্চিত করি। প্রাতিষ্ঠানিক বডিগুলোকে জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে আনতে ভূমিকা রাখি। আমার/আপনার কর এ প্রদত্ত সরকারি সহায়তা যথাযথ সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণে সচেষ্ট হই। সিস্টেম ঠিক হলে দুর্নীতি রোধ ও সেবার সুষ্ঠু বন্টন সয়ংক্রিয়ভাবেই সম্ভব।

** এম টি উল্যাহ পেশায় একজন আইনজীবী ও কথাসাহিত্যিক।
[email protected]

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:২৪

অনল চৌধুরী বলেছেন: ব্যাতিক্রম ছাড়া এদেশের প্রতিটা লোক চোর-ঘুষখোর-দুর্নীতিবাজ।
কেউ সুযোগ পায় আর কেউ পায়না।
পেলে কেউই কোনো অপকর্ম করতে ছাড়ে
না।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৪

এম টি উল্লাহ বলেছেন: Exactly

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৩৭

শাহ আজিজ বলেছেন: এম টি উল্লাহ , মাথা পচে গেছে দাদা , মাথা পচে গেছে ।

আসুন একটু অন্যদিকে নজর দিই । ঘোড়াঘাটে ইউ এন ও কে কেন আহত করল তা বেমালুম চেপে যাওয়া হচ্ছে বরং আসামির নানাবিধ বিষয় সামনে আসছে । এখানে আসাদুল আর হাজি সাহেব দুজনেই খুনি ।

৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি অন্ধ হয়ে গেছেন।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৪

এম টি উল্লাহ বলেছেন: Keno vi!

৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫৩

দারাশিকো বলেছেন: এ ধরনের মানবিক কমিটিগুলো কিভাবে গঠিত হয় তা বুঝতে পারি। সাধারণত মেম্বার-চেয়ারম্যানদের আশেপাশের সুবিধাভোগী লোকজনরাই এ ধরনের কমিটির মেম্বার হয়। তারা হয়তো সরাসরি চুরি-জালিয়াতির সাথে জড়িত থাকেন না, কিন্তু বাধাও দেন না। তারা সুবিধা পান অন্য জায়গায়। কিন্তু অপরাধ বিবেচনায় কি মেম্বার-চেয়ারম্যানদের তুলনায় কমিটির মেম্বাররা সমান দোষী? কখনোই নয়। এ ধরনের কাজে মূল দোষী অবশ্যই মেম্বার-চেয়ারম্যান। মেম্বার-চেয়ারম্যান চুরি-দখলের সাথে জড়িত নেই, অথচ অন্যরা এই কাজ করছে - এমনটা দেখেছেন? দলের পান্ডা যে তার নামই তো সবার আগে আসা উচিত। তা না করে, 'মানবিক কমিটি' ত্রাণ লুটপাটের সাথে জড়িত বলার মাধ্যমে পান্ডাকে রেহাই দেয়ার পথ খুলে দেয়া হয়।

আর মানবিক কমিটির সদস্যরা বাধা না দেয়ার কারণে যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে অপরাধী আমি-আপনি আমরা সবাই। সমাজের চিহ্নিত বাটপার, লোভী, শয়তানগুলোকে তো আমরাই নির্বাচিত করে মেম্বার-চেয়ারম্যানের আসনে বসাই, নাকি?

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৪

এম টি উল্লাহ বলেছেন: তাও ঠিক

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.