নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সম্পত্তি রক্ষায় যেভাবে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করবেন

২৪ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:২২


নিষেধাজ্ঞা হল একটি বিচার বিভাগীয় কার্যক্রম যেখানে কোন পক্ষকে নির্দিষ্ট কোন কাজ করা বা করা হতে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, মামলা চলাকালীন সময়ে বিবাদী যাতে মামলার বিষয়বস্তুর হস্তান্তর বা কোন প্রকার পরিবর্তন বা রূপান্তর ঘটাতে না পারে অথবা অথবা অন্য কোন ভাবে মামলার বিষয়বস্তুর কোন ক্ষতি সাধন করতে না পারে, সেই জন্য মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিবাদীকে এইরুপ কাজ করা হতে বিরত থাকার জন্য সাময়িকভাবে যে আদেশ দেওয়া হয় তাকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বলে।

১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার (The Specific Relief Act, 1877) আইনের ৫৩ ধারা অনুসারে, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা (Temporary Injunction) হল এমন এক ধরণের নিষেধাজ্ঞা যা একটি নির্দিষ্ট সময় বা আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকে। মামলা চলা কালীন সময়ে মামলার যে কোন অবস্থায় এই নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়। এই নিষেধাজ্ঞা জারীর বিধান দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের আদেশ ৩৯ (order 39) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

তার মানে কেউ আপনার স্থাবর বা অস্থাবর জমি-জমা সহায় সম্পত্তি অন্যায়ভাবে দখল করতে চাইলে কিংবা বেদখল হওয়ার আশংকা সৃষ্টি হলে কিংবা আপনার দখলকৃত জায়গা কেউ অন্যত্র বিক্রির চেষ্টা করলে কিংবা শরীকান সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা বাদেই কেউ বিক্রির অপচেষ্টা করলে আপনি এসকল কাজ বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেন। নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য মামলা আনায়ন করা হলে তা নিষ্পত্তি হওয়াটা সময় সাপেক্ষ বিধায় মামলা করার সময়েই কিংবা মামলা বিচারকালীন যে কোন সময় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার দরখাস্ত আদালতে আনায়ন করা যায়।

অন্যদিকে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মামলা আদালতে স্বাভাবিক মামলার মতোই পরিচালিত হয়। বাদীর অধিকারের বিপরীত কোনো কাজ থেকে বিবাদীকে চিরকালের জন্য বিরত থাকার নির্দেশ। এ নিষেধাজ্ঞা মামলার শুনানির পর প্রদত্ত ডিক্রির মাধ্যমে মঞ্জুর করা হয়। স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অনন্তকালের জন্য চলতে পারে। মামলার রায় চূড়ান্ত আদেশ হওয়ার পর এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।

মামলা চলাকালীন সময়ে বিবাদী যাতে মামলার বিষয়বস্তু হস্তান্তর বা কোন প্রকার রূপান্তর ঘটাতে না পারে সেই জন্য মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিবাদীকে এই কাজ হতে বিরত থাকার জন্য সাময়িকভাবে যে আদেশ দেয়া হয় তাকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বলে।

মামলায় জড়িত কোনো পক্ষ কর্তৃক মামলা সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি বিনষ্ট, ধ্বংস বা হস্তান্তর হওয়ার আশংকা দেখা দিলে অথবা কোনো ডিক্রি জারির দরুন বেআইনিভাবে বিক্রয় হওয়ার উপক্রম হলে অথবা বিবাদী তার পাওনাদারকে প্রতারিত করার উদ্দেশ্যে তার সম্পত্তি অপসারিত বা হস্তান্তরিত করার ইচ্ছা প্রকাশ বা হুমকি প্রদর্শন করলে আদালত অনুরূপ কাজ রোধ করার জন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিতে পারেন।

অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা বা না করার ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা রয়েছে, যেগুলো আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার দরখাস্ত মঞ্জুরের ক্ষেত্রে বিবেচনা করবে। সেগুলো হলোঃ-

১) বাদীর আপাতঃ দৃষ্টিতে একটি মামলা (Prima facie case ) আছে কিনা, আদালত তা বিবেচনা করবেন। পক্ষগণের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিচার্য বিষয় থাকতে হবে।
২) মামলায় বাদীর জয় লাভের সম্ভাবনা থাকলে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করবেন।
৩) বাদীর অপূরণীয় ক্ষতি (Irreparable loss) হবার সম্ভাবনা আছে কি না আদালত তা বিবেচনা করবেন।
৪) অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারীর ক্ষেত্রে আদালত বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষের সুবিধা অসুবিধা (Balance of convenience and inconvenience of the parties ) বিবেচনা করবেন।
৫) অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা পেতে হলে বাদীকে পরিষ্কার হাতে আদালতে আসতে হবে।
৬) মামলার বহুতা রোধ কল্পে (multiplicity of suit) আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করতে পারেন।
৭) বাদীর আচরণ (the conduct of applicant) আদালত বিবেচনা করবেন।

- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
আইনজীবী
০১৭৩৩৫৯৪২৭০

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:৩০

প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: প্রয়োজনীয় লেখা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.