নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ; রাজনৈতিক জীবনের আদ্যোপান্ত

২৮ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১০:০৩



কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকাকালে ১৯৫৫ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ কারাবরণ করেন। বয়স ছিল তখন ১৬ কি ১৭। বলতে গেলে তখন থেকেই শুরু তাঁর হয় রাজনৈতিক জীবন। ১৯৫৬ সালে যখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের অনার্সের ছাত্র, তখন মিশরের উপর বৃটেন এবং ফ্রান্সের যৌথ আক্রমনের প্রতিবাদের মিছিলে পুলিশ তাঁকে নির্মমভাবে আহত করে। যাহার ফলে এক বছর চিকিৎসাধীন ছিলেন, শরীরের একটি অংশ অবশ হয়ে গিয়েছিল। সে আঘাতের ব্যথা বৃদ্ধ বয়সে আবার দেখা দেয় এবং আমৃত্যু তিনি ভোগ করেছেন। ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন পরিচিত ছাত্রনেতা ছিলেন। ১৯৬১ সালে লন্ডনে আইন পড়তে গিয়া আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলেন এবং ১৯৬৫ সালের স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান আন্দোলনে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ব্যারিষ্টারী পাশ করে দেশে ফেরার পর ১৯৬৭ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য Defence Team কমিটি করেন এবং তাঁর সিনিয়র প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক আইনজীবী স্যার টমাস উইলিয়ামসকে ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করেন এবং তাঁর এই আগমন এবং মামলা পরিচালনা আইয়ূব বিরোধী গণ আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। প্রায় ১৯ মাস চলার ফলে একটি গণ আন্দোলনের মুখে ১৯৬৯ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি আগর তলা ষড়যন্ত্র মামলা নিঃশর্তভাবে প্রত্যাহার করে নিলে বাংলাদেশের মানুষ একজন এক নেতা হিসাবে শেখ মুজিবুর রহমানের আবির্ভাব ঘটে। আগরতলা মামলার আইনজীবী হিসেবে মওদুদ আহমদ কোন ফি নেন নি। তাঁর একজন আইনজীবী এবং অরাজনৈতিক অবৈতনিক সচিব হিসাবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ শেখ মুজিবর রহমান সাহেবের সাথে থেকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি তখন রাওয়াল পিন্ডিতে গিয়েছিলেন, আয়ূব খানের সাথে দুই দফা গোল টেবিল বৈঠক করার জন্য।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ প্রবাসী সরকারের বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগ গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। কালকাতার তখনকার মিশনে ৯ নং সার্কাস এভিনিউতে বিদেশে জনমত সৃষ্টি করার জন্য “বাংলাদেশ” নামে ইংরেজী মুখপত্রটি নিয়মিত প্রকাশ করার দায়িত্ব ছিল তাঁর উপর, ২৫০ জনের উপর বিদেশী সাংবাদিকদের ব্রিফ করা, বিলেত থেকে ডাকটিকিট ছাপিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রথম ডাকঘর প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাঁকে দেশেরর প্রথম Post Master General আখ্যায়িত করা হয়। যুদ্ধ কালীন ৯ মাস এক কাপড়ে সোফায় শুয়ে রাত কাটিয়েছিলেন কালিকাতার মিশন অফিসে।
স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে আবার আইন ব্যবসায় ফিরে যান তিনি। ১৯৭৩ সালের শেষের দিকে দেশে অত্যাচার নির্যাতন এবং রক্ষী বাহিনীর নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জরুরী আইন ঘোষণার পরের দিনই ১৯৭৪ সালের ২৯শে ডিসেম্বরে, এই সংগঠনের সম্পাদক হিসাবে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিনা বিচারে তিনমাস কারাগারে রাখা হয়। ১৯৭৭ সালের ডিসেম্বর শহীদ জিয়া দেশে গণতন্ত্র পুণঃ প্রতিষ্ঠায় তাঁকে সাহায্য করার আহ্বান জানালে তিনি সরকারের টেলিযোগাযোগ উপ-মন্ত্রী হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৭৯ সালে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ৩৯ বছর বয়সে উপপ্রধান মন্ত্রী হন এবং বিদ্যুৎ, পানিসম্পদ এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
১৯৮২ সালে যখন জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করেন তখন মওদুদ আহমদ বিচারপতি সাত্তারের মন্ত্রীসভার সদস্য ছিলেন না, কিন্তু তারপর সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করার প্রায় ৮ মাস পর তাঁকে গ্রেফতার করা মন্ত্রীসভার অন্যান্য সদস্যদের সাথে একটি তুচ্ছ অভিযোগে সামরিক আদালতে শাস্তি দিয়ে সেটা পরে রিভিউতে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মতই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করিবার লক্ষ্যে তাকে সাহায্য করার জন্য আশ্বাস জানালে মওদুদ আহমদ সাহেব সরকারে যোগদান করলে তাঁকে সড়ক, জনপথ, রেলওয়ে, পরিকল্পনা, আইন, পার্বত্য বিষয়ে এবং শিল্প মন্ত্রী হিসাবে রাখা হয় এবং একই সরকারে প্রায় দেড় বছর দেশের প্রধান মন্ত্রী এবং ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের উপ-রাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনি। তারপর একটানা দশ বছর বিরোধী দলে থাকার পর ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের আইন মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১/১১ এর পরবর্তী তিনি প্রায় আড়াই বছর কারাবন্দী থাকেন। সর্বশেষ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ছয় বার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯১ সালে জেলে থাকাবস্থায়ও নির্বাচিত হন। ৩০ বছর এলাকার মানুষের অঞ্চলের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। বাংলাদেশের অনেক জেলা সদরের চাইতেও তুলনামুলকভাবে তার নর্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের কাজ অনেক বেশী হয়েছে। অসংখ্য বেকার যুবকের জন্য দেশ বিদেশে চাকুরীর সংস্থান করে দিয়েছেন এবং হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রীর জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করেছেন।
তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড বিশবিদ্যালয় এবং হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো, স্যার জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে Visiting Professor হিসাবে অধ্যাপনা করেছেন। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার উপর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রচিত অনেক মূল্যবান গ্রন্থ রয়েছে। ( সংক্ষেপিত)

-মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
আইনজীবী
[email protected]

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুলাই, ২০২২ ভোর ৪:১০

জগতারন বলেছেন:

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাহেব একজন নোয়াখাল্লা মাল।
তিনি কতবার রাজনৈতিক দল বদলায়ে পল্টি মেরেছিলেন।
টাকা ক্ষমতার মোহে তিনি কি কি করেছিলেন সেই সমস্ত কথা
এখানে উল্লেখ করার দরকার ছিল।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নোয়াখাইল্লা চরিত্রের জন্য
শেষ জীবনে যে অপাঙ্কতেয় হয়ে মরেছেন এ সমস্ত কথাও এখানে বলা উচিৎ ছিল।

২| ২৯ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:৫৬

নতুন বলেছেন: উনার নিতি সম্ববত সব সময় সরকারী দলে থাকা।

উনি দল পাল্টাটেন কিন্তু নীতি পাল্টাতেন না :)

৩| ২৯ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:২৪

সোনাগাজী বলেছেন:



লোকটা ভুয়া ছিলো।

৩১ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৩৫

এম টি উল্লাহ বলেছেন: বুঝিয়ে বলুন

৪| ০১ লা আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:০৫

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: বিশ্ব বাটপার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.