নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শ্রম আদালতে মামলা, বকেয়া মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের নিয়ম

৩০ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৪৯


বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর অধীনে যত অপরাধ রয়েছে, তার প্রতিটি অপরাধের বিচারের জন্য শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করার বিধান রয়েছে। শ্রমিক নিয়োগ, মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে সম্পর্ক, সর্বনিম্ন মজুরীর হার নির্ধারণ, মজুরী পরিশোধ, কার্যকালে দুর্ঘটনাজনিত কারণে শ্রমিকের জখমের জন্য ক্ষতিপূরণ, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, শিল্প বিরোধ উত্থাপন ও নিষ্পত্তি, শ্রমিকের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, কল্যাণ ও চাকুরীর অবস্থা ও পরিবেশ এবং শিক্ষাধীনতা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সম্পর্কে এই আইনে বর্ণিত রয়েছে। শ্রম আদালতের দেওয়ানী এবং ফৌজদারি উভয় ধরনের এখতিয়ার রয়েছে, সেহেতু এখন ভিকটিম যেভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হোক না কেন, ন্যায় বিচারের জন্য অবশ্যই শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবেন।

তাহলে শ্রম আদালতে কি কি বিষয়ে মামলা দায়ের করা যায়?
মজুরী বকেয়াি থাকলে, কার্যকালে দুর্ঘটনাজনিত কারণে শ্রমিকের জখমের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রাপ্ত না হলে, বীমা সুবিধার আওতায় থাকলে তা না প্রাপ্ত হইলে, নোটিশ ছাড়া চাকরিচ্যুত করলে, আইনের বিধানের খেলাপ করে মজুরি কর্ত না করা,গ্রাচুইটি বা ভবিষ্য তহবিলের প্রাপ্য পরিশোধে বিলম্বে ঘটে, বকেয়া থাকা অবস্থায় যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে এমন সব বিষয়ে একজন শ্রমিক বা তার উত্তারাধিকরারা শ্রম আদালতের আশ্রয় নিতে পারবেন।

কীভাবে মামলা দায়ের করা যায়?

শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করার আগে মালিক পক্ষকে নোটিশ প্রদান করতে হয়। নোটিশের নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি নিজে অথবা আইনজীবীর মাধ্যমেও মামলা দায়ের করতে পারেন। প্রত্যেক মামলার নির্ধারিত কোর্ট ফি রয়েছে।

কত দিনের মধ্যে মামলা দায়ের করতে হয়?

মজুরী প্রদেয় হওয়ার তারিখ হইতে বারো মাসের মধ্যে পেশ করিতে হইবে। তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ কোন দরখাস্ত উক্ত সময়ের পরেও পেশ করা যাইবে যদি দরখাস্তকারী শ্রম আদালতকে এই মর্মে সন্তুষ্ট করিতে পারেন যে, উক্ত সময়ের মধ্যে দরখাস্ত দাখিল না করার পিছনে তাহার যথেষ্ট কারণ ছিল।

মজুরী প্রাপ্ত হন নাই অথবা মজুরী কর্তন হইয়াছে এইরূপ শ্রমিকদের পক্ষে দাবী আদায়ের জন্য একটি মাত্র দরখাস্ত

মজুরী প্রাপ্ত হন নাই অথবা মজুরী কর্তিত হইয়াছে এইরূপ শ্রমিকদের পক্ষে অর্ন্তভুক্ত সকল অথবা একাধিক শ্রমিকের পক্ষে সবাই মিলে একটি দরখাস্ত দাখিল করতে পারবে।

মৃত বা নিখোঁজ শ্রমিকের অপরিশোধিত মজুরি পরিশোধ করা পদ্ধতিঃ
কোনো শ্রমিককে মজুরি হিসাবে প্রদেয় সকল অর্থ তাহার মৃত্যুজনিত কারণে অথবা তাহার কোনো খোঁজ না পাওয়ার কারণে যদি পরিশোধ করা না যায়, তাহা হইলে—
(ক) বিধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তিকে অথবা মৃত শ্রমিকের আইনগত উত্তরাধিকারী বা উত্তরাধিকারীগণকে তাহা প্রদান করা হইবে; বা
(খ) উক্তরূপ কোনো মনোনীত ব্যক্তি বা উত্তরাধিকারী না থাকিলে অথবা পরবর্তী ১২ (বারো) মাসের মধ্যে কোনো কারণে উক্তরূপ কোনো মনোনীত ব্যক্তি বা উত্তরাধিকারীকে উহা প্রদান করা সম্ভব না হইলে প্রদেয় অর্থ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের ‘শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল’ এ জমা প্রদান করিতে হইবে।
= ‘শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল’ এ অর্থ জমা প্রদানের তারিখ হইতে পরবর্তী ১০ (দশ) বৎসরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মনোনীত ব্যক্তি বা উত্তরাধিকারীর খোঁজ না পাওয়া গেলে জমাকৃত অর্থ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের নিজস্ব অর্থ বলিয়া বিবেচিত হইবে।

চাকরিচ্যুত শ্রমজীবীর যদি মামলা পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে সেক্ষেত্রে করণীয়:

শ্রমিকদের অর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে সরকারিভাবে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেওয়া হয়। দেশের
প্রত্যেক আদালতে এ সুবিধা রয়েছে। এর প্রধান কার্যালয় রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ে শ্রম ভবনের ছয় তলা।

প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরির ক্ষেত্রে মামলা করা যাবে?

অবশ্যই। পদচ্যুত করতে হলে তিন মাস আগে নোটিশ দিকত হয়। তা না দিলে চাকরিচ্যুত হলে পাওনা বাকি থাকলে প্রথমে মালিক পক্ষ বরাবর আবেদন জানাতে হবে। তাতেও পরিশোধ না করলে তাহলে শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।

বেতন বকেয়া থাকা অবস্থায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে করণীয়:

মালিককে পাওনা পরিশোধে প্রথমে লিগ্যাল নোটিশ দিতে পারেন। নোটিশের পর পরিশোধ না করলে আপনি শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করে প্রাপ্য আদায় করতে পারেন।

গর্ভকালীন সময়ের বিধানঃ

গর্ভকালীন সময়ে শ্রম আইন ২০০৬ অনুসারে একজন নারী শ্রমিক মা হওয়ার সময় মোট ১১২ দিন মজুরি
ও অন্যান্য সুবিধাসহ ছুটি পাবেন। নারী শ্রমিক বাচ্চা হওয়ার আগে ৫৬ দিন বা ৮
সপ্তাহ ছুটি পাবেন। বাচ্চা হওয়ার পরও ৫৬ দিন বা আট সপ্তাহ ছুটি পাবেন। এ ছাড়া ওই নারী শ্রমিক ছুটিতে যাওয়ার আগের
তিন মাসে মোট যে মজুরি পাবেন তার দৈনিক গড় হিসেবে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা
পাবেন। এবং নারী শ্রমিক মোট ১১২ দিনের জন্য ভাতা পাবেন। এ ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তারের কাছে থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে আট সপ্তাহের মধ্যে সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনার বিষয়টিমস মালিককে জানালে তিনি তিন দিনের মধ্যে ৫৬ দিনের প্রসূতি কল্যাণ ভাতা
দিবেন। সন্তান হওয়ার পর মা শ্রমিক মালিকের কাছে প্রমাণ পেশ করলে, প্রমাণ পেশের তারিখ থেকে তিন দিনের মধ্যে বাকি ৫৬
দিনের ভাতা দেবেন । তবে শর্ত হলো এর আগে ওই প্রতিষ্ঠানে মা শ্রমিককে ছয় মাস চাকরি করতে হবে। এ ছাড়া সন্তান
হওয়ার সময় মা যদি মারা যান, তাহলে তার সন্তান উত্তরাধিকারী প্রসূতি কল্যাণ ভাতা পাবে। সন্তানও যদি মারা যায় তাহলে তার স্বামী উত্তরাধিকারী ভাতা পাবে।

মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর করণীয় কীঃ
শ্রম আদালতে রায় পেলে বসে থাকলে চলবে না। মালিক পক্ষ আপীল করলে আপীল আদালতে মামলা পরিচালনা করতে হবে।




-মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)

লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু" এবং 'অসমাপ্ত জবানবন্দী', মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।



















মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৫

পোড়া বেগুন বলেছেন:
জরুরী বিষয়; জানা রইলো।

২৯ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ২:০৫

এম টি উল্লাহ বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.