নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মামলা করার আগে কিংবা মামলা চলাকালীন সম্পত্তি নিলামে তুলতে পারে ব্যাংক? এমন ক্ষেত্রে নিলাম বিজ্ঞপ্তি দিলে করণীয়

১২ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪১


পত্রিকায় সম্পত্তির নিলাম বিজ্ঞপ্তি একেবারেই কমন একটি বিষয়। পত্রিকার পাতা খুললেই এমন বিজ্ঞপ্তি দেখা যায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এসব নিলাম বিজ্ঞপ্তি কেন দেয়? মামলা করে দেয় নাকি মামলা না করেও দিতে পারে? দিলে নিলাম ঠেকাতে সম্পত্তির মালিক হিসেবে আপনার জরুরি ভিত্তিতে করণীয় কী?

এমন কোন নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেখলে খেয়াল রাখবেন সেখানে একটি ধারার কথা উল্লেখ থাকে। হয়তো, অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর ১২ (৩) ধারা মোতাবেক অথবা অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর ৩৩ (১) ধারা মোতাবেক নিলাম বিজ্ঞপ্তির শিরোনাম থাকে।

এটা ব্যাখ্যা করার আগে সহজে বলতে পারি, যখন ব্যাংকের কোন ঋণগ্রহিতা ঋণ নেওয়ার পর ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারেন না তখন ব্যাংক জামানত হিসেবে তার কিংবা তার পক্ষ থেকে অন্য কোন ব্যক্তি জিম্মাদার হয়ে যে সম্পত্তি বন্ধক রাখেন তা বিক্রির উদ্যোগ নিতে পারেন।

শুধু উদ্যোগ না, আইনের বিধানই হচ্ছে আগে সম্পত্তিটি বিক্রির চেষ্ঠা করবেন, তারপর মামলা। মানে, সম্পত্তিটি বিক্রির চেষ্টা না করে মামলাই করা যাবে না।

এজন্য এই ধরনের সম্পত্তি আইনের বিধান মোতাবেক দুইবার বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম উদ্যোগ হচ্ছে মামলা না করেই বিক্রির জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদান । যা অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর ১২ (৩) ধারা মোতাবেক বিজ্ঞপ্তি। এই বিজ্ঞপ্তিটি খুবই ভয়ংকর। এবং এই পর্যায়ে বিক্রি করতে পারলে ব্যাংকের অফিসিয়াল/আনঅফিসিয়াল নানাবিধ সুবিধা রয়েছে। আবার গ্রাহক না বুঝে বিষয়টিকে গুরুত্ব কম দেয় যার প্রেক্ষিতে মূল্যবান সম্পত্তি কম দামে হাতছাড়া হয়ে যায়।

আর মামলার রায় হওয়ার পর রায় কার্যকর (ডিক্রি জারি) পর্যায়ে যে নিলাম হয় তা অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর ৩৩ (১) ধারা মোতাবেক নিলাম বিজ্ঞপ্তি। এই পর্যায়ে নিলাম বিক্রি একে বারে কমন ব্যাপার এবং ব্যাংক সর্বোচ্চ চেষ্টা করে নিলাম সম্পাদন করার। নিলাম বিক্রি হলে তা রায়ের টাকার সাথে সমন্বয় হয় এবং বিক্রির পরও ব্যাংক পাওনা থাকলে মামলা চলে। আর যদি বেশি টাকায় বিক্রি হয় তা গ্রাহক ফেরত পান। তবে, বেশি টাকায় বিক্রি হওয়ার নজির হাজারে ১ টাও নেই!

এখন প্রশ্ন হলো, নিলাম ঠেকাতে করণীয় কী?

পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেখলেই কোন কথা ছাড়া দ্রুত রীট দায়ের করতে হবে। রীট দায়ের করার পর ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে বসে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। অনেক সময় ব্যাংক কৌশলে সমাধান করে দিবে বলে নিলাম সম্পাদন করে ফেলে এবং তখন গ্রাহক বিপদে পড়ে যান। সেক্ষেত্রে নিলামের তারিখের পূর্বে রীট করলে মহামান্য হাইকোর্ট একটা দিক নির্দেশনা দিয়ে দেয় এবং কিস্তিতে টাকা পরিশোধের শর্তে নিলামটি স্থগিত করতে পারে। তবে, তা নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট পরিস্থিতি বা নিলামের বিষয়বস্তু ও গ্রাহককের কার্যক্রমের ধরনের উপর এবং কোর্ট সন্তষ্ট হলেই কেবল নিলাম স্থগিত করা সম্ভব। কোর্ট যদি মনে করে না এই গ্রাহকের কার্যক্রম সন্তোষজনক নয়, সেক্ষেত্রে স্থগিত নাও করতে পারে। আবার স্থগিত করার পূর্বে একটা অংশ ১০-২০% কোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিতে পারে। এটা একান্তই কোর্টের এখতিয়ার।

-- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)

লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু" 'অসমাপ্ত জবানবন্দী', এবং ‘গায়েবি শৃঙ্খল’; মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.