নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Toufik alahi

Toufik alahi › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুইসাইড

১৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:৩৪

সুইসাইড
.
সুইসাইড আসলে কি? দিন দিন কি এটা খেলনায় পরিনত হচ্ছে ? একটূ কিছু হলেই সমাধান হচ্ছে সুইসাইড । কেন? সুইসাইড কি কোন মোয়া বা আপনার পছন্দের খাবার যে আপনার খেতে ইচ্ছে হলো খেয়ে নিলেন ! জীবন কি এতই সোজা , সৃষ্টীকর্তা কি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন মারা যাওয়ার জন্য? সেদিন এক মেয়েকে দেখলাম খুব সুন্দর কর স্টাটাস দিয়েছেন
“তাসমিয় শান্তা এর মত আরো একটি প্রান ঝড়ে যাবে অকালে “
আবার সেই মেয়েটাই পরের দিন তার বয়ফ্রেন্ড কে ট্যাগ দিয়ে রোমান্টিক স্টাটাস প্রসব করছে ।
অনেক কে বলতে শুনি ডিপ্রেসন এ ভুগলে তার লাইফে আর কোন বাস্তবতা কাজ করে না । তখন তার একমাত্র রাস্তা হয় সুইসাইড ! এই ব্যাপারটা কোন দিক থেকে ডিপ্রেসন এর মধ্যে পড়ে? মন খারাপ আর ডিপ্রেশন কি এক? আজকে আমরা সব গুলিয়ে ফেলি, না বুঝেই একটা কাজ করে বসে থাকি কিন্তু দিন শেষে এসে দেখা যায় আপনি ভুল , আপনার সিদ্ধান্ত ভুল । এই গুলানোর কারনেই আজ আমরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগি । সুইসাইড এর মত একটা সিদ্ধান্ত দুই মিনিটেই চলে আসে মাথায় । আপনাকে আপনার বাবা- মা আঠারো বছর তিল তিল করে গড়ে তুলছে ঠিক রাজমিস্ত্রি যেভাবে একটা বিল্ডিং কে যত্ন করে খাড়া করে কোথাও সিমেন্ট খুলে পড়ে যায় ,মিস্ত্রি থেমে থাকে না সেটা উঠিয়ে আবার সেখানে লাগিয়ে দেয় ।
আপনার বাবা –মা ও ঠিক এভাবেই আপনাকে গড়ে তুলেছেন , আর আপনি সেটাকে পাচ মিনিটেই বুল ডুজার দিয়ে গুড়িয়ে দিতে চাচ্ছেন?
.
আরেক মেয়েকে দেখলাম ফিজিক্স পরীক্ষা খারাপ হয়েছে বলে , ২ পাতা স্টাটাস দিয়েছে । এটাকেও ডিপ্রেশন বলবেন? একটা পরীক্ষা খারাপ কিভাবে ডিপ্রেশন হয়? সামান্য একটা ইক্সাম আপনার জীবনের সিদ্ধান্ত ঠিক করে দিলো আপনার বেচে থাকার কোন মানে হয় না! আপনি মরে যাবেন! কেন ? কি হবে? একটা বছর লস হবে? সেটাও তো না , পাস আসবে কিন্তু মার্ক্স একটূ কম পাবে ।মেয়েটার প্রফাইল ঘুরে বেশ সম্ভ্রান্ত পরিবারের মনে হল ।
.
আমাকে অসুস্থা বা খামখেয়ালীর জন্য এক বছর লস দিতে হয়েছে, আমি কি থেমে গেছি না আমার বাবা-মা আমকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে? নাকি আমার লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে? আমি নবম শ্রেনীতে একবার ফেইল করেছিলাম , আমার বাবা আমাকে ডেকে বলেছিলো
“ধরো তুমি একটা আম গাছ লাগিয়েছ, আমগাছটার নিয়মিত যত্ন নিলা , কোন কমতি রাখোনি , যখন ফল ধরার কথা ফল ধরলোনা । তখন তোমার ফিলিংস কি ?
আমি সেদিন উত্তর দিতে পারিনি । বাবা সেদিন থেকে দুইদিন আমার সাথে কথা বলেনি ।
৩য় দিন বাবা আমাকে ডাক দিয়ে বলেছিল...
.
সেই আমগাছটার হাল কি তুমি ছেড়ে দিয়েছ? আর পরিচর্চা করো না? একবার ফলন দেয়নি বলে কিন পরের বছর দিবে না? হতে পারে পরের বছর তুমি অনেক বেশি ফলন পাবা । আমি সেদিন নতুন করে উজ্জীবিত হয়েছিলাম । আমার বাবা আগের যুগের মানুষ খুব বেশি শিক্ষিত না । কিন্তু তিনি আমার কাছে সেদিন সবচেয়ে বড় শিক্ষক হয়ে গেছিলেন ।
আমি শিওর মেয়েটার বাবা যথেষ্ট শিক্ষিত । তার বাবা কি তাকে বলবে
“যাও পরীক্ষায় কেন খারাপ করছো বের হও বাসা থেকে “
বলবে না । আর ভাবছেন তার স্বপ্ন টা নষ্ট হয়ে যাবে? কিভাবে? ডাবল প্লাস পেয়েও বসে আছে এমন নজিরের হিসাব নাই। আবার ফোর পয়েন্ট নিয়েও অনেক ভালো জায়গায় গেছে ।
মোট কথা হচ্ছে আপনার মধ্যে সেই কনফিডেন্স আর ঐ অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে ।
.
আপনি যেটাকে ডীপ্রেশন ভাবছেন সেটা ডিপ্রেশন না । এটা একটা সাময়িক মন খারাপ আর এই সাময়ীক মন খারাপ টা যদি সামাল দিতে না পারেন তাহলে হাসপাতালে যান । সেখানে গেলেই জীবনের আসলে মানে বুঝবেন একটা মানুষ যার চারটা হাত পা নেই তবুও বেচে থাকার লড়াই টা কিভাবে চালিয়ে যাচ্ছে আর আপনার চার হাত সহ সুস্থ থেকে কিভাবে মরার জন্য উতোলা হয়ে আছেন?
হাসপাতালে গিয়ে তো শুধু মুখ ঢেকেই চলেছেন কখনো মুখ টা খুলে কি বুড়ি মা টার দিকে তাকিয়েছেন যিনি ভাংগা হাত গলায় ঝুলিয়ে করুন মুখে বসে আছেন । একবার ভালো করে তাকিয়ে দেখিয়েন মরে যাওয়ার ইচ্ছেটা বিলিন হয়ে যাবে ।
একটা প্রতিবেদনে পড়েছিলাম ডিপ্রেশিন হচ্ছে একধরনের শুন্যতা যা মানুষের জীবন কুড়ে কুড়ে খায় তিনি ডিপ্রেশন কে এভাবে ব্যাখা করেছিলেন
“ ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষগুলো প্যারালাইসেস রুগিদের মতো, চাইলেও এনারা বিছানা থেকে উঠতে পারেনা , যখন উঠে শত যুদ্ধ করে তাকে বিছানা ছেড়ে উঠতে হয় “
আমার মতে” ডিপ্রেশন ভুগা মানুষ গুলা অটিজমের শিকার ,কারন তারা বাস্তব জগৎ থেকে ভিন্ন ঠিক যেমন অটিজমের শিকার মানুষ গুলো একরেখা যেটা করে সেটা ছাড়া বাকি দিকে মনযোগ থাকে না ।
.
২০১৪ সালের দিকে একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল।মেয়েটা প্রচন্ড একটা ডিপ্রেশনে ভুগতো , প্রথমের দিকে বুঝতাম না অত । মেয়েটাকে দিনের পর দিন দেখি রাত জাগতো , ভাবতাম সারারাত কোন না কোন ছেলের সাথে চ্যাট করে একদিন সাহস করে বলেছিলাম
“ সারারাত কি করেন ফেসবুকে “
মেয়েটা তার চ্যাটিং লিস্টের স্ক্রিনশট দিয়েছিল দেখেছিলাম আমি একমাত্র ব্যাক্তি যে আজ মেসেজ করেছে বাকি সবাই ১ মাস বা তার আগে , বললাম কি করেন তাহলে সারারাত ফেসবুকে? ছোট করে জানিয়েছিল “জানিনা”
এর পর থেকে প্রায় কথা হতো মাঝে বলত ছাদের রেলিং এ কখনো হেটেছেন? আবার ভালো আছি জিজ্ঞাসা করার ২ মিনিট পর আবার সেই একি প্রশ্ন করত ।
সব শুনলেও মেয়েটার মুখ থেকে এটা শুনিনি আজ আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছে । কখনো বলেনি আমি পৃথিবীর কাছে বেমানান । ্জিজ্ঞাসা করার সাহস পেতাম না যে কেন এত ডিপ্রেশন এর মাঝে আছেন? মেয়েটা বেছে আছে আজো বেছে আছে , সুস্থ ভাবে ।
.
বেশি কিছু করতে হবেনা মরার আগে শুধু একবার ঠান্ডা মস্তিস্কে ভাববেন । আপনি হেরে যাবেন না কখনো ।
মৃত্যুই যদি সব কিছুর সমাধান হতো তাহলে হাসপাতাল থাকতো না। কারো রোগ হলে ডাক্তার বলতো আপনার ঔষধ হচ্ছে আপনি সুইসাইড করবেন । সে মারা যেতো, কারন আপনার কাছে সবকিক্সহুর সমাধান মানেই তো মৃত্যু না? মৃত্যু কখনো কিছুর সমাধান হতে পারেনা । আপনি কি জানেন? রোগ হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে । কারন ডাক্তারের কাছে গেলে আপনার বিষয়টি সমাধান হবে তাহলে আজ কেন সমাধান না খুজে মৃত্যুকে বেছে নিচ্ছেন?
আপনার জীবন ঠুনকো না আপনি সৃষ্টির সেরা জীব আপনার প্রতিটা পদক্ষেপ হবে সেরা । সুইসাইড কখনো আপনার সেরা পদক্ষেপ হতে পারে না ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.