নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হ-য-ব-র-ল

হারানো অস্তিত্বে খুঁজি আমি নিজের ললাট

তৌহিদুলিসলাম

আমি তো কেউ নই...........

তৌহিদুলিসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

চট্টগ্রামঃ কিছু স্মৃতি

২১ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:১৩

চট্টগ্রাম কলেজে পড়াকালীন সময়ে আমাদের বিচরণক্ষেত্র ছিল চকবাজার, প্যারেড ময়দান, গুলজার টাওয়ার, কেয়ারী ইলিশিয়াম, চট্টেশ্বরী রোড, জামাল খান কিংবা কাজির দেউড়ি। প্রয়োজনবোধে অন্যান্য জায়গায়ও যেতাম। ‘চক মালঞ্চ’ ছিল আমাদের এক ধরণের মিলনস্থল। এই দোকান থেকে দশ টাকায় প্লেট ছোলা মুড়ি কিনে বন্ধুরা সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আড্ডাচ্ছলে খেয়ে নিতাম। দাঁড়িয়ে খাওয়াই এখানে নিয়ম, বসার ব্যবস্থা নেই।বইয়ের দোকান ‘ঘূণ’ থেকে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস কিংবা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার বই ভাড়া নিয়ে পড়তাম।ভাড়া লাগতো দশ টাকা, যেমন দামেরই বই হউক না কেন!! ঘুরে বেড়াতাম আফমি প্লাজা, আখতারুজ্জামান বাবু সেন্টার, ইউনুস্কো সেন্টার কিংবা স্যানমার ওশ্যান সিটিতে। সার্সন রোডের একটা বাড়ী দেখতে খুব সুন্দর।ঘুরতে ঘুরতে আমাদের সেই বাড়ীটার উপরই নজর পড়ত। ভালই ছিল দিনগুলো।

শহরে ভালো না লাগলে ঘুরতে যেতাম পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কিংবা ফিরিঙ্গি বাজার সদরঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকা যোগে কর্ণফুলী নদী পাড়ি দিয়ে ওপারে, পটিয়ায়। পতেঙ্গা সৈকতের পাশে বনৌজা ঈশা খাঁ ঘাঁটির আঙ্গিনায় বসে সমুদ্র দেখতে ভালোই লাগত। মাঝে মধ্যে বিমানবন্দর যেতাম।যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের রাস্তা আর রাস্তার পাশে নদীতে নোঙর মেরে থাকা জাহাজগুলো এক অনন্য সৌন্দর্য সৃষ্টি করে। আলমাস সিনেমা হলে যেতাম। সেই সিনেমা হলে প্রথম গৌতম রায়ের মনের মানুষ ছবিটি দেখেছিলাম। সিনেমা হলে যাওয়ার পথে কাজীর দেউড়িতে রাস্তা আটকিয়ে এক বন্ধুকে গণিকাদের সেই উক্তি “আসলে আসেন, নয়তো পথ ছাড়েন” নিয়ে কি বিপাকেই না ফেলেছিলাম বন্ধুটিকে।

২০১০ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডকে নাটকীয়ভাবে হারিয়ে দিলে আমরা মিছিল করতে করতে গিয়েছিলাম তামিম ইকবালদের কাজির দেউড়িস্থ বাসায়। কি এক আনন্দ সেদিন করেছিলাম।

চাক্তাই খাল। চট্টগ্রামের দুঃখ। এই খালের কারণেই চট্টগ্রামের মানুষ একটু বৃষ্টি হলেও জলাবদ্ধতায় আটকে যায়। এই খালের এক আইরন ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে সেদিন আমরা বলতাম করতাম, যদি এই খালে ইংলিশ কবি ডব্লিউ ওয়ার্ডসওয়ার্থ আসতেন, কি কবিতাই না লিখতেন এইসব ঘোলা দূষিত দুর্গন্ধময় কালো পানি নিয়ে। এর পাশ দিয়ে গেলেও নাক ঢেকে রাখতে হয়। নয়তো বিকট দুর্গন্ধে মগজ ধোলাই হয়ে যায়।

লালদীঘির মাঠে জব্বারের বলি খেলা দেখতে গিয়ে কি হিমশিম খেতে হতো। এত্ত মানুষ আসে নড়াচড়া করাও অনেক কঠিন। আন্দরকিল্লা থেকে কোতোয়ালী থানা পর্যন্ত বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রীর মেলা বসতো। এগুলোর মধ্যে আছে দা, বটি, মাটির থালা বাসন, খেলনাসহ নানা ধরণের সংসারের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি। আমরা প্রথম বলি খেলা দেখতে গিয়েছিলাম দিদার বলিকে দেখতে কিন্তু তাঁর উপর কি জানি নিষেধাজ্ঞা থাকায় তিনি ঐবার অংশগ্রহণ করেন নি। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন নুর আলম বলি। বলি খেলা দেখতে গিয়ে আমরা যাত্রাও দেখতাম।

ডিসি হিলেও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে যেতাম। নজরুল মঞ্চে সেদিন শিমুল শীলের দরদী কণ্ঠে ভান্ডারী গান বিমোহিত করেছিল।

সেই স্মৃতিগুলো চির অম্লান হয়ে থাকবে, এই হৃদয়ে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.