নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি তুষার শুভ্র

https://www.facebook.com/tshuvro7

আমি তুষার শুভ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাস্তিক্যবাদ নিয়ে কিছু কথা

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৩০

নাস্তিক্যবাদ। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত আলোচিত একটি বিষয়। এর আগেও অবশ্য নাস্তিক্যবাদ নামক দর্শনের অস্তিত্ব এদেশে ছিল। এই মতবাদের প্রচার ও প্রসারে ড.আহমেদ শরিফ কিংবা হুমায়ূন আজাদদের অবদান অনেক। তবে বিষয়টা সবচেয়ে বেশি আলোচনা সৃষ্টি করে ২০১৩ সালে শাহবাগ আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে। বলা হয়ে থাকে শাহবাগ আন্দোলনের সাথে জড়িত অনেক নেতাই ছিল নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী। এদের মধ্যে ব্লগার রাজিব ওরফে থাবা বাবা, ব্লগার আরিফ, আসিফ সহ অনেকের নামই আছে।

নাস্তিক্যবাদ শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ "atheism" এ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ "atheos" থেকে যার মানে হচ্ছে "without god" বা ঈশ্বরের অস্তিত্বহীনতা। সোজা বাংলায় যে মতবাদে ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করা হয় না তাই নাস্তিক্যবাদ।

তাছাড়া wikipedia তে বলা হয়েছে "atheism is, in a broad sense, the rejection of deities (god). In a narrow sense, atheism is specifically the position that there are no deities (god)"

বর্তমান বিশ্বের ২.৩% মানুষ নিজেদের নাস্তিক বলে পরিচয় দেয়।

যে ঈশ্বরের অস্তিত্বে অবিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে নাস্তিক্যবাদ টিকে আছে এখন দেখব সেই ঈশ্বর বলতে কি বুঝায়।

ঈশ্বর মূলত একটি ধারণার নাম। পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্ম ও দর্শনে ঈশ্বর সম্পর্কে নানা রকম ধারণা থাকলেও এদের মধ্যে এক ধরণের মৌলিক সাদৃশ্য আছে। সবাই ঈশ্বরকে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে মানে।

ধর্মগুলোতে ঈশ্বরকে বলা হয়েছে সৃষ্টিকর্তা, ত্রাণকর্তা, জন্ম-মৃত্যুর মালিক, সাহায্যকারী, আহারদাতা, নির্দেশদাতা ইত্যাদি। কোথাও ঈশ্বরের গুণাবলি বর্ণনা করে তাঁকে দয়াময়, দয়ালু ইত্যাদি বলা হয়েছে। আবার কোথাও বলা হয়েছে ঈশ্বর ভালো কাজের যেমন পুরস্কার দেন তেমনি মন্দ কাজের জন্য শাস্তিও দেন।

পৃথিবীর বিভিন্ন দর্শনেও ঈশ্বর সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা দেয়া আছে। যেমন প্রকৃতিবাদীরা প্রকৃতিকেই নিজেদের ঈশ্বর বলে মনে করে। দর্শনেও ঈশ্বরের ধারণার মধ্যে পার্থক্য আছে। কেউ বলেছেন ঈশ্বর কেবলই সৃষ্টিকর্তা, কেউ বলেছেন ঈশ্বর পৃথিবীর গতির কারণ, আবার কেউ বলেছে ঈশ্বর অচালিত চালক। ইত্যাদি ইত্যাদি। তার মানে ঈশ্বর সম্পর্কিত এইসব ধারণা যারা স্বীকার করে তারা আস্তিক আর যারা স্বীকার করে না তারা নাস্তিক।

আচ্ছা পৃথিবীতে এমন কিছু কি আছে, যার ধারণা আমাদের মনের মধ্যে আছে কিন্তু তার অস্তিত্ব অতীতে কখনো ছিল না, এখনো নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না। আসলে আমাদের মনে এমন কিছুর ধারণা নেই যার কোন অস্তিত্ব নেই।

কোন লোক তার ছেলেকে বলল, 'তুমি আমার ছেলে নও, আমি তোমাকে ছেলে বলে স্বীকার করি না'। তার মানে 'ছেলে' বলে কিছু একটা আছে। এবং লোকটি তার অস্তিত্ব স্বীকার করে। কেউ যদি বলে ' ওই লোকটি আমার বাবা নয়'। তার মানে বাবার অস্তিত্ব স্বীকার করে নেয়া হয়।

একইভাবে কেউ বলল, 'আমি ঈশ্বর মানি না' তার মানে ঈশ্বর আছে কিন্তু সে মানে না। অর্থাৎ আমাদের মনে অস্তিত্বহীন কিছুর ধারণা থাকতে পারে না।

নাস্তিকরা কোন ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করতে চান না অথচ বাস্তবে তারা একাধিক ঈশ্বরের পূজারী। ব্যাপারটি হাস্যকর হলেও সত্যি। যারা কোন ঈশ্বরেই বিশ্বাস করেন না তারাই আবার একাধিক ঈশ্বরের পূজা করেন।

কোন নাস্তিককে যদি জিজ্ঞেস করা হয়-'তোমাকে কে সৃষ্টি করেছে?' সে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে হলেও একটা উত্তর দিবে। অন্তত এটা বলবে যে তার মা-বাবাই তাকে সৃষ্টি করেছে। তার মানে সে তার মা-বাবাকেই ঈশ্বর বানিয়ে নিল।

কোন নাস্তিককে যদি প্রশ্ন করা হয়-'তুমি কার কথামত চল?' সে অন্তত বলবে যে তার মনমত চলে। তার মানে সে তার মনকেই ঈশ্বর বানিয়ে নিল।

আমি একবার কট্টরপন্থী এক নাস্তিককে জিজ্ঞেস করেছিলাম-'অর্থনৈতিক জীবন কার বিধান অনুযায়ী চলবে? সে বলল- কার্ল মার্ক্সের কথা। তার মানে এখানে কার্ল মার্ক্সই তার ঈশ্বর। আবার জিজ্ঞেস করলাম- রাজনৈতিক জীবন বিধান অনুযায়ী চলা উচিৎ? সে বলল লেলিনের কথা। তার মানে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তার ঈশ্বর লেলিন। এভাবে এক ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করতে গিয়ে তারা হাজারটা ঈশ্বর বানিয়ে নিয়েছে।

সহজেই বোঝা যাচ্ছে আমরা কোন পরাক্রমশালী একক সত্ত্বার কাছে আত্মসমর্পণ করি। আর তারা মার্ক্স কিংবা লেলিনের সামনে নিজেদের গর্বিত মস্তকখানা নত করে দেয়। কখনো নিজেদের মতো কোন মানুষ আবার কখনো প্রকৃতি কখনোবা নিজেকেই ঈশ্বর বানিয়ে নেয় এরা।

বৌদ্ধ ধর্মেও দেখা যায় ঈশ্বরের কোন স্থান নেই। কিন্তু সেখানেও তারা গৌতম বুদ্ধকে নিজেদের ঈশ্বরে পরিণত করেছে।

সুতরাং নাস্তিক্যবাদের অসারতা প্রমানে হাজার হাজার তথ্য, তত্ত্ব, উপাত্তের দরকার হয় না। সাধারণ জ্ঞান থেকে চিন্তা করলেই এর অসারতা প্রমাণিত হয়ে যায়।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৪৩

আবু-এস বলেছেন: goog

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:১২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আপনার যুক্তিটা একেবারেই খেলো| যারা নাস্তিক তারা ঈশ্বর বিশ্বাসী নয় একারণে যে সায়েন্স এখনো তাকে খুজে পায়নি| অনেকে তাকে নাকজ করেছে| যেমন ডারউইন, হকিং| আরেকটা কথা, আপনাকে যদি বলা হয়, আপনি ভূতে বিশ্বাস করেন কিংবা ভ্যাম্পায়ারে? আপনি যদি বলেন যে, না আমি ভুতে বিশ্বাস করি না| এর মানেকি ভুতের অস্তিত্বকে স্বীকার করা? আশা করি উত্তর পাব

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৫

আমি তুষার শুভ্র বলেছেন: জন স্কেটাসের একটা কথা আছে-" মাঝে মাঝে যুক্তির চেয়ে বিশ্বাসই শ্রেয়"। আচ্ছা সে কথা নাহয় বাদ দিলাম কিন্তু বিজ্ঞান দিয়ে কি আপনি সব কিছুর উত্তর দিতে পারেন? গত ৩০০ বছরে বিজ্ঞানের তত্ত্বগুলো কতবার পরিবর্তিত হয়েছে! আপনি মনে হয় আমার দ্বিতীয় যুক্তিটা বুঝেন নাই। আমি বলেছি নাস্তিকরা ঈশ্বরে অবিশ্বাস করতে গিয়ে হাজারটা ঈশ্বর বানিয়েছে। আর ডারউইন কিংবা হকিং নাস্তিক নয়। এটা আপনার ভুল ধারণা।
আর আমি ভুতে বিশ্বাস করি। ভূত মূলত জিনের ভাষাগতভাবে একটা বিকৃত রূপ। অনেকে জিনকেই ভূত বলে থাকে। আমি জানি বিজ্ঞান দিয়ে জিনের অস্তিত্ব প্রমাণিত হবে না।

আচ্ছা আপনার বিজ্ঞান নাস্তিক্যবাদের পক্ষে কি যুক্তি দিবে?

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



" সাধারণ জ্ঞান থেকে চিন্তা করলেই এর অসারতা প্রমাণিত হয়ে যায়। "

-সাধারণ জ্ঞান এর পরিধি নির্ভর করে ব্যক্তির উপর। চাষীর সাধারণ জ্ঞান তাঁকে এসব বিষয়ে সাহায্য করবে না; পদার্থ বিজ্ঞানে জ্ঞানী মানুষের সাধারণ

" সাধারণ জ্ঞান থেকে চিন্তা করলেই এর অসারতা প্রমাণিত হয়ে যায়। "

-সাধারণ জ্ঞান এর পরিধি নির্ভর করে ব্যক্তির উপর। চাষীর সাধারণ জ্ঞান তাঁকে এসব বিষয়ে সাহায্য করবে না; পদার্থ বিজ্ঞানে জ্ঞান একটু আলাদা; আপনারটার ব্যাপারে আপনি জানেন।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০০

আমি তুষার শুভ্র বলেছেন: আমি এখানে চাষির সাধারণ জ্ঞানের কথা বলিনি। যারা নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাস করে তাদের সাধারণ জ্ঞানের কথা বলেছি। আপনি এমন কোন চাষি পাবেন না যারা নাস্তিক। আমার ধারণা যারা নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাস করে তারা তাদের সাধারণ জ্ঞান কাজে লাগালেই ঈশ্বরের অস্তিত্ব খুঁজে পাবে।

৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:২৩

সাজেদ বলেছেন: আরো পড়েন

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০০

আমি তুষার শুভ্র বলেছেন: তেমন কিছু পেলাম না

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.