![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের একদিকে থাকবে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ইহুদি খ্রিষ্টান জায়োনিসট এলায়েন্স ও অপর দিকে থাকবে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন এলায়েন্স। কোরআনে ক্লিয়ার এভিডেন্স থাকা সত্ত্বেও আপনি যদি আমেরিকা ন্যাটোর ইহুদি খ্রিষ্টান এলায়েন্সকে সমর্থন করেন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে বোগাস জিহাদ করেন, তাহলে আপনার জন্য দুঃখও হবে না।
“রোমকরা পরাজিত হয়েছে, নিকটবর্তী এলাকায় এবং তারা তাদের পরাজয়ের পর অতিসত্বর বিজয়ী হবে, কয়েক বছরের মধ্যে। অগ্র-পশ্চাতের কাজ আল্লাহর হাতেই। সেদিন মুমিনগণ আনন্দিত হবে” – (সূরা রুমঃ ২-৪)।
কোরআনে ও হাদিসে রুম (Rum) শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয় খ্রিষ্টান সাম্রাজ্য। এটা ইটালির রোম (Rome) নয়। রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর জমানায় খ্রিষ্টান সাম্রাজ্য বা রুম ছিল বাইজেইন্টাইন এম্পায়ার, যাকে বলে পূর্ব রোমান এম্পায়ার। এর রাজধানী ছিল কনস্টান্টিনোপল শহর যা আধুনিক তুরস্কে ইস্তানবুল নামে পরিচিত। রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ওফাতের কয়েকশত বছর পর ১০৫৪ সালে খ্রিষ্টান সাম্রাজ্য পূর্ব ও পশ্চিম- এই দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। পশ্চিমা খ্রিষ্টানরা হল রোমান ক্যাথলিক যাদের কেন্দ্র ইটালির রোমের ভ্যাটিকান। আর পূর্বের খ্রিষ্টানরা হল ইস্টার্ন অর্থোডক্স যাদের কেন্দ্র তুরস্কের কনস্টান্টিনোপল। কোরআনে দুই ধরণের খ্রিষ্টানদের কথা বলা হচ্ছে- একটা শত্রু ও একটা মিত্র। শত্রুদের ব্যাপারে কোরআন বলছে-
“হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদি ও খ্রিষ্টানদেরকে মিত্র হিসাবে গ্রহন করো না। তারা একে অপরের মিত্র। তোমাদের মধ্যে যে তাদের মিত্র হিসেবে গ্রহন করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। নিশ্চয়ই আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না” – (সূরা মায়েদাঃ ৫১)।
কোরআন অবশ্যই সব ইহুদি খ্রিষ্টানদের কথা বলছে না। কেননা, সৎকর্মশীল ইহুদি খ্রিষ্টানদের ব্যাপারে কোরআন খুব পজিটিভ, বহু আয়াত এই দাবিকে সমর্থন করে। উপরিউক্ত আয়াতে কোরআন এমন একদল ইহুদি ও এমন একদল খ্রিষ্টানদের কথা বলছে যারা একসময় নিজেদের মাঝে একটি ইহুদি খ্রিষ্টান জোট (Judeo-Christian alliance) তৈরি করবে। কোরআন মুমিনদের সতর্ক করছে যে যখন এই ইহুদি খ্রিষ্টানের জোটবদ্ধ মিত্রবাহিনী দেখতে পাও, তখন ভুলেও তাদের দলে যোগ দিও না। দিলে তুমি তাদেরই দলে অন্তর্ভুক্ত হবে, তুমি আর ইসলামের সীমানার মধ্যে নেই।
পশ্চিমের রোমান ক্যাথলিকরা আমাদের মিত্র হতে পারে না, কেননা তারা হল সেই ইহুদি খ্রিস্টান যায়োনিসট জোট যারা ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের জন্মদাতা ও লালন পালন কর্তা। রোমান ক্যাথলিক দেশগুলোই জায়োনিসট ন্যাটো (NATO) এলায়েন্সের সমর্থন দিচ্ছে যা ইসলামের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত। আমাদের মৈত্রী হবে ইস্টার্ন অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের সাথে।
সূরা রুম বলছে রোমক খ্রিষ্টানরা রয়েছে নিকটবর্তী এলাকায়, অর্থাৎ কুরআন যেখানে নাযিল হচ্ছে তার নিকটবর্তী এলাকায়। এটা ইস্টার্ন ক্রিশ্চিয়ানিটির ক্ষেত্রেই সম্ভব, কেননা তার কেন্দ্র হল তুরস্কের কনস্টান্টিনোপল যা আরবের নিকটবর্তী। ওয়েস্টার্ন ক্রিশ্চিয়ানিটির ক্ষেত্রে সম্ভব না, কারণ তার কেন্দ্র ইটালির ভ্যাটিকান আরব থেকে বহু দূরে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সময় মুসলিমদের মিত্র ছিল আবিসিনিয়ার খ্রিষ্টানরা যারা ছিল রোমক অর্থোডক্স খ্রিস্টান। কোরআন এখানে দুইটি যুগের কথা বলছে যেখানে এক যুগ হল নবীজির (সঃ) যুগ যেখানে রোমক খ্রিষ্টানরা মুসলিমদের মিত্র ও ভবিষ্যতে আরেকটি যুগ আসবে যেখানে তারা আবার মুসলিমদের মিত্ররুপে আবির্ভূত হবে। সূরা রুম অনুযায়ী তাদের সঙ্গে আমাদের একটি প্রাকৃতিক মিত্রতা রয়েছে কেননা সূরা রুম বলছে তারা যখন যুদ্ধে বিজয়ী হবে আমরা মুসলমানরা সেদিন আনন্দ করব, উল্লাস করব বিজয়ের খুশিতে। এই মিত্রদের ব্যাপারে কোরআন আরও বলছে –
“আপনি সবার চাইতে মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্বে অধিক নিকটবর্তী তাদেরকে পাবেন, যারা নিজেদেরকে খ্রিষ্টান বলে। এর কারণ এই যে, তাদের মধ্যে আলেম রয়েছে, দরবেশ রয়েছে এবং তারা অহঙ্কার করে না” – (সূরা মায়েদাঃ ৮২)।
সূরা মায়েদার এই আয়াত অনুযায়ী এই খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের পরম বন্ধুরুপে আবির্ভূত হবে। তাদের চেনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল তারা সন্ন্যাসবাদের রীতি বজায় রেখেছে, তাদের মধ্যে ধর্মীয় স্কলারশিপ রয়েছে ও তারা অহঙ্কার বশত মানব জাতির উপর নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে খড়গহস্ত হয় না।
১৪৫৩ সালে অটোম্যানরা কনস্টান্টিনোপল জয় করার পর তা অর্থোডক্স ক্রিশ্চিয়ানিটির কেন্দ্র হিসেবে তার পদ হারায়। বর্তমানে অর্থোডক্স খ্রিস্টান ধর্মের নেতৃত্ব দিচ্ছে যে দেশটি তা হল রাশিয়া। মস্কো হল অর্থোডক্স ক্রিশ্চিয়ানিটির হেডকোয়ারটার। উল্লেখ্য যে, পূর্বের সোভিয়েত ইউনিয়ন ও বর্তমান রাশিয়ার মধ্যে আকাশ ও পাতাল পার্থক্য বিদ্যমান। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল একটি বামপন্থী নাস্তিক্যবাদী দেশ যা ছিল একই সাথে কমিউনিস্ট ও যায়োনিসট। তারা ইসলামসহ অন্যান্য ধর্মীয় পথ অবলম্বনকারী মানুষের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালিয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়া ১৯৯১ সালে তার জন্মের পর থেকে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার চার্চ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে চলেছে এবং তাদের দেশের রাজনীতি ও আইনে ধর্ম অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। যেখানে পশ্চিম ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার রোমান ক্যাথলিকরা সমকামিতার মত নিকৃষ্টতম বস্তুকে আইনসম্মত করেছে সেখানে রাশিয়া এর বিরুদ্ধে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়ার সাথে ইতিমধ্যে সিরিয়া, ইরান, ইরাক, কাতার ও পাকিস্তানের এলায়েন্স হয়ে গেছে ও আরো মুসলিম কান্ট্রি এগিয়ে আসছে। এর পরও যারা রাশিয়া ও সোভিয়েত ইউনিয়নকে গুলিয়ে ফেলে, রাশিয়াকে পশ্চিমা ধর্মহীন বিশ্বের সমকক্ষ গণনা করে ও মুসলিমদের শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করে, তাদের ব্যাপারে মনে হয় আর কিছু বলার নেই। রাশিয়া হল আখিরি জমানার রুম।
২| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:০৮
চিটাগং এক্সপ্রেস বলেছেন: কাফেরদের সাথে মুসলিমরা কিভাবে জোট করবে?
৩| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:১২
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: আমেরিকা - রাশিয়া কারো সংগেই জোট করে লাভ নেই যদি নিজের কোমরে শক্তি না থাকে থাকে। নিজের কোমরে শক্তি থাকলে আপনাকে নিয়ে তার জোট বাধবে নচেৎ নহে।
ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।
৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:২৬
টারজান০০০০৭ বলেছেন: বলুন , শেষ জমানায় রাশিয়ার সাথে শিয়া মুসলিম বিশ্বের মিত্রজোট!
আপনি রেডিও তেহরানের কয় নম্বর চ্যানেল ?
এদেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তান ব্যাতিক্রম ! পাকিস্তানে ৩০% শিয়া আছে যারা রাজনৈতিকভাবে খুব শক্তিশালী।যেমন ভুট্টো পরিবার, জিন্নাহ , জেনারেল ইয়াহিয়া এরা সব শিয়া।শিয়াদের চাপে এমনকি সৌদীদেরও পিঠ দেখাইতে শুরু করিয়াছে !
আর রাশিয়ার সাথে এতো পিরিত দেখাইলেন , আপনার কি জানা আছে ইজরায়েলের প্রথম স্বীকৃতিদাতা কে ? জী, আপনার পেয়ারের রাশিয়া তথা সোভিয়েত ইউনিয়ন।রাশিয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন নহে , তবে সোভিয়েত ইউনিয়নের মা , যেমন নাকি যুক্তরাষ্ট্রের মা হইলো যুক্তরাজ্য। যাহাই হউক রাশিয়াকে শিয়ারাই বিশ্বাস করিতে পারে !
৫| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:২৬
এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: “রোমকরা পরাজিত হয়েছে, নিকটবর্তী এলাকায় এবং তারা তাদের পরাজয়ের পর অতিসত্বর বিজয়ী হবে, কয়েক বছরের মধ্যে। অগ্র-পশ্চাতের কাজ আল্লাহর হাতেই। সেদিন মুমিনগণ আনন্দিত হবে” – (সূরা রুমঃ ২-৪)।
আপনার মতে, এখানে [ভবিষ্যতে] তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধেরও ইঙ্গিত রয়েছে এবং রাশিয়া বর্তমানে ইস্টার্ন অর্থোডক্স ধর্মে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় হঠাৎ "নিকটবর্তী" ভৌগোলিক এলাকা হয়ে গেল! বলিহারি কল্পনা বটে। সূরা রুমের শানে নুযুল ভালো করে পড়ুন, রোমক [বাইজ্যান্টাইন]-পারস্য যুদ্ধের ইতিহাস পড়ুন, এবং চিন্তা-চেতনা স্বচ্ছ করুন। পবিত্র কুরআনের আয়াত নিয়ে মুনাফেকির জাল থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন।
৬| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৫৭
হেৃদওয়ানুল জান্নাহ বলেছেন: নবী (সাঃ)-এর যুগে পারস্য (ইরান) ও রোম দুটি বৃহৎ শক্তি ছিল। পারসীকরা ছিল অগ্নিপূজক মুশরিক এবং রোমানরা ছিল খ্রিষ্টান (আহলে কিতাব)। মক্কার মুশরিকদের সহানুভূতি ছিল পারসীকদের প্রতি; কারণ তারা উভয়েই গায়রুল্লাহর উপাসক ছিল। পক্ষান্তরে মুসলিমদের সহানুভূতি রোমের খ্রিষ্টান রাজ্যের প্রতি ছিল; কারণ খ্রিষ্টানরাও মুসলিমদের মত (আহলে কিতাব) ছিল এবং অহী ও রিসালাতের প্রতি বিশ্বাসী ছিল। তাদের উভয়ের মধ্যে যুদ্ধ-বিবাদ লেগেই থাকত। নবী (সাঃ)-এর নবুঅত প্রাপ্তির কয়েক বছর পর পারসীকরা খ্রিষ্টানদের উপর বিজয়লাভ করার ফলে মুশরিকদের আনন্দ ও মুসলিমদের দুঃখ হয়। সেই সময় কুরআন কারীমের এই আয়াতগুলি অবতীর্ণ হয়। যাতে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে, কয়েক বছরের মধ্যে রোমানরা বিজয়ী হবে এবং বিজয়ীরা পরাজিত ও পরাজিতরা বিজয়ী হয়ে যাবে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে উক্ত ভবিষ্যদ্বাণী অসম্ভব মনে হলেও আল্লাহর উক্ত বাণীর ফলে মুসলিমদের মনে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, তা অবশ্যই সংঘটিত হবে। যার ফলে আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) আবু জাহলের সাথে বাজি করে ফেলেন যে, পাঁচ বছরের মধ্যে রোমানরা বিজয়ী হবেই। উক্ত বাজির কথা নবী (সাঃ) জানতে পারলে তিনি বললেন, بِضع (কয়েক) শব্দটি তিন থেকে নয় পর্যন্ত সংখ্যা বুঝাতে ব্যবহার হয়। অতএব পাঁচ বছর বাজির সময় কম করে ফেলেছ, এতে আরো সময় বাড়িয়ে নাও। সুতরাং নবী (সাঃ)-এর কথামত আবু বাকর (রাঃ) তাঁর প্রস্তাবিত সময় আরো কিছু বাড়িয়ে দিলেন। ফল এই দাঁড়ালো যে, রোমানরা নয় বছর সময়ের মধ্যেই (সূরা অবতীর্ণ হওয়ার) ঠিক সপ্তম বছরে পুনরায় পারসীকদের উপর জয়যুক্ত হল। যাতে মুসলিমগণ অনেক অনেক আনন্দিত হয়েছিলেন। (তিরমিযী, তাফসীর সূরা রূম) অনেকে বলেন যে, রোমানদের এই বিজয় ঠিক ঐ সময় হয়েছিল, যখন মুসলিমগণ বদরের যুদ্ধে কাফেরদের উপর বিজয় লাভ করেছিলেন। মুসলিমগণ নিজেরা জয়ী হওয়ার ফলে আনন্দিত হন। রোমানদের এই বিজয় কুরআন কারীমের সত্যতার এক উজ্জ্বল প্রমাণ বহন করে। فِي أدنَى الأرض এর অর্থ হলঃ আরব ভূমির নিকটবর্তী এলাকা যেমন শাম, ফিলিস্তীন ইত্যাদি যেখানে খ্রিষ্টানদের সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৮
মোঃ আশরাফুজ্জামান বলেছেন: আপনার সুন্দর কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ। কোরআনকে স্টাডি করতে হলে কোন আয়াত আলাদা আলাদাভাবে নিয়ে সেটার অর্থের উপসংহারে পৌঁছানো যাবে না। যেমন সূরা বাকারা পড়লে পাওয়া যায় সমস্ত ফেরেশতাকে সিজদা দেওয়ার আদেশ করা হল, সকলে সিজদা করল ইবলিশ ব্যতীত। তখন প্রশ্ন জাগে ফেরেশতাদের সর্দার হয়েও ইবলিশ কিভাবে এটা করল যেখানে ফেরেশতারা মাসুম, আল্লাহর হুকুমের আজ্ঞাবহ। কিন্তু সূরা কাহফে আমরা দেখতে পাই একই বিষয় আলোচনা করা হচ্ছে ও সরাসরি বলা হচ্ছে ইবলিশ ছিল জীনদের মধ্য হতে (اِلَّاۤ اِبۡلِيۡسَؕ كَانَ مِنَ الۡجِنِّ)। তখন আমরা বুঝতে পারি সে কিভাবে আল্লাহর হুকুম অমান্য করল, কেননা সে জীন - যার কিনা নাফস আছে, নিজস্ব ইচ্ছা শক্তি আছে। যদি আমরা সূরা বাকারার আয়াত নিয়ে পরে থাকতাম তবে ভুল কনক্লুশনেই থাকতাম। এমনিভাবে যেকোনো সাবজেক্টকে কোরআন থেকে স্টাডি করতে হলে ঐ সাবজেক্টের উপর যত ইনফরমেশন আছে সবগুলো একত্রে নিয়ে আসতে হবে। তারপর সবগুলোকে ঐকতান অনুযায়ী সামগ্রিকভাবে (Harmonious Whole) সাজাতে হবে। তারপর কোরআন ঐ সাবজেক্ট সম্পর্কে কি বলছে সেটার একটা কমপ্লিট পিকচার পাওয়া যাবে।
কোরআন খ্রিষ্টানদের ব্যাপারে কি বলছে সেটা যদি আমরা উপরে উল্লিখিত পদ্ধতি অনুযায়ী স্টাডি করি তবে দেখতে পাব কোরআনে দুই ধরণের খ্রিষ্টানদের কথা বলা আছে। যেই খ্রিষ্টানরা ইহুদিদের সাথে এলায়েন্স তৈরি করে তাদেরকে কোরআন শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এবার রুমের প্রসঙ্গে আসা যাক। সূরা মায়েদাতে যেই খ্রিষ্টানদের ব্যাপারে পজিটিভলি বলা হয়েছে যারা নাকি আমাদের বন্ধু হবে মিত্র হবে তাদের সাথে সূরা রুমের খ্রিষ্টানরা একেবারে খাপ খেয়ে যায়। কেননা সূরা রুমের খ্রিষ্টানরা আমাদের মিত্র, তাদের বিজয়ে আমরা উল্লাস করব। রুমের খ্রিষ্টানরা ইহুদি খ্রিষ্টান এলায়েন্সের ঐ খ্রিষ্টান নয়। রাসুলুল্লাহ সঃ এর সময়ও আবিসিনিয়ার খ্রিষ্টানরা আমাদের দিকে বন্ধুত্ব ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল, তারা ছিল আমাদের মিত্র। আবিসিনিয়ার খ্রিষ্টানরা ছিল রোমক অর্থোডক্স খ্রিষ্টান। তাহলে এখন প্রশ্ন, আখিরি জমানার সাথে এর ইমপ্লিকেশন কি? আমরা জানি কুরআন পৃথিবীর সমস্ত কিছুকে ব্যাখ্যা করবে, এতে সমস্ত বিষয়ের সুস্পষ্ট বর্ণনা আছে (দেখুন সূরা নাহল:৮৯)। আমরা এও জানি যে কোরআনের আয়াতগুলো ইটারনাল বা চিরন্তন। কেয়ামত পর্যন্ত এই আয়াতগুলো ফাংশনাল থাকবে ও মানবজাতির কাছে সব কিছু ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করবে। দুইটা আয়াতের গ্রামার খেয়াল করলেই দেখবেন ফে'য়েলে মুদা'রিয়া অর্থাৎ বর্তমান ও ভবিষ্যৎকাল দুটোই। আর সূরা রুমের যেখানটায় বলা হয়েছে তিন থেকে নয় বছর সেটার অনুবাদ একই সাথে কয়েক বছরও হয়, সুবাহানাল্লাহ! (সবগুলো ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সলেশন চেক করে দেখতে পারেন) অর্থাৎ খ্রিষ্টানদের সাথে মুসলিমদের মিত্রতা দুইটি যুগে ইমপ্যাক্ট করবে। একটা হয়েছিল রাসুলের (সঃ) যুগে, আরেকটা হবে আখিরি জমানায়। একইভাবে কোরআন ইয়াজুজ মাজুজের বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছে। একটি যুগে ইয়াজুজ মাজুজ পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করেছিল আবার করবে আখিরি জমানায়। সূরা মায়েদার মিত্র খ্রিষ্টানের আয়াতটা এবার আরও বেশি পরিষ্কার হয়। রোমক অর্থোডক্স খ্রিষ্টানরাই সন্ন্যাসবাদের রীতি শক্তভাবে ধরে রেখেছে। রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টানরা আবার জায়োনিসট, এরা সারা পৃথিবী কলোনাইজ করে। অর্থোডক্সরা ন্যাশনালিসট টাইপের। তাই নিরহংকার খ্রিষ্টান ব্যাপারটাও তাদের সাথে মিলে যায়। এবার ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রিকে কোরআনের আলোতে দেখি। যদি আখেরি জমানায় রুম থাকে আর তৎকালীন বাইজেনটাইন এম্পায়ার যদি রুম হয় তাহলে এই যুগের বাইজেনটাইন এম্পায়ার কই আর রুম কই? উত্তরঃ বাইজেনটাইন এম্পায়ার এখন আর নেই কিন্তু অর্থোডক্স ক্রিশ্চিয়ানিটি রয়ে গেছে। অর্থোডক্স ক্রিশ্চিয়ানিটির হেডকোয়ার্টার রয়েছে মস্কোতে যার নেতৃত্ব দিচ্ছে রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চ।
খ্রিষ্টান ধর্মের দুইটা প্রধান ডিনমিনেশন ইস্টার্ন আর ওয়েস্টার্ন ক্রিশ্চিয়ানিটির মধ্যে বর্তমানে কোনটা আমাদের শত্রু ও কোনটা মিত্র সেটা আপনাকে কোরআন থেকে আইডেনটিফাই করতে হবে। পশ্চিমা রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টানরা ছিল ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের জন্ম ও লালন পালনের পিছনে, এরাই ইহুদিদের সাথে জোট বেঁধেছে। এরাই যায়নিসট আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। এরাই ইহুদি খ্রিষ্টান ন্যাটো জোট গঠন করেছে, যেটা নাকি সিরিয়া, ইরাকে ও আফগানিস্তানে সম্মিলিতভাবে হামলা চালচ্ছে। কেউ যদি এখন বলতে চায় যে পশ্চিমের রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টানরা আমাদের বন্ধু আর আমেরিকা নেতৃত্বাধীন খ্রিষ্টান বিশ্বের সাথে আমাদের এলায়েন্স হবে, তবে তাকে কোরআন থেকে প্রমাণ করে দেখাতে হবে কিভাবে তা সম্ভব।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:০৪
বিজন রয় বলেছেন: শেষ জমানায় রাশিয়ার সাথে মুসলিম বিশ্বের মিত্রজোট.............. নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু হয়ে গেল তাহলে।