![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইয়াজুজ মাজুজকে যে দেয়াল দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছিল সেই দেয়ালের অবস্থান কোরআন শরীফে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা কাহফের ৮৩ থেকে ৯৯ নং আয়াতে যুল কারনাইন ও ইয়াজুজ মাজুজের রহস্যময় ঘটনাটির উল্লেখ রয়েছে। যুল কারনাইন ছিলেন একজন পরাক্রমশালী খোদাভীরু বাদশাহ যিনি আল্লাহর কাছ থেকে বিশেষ ক্ষমতা লাভ করেছিলেন। একই সাথে তিনি ছিলেন একজন অভিযাত্রী যিনি পৃথিবীর দুই প্রান্তে অভিযান চালান। যুল কারনাইন প্রথমে গেলেন পশ্চিমে এবং এমন একটি জলাশয়ের সামনে এসে পৌঁছালেন যার পানি ছিল কৃষ্ণ বর্ণের। তিনি যে সাম্রাজ্যের বাদশাহ ছিলেন তার পশ্চিমে দুইটি বৃহৎ জলাশয় ছিল – একটি ভূমধ্যসাগর ও অন্যটি কৃষ্ণ সাগর। আমাদের মুফাসসিররা বহু আগেই নির্ণয় করেছেন যে এই কালো বর্ণের জলাশয়টি হচ্ছে কৃষ্ণ সাগর বা Black Sea.
অতঃপর তিনি পূর্বে অভিযান চালান, কিন্তু এক পর্যায়ে আর বেশিদূর যেতে পারলেন না। এর কারণ হল ব্ল্যাক সি এর পূর্বে তিনি অন্য একটি বিশাল জলাশয়ের মুখোমুখি হন। এর নাম হল কাস্পিয়ান সাগর (Caspian Sea)। তিনি তৃতীয় একটি ডাইরেকশনে যাত্রা করেন এবং ইয়াজুজ মাজুজ নামের উশৃঙ্খল জাতির সম্মুখীন হন। হাদিস থেকে আমরা জানি যে ইয়াজুজ মাজুজ টাইবেরিয়াস হ্রদের পানি নিঃশেষ করে জেরুসালেমে পৌঁছাবে। কেউ যদি টাইবেরিয়াস হ্রদ পার হয়ে জেরুসালেমে পৌঁছাতে চায় তবে তাকে উত্তর থেকে আসতে হবে। অর্থাৎ, তিনি যে তৃতীয় ডাইরেকশনে যাত্রা করেন সেটা ছিল উত্তর দিক। উত্তরে যাত্রা করার পর যেখানে তিনি ইয়াজুজ মাজুজকে পান, সেটি ছিল দুইটি পর্বত প্রাচীরের মধ্যবর্তী স্থান। যায়গাটা এমন ছিল যে পর্বতশ্রেণীর মধ্যবর্তী গিরিখাতটি দিয়েই শুধুমাত্র বহির্বিশ্বের সংস্পর্শে আসা সম্ভব।
এই সমস্ত ভূপ্রাকৃতিক স্থান ও তাদের ভৌগলিক অবস্থানগুলোকে একত্রিত করলে খুব সহজেই ইয়াজুজ মাজুজের অবস্থানকে চিহ্নিত করা যায়। কৃষ্ণ সাগর ও কাস্পিয়ান সাগরের মধ্যবর্তী পর্বত প্রাচীর দুটি যে পর্বতমালায় অবস্থিত তা হল সুবিখ্যাত ককেশাস পর্বতমালা। পর্বত প্রাচীর দুটির মাঝে অবস্থিত একমাত্র বহির্পথটি ডারিয়াল গোর্জ (Darial Gorge) যেখানে যুল কারনাইন দেয়ালটি তৈরি করে দিয়েছিলেন। যায়গাটার অবস্থান হল রাশিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন দেশ জর্জিয়াতে। কোরআন আরও বলছে ঐ পর্বতশ্রেণীতে বসবাসরত সম্প্রদায় তার কথা একেবারেই বুঝতে পারছিল না। ব্যাপারটা জর্জিয়ান ভাষার সাথে পুরোপুরি খাপ খায়। ঐ অঞ্চলের যতগুলো ভাষা আছে যেমন – আরবি, ফার্সি ইত্যাদি সবগুলোই কোন না কোনভাবে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। আজও পর্যন্ত এটা সুস্পষ্টভাবে লক্ষণীয় যে জর্জিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ ঐ এলাকার সমস্ত রিজিওনাল ল্যাঙ্গুয়েজ ফ্যামিলিগুলো থেকে একদম আলাদা।
ইতিহাসেও উল্লেখ রয়েছে যে পারস্যের রাজা বাদশাহরা ঐ অঞ্চলটিতে ৫০ মাইল লম্বা, ২৯ ফিট উঁচু ও ১০ ফিট চওড়া একটি দেয়াল তুলে দিয়েছিলেন, উত্তরের বর্বর অসভ্য জাতিকে দক্ষিণে আক্রমণ চালানো থেকে প্রতিহত করার জন্য যারা ছিল ককেশাস পর্বতমালার অধিবাসী। ধারণা করা হয় এটা ছিল “দ্য গ্রেট ওয়াল অব জোর্জান” অথবা “দ্য কাস্পিয়ান গেটস”। অনেকে আবার বলেন “দ্য গেটস অফ অ্যালেক্সান্ডার”ই হল সেই দেয়াল। নাম যাই হোক না কেন, ঐতিহাসিকভাবেও প্রমাণিত যে এখানে একটা বিরাট দেয়াল তৈরি করা হয়েছিল, যেটা কোন নদীর বাঁধ ছিল না, বরং এটি ছিল একটি প্রতিরক্ষা দেয়াল। এখানে খুব ভাসা ভাসা লেভেলে বিষয়টা ব্যাখ্যা করা হয়েছে, পুরো বিষয়টা ভালভাবে বুঝার জন্য সূরা কাহফের এই ১৬টি আয়াত আরবি সহ একদম খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ুন। জায়গাটাকে ভৌগলিকভাবে চিহ্নিত করার জন্য গুগল আর্থের সাহায্য নিতে পারেন।
উল্লেখ্য যে, ডারিয়াল গোর্জে এখন কোন দেয়ালের অস্তিত্ব নেই। সেখানে এখন একটা রাশিয়ান মিলিটারি হাইওয়ে অবস্থিত। রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর জীবদ্দশায়ই ইয়াজুজ মাজুজ মুক্তি পেয়ে যায়। যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
''একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় তাঁর নিকট আসলেন এবং বলতে লাগলেন, লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আরবের লোকেদের জন্য সেই অনিষ্টের কারণে ধ্বংস অনিবার্য যা নিকটবর্তী হয়েছে। আজ ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীর এ পরিমাণ খুলে গেছে। এ কথা বলার সময় তিনি তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলির আগ্রভাগকে তার সঙ্গের শাহাদাত আঙ্গুলির অগ্রভাগের সঙ্গে মিলিয়ে গোলাকার করে ছিদ্রের পরিমাণ দেখান। যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাঃ) বলেন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে পুণ্যবান লোকজন থাকা সত্ত্বেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাব? তিনি বলেন, হ্যাঁ যখন পাপকাজ অতি মাত্রায় বেড়ে যাবে।''
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০৫
ম. তওফিকুর রহমান বলেছেন: ইয়াজুজ মাজুজ মুক্তি পেয়ে যায়, কথাটি বোধ করি সত্য নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে দেয়ালের ছিদ্রের পরিমাণ দেখানো হয়েছে, কিন্তু তাতে মুক্তির কোন কথা বলা হয়নি। তবে যে পরিস্থিতিতে এরা মুক্ত হবে তার দিকে ইংগিত দেয়া হয়েছে। আল্লাহ আমাদের সে যামানার আগে দুনিয়া থেকে সরে যাবার আর যারা থাকবেন, তাতে পরিত্রাণের জন্য হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি বেছে নেবার তওফিক দিন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৩২
সনেট কবি বলেছেন: ভাল পোষ্ট।