নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহাদাত উদরাজী\'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - \'গল্প ও রান্না\' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

সাহাদাত উদরাজী

[email protected] ০১৯১১৩৮০৭২৮গল্প ও রান্না udrajirannaghor.wordpress.comপ্লে স্টোরে ‘গল্প ও রান্না’ এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! আনন্দ সংবাদ! বাংলা রেসিপি নিয়ে এই প্রথম প্লে স্টোরে এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! ‘গল্প ও রান্না’ এখন Play Store এ Apps হিসাবে আপনার হাতের কাছে। নেট কানেশন বা WiFi জোনে থেকে Play Store এ যেয়ে golpo o ranna বা “Golpo O Ranna” বা “com.udraji.rannaghor” লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। খুব সহজেই আপনি আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইলে ‘গল্প ও রান্না’র আইকন ইন্সটল করে নিতে পারেন। ফলে আপনাকে আর মোবাইলে আমাদের সাইট দেখতে লিঙ্ক বা কোন ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে না। নেট কানেশন বা ওয়াইফাই জোনে থাকলেই আপনি ওয়ান ক্লিকেই গল্প ও রান্না দেখতে পাবেন।

সাহাদাত উদরাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিচিত্র পেশাঃ ১৯

০৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:২২

আপনাদের এই ঢাকা শহরে আপনি আপনার বাসায় সময় কাটাচ্ছেন, এমন সময় শুনলেন 'মুর্গীয়া' কিংবা এর আরো ভিন্ন উচ্চারন। নিশ্চয় বুঝতে না পেরে কান পেতে থাকবেন, আবার শুনার জন্য! কিংবা জানালার ধারে এসে চোখ রাখবেন, হ্যাঁ, আমি মুরগী বিক্রেতার কথা বলছি।



আচ্ছা, মুরগী বিক্রেতারা এমন করে বিচিত্রভাবে মুরগী ডাকানে কেন? আমি জামাল হোসেনকে (ছদ্ম নাম) পেয়ে এমনই জিজ্ঞেস করলাম? ভাই ভাল করে উচ্চারন করেন না! জামাল ভাই, এক গাল হেসে দিলেন! বলেন, এভাবে না ডাক্লে তো আপনারা ফিরেও চেয়ে দেখেন না! হা হা হা, জামাল ভাইয়ের কথার যুক্তি আছে বটেই। আমরা সব সময়েই ভিন্ন কিছু চাই।



যাই হোক, আমাদের অফিস এলাকায় জামাল ভাইয়ের সাথে দেখা, চলতি পথেই আমাদের কথা হয়েছে। এই পেশা দেখতে দেখতে আপনারা হয়ত এই পেশাকে বিচিত্র বলতে চাইবেন না, আসলে এটা নিঃসন্দেহে বিচিত্র পেশাই!



সকালে জামাল ভাই ঘুম থেকে উঠে নাস্তা এবং গোসল সেরে সোজা চলে যান, কাওরান বাজারের মুরগীর আরতে। আরতের মুরগীর দোকানদারকে তার আগে থেকেই চেনা। বাকী দিয়ে দেয়, হিসাব করে গোটা ২৪ মুরগী, প্রায় একই সাইজের নিয়ে একটা নিদিষ্ট এলাকা বেছে নেন। তার পর দুই হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ান।



এপার্ট্মেন্ট এলাকা গুলোকে তিনি বেশী টার্গেট করে থাকেন। তিনি হেসে জানালেন, এপার্ট্মেন্টে থাকা লোকজন প্রায় অলস প্রকৃতির হয়ে থাকে, বাজারে যেতে চায় না, ঘরে বসেই সব কিছু কিনতে চায়। ফলে এরাই সঠিক কাষ্টমার। দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর ধরে ঢাকার পথে পথে মুরগী বিক্রি করে আসছেন বলে অনেক কাষ্টমারের সাথে সখত্যা গড়ে উঠেছে। প্রতিদিন সকালে বাজার থেকেও কয়েকজন কাষ্টমারকে দিন তারিখ হিসাব করে মুরগী লাগবে কি না তা জিজ্ঞেস করেন, সেই হিসাব মত কিনে নিয়ে দিয়ে আসেন, এই সব কাষ্টমারা বিশ্বাসী, দাম নিয়ে তেমন কথা বলেন না, তবে এদের কাছ থেকে বেশী নেয়াও যায় না। কারন অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, একবার যদি এই সব কাষ্টমার বুঝতে পারে, বেশী নিয়েছি তবে আর কোনদিন মুরগী কিনবে না, অন্য আর একজন ঠিক করবে। ফলে ব্যবসার প্রয়োজনে হিসাব করে লাভ করতে হয়! ১০০ টাকায় ১০ টাকা লাভ পেলেই খুশি। কারন দিন শেষে ৫০০ টাকা লাভ করতে পারলেই হল।



জামাল ভাইয়ের সাথে কথা হচ্ছিলো, চলতি পথে আমি চা দোকান দেখে বললাম, চলেন চা খাই। মনে হল অনেক খুশি হয়েছেন। চা ওর্ডার দিয়ে আমি আরো কথা বাড়িয়ে নিচ্ছিলাম। দেশের বাড়ী শরীয়তপুর জেলায়। ঢাকা আসতে বাধ্য হয়েছিলেন, নদীর ভাঙ্গনে ঘর ভিটা ভেঙ্গে যাবার পর। টগবগে তরুণ, বিয়ে করেছিলেন কয়েক বছর আগে, এমনি সময়ে নদীতে প্রায় সব বস্ত বাড়ী ভেঙ্গে যায় এবং নিঃস্ব হয়ে কোথায় যাবেন চিন্তা করতেই এক আত্মীয়ের সাহায্য সবাইকে নিয়ে ঢাকা আসেন। বাসাবোর এক এলাকায় তখন বিরাট বস্তি ছিল, সেখানে এক রুমের একটা বাসা ভাড়া করেন।



সেই বস্তিতে কয়েকদিন থাকার পর দেখেন, একএক জন একেক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। পাশের রুমে একজন এমনি মুরগীর ব্যবসা করতেন, তার কাছে থেকেই শেখা।



চা হাতে নিতেই আমি বললাম, চলেন বিস্কুট খাই। আমি চিনি কম বিস্কুট পছন্দ করি, জামাল ভাইয়ের জন্যও দুইটা নিলাম। চা দিয়ে চুবিয়ে এই বিস্কুট খাবার আনন্দই আলাদা!



আরো অনেক কথা হল, জামাল ভাই মাঝে আমার মোবাইল ফোন নাম্বার নিয়ে নিলেন। আমার মুরগী লাগলে তিনিই কিনে দেবেন এবং বাসায় বসে কেটে মুরগী পরিস্কার করেও দেবেন। তবে আমি আমার এলাকার নাম বলতেই তিনি আমাদের এলাকার কয়েকজনের নাম ও বিস্তারিত বর্ননা বলে দিলেন, আমি তাজ্জব না হয়ে পারি নাই। হেসে বললেন, ব্যবসার খাতিরে নাম ধাম মনে রাখতে হয়। আমাদের গলিতেও একজন কাষ্টমার আছেন বলে জানালেন। হ্যাঁ, আমি ওই এপার্ট্মেন্ট চিনি।



যাই হোক, চা পান শেষ, আমারো তাড়া ছিল, বিদায় নিতে চাইলাম। আমি উনাকে নিয়ে লিখবো বলাতে আবারো হাসি দিলেন, ছবি তোলার পারমিশন চাইতে আবারো হেসে দিলেন। জানালেন, ছবি দিয়ে আর কি হবে? এই জীবন তো আর তেমন করে কিছুই করা হল না। (আপত্তির কারনে জামাল ভাইয়ের ছবি ও নাম প্রকাশ করা হল না)



যাক চা দোকানের বিল দিয়ে আমি ফিরে যাচ্ছি, জামাল ভাই তখনো দাঁড়িয়ে (বিল তিনি দেবেন এমন জোর দেখিয়েছেন, আমি মানি নাই) আছেন, হেসে বলি, সিগারেট টানবেন?



জামাল ভাই কিছুই আর বলছেন না, কাঁচা পাকা দাড়িতে জামাল ভাইকে ভাল লাগছিলো তার সরলতায়। গোল্ডলিফে আগুন ধরালে আমি হাত মিলিয়ে আমার রাস্তায় নেমে পড়ি। এই তো আমার দেশ, এই তো আমাদের মানুষ, যারা খেটে খেতেই পছন্দ করে। জীবনে কত কিছুই মিলছে না, তবুও মুখে হাসি!



বিচিত্র এই দেশ, বিচিত্র এই দেশের মানুষ, কত কি বিচিত্র পেশা! তবে সবই জীবিকার টানে!



বিচিত্র পেশাঃ ১৮

Click This Link

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৬

কাবিল বলেছেন: ভাল লাগল আপনার পোস্ট।



জামালদের মত খেটে খাওয়া মানুষ আছেই বলে কিছু মানুষ ঘরে বসেই অনেক কিছু কিনতে পারছে,
আর মটু-সটু হতে পারছে। :)

০৭ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৬

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ কাবিল ভাই।
শুভেচ্ছা নিন।

২| ০৮ ই মে, ২০১৫ রাত ২:৪২

নতুন বলেছেন: আপনের এই সিরিজ নিয়ে তো টিভিতে ডকুমেন্টরি বানানো দরকরা... :)

১৩ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৯

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ নুতন ভাই।
শুভেচ্ছা।

৩| ০৯ ই মে, ২০১৫ সকাল ৮:২৫

ফ্লাইং সসার বলেছেন: যাদের নিয়ে কেউ চিন্তা করে না তাদের নিয়ে লিখছেন আপনি,চমৎকার উদ্যোগ! :)

১৩ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১:০০

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ ফ্লাইং সসার ভাই।
শুভেচ্ছা নিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.