নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষণ

সাব্বির আহমেদ ভাষন

একটু বেশি ভাবি।স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি আর ভালবাসি গান শুনতে।পড়াশোনা যা হয়েছে হয়তো বা অনেক, বাকিটা চেষ্টা চলছে।ভালবাসি নিজেকে,ভালবাসি বই পড়তে।এই আমি এই আমার পৃথিবী.........

সাব্বির আহমেদ ভাষন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আংশিক ভালোবাসা

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩২

--চলে যাচ্ছি তোমার জীবন থেকে। আর, কখনোই ফোন করবো না। তোমাকে ডিস্টার্ব করবো না।
--আচ্ছা।
-- কি আচ্ছা?? আমি সিরিয়াস।
--ওকে চলে যাও।
--তোমার সাথে রিলেশন করে আমি কি পেয়েছি?? কিছু দুংখ আর হতাশা ছাড়া।
তুমি সুখে থাকো। ভালো থাকো।জানি হয়ত আমার থেকে ভালো কাউকে তুমি পাবে কিন্তু আমার মত ভালোবাসবে না কেউ তোমাকে।

দু'চোখের পানি মুছতে মুছতে চলে যাচ্ছে উপমা।সেই তো , সে দিনের কথা জামাল পুর থেকে ট্রেনে করে উপমা ঢাকা ফিরছিল।এইটাই তার প্রথম কোনো জার্নি পরিবার ছাড়া।আব্বু-আম্মু কে ছেড়ে আসতে ভীষন কষ্ট হচ্ছিল তার।কিন্তু, কিছু করার নেই তার ক্লাস শুরু হয়ে গেছে।ঢাকার একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে উপমা।

ক্লাসের প্রথম দিন কাউকে সে চেনে না।আর, ক্লাসের পরিবেশ কেমন যেন! কেউ কারো সাথে বসছে না, কেউ কারো সাথে মিশছে না।উপমা মনে মনে অনুভব করল,আরে আমাদের স্কুল-কলেজ তো এমন ছিল না।এভাবেই উপমার দুই-তিন দিন কেটে গেল।উপমা অনেকটা চুপচাপ থাকতে পছন্দ করত কিন্তু এতটা চুপচাপ না যা তার ক্লাসে থাকলে থাকতে হত।

একদিন উপমা অনেক সকাল বেলা ভার্সিটি চলে আসে এবং জানতে পারে প্রথম ক্লাস হবে না।আর যেহেতু তার ফ্রেন্ড নেই তাই ক্লাসেই বসে থাকার প্লান করে।কিছু ক্ষন পরে সে একটা ছেলেকে দেখে।চোখে চশমা পড়া, চুল গুলো এলোমেলা এবং খুব শান্ত একটা ছেলে। উপমার খুব কাছেই সে বসে এবং চুপচাপ ক্লাস করে চলে যায়।এমন ভাবে উপমা কিছু দিন সেই ছেলেটিকে দেখে এবং ভাবে এই ছেলেটা ঠিক আমার মত।আমার কি উচিত না তার সাথে কথা বলা?আবার পরক্ষনে ভাবে ,আমি কেন ওর সাথে কথা বললো? ওর কি বলা উচিত না?

অল্প কিছু দিনের ভিতর সবাই সবার পরিচিত হয়ে যায়। সবার নাম সবাই জানতে পারে।উপমা এর মাধ্যমে ছেলেটির নাম জানতে পারে। ছেলেটি শুভ্র। সবাই সবাই ফেসবুক বন্ধু হয়ে যায়।একদিন হঠাৎ উপমার ফেসবুকে একটা মেসেজ আসে ,
--হাই
--হ্যালো
--আমি শুভ্র? চিনতে পারছো?
--আমাদের ডিপার্টমেন্ট। সেম ব্যাজ, রাইট?
--হুম.........।আচ্ছা, একটা প্রশ্ন করবো, তুমি এত চুপচাপ থাকো কেন ??
--এমনিতেই...।তুমি কেন চুপ থাকো?
--তুমি থাকো তাই ...। হি হি.........।

এভাবেই আস্তে আস্তে উপমা আর শুভ্র অনেক কাছাকাছি চলে আসে।ক্লাসে এক সাথে পাশাপাশি বসা, আড্ডা, এক সাথে ঘুরতে যাওয়া, এমনকি নোট ভাগাভাগি করে পড়াটা যেন নিত্য দিনের অংশ করে ফেলেছিল ওরা।

প্রত্যেক ভালোবাসাতে একটা কিন্তু থাকে ঠিক সেই কিন্তু টা অনেক ক্ষেত্রে বিশাল আকার ধারন করে।উপমা আর শুভ্র এর বেলায় ও ঠিক টাই হয়েছিল।প্রথম সেমিস্টারে শুভ্র অনেক বাজে রেজাল্ট করে।কিন্তু, উপমা অনেকটাই ভালো করে।শুভ্র সিদ্ধান্ত নেয় সে আর এই ভার্সিটিতে পড়বে না।অন্য কোনো ভার্সিটি চলে যাবে। উপমা শুভ্র কে অনেক বুঝায় কিন্তু সে তার কথা শুনে না।
শুভ্র উপমা কে বুঝায়,
--আমি ভার্সিটি পরিবর্তন করছি তোমাকে নয়।আমার মনে হয়, আমি অন্য ভার্সিটিতে গেলে ভালো করবো।
--তুমি তো ইচ্ছা করলে এখানে থেকেই ভালো করতে পারো??
--হয়ত, কিন্তু মন টানছে না।
--টানছে না নাকি আমাকে আর ভালো লাগছে না?
--দূর কি যে বলে।

শুভ্র অন্য একটা ভার্সিটি চলে যায় আর উপমা এখানে।ফোনে কথা হয়, ফেবুতে চ্যাট হয়।কিন্তু দেখা হয় না।

দিন যাচ্ছে, শুভ্র কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে।তাকে বেশি ফোন করে না।ফেবুতে রিপ্লাই করে অনেক সময় নিয়ে আর দেখা করতে চায় না।

উপমার মনে বিভিন্ন প্রশ্ন খেলা করে আচ্ছা শুভ্র কি আমাকে ঠকাচ্ছে।ও কি অন্য মেয়ে কে ভালোবাসে? না হতেই পারে না।শুভ্র এমন ছেলেই না পরক্ষনে তার মনে হয়।

এভাবেই চলা আর না চলার মাঝে এক বছর কেটে যায়।শুভ্র আর উপমা বসে আসে একটা পার্কে।উপমা সেলফি তোলার জন্য শুভ্রর ফোন টা নেয় তার কাছে।আর, তখন ই ঘটে বিপত্তি।একটা মেসেজ আসে ফোনে।উপমা মেসেজ ওপেন করে যা দেখে তা দেখার জন্য সে মোটে ও প্রস্তুত ছিল।
নিতু নামের একটা মেয়ে মেসেজ করছে, ' মিস ইউ জান।'

এটা দেখার পর উপমা ক্ষনিক সময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল।তার শরীর টা ঠান্ডা হয়ে হয়ে।শুভ্র তুমি এমন টা করতে পারলে?শুভ্র বিষয় টা বুঝতে পেরে অন্য দিকে নিতে চাইলো কিন্তু উপমার এইটা বুঝতে বাকি রইল না।

---উপমা দু'চোখের কান্না টা শুভ্র আর দেখলো না।এর পর উপমা কোনো দিন শুভ্র সাথে কোনো যোগাযোগ রাখে নি।হয়ত ভালো আছে।হয়ত নিতু বা অন্য কাউকে নিয়ে সুখে আছে।

কিন্তু একটা প্রশ্নের উত্তর আজো তার অজানাই রয়ে গেছে, "আচ্ছা, শুভ্র কি সত্যি ই আমাকে ভালোবেসেছিল ? "

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.