নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজকে দুইটি সংবাদপত্রের শিরোনাম দেখে বিস্ময় হলাম, আমাদের অনুজদের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে।
অর্থনৈতিক মন্দার কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা কতটা ভয়াবহ হতে যাচ্ছে, তা আমি দুইটি সংবাদপত্রের সংবাদ দিয়ে বলছি।
১. ডয়েচে ভেলের শিরোনাম- *প্রশ্ন ব্ল্যাকবোর্ডে, বাড়ি থেকে উত্তর লেখার খাতা*
২. বিবিসি বাংলার শিরোনাম-*ডলার সংকটে ব্যাংকে বিদেশগামী ছাত্রদের স্টুডেন্ট ফাইল খোলা বন্ধ*
আপানারা জানেন কিনা জানি না, প্রতি বছর বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষাতে জন্য ব্যয় কমানো হয়। ২০১৭ তে শিক্ষাক্ষাতে ব্যয় ছিল ১৬.০৪% (% জিডিপি) যা কিনা ২০১৮ তে গিয়ে হয়েছিল ১১.৬৮% যেটা কমেছে ঋণাত্মক -৪.৩৭% । ২০১৯ গিয়ে আরো ঋণাত্মক -২.৪৫% কমে দাড়িয়েছিল ৯.২৭%। যদিও ২০১৯-২০২০ অর্থবছর করোনা মোকাবেলার সময় ছিল। কিন্তু ২০২০ এ বিভিন্নভাবে শিক্ষাক্ষাতে ব্যয় বাড়ানো হয়েছিল ধ্বণাত্মক ২.৫৭% যা কিনা ১১.৮৪% এবং গত অর্থবছরে তা হয়েছে ঋণাত্মক -০.১৫% । ২০২২ এ তথ্য কি হতে পারে তা ডয়েচে ভেলের শিরোনাম থেকে আপনারা অনুমান করতে পারেন। প্রশ্ন ছাপানোর মত টাকা নাকি নাই, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চিঠি দিয়ে সকল প্রাথমিক স্কুলে নিদের্শ দিয়েছে, যেন তারা কৃচ্ছসাধন করে। BAL এর ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখবেন শিক্ষাখাতে বাজেট ৯৫ বিলিয়ন টাকা বাড়ানো হয়েছে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে প্রাথমিক শিক্ষা বাজেটে ছিল ২৬৩.১৪ বিলিয়ন যা এই অর্থবছরে ৩১৭.১৬ বিলিয়ন করা হয়েছে।
তাহলে সাধারণের মনে কি প্রশ্ন উঠতে পারে না, এই বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা কি সঠিক ভাবে কাজে লাগানো হয় নি?
শিক্ষাবিদ ১০০% চেতনাধারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ কম্পিউটার বিজ্ঞানী, শিক্ষক, কলামিস্ট এবং একাধারে লেখক বলেছেন
"বাচ্চারা তোমাদের পড়াশুনার কোনো দরকার নেই”
তা স্যার আমরা কম্পিউটার বিজ্ঞানী না আপনার মত কিন্তু এই কথা বলার জন্য console.log() করে বলা দরকার নাই। আপনাদেরও বলা উচিত ছিল,
"বাচ্চারা আমরা সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত, তোমাদের বিনামূল্যে শিক্ষার সুযোগ তো দূরের কথা, তোমাদের বাবা/মায়ের টাকার বিনিময়েও সঠিক ভাবে শিক্ষার সুযোগ করে দিতে পারছি না, তাই ক্ষমা করে দিও আমাদের”
যাইহোক আরেক ধাপ সরশ ছিল শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কথা , তা হল - এই অর্থবছরের উন্নয়ন তহবিল এখনো পায় নি, স্কুলগুলো। এবং সার্কুলারটি নাকি ঠিক ছিল না, যেকারণে ডয়েচে ভেলে মুছে দিয়েছে।
আচ্ছা উনারা যে বলছে, বাসা থেকে সাদা কাগজ নিয়ে আসতে গত ৬ মাসে শিক্ষার জন্য যা যা লাগে, *(কাগজ, কলম, ইত্যাদি) তার দাম যে দ্বিগুন বেড়েছে, তা উনারা যানে কিনা, সন্দেহ আছে। একজন খেটেখাওয়া মানুষের কাছে যদি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার পর অতিরিক্ত কিছু থাকে তাহলে সে শিক্ষার জন্য খরচ করে। তাই এদের এইসব সার্কুলার কিসের বার্তা দিতে পারে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। কারণ এটা রকেট সায়েন্স নয়।
দ্বিতীয় যারা উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে আসতে চায় তাদের রাস্তা এখন সম্পূর্ণ বন্ধ। ডলার সংকট এর কারনে স্টুডেন্ট ফাইল খোলা বন্ধ। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার ছাত্র বাহিরে দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আসে। যেহেতু আমি নিজেও এসেছি আমি নিজে ভালকরে জানি একটা ছাত্র/ছাত্রীর ভিসা পাওয়া জটিলতা কতটা। এবং তাকে কতটা সময় অপচয় করতে হয়। একটা ছাত্রের এমনেই ৯ থেকে ১২ মাস (জামার্নীর ক্ষেত্রে) সময় লাগে ভিসা পেতে। এখন তো পুরো বন্ধ। স্টুডেন্ট ফাইল না খুলতে পারলে এম্বাসীতে সে ভিসার জন্য দাড়াতেই পারবে না। এই যে ৬০ থেকে ৭০ হাজার ছেলে মেয়ের উচ্চ শিক্ষার ব্যাঘাত ঘটালো এর দায়ভার কি কেউ নিবে?
দেখুন যারা উচ্চ শিক্ষার জন্য বাহিরের আসে বেশীর ভাগই আসার পর কিছু না কিছু কাজ করে জীবিকা নিবার্হ করে এবং সাথে বাংলাদেশে অর্থ পাঠায় অনেকে। ধরুন ৫০ হাজার ছাত্র/ছাত্রী যদি কম হলেও ২০০ ডলার করে প্রতি মাসে পাঠাতো তাহলে বাংলাদেশ ১ বিলিয়ন করে টাকা প্রতিমাসে পেত। ৬ মাসে আইএমএফ এর ঋনের থেকে বেশি টাকা পেত। এখন চিন্তা করুন ডলার নাই বলে ব্যাংকগুলোর এই সিদ্ধান্ত নেওয়াতে বাংলাদেশে যেমন আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হল এবং সাথে ৬০-৭০ হাজার ছাত্র/ছাত্রী পিছিয়ে পড়লো। কিন্তু এই ছাত্র/ছাত্রীদের নিয়ে কোন ছাত্র/ছা্ত্রীদের ফোরাম সোচ্চার হবে কিনা আমি জানি না। কোন প্রতিবাদ হবে কিনা জানি না। তবে না হওয়ারই সম্ভবনা বেশী, কেন জানেন বেশীরভাগ ফোরামের উচ্চ কর্মকর্তারা চেতনাধারী। আমি ভালো করে এদের চিনি।
এবার অনেকে বলবে, আরে ভাই সামনে তিন বেলা ঠিক ভাবে খেতে পারবো কিনা সেই চিন্তায় ঘুম আসে না আর আপনি আছেন শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে লেকচার শুনাতে। আমি আসলে লেকচার এর জন্য এই পোষ্ট করি নাই। শুধু এটা বুঝানোর জন্য তথ্য গুলা দিচ্ছি, অর্থনৈতিক অবস্থা কতটা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, যদি সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। পাচটি মৌলিক চাহিদা থেকে মানুষ খুব শীঘ্রই বঞ্চিত হতে পারে আবারো বলছি যদি সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।
সূত্র
১> Click This Link
২>
https://www.bbc.com/bengali/articles/cpd25m9n712o
৩>
https://albd.org/articles/news/39228/Budget-2022-23:-Education-budget-rises-by-Tk-95-billion
৪>
Click This Link
২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪০
উপনাম বলেছেন: আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আচ্ছা চেতনা টা কেটে দিলে কি, উনাকে জানতে পারবো?
৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: শুধু শিক্ষা ব্যবস্থা না, সব কিছুই ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে।
৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১০
উপনাম বলেছেন: পাচটি মৌলিক চাহিদা থেকে মানুষ খুব শীঘ্রই বঞ্ঝিত হতে পারে যদি সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। দুই-একদিন আগে রিজিয়া কিবরিয়ার একটি প্রোগ্রামের ভিডিও দেখলাম সেখানে এক সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নাকি ৫-৭ বিলিয়ন এর বেশি রিজার্ভ নাই। এটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত তদন্ত করার। যদি উনি ভুল বলে থাকে, তাহলে উনাকে বিচারের ব্যবস্থা করার, আর যদি উনি সঠিক বলে থাকে তাহলে জনগনকে জানানো
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:১২
সোনাগাজী বলেছেন:
ড: কায়কোবাদের সাথে জানাশোনা আছে?