নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জঙ্গল থেকে উঠে আসা মানুষ। খুব সহজে মানুষকে আপন ভেবে বসি, তাই দিনশেষে কষ্টের পাল্লাটা ভারী হতেই থাকে। ছোটবেলা থেকে \"মাসুদ রানার\" ভক্ত ছিলাম। এজন্যই হয়তো নিজেকে একটা রহস্যের মায়াজালে আড়াল করে রাখাটা স্বভাবে পরিণত হয়েছে।।

উড়ন্ত শিক্ষানবিস

উড়ন্ত শিক্ষানবিস › বিস্তারিত পোস্টঃ

"বদলে যাক ছেলের বাড়ির ডোমিনেশনের ট্র্যাডিশন"

০৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:১৭

প্রতিটা ছেলেকেই আল্লাহ একটা করে বোন গিফট করলে ছেলেদের চিন্তাধারা অনেকটাই চেইঞ্জ হয়ে যেত।

না, এমনি এমনি বলছি না। নিজের বড় বোনের বিয়ের দিন যত ঘনিয়ে আসছে আমার নিজের চিন্তাধারাও ততই পরিবর্তিত হচ্ছে। সারাজীবন আমাদের সমাজে পুরুষের যে ডোমিনেটিং চিন্তাধারা দেখেছি সেই একইরকম চিন্তা আমারও ছিল।

আমিও চিন্তা করতাম বিয়ে করব একদিন, বউ আসবে, বাসার সব কাজ করবে, নিজে চাকরী করুক বা না করুক আমি বাসায় ফিরে দেখব আমার খাবার গরম গরম রেডি আছে। আমি খুব টায়ার্ড হয়ে বাসায় ফিরব অফিস থেকে, এসেই জামাটা-জুতোটা কোনোমতে খুলে এদিক সেদিক ছড়িয়ে রাখব আর সে এসে জায়গামত রাখবে। আমি সন্ধ্যায় আবারো অফিসের ফাইল নিয়ে বসব আর সে ধোঁয়া তোলা এক কাপ চা এনে পাশে রাখবে। গল্প করতে উসখুস করলে আমি তাকে অফিসের কাজ দেখিয়ে ইশারায় বলব এখন ডিস্টার্ব না করতে। সে তখন পাশের রুমে বাবুর কাছে যাবে, বাবুকে পড়াবে, পড়ানো শেষে খাওয়াবে-ঘুম পাড়াবে। সব শেষ করে রাতে আমার পাশে এসে শুবে আর এরপর আমার রোমান্টিসিজম বেয়ে বেয়ে পড়া শুরু হবে!!

কিন্তু এখন নতুন চিন্তায় মাথাটা ভার হয়ে আছে। আমার সদাহাস্য উচ্ছল বোনটা ওই বাসায় গিয়ে কি গল্প করার একটা মানুষ পাবে? হাজারটা নতুন রেসিপি বানানো বোনটার নতুন নতুন খাবার কি কেউ এপ্রেশিয়েট করবে? নাকি খাবারে একটু লবন বেশি হলে শাশুড়ি মুখে ঝামটা দিয়ে গালি গালাজ করে বসবে? আমার এমবিএ করা বোনটাকে কি ওই বাসায় চাকরী করতে দিবে? নাকি এত বছরের সব পড়ালেখা ওর বাবুদেরকে পড়ানোর জন্যই উৎসর্গ করতে হবে? আমার ভ্রমনপিপাসু বোনটাকে কি জামাইবাবু কখনো কোথাও ঘুরতে নিবেন? নাকি ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনলেই বইয়ের ভাঁজে মুখ লুকাবেন?
আচ্ছা, আমার সাঁতারপ্রেমী বোনটাকে কি উনি কখনো টেমস নদীর উপর নৌকাভ্রমনে নিবেন? নাকি বিয়ের পরই বলে দেওয়া হবে "কর্ণফুলীর চিন্তাও মাথায় আইনো না, টেমস তো বহুদূর!"

আচ্ছা, আমার মহা জেদী বোনটার কপট অভিমানগুলো কি মানুষটা বুঝতে পারবে?? নাকি উনিও ইগো দেখায়ে ইগনোর করে যাবে সবকিছু?

আমাদের সবগুলো ছোট ভাইবোনদেরকে মায়ের আদরে বড় করা বড় বোনটাকে কি ওরা বাসায় আসতে দিবে? আমাদের সাথে কখনো কি ঈদ করতে দিবে? নাকি বলবে "বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িই মেয়েদের সব" !!

এমন হাজারটা চিন্তায় মাথাটা প্রচন্ড ভারী হয়ে আছে। এত চিন্তার মাঝে সবচেয়ে বড় পজিটিভ দিক হল আমার নিজের চিন্তাধারা বদলে গেছে।

আমি এখন বুঝতে শিখেছি, "বিয়ে" কেবল সামাজিক নিয়ম রক্ষার একটা ট্র্যাডিশন নয়, বিয়ে একটা নতুন মানুষের রেস্পন্সিবিলিটি নেওয়া। বিয়ে শুধু ছেলের পরিবারের এক্সপেক্টেশান মেটানো নয়, বিয়েতে মেয়ের কথা মেয়ের পরিবারের কথা তাদের এক্সপেক্টেশানের কথা তাদের ইমশোনের কথা সবকিছুই মাথায় রাখতে হয়।।

বদলে যাক সব ভাইদের চিন্তাধারা। বদলে যাক ছেলের বাড়ির ডোমিনেশনের ট্র্যাডিশন। দোয়া করি।।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:২৩

বিজন রয় বলেছেন: আপনার আশা পূরণ হোক। কিন্তু সেটা কিভাবে।
কোন ছেলেই তো এটা মেনে নিতে পারবে না।
তাদের সেই মানসিকতা নেই।

শুধু আমি ছাড়া।

০৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:০০

উড়ন্ত শিক্ষানবিস বলেছেন: আজ আমারটা দেখে আপনি এলেন আমার দলে। কাল আপনারটা দেখে আরেকজন আসবে। এভাবে "ভূত থেকে ভূতে" ছড়িয়ে যাবে :)

২| ০৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:৩৬

প্রীতম বলেছেন: যে নিয়মগুলোর কথা বলেছেন তা মানুষ এর বানানো নিয়ম যা যুগ যুগ ধরে আমরা লালন ও ধারন করছি যার সাথে ধর্মীয় ও সামাজিক মুল্যবোধের কোন বালাই নেই। যদি আমরা এক দুই তিন করে সঠিকটা শুরু করি তবে আচিরেই সে সকল আমানবিকতা বিলিন হবে। আর আমরা সবাই জানি সঠিকটা কি। ধন্যবাদ আপনাকে। আজ থেকে আমি শুরু করলাম, কাল আপনি থাকছেনতো আমার দলে ও পাশে?

০৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:০১

উড়ন্ত শিক্ষানবিস বলেছেন: পাশে যদি না-ই থাকব তবে এত কষ্ট করে লিখলাম কেন?!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.