নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবুক হিল্লোল

ভাবুক হিল্লোল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিপ্রতীপ ভালবাসা।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৫৭

প্রতিদিনের মতই নীলা পড়তে বসেছে আবীরের কাছে। এর আগেও অন্য স্যারদের কাছে পড়েছে নীলা। কিন্তু এই বার তার মা নতুন এক আইন পাশ করেছেন। আর তা হলো নীলা যখন তার স্যারের কাছে পড়বে তার ছোট ভাই তাদের পাশে বসে থাকবে। এই এক নতুন ঝামেলা। এর জন্য অবশ্য নীলাও কিছুটা দায়ী। আগের স্যারের সাথে একটু বেশীই কথা বলতো সে। তাই আগের স্যারটাকে ঝাড়ি দিয়ে বিদায় দিয়েছে তার মা।
এই পল্টু যা তো স্যারের জন্যে এক গ্লাস পানি নিয়ে আয়।আপুর কথা শুনে পল্টু পানি আনতে যায়। আবীর অন্য দিন পড়ানোর আগে প্রস্তুতি নিয়ে আসলেও আজ আসেনি। আজ একটা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ছিল। তাই আর প্রস্তুতি নিতে পারে নি। পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়টা একটু কঠিনই মনে হচ্ছে তার কাছে। অনেক আগের পড়া। তাই কিছুটা ভুলে গেছে সে।
-স্যার আপনি এতো বোকা কেন?
-হুম কি বললে?
-বললাম এতো বোকা কেন? আর পল্টুও নাই এখানে। এবারতো আমার দিকে তাকাতে পারেন নাকি?
-এখানে বোকামির কি হল?
-কি হল মানে? আগের স্যার একটু বোকা হলেও আমার দিকে একটু তাকাতো। আর আপনি তো তাও করেন না!
পল্টু পানি আনতে গিয়ে তার মায়ের একটা ভালই ঝাড়ি খেল। সে উঠে আসায় তার মা প্রচন্ড খেপে গেছেন।
-কিরে ওখান থেকে চলে আসলি কেন?
-আপু বলছে স্যার পানি খাবে।
-তো তৃষ্ণা পেয়েছে কি স্যারের নাকি তোর আপুর?
-তা আমি কি করে বলবো?
অনেকটা ঝড়ের বেগেই তাদের পড়ার রুমে মা ঢুকলেন।
-কিরে স্যারের পানির তৃষ্ণা পেয়েছে কিনা তুই জানিস কিভাবে?
-না স্যার হঠাৎ করে কাশি দিয়ে উঠলেন তো তাই!
-ও তাই? আর এই যে স্যার আপনি চুপ করে বসে আছেন কেন?
-জ্বী?
-জ্বী মানে? পানি লাগলে আমাকে ডাকবেন। পল্টুকে পাঠাবেন না। কি পারবেন না?
-জ্বী অবশ্যই?
পরের দিন।
স্যার কাল মা যে কথা গুলা বললো আপনার কি গায়ে লেগেছে?
পল্টুর দিকে তাকিয়ে আবীর কিছু একটা ইশারা করল।
-স্যার সমস্যা নাই! ঐটাকে একটা মোজো ঘুষ দিয়েছি। চড় মারলেও পেট থেকে কথা বের হবে না।
_ঘুষ?
-কেন স্যার আপনি কখনো ঘুষ দেন নাই?
-ঘুষ দেবো কেন?
-স্যার আসলেই আপনি একটা বোকা!
আবীর মনে মনে বললো এই রকম সুন্দরী মেয়েরা সামনে থাকলে স্যারেরা একটু বোকাই হয়।
কাল বাদে পরশু নীলার জন্মদিন। আবীর তাকে কি উপহার দিবে বুঝতেছে না। সেও ইদানিং নীলার প্রতি একটু দুর্বল হয়ে পড়ছে। কিন্তু নীলাকে তা বুঝানো যাবে না। কোন কারণে নীলার মা জানতে পারলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবে। এই টিউশিনিটা অনেক কষ্টে জোগাড় হয়েছে। কোন কারণে ছুটে গেলে অনেক কষ্ট করে তাকে চলতে হবে। তাই সে একটা সায়েন্স ফিকশনের বই কিনে নিল নীলার জন্যে। জন্মদিনে নীলার হাতে বইটা তুলে দিল আবীর। বই পেয়ে নীলা যারপরনাই খুশি।
পর দিন পড়ার টেবিলে। এই দিন অবশ্য পল্টুকে একটু বেশীই ঘুষ দিতে হয়েছে। যে ছেলে দুই দিন আগে ২৫০এম এল মোজো খেত, সেই ছেলে এখন হাফ লিটার কোক ছাড়া কিছুই মানতে চায় না।
-কি বই দিলেন স্যার?
-কেন দেখ নাই?
-দেখেছি স্যার। কিন্তু এই বই ভাল লাগে না স্যার।
-কেন? সায়েন্স গ্রুপের ছাত্রী। কিন্তু সায়েন্স ফিকশন বই ভাল লাগবে না কেন?
-কেন স্যার, বাজারে কি হুমায়ূন আহমেদের প্রেমের উপন্যাসের বই পাওয়া যায় না?
মুচকি হাসি দেয় আবীর।
বহু দিন পড় পড়ন্ত বিকেলে আগের দিনের কথাগুলো মনে করে হেসে কুটি কুটি হয় নীলা। তার সাবেক স্যার মানে বর্তমান স্বামী বোকা হলেও সবাইকে জয় করে তাকে যে চিরদিনের জন্য কাছে আনতে পেরেছে এটাই বা কম কিসে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.