![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি নিজেকে মানুষ ভাবতে ভালবাসি। আর সেই মানুষ প্রজাতির কিছু গুণ আমি রপ্ত করেছি যার কয়েকটা আপনাদের শেয়ার করার চেষ্টা করছি মাত্রঃ১, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মাথা নষ্ট করা।২, অপরের সমালোচনা করা।৩, নিজের দোষ গুলো ছোট করে দেখা।৪, অপরের উন্নতি দেখে ঈর্ষা করা।৫, সুযোগ পেলেই অসৎ পন্থা অবলম্বন করা।৬, প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাহিদা।৭, মানুষের কান ভারী করা।৮, বিনা পরিশ্রমে অধিক সফলতা আশা করা।৯, সর্ব ক্ষেত্রে সুবিধাবাদী মনোভাব পোষণ করা।আমার এই গুণ গুলোই আমাকে আংশিক মানুষে পরিণত হতে সহায়তা করেছে।তবে কিছু পশুর সাথে আমার বেশকিছু মিল আছে,১, আমি বিড়ালের মত আরাম প্রিয়।২, পিঁপড়ার মত সঞ্চয়ে ভালবাসি।৩, গরুর মত নিরীহ আমার মন।৪, মাঝে মাঝে শিয়ালের মত পান্ডিত্ত করি।৫, প্যাঁচার মত রাত জাগতে ভাল লাগে।৬, পাখির মত স্বাধীনতা পছন্দ করি।পরিশেষে বলতে চাই, সৃষ্টি জগতে আমি একটি প্রাণী।তাই নিজেকে প্রাণী ভাবতেই ভাললাগে এর বেশি কিছু হয়ে অন্য প্রানীর সম্মানে আঘাত দিতে চাই না, হয়তো পারবও না।
আজ ভার্সিটি থেকে বের হলাম, উদ্দেশ্য মার্কেট যাব। গেট থেকে বের হয়ে দেখি বাস আসছে।বাস থামানোর জন্যে হাত দেখিয়ে, নিউটনের গতিসুত্রকে কাজে লাগিয়ে, আইনস্টাইনের আপেক্ষিক গতির উপর ভর করে, বাসের সাথে সমগতিতে দৌড়ে ডান হাতে কোন রকমে বাসের-হেন্ডেল ধরে, চিরায়ত ভাবে বাম পা-দিয়ে বাসে উঠলাম।উঠেই দেখি বাসের পিছনে কোণায় একটা সিট খালি আছে।এই যুগে যে মানুষটা বাসে বসার মত একটা সিট পায় সে পৃথিবীর অন্যতম সুখী মানুষ।সেটা এই গরমের দিনে হলে তো কথাই নেই।যাই হোক, নিজেকে সুখী ভাবতে ভাবতে জানালা দিয়ে বাইরে থাকালাম। দেখি এক চাচার বয়সী লোক রিক্সার পা-দানীতে বসে কাঁদের গামছাটা দিয়ে নিজের গাঁয়ের ঘাম মুছছেন।তার পাশে একলোক গেন্ডারীর রস বিক্রি করছেন এবং কয়েক জন মনের সুখে সেই রস পান করছে।
গাড়ী চলতে চলতে মহিলা কলেজের সামনে থামল।এক জন মহিলা নামছেন।আমি বাহিরে থাকিয়ে দেখছিলাম তিনটা মেয়ে দাঁড়িয়ে এক ছেলের সাথে আড্ডা দিচ্ছিল।ছেলেটার পরনে যদিও প্যান্ট আর টি-শার্ট ছিল।কিন্তু মেয়েদের মধ্যে দু-জন নেকাব পরে ছিল আর অন্য জন হিজাব।এই চরম গরমে মেয়ে গুলোর ধর্মীয় অনুভুতি সহকারে পোশাক পরা দেখে নিজের ধর্মীয় অনুভুতি জেগে উঠল।
যাই হোক, অবশেষে বাস এসে থামল জিইসি-র মোড়ের জ্যামে।কিছু লোক নামছে, কিছু লোক উঠছে।কিন্তু বাস তার আগের জায়গায় আছে।উপরন্তু আমি রাস্তার পাশের ফুটপাত থেকে ফ্রি-তে এক পশলা ঝগড়া দেখে নিলাম।ঝগড়ার শুরুটা কী-নিয়ে তা জানি না এবং শেষটাও দেখা হয়নি।তবে মাঝখান থেকে কিছু হিব্রু ভাষায় কথোপকথন শোনা হল মাত্র।
বাস আবার চলতে লাগল।ওয়াসার মোড়ে গিয়ে এক জোড়া কপোত-কপোতি একই ছাতা মাথায় হেঁটে চলছে।আর একদিকে ওয়াসার দারোয়ান হাতে কিছু একটা নিয়ে নিজেকে বাতাস করছে। বেচারার দিকে থাকিয়ে আমার নিজেরই পানির পিপাসা লেগে গেলো।কিন্তু কিছুই করার ছিল না।
বাসের গতিতে চলতে চলতে কদমতলিতে এসে বাসের সাথে আবারো জ্যামে আটকা পড়লাম। এবার অপেক্ষার পালা, কিন্তু সেই পালা আর শেষ হয় না। বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পরও যখন দেখি বাস নড়ার কোন সম্ভবনা নেই, তখন উপায় না দেখে নিজের পা ব্যবহার করতে লাগলাম।আমি হাঁটছি আর মাথার উপর সূর্যটা আমায় সঙ্গ দিচ্ছে। এমনিতেই প্রচন্ড গরম তার উপর সূর্যি-মামার এই তেজ, আমি অসহায়।উফ! ফিলিং সো-হট।
©somewhere in net ltd.