![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্রষ্টা প্রদ্ত্ত বিবেক ও বিচার-বিবেচনা শাক্তি ব্যবহার করে বুদ্ধিবৃত্তিক ও আলোকিত জীবন গড়াই সত্যিকার মানুষের আসল কর্ম
বিশ্বাস বাংলা শব্দ আর ঈমার এর আরবী প্রতিশব্দ।বিশ্বাস মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । বিশ্বাস মানুষের কর্মকে নিয়ন্ত্রন করে থাকে । যেমন বিশ্বাস তেমন কর্ম। বিশ্বাস প্রধাণত দু’প্রকারের হয়ে থাকে:
ক)যথার্থ বিশ্বাস
খ)অন্ধ বিশ্বাস (ধর্মীয় বিশ্বাস,সমাজের বিভিন্ন কু’সংস্কার ইত্যাদ)
না দেখে কি বিশ্বাস করা যায়?
বিশ্বাস কখনো না দেখে হয় না-হোক সে দেখা বাহ্যিক চোখ দ্বারা বা অন্ত:চক্ষু দ্বারা। প্রত্যেক মানুষের ৪ টি চক্ষু আছে-দুটি বাহ্যিক চক্ষু অপর দুটি অন্ত:চক্ষু।আমকে আম, কাঠালকে কাঠাল বলে আমরা বিশ্বাস করি বাহ্যিক চোখ দ্বারা দেখে।কেউ আপনার কাছে টাকা ধার চাইলে আপনার টাকা তাকে দেয়া না দেয়া নির্ভর করে আপনি তাকে কতটুকু বিশ্বাস করেন। এ বিশ্বাস/অবিশ্বাস নির্ভর করে আপনি তাকে কতটুকু চেনেন ও তার পূর্বের কার্য্যাবলি পর্যালোচনা করে। আপনি অন্তচক্ষু দ্বারা তার অতীত কার্যাবলী বিশ্লেষণ করে উপরে উল্লেখিত ৪ প্রকারের এক প্রকার বিশ্বাস আপনি করেন।
বিশ্বাস পরিবর্তন করা কি খারাপ?
আপনি আজকে যা বিশ্বাস করেন তা যদি কেউ ভূল প্রমাণিত করে, তাহলে সে ভূলকে আকড়ে ধরে রাখা তো কোনক্রমেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।বরং যে আপনার চিন্তার ভূল ধরে দিল সে তো আপনার অনেক বড় উপকার করল।জ্ঞান পিপাসুদের বিশ্বাস প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হতে পারে। নতুন নতুন জ্ঞানে পূর্বের অর্জিত ভূল বিশ্বাস পরিবর্তন করে সত্যের দিকে এগিয়ে যায় বুদ্ধিমানেরাই। আর যারা অন্ধত্ব ও গোড়ামিতে লিপ্ত তারাই পূর্ব পুরুষ থেকে পাওয়া বিশ্বাসকে যাচাই বাছাই ছাড়া অন্ধভাবে কঠোরভাবে আকড়ে ধরে থাকে।
বিশ্বাস কি জোর করার বিষয়?
বিশ্বাস/অবিশ্বাস হয় স্বত:স্ফুর্তভাবে।মানুষ তার ৪ চক্ষু দ্বারা কোন কিছু দেখে তা বিশ্বাস করে। কেউ যদি কোন কিছু অবিশ্বাস করে তার অর্থ হল সে তার ৪ চক্ষু দ্বারা উহাকে দেখতে পাচ্ছে না। সুতরাং না দেখে বিশ্বাস সম্ভব নয়।যা চার চক্ষুর কোন চক্ষু দ্বারা না দেখে বিশ্বাস করা হয় তা চরম মুর্খতা, অজ্ঞতা।কেউ যখন কোন কিছু তার চার চোখের কোন এক চোখ দ্বারা কোন কিছু দেখতে পায়, তখন সে স্বাভাবিকভাবেই তাতে বিশ্বাস করে।বরং যা সে দেখল তা অবিশ্বাস করানোই অতি কঠিন।
তাই আপনি কাউকে কোন কিছু বিশ্বাস করাতে হলে তাকে চার চক্ষুর কোন এক চোখ দ্বারা দেখান, সে এমনিতেই বিশ্বাস করবে।যারা সত্যে ও সঠিকের পক্ষে থাকে তারা আপনাকে কখনও কোন কিছু বিশ্বাস করতে জোর করবে না, বরং সে তার সঠিকত্ব আপনার কাছে প্রমান করবে যুক্তি ও বাস্তবসম্মত প্রমান দ্বারা।
কারা বিশ্বাস করতে জোর করে
যা মিথ্যা, অসার, ভন্ডামি তা কাউকে বিশ্বাস করাতে হলে তখন যুক্তিকে এড়িয়ে জোর করতে হয়।কারন যুক্তির কাছে গেলে মিথ্যার অসারতা ও ভন্ডামি ধরা পড়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা।
যারা বিশ্বাস করতে জোর করে তারা কি যুক্তি এড়িয়ে চলে?
না, পৃথিবীর কেউ পুরোপুরি যুক্তি এড়িয়ে চলে না।ধরুন, আপনাকে আমি বিশ্বাস করতে বললাম যে আমার মাথার উপর যে ফ্যন ঘুরতে দেখছেন এটা কিন্তু আসলে ফ্যন না, এটা হল একটি গরু যা ফ্যনের আকৃতিতে আপনারা দেখছেন।এমন কথা স্বাভাবিকভাবে বিশ্বাস করার কথা নয়, তাই আপনাদের আমি কিছু ছাগল মার্কা তেনা পেচানো যুক্তি দিলাম।আমি কিন্তু পুরোপুরি যুক্তিকে এড়ালাম না।
তাহলে কখন যুক্তি দিতে নিষেধ করি? যখন কোন বুদ্ধিমান কেউ এসে আমার কথা অসারতা প্রমান করে তখন আমার শেষ আশ্রয় হয় –জোর করে বিশ্বাস করানোর হুমকি। বিশ্বাস না করলে কি কি সর্বনাশ!!!
তখনই আমি বলি-বিশ্বাসে মুক্তি মেলে তর্কে বহু দূর। এবং -----।
যে কিতাব মানুষকে বিশ্বাসের জন্য জোর করে তা স্রষ্টার হতে পারে না (কুরআন মানব রচিত):
কুরআন স্রষ্টার কিতাব বলে মিথ্যা দাবি করা হয়, এ কারনেই আপনাকে বিশ্বাস করার জন্য এত হুমকি দেয়া হয়। এটা বিশ্বাস না করলে ভয়ংকর শাস্তি। এর অনুসারীদের শুরুতেই শেখানো হয় অমুক অমুক বিষয়ে মুসলমান থাকতে হলে অবশ্যই বিশ্বাস রাখতে হবে। আকিদা (বিশ্বাস)যাতে কোন ক্রমে ছুটে না যায় সেদিকে নজর রাখতে শিক্ষা দেয়া হয়।কুরআন আসলে স্রষ্টার কিতাব কিনা তা কল্পনায় করা যাবে না যাচাই-বাছাই তো দুরের কথা।
আমি ফ্যানকে গরু বলেছি, আসলে তা যৌক্তিক কিনা তা চিন্তা করাই মহাপাপ, গরু কিনা তা যাচাই করাতো দূরের কথা।আমার অনুসারীদের মাথায় শুধু এতটুকু ভাল করে প্রবেশ করাতে পারলেই তো কেল্লা ফতেহ। কারন আমার কথা ঠিক কিনা তা চিন্তা করারই সুযোগ নেই, এবার আমার সব ভন্ডামি সুন্দরভাবে বিশ্বাস করানো যাবে।
২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:২৯
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনি হয়ত পুরো লেখাটি ভাল করে পড়েননি। মানা ও বিশ্বাস এক জিনিস নয়। কুরআন কি অবিশ্বাসীদের জন্য কঠোর শাস্তি কথা কি বলেনি? এটাই জোর করা। লেখাটি মন দিয়ে পড়ুন, এরপর আরো বিস্তারিত বলব।
ধন্যবাদ।
২| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৩৩
বিদ্যুৎ চমক বলেছেন: https://www.youtube.com/watch?v=WUrFZWKsIjA
একটা লিংক দিলাম আরো আছে প্রমান যদি চান।
৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৩৩
রাতমজুর বলেছেন: ধর্ম জিনিষটাই মানব রচিত। পরকালের মুলো ঝুলিয়ে ফয়দা লোটা।
২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৪৫
বিবেক ও সত্য বলেছেন: এ সত্য মানুষকে বোঝানো কঠিন।
৪| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৪১
অশ্রুকারিগর বলেছেন: পুরো পোষ্ট পড়ার টাইম নাই। শিরোনাম থেকে ধরে নিলাম আপনি বলতে চাইছেন কোরান কোন ঐশী বানী নয়, মানব রচিত ।
যদি এইটা হয়ে থাকে আপনার বক্তব্য তাহলে একটা ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। ইসলামের আবির্ভাবের সময়ে মক্কার কুরাইশরাও এই দাবী করেছিল যে মুহম্মদ(স) কোন ঐশী বানী পাননি, এটা মানবরচিত সাহিত্য। কিন্তু তারা কোরআনের সমতুল্য একটি লাইনও সৃষ্টি করতে পারেনি। এ সম্পর্কিত একটি আয়াত আছে সম্ভবত। জ্ঞানী-গুনীরা আমার হয়ে আপনাকে হয়তো জানাবেন।
কিছু জিনিস আসে বিশ্বাস করতে হয়। যেমন আপনি যে আপনার মা-বাবারই সন্তান শিউর ? কিভাবে জানেন ? আপনার জন্মের সময় আপনি বুঝতে সক্ষম ছিলেন ? আপনি নিশ্চয় পৃথিবীর আর ১০টা মানুষের মত জ্ঞান হবার যাদের মা বাবা বলে জেনে এসেছেন তাদেরকেই মা বাবা বলে জানেন ? নাকি ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখবেন ? ইচ্ছা আছে ? না বিশ্বাসটাই আসল ?
২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৫৭
বিবেক ও সত্য বলেছেন: কারো কোন কথার জবাব দিতে হলে আগে তার কথা শুনতে হবে। লেখাটি খুব বড় নয়, একটু মন দিয়ে পড়ুন, যদি যুক্তি দিয়ে ভূল প্রমান করতে পারেন তবে আপনার শিষ্যত্ব গ্রহণ করবো। সত্য মানার মানসিকতা আছে।
না দেখে বিশ্বাস করা যায় না। আর দেখা বলতে আমি শুধু বাহ্যিক চোখ দিয়ে দেখা বুঝায়নি, অন্তু:চক্ষু দ্বারা দেখাও বুঝেয়েছি। কে আমার পিতা- তা আমরা বিশ্বাস দেখে, না দেখে নয়। এ দেখা অন্তু:চক্ষু দ্বারা দেখা।
প্রথমত: জন্মের পর থেকে যাকে পিতা হিসাবে জানি, তিনিই যে আমার সত্যিই পিতা তার পক্ষে প্রমান হল:
১. মিথ্যা পিতার মনে সন্তানের প্রতি অগাধ ভালবাসা থাকে না
২. মিথ্যা পিতা হলে, তা যতই গোপন করা হোক না কেন সে বিষয়ে কম-বেশি কানাঘুষা হয় যা পিতা সম্পর্কে সন্দেহের সুযোগ করে দেয়। যখন সন্দেহের অবকাশ থাকে তখন যাচাই-বাছাইয়ের প্রশ্ন আসে। আপনি যাকে পিতা হিসাবে তার সম্পর্কে কানাঘুষা হলে আপনি নিশ্চয়ই মনে মনে সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের ব্যপারে উদ্যেগি হতেন।
সাধারণত: সত্য পিতার ব্যপারে এরুপ কানা-ঘুষা হয় না তাই যাচাই ছাড়াই বিশ্বাস করা হয়।
৩. পৃথিবীতে হাজার হাজার ধর্ম আছে। সবাই নিজেদের সঠিক আর অপরকে বেঠিক বলে। কিন্তু পিতার ক্ষেত্রে হাজার হাজার মানুষ এসে দাবি করে না যে আমি তোমার পিতা।তাই অনুসন্ধানের প্রয়োজন পড়ে না।
৪. যে বিষয়টি যতবড় গুরুতর তা বিশ্বাসের ক্ষেত্রে ততবড় প্রমানের প্রয়োজন পড়ে।যেমন ধরুন-একজন হাতে একটি বই নিয়ে বলল যে এ বইটি আমি লিখেছি, আপনি সামান্য কিছু পর্যালোচনা বা চিন্তা করে হয়ত বিশ্বাস করবেন বা অবিশ্বাস করবেন। আপনার এ বিশ্বাস/অবিশ্বাস কারো কিছু যায় আসে না। আপনি এ ধরনের কিছু বিশ্বাস করতে খুব বেশি যাচাই-বাছাইয়ে যাবেন না, কারন আপনি জানেন যে উক্ত লোক উক্ত বইয়ের লেখক হিসাবে আপনি বিশ্বাস করলেই আপনার কোন লাভ/ক্ষতি নেই বা অবিশ্বাস করলেও কোন লাভ/ক্ষতি নেই।
কিন্তু বিষয়টি যদি এমন গুরুতর হয় যে উক্ত বই আপনার জীবন নিয়ে কথা বলার দাবি রাখে, উক্ত বইয়ে বিশ্বাস না করলে আপনার জীবনের বারোটা বাজার সম্ভাবনা আছে, তাহলে কি আপনি বিষয়টিকে এত সাধারণভাবে নিবেন? নিশ্চয়ই তা গভীরভাবে যাচাই-বাছাইয়ের দাবি রাখে, নয় কি?
ধর্ম মানুষের জীবন নিয়ে কথা বলার দাবি করে। ধর্ম না মানলে পরজগতে কঠিন শাস্তির দাবি করে। বিষয়টি গুরুতর, তাই তা সম্মকভাবে যাচাই-বাছাইয়ের দাবি রাখে।
৫| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:০৯
শাহেদ শাহরিয়ার জয় বলেছেন: বিতর্কিত পোস্ট দিলে পাঠক বাড়ে,কিন্তু নিজেরে সম্মান বাড়ে না।মজার বিষয় হল মানুষের জ্ঞানের পরিধি এত্ত বিশাল যে আমরা অন্যের যুক্তি পিঠে নতুন যুক্তি দাঁড় করাতে পারি!
যাহোক,তা কুরআন টা লিখক কে!?
এত্ত বিখ্যাত একটা বই নিশ্চয় লেখক চাইবেন না নিজের পরিচয় লুকিয়ে রেখে অন্যের নামে চালাতে!?আমরাতো দু' লাইন লিখলেও তাতে নিজের নাম দিয়ে দিই,কেমন মহান মানুষ যে নিজের নামটাই লুকাই রাখল!
২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:০৩
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনি একটি পুস্তক এনে বললেন যে এটা স্রষ্টার পুস্তক অথচ কোন প্রমান দিতে পারলেন না। বরং পুস্তকের বক্তব্যে বহু অসঙ্গতির প্রমান দিলে আপনি বললেন আমার হাতের পুস্তকের লেখক কে বলেন দেখি?
আপনার পুস্তকের লেখক কে সেটা খোজার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন প্রমান করা তা স্রষ্টার কিতাব।
৬| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:১১
অসীম বড়ুয়া বলেছেন: এত বড় পোস্ট একবারে পড়ার সময় হলোনা, পরবর্তীতে ধীরে ধীরে পড়ার চেষ্টা করবো।
২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৫৪
বিবেক ও সত্য বলেছেন: এত বড় পোষ্ট কোথা থেকে পেলেন? পড়ার অনুরোধ রইল।
৭| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:১৯
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: নীচের সাদাসিদা পয়েন্ট কয়টা একটু বিবেচনা করে দেখতে পারেন :
১)বিশ্বাস করে সে অনুযায়ী চললে পরের অংশে যে ভয়ের কথা বলা হয়েছে তা আর বিশ্বাসীর জন্য প্রযোয্য হবেনা ।
২)বিশ্বাস করেন কিংবা না করেন একদিন মৃত্যৃবরণ করতে হবে , কোন অবিষ্বাসীই এখন পর্যন্ত মৃত্যুর হাত হতে নিস্কৃতি পায় নাই।
৩) বিশ্বাস করে মরে গিয়ে যদি দেখেন ভয়ের কোন কিছু নাই তাহলে তো ক্ষতি নাই, মরার সাথে সাথে সব লেঠা চুকে যায় । তবে
৪) অবিশ্বাস করে মরার পরে যদি দেখেন ভয়ানক শাস্তির ব্যবস্থা সেখানে রয়েছে তাহলে অবস্থাটা কি হবে একবার ভাবুন ।
৫) মরতে যখন হবেই তখন বিশ্বাস না করাটা কি অনেক বেশী রিস্কি হয়ে যায়না ।
৬) কোন বুদ্ধিমান বিবেকমান মানুষ এ ধরণের রিস্ক নেয়না ।
২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৫২
বিবেক ও সত্য বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনার কথাগুলোর জবাব নিম্নের লিঙ্কে দিলাম। এরপর আপনার কথা শোনার অপেক্ষায়-
http://www.somewhereinblog.net/blog/wise/30142115
৮| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:৪৯
মহা সমন্বয় বলেছেন: আপনি আবার সেই মহা আজগুবি গ্রন্থ নিয়ে পোস্ট দিছেন। এ এক মহা আজগুবি গ্রন্থ সেটা তো সবাই জানে।
স্রষ্টার তো আর খেয়ে কাজ নেই, এসব আজগুবি গ্রন্থ শুধু ধুধু মরুভূমির একদল মূর্খ রাখাল বালকদের উপর নাজিল করবেন।
লক্ষ লক্ষ নাবীর আবির্ভব হয়েছে ওই আজগুবির কন্সেপ্ট নিয়ে আর এর সবই মধ্যপ্রাচের মরুভূমিতে। মধ্যে প্রাচ্যের রাখাল বালকেরা ধর্ম ব্যবসাটা ভালই বুঝতেন, পুর্ব পুরুষ থেকেই এই জ্ঞান তারা রপ্ত করতেন।
তামাম বিশ্ব জাহানের মালিক জিনি বিশাল ব্যাপ্তি যার কর্ম পরিধী সেই স্রষ্টা নাকি শুধু মধ্যপ্রাচ্যের কিছু রাখাল বালকদের উপর বার্তা পাঠাতেন!!! আর তার এই বার্তা অস্বীকার করার জন্য মক্কার কোন এক কোনে বসবাস করা সিম্পল একজন মানুষ আবু লাহাব হয়ে গেলেন স্রষ্টার শত্রু আর তাই তিনি তার নামে বার্তা নাজিল করে বসলেন,
ধ্বংস হউক আবু লহাব, ধ্বংস হউক তার দুই হাত ও তারা স্ত্রী পুত্র, ইত্যাদি ( সূরা লাহাব) আরও কত কি? স্রমগ্র দুনিয়ার মালিকের শত্রু শুধু আবু লাহাবই না তার স্ত্রী পুত্রও ছাগল কি আর গাছে ধরে? স্রষ্টা কি এত ছোট লোক?
ধর্ম গ্রন্থগুলো স্রষ্টার নামে মিথ্যা রচনা করে মানুষকে ভুল শিক্ষা দিয়ে বিপদগামী করেছে, আর এ জন্য ধর্মীকদের বিচার করা হবে আর সে হবে কঠিন ভয়ানক দিন । ওহে ধার্মীকেরা তোমরা স্রষ্টার নামে আর মিথ্যা রচনা করিও না স্রষ্টা নাখোশ তোমাদের উপর।
আমি স্বাক্ষ্য দিতেছি যে, নিশ্চই ধর্মগ্রন্থগুলো মানুষ্য রচিত আর এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ এবং স্বংশয় নেই।
ধন্যবাদ বিবেক ও সত্য ভাইকে, সমস্ত ডর ভয়ের ঊর্ধে উঠে প্রকৃত সত্য প্রকাশ করার জন্য।
২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:২০
বিবেক ও সত্য বলেছেন: একটু লক্ষ করলে দেখতে পাবেন যে যারাই আমার লেখার সমালোচনা করছে তাদের একজনও আমার দেয়া যুক্তি খন্ডন না করে এ কথা, সে কথা বলায় ব্যস্ত।
৯| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৩:৩৪
ফারগুসন বলেছেন: মি্ঃ মহা সমন্বয় ----মরুভূমির একদল মূর্খ রাখাল বালক ছাড়াও ভারত নন্দনের গোরাখালও একাজটি করেছে। স্রষ্টার তো আর খেয়ে কাজ নেই একথাটা ঠিক নই। স্রষ্ঠার কাজ আছে বলেই বার্তাসহ বার্তাবাহক পাঠিয়েছেন। সত্যকে ঠেলে ফেলে দেওয়া যা্য়না। চোখ বন্ধ না রেখে খুলুন--------------আলো প্রবেশিত হউক।
২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৫৮
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আমার পুরো লেখার সারকথা চোখ খোলা নিয়ে। আল কুরআন কার্যত চোখ বন্ধ করতে বলে। আপনি যদি চোখ খুলেই থাকেন, তাহলে সুনির্দিষ্টভাবে আমার লেখা ভূল প্রমান করুন। আমি আপনার যৌক্তিক ব্যখ্যা গ্রহণ করবো।
১০| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:৩৯
গাজী বুরহান বলেছেন: সস্তা জনপ্রিয়তার কয়েকটা শিরনাম দেই কাজে লাগবে।
আমার বাবা ক'জন? আমি কি ভাবে বিশ্বাস করব আমার বাবা একজন।
আমার কি পাবনায় যেতে হবে? কেন নয়? আমি মাঝে মাঝে আমার সৃষ্টি কর্তাকে ভুলে যাই।
এর পরে আপনি হাবিজাবি যাই লিখেন "সুপারহিট" হবে।
আর, আরো আছে, দরকার হলে জানাবেন। আমি দিতে কিপ্টেমো করবনা
সবশেষে আমি বলব, দাদা আপনি তো ১৪০০ বছর পরে এসে এইসব আজগুবি কথা বলতাছেন? আপনার উস্তাদ "আবু-লাহাব" কিন্তু চাইলে ১৪০০ বছর আগেই কুরআনকে ভুল প্রমাণিত করতে পারত। আপনাদের জন্য সুবিদেই হত। কুরআনে একটা সুরা আছে যার নাম 'সুরা-লাহাব'। এই সূরায় বলা হল "১। ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দু'হাত এবং সে নিজেও ধ্বংস হোক। ২। তার ধন-সম্পদ এবং যা সে অর্জন করেছে তা তার কোন কাজে আসবে না। ৩। অচিরেই সে দগ্ধ হবে লেলিহান আগুনে। ৪। আর তার স্ত্রীলাকড়ি বহনকারী , ৫। তার গলায় পাকানো দড়ি।"
লক্ষ করুন, আবু-লাহাব কিন্তু এই জায়গায় ইসলামকে, কুরআনকে ভুল প্রমাণ করে দিতে পারত ইসলাম কবুল করার মাধ্যমে। কন্তু সে করে নাই কারণ আল্লাহ্ আগেই জানতেন কে ইসলাম ধর্ম কবুক করবে আর কে না করবে।
২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:০৭
বিবেক ও সত্য বলেছেন: তেনা না পেচিয়ে, আমার যুক্তিটি খন্ডন করুন।
১১| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:২৫
সোনালী মাছ বলেছেন: পাগলপ্রলাপে সময় অপচয়ের মানে হয়না।
শিরোনাম পড়েই ধারনা করা যায় লেখকের জ্ঞানের অপ্রতুলতা।
২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:০৯
বিবেক ও সত্য বলেছেন: বাপ দাদার কাছ থেকে শিখে আসলাম চাদের মার বুড়ির গল্প। নিজ চোখেও দেখি চাদের মধ্যে একজন বুড়ি বসে আছে। এখন কোথা থেকে একজন এসে বলা শুরু করল যে চাদের মার বুড়ি বলে কোন কিছু নেই। যতসব হাবিজাবি কথা। যারা যাদের মার বুড়ি নাই বলে তাদের কথা আর কি শুনবো, যাদের মার বুড়ি নেই এমন শিরোনাম শুনলেই বোঝা যায় তার জ্ঞানের অপ্রতুলতা!!!!
হা, হা, হা।----
ধন্যবাদ ভাই।
১২| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:৫৭
নীলাকাশ ২০১৬ বলেছেন: "না দেখে কি বিশ্বাস করা যায়?
বিশ্বাস কখনো না দেখে হয় না"
২২০ ভোল্টের তারের ভেতর দিয়ে পানির মত কি বয়ে যায়, তা তো ভিতরের বাইরের কোন চোখ দিয়েই দেখা যায়না। তা ভাইজান, এরকম একটা তার খালি হাতে স্পর্শ করে তার ভিডিও সামুতে আপলোড করেন তো দেখি!
২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:২১
বিবেক ও সত্য বলেছেন: যে কোন বিষয়ে মন্তব্য করার আগে যার সম্পর্কে মন্তব্য করছেন তা ভাল করে বুঝা বেশি গুরুত্বপূর্ন।
লেখাটি ভাল করে পড়েননি, বা পড়লেও বোঝেননি।
আমি দেখা বলতে শুধু বাহ্যিক চোখ দ্বারা দেখা বোঝায়নি।
ধন্যবাদ।
১৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:১৫
মাদ্রাসা বলেছেন: কেন বিশ্বাস কর !!!
আপনি নির্দ্বিধায় প্রশ্ন করতে পারেন—কেন বিশ্বাস করব কোরআন আল্লাহর কালাম? কেন বিশ্বাস করব কোরআন মানুষের রচনা নয়? কেন বিশ্বাস করব যে, কোরআন অনুসরণ করলে আমি ভালো থাকব? কেন বিশ্বাস করব যে, কোরআন আমাকে পার্থিব জীবনেও সুখী ও প্রাচুর্যবান করতে পারে?
অবশ্যই বিশ্বাস করার আগে প্রশ্ন করতে হবে। সবদিক থেকে খতিয়ে দেখতে হবে। জানতে হবে। বিশ্লেষণ করতে হবে। ভাবতে হবে। বিষয়ের গভীরে ডুবে যেতে হবে। বিচার করতে হবে মুক্তমন নিয়ে, বস্তুনিষ্ঠভাবে। তাহলেই আপনি সত্যে উপনীত হতে পারবেন।
ইতিহাসের দিকে তাকান :
একজন মানুষ—যাঁর শুরুটাই শূন্য। পৃথিবীর আলোর মুখ দেখার আগেই পিতৃহারা। ছয় বছর বয়সে মাতৃহারা। আট বছর বয়সে আশ্রয়দাতা পিতামহকে হারান। এরপর চাচার কাছে লালিত। পড়াশোনার সুযোগবঞ্চিত কৈশোর কেটেছে মরুভূমিতে মেষ চরিয়ে।
একজন মানুষ—যিনি নিরক্ষর ছিলেন। পড়তে বা লিখতে পারতেন না।
একজন মানুষ—যিনি কখনো কোনো কবিতা লেখেন নি। কোথাও ভাষণ দেন নি। কোথাও ওয়াজ করেন নি। কবি, বাগ্মী বা ধর্মবেত্তা হিসেবে যাঁর কোনো পরিচিতি ছিল না।
একজন মানুষ—দার্শনিক, ইতিহাসবিদ, গবেষক, সমাজবিজ্ঞানী, মহাকাশবিজ্ঞানী হিসেবেও যিনি খ্যাতিমান হন নি।
একজন মানুষ—যিনি ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত পরিচিত ছিলেন একজন শান্তিপ্রিয় সদাচারী ভালো মানুষরূপে, একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে, একজন সত্যবাদী মানুষরূপে।
৪০ বছর বয়সে তাঁর মুখ থেকে নিঃসৃত হতে শুরু করল জীবনের বাঁকবদলকারী বাণীমালা, যা আরবি ভাষায় সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপিত। তিনি বললেন, আল্লাহ এই বাণীমালা তাঁর ওপর নাজিল করেছেন। আরবি ভাষার সকল কবি-সাহিত্যিক স্বীকার করলেন যে, না, এর মতো কোনো পঙক্তিমালা তাদের পক্ষে রচনা করা সম্ভব নয়। শতাব্দীর পর শতাব্দী পার হয়ে গেল কিন্তু এর মতো কোনো পঙক্তিমালা কারো পক্ষেই রচনা করা সম্ভব হলো না।
আপনি বলতে পারেন, কালজয়ী কবি সাহিত্যিকরাও অনন্য সাহিত্যকর্ম রচনা করেছেন এবং তারা সবাই মানুষ ছিলেন। তাই কোরআন যত অনন্যই হোক না কেন, তা মানুষের রচনা নয় এটা নিশ্চিত হবো কীভাবে? আসলে কালজয়ী কবি-সাহিত্যিকদের সাহিত্য ও শিল্পকর্মের অনন্যতা এবং কোরআনের অনন্যতার ধরনে মনোনিবেশ করলেই বিষয়টি আপনার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
১. কালজয়ী কাব্য বা সাহিত্য যে আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয়েছে, সে আঙ্গিকটা অনন্য নয়। সেই ছন্দ বা সেই আঙ্গিকে আরো অনেকেই কাব্য বা সাহিত্য রচনা করেছেন। কিন্তু কোরআন আরবি সাহিত্যের সম্পূর্ণ অপরিচিত ও অতুলনীয় এক আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয়েছে। এই আঙ্গিকে এর আগে বা এর পরে কোনো সাহিত্য-প্রয়াসই চালানো সম্ভব হয় নি।
২. সকল কালজয়ী সাহিত্যকর্মের উৎকর্ষের জন্যে শব্দের পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংযোজন বা বিয়োজন সাহিত্যিক বা কবি নিজেই করেছেন। কিন্তু কোরআনের সাহিত্যিক অনন্যতা, এর অতুলনীয় মাধুর্য, ছন্দ ও শব্দবিন্যাস সত্ত্বেও তা তৎক্ষণাৎই বর্ণিত হয়েছে। সাহিত্যিক উৎকর্ষের জন্যে পরবর্তীতে কোনো পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংযোজন বা বিয়োজন করা হয় নি।
৩. যে-কোনো কাব্য, সাহিত্য বা শিল্পকর্মে রচয়িতার আবেগ, মানসিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত, মনের দুঃখকষ্টের প্রতিফলন ঘটে। কিন্তু কোরআন তার সম্পূর্ণ বিপরীত। এখানে হযরত মুহাম্মদ (স)-এর দুঃখের প্রসঙ্গ বা প্রভাব একেবারেই অনুপস্থিত। তিনি তাঁর যৌবনের ২৫ বছর যে নারীর সাথে কাটিয়েছেন, তাঁর সেই প্রিয়তমা স্ত্রী খাদিজা (রা) মারা যান অর্ধাহারে-অনাহারে, কোরাইশদের হাতে সঙ্গীসাথিসহ পাহাড়ের পাদদেশে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায়। ২৫ বছরের প্রেম, যত্ন, সহযোগিতা সব ছেড়ে চলে গেলেন, যাঁর প্রতি নবীজী (স) ছিলেন আজীবন বিশ্বস্ত, অনুরক্ত। যিনি ছিলেন তাঁর নবুয়তের ওপর আস্থা প্রকাশকারী প্রথম ব্যক্তি, যিনি ছিলেন তাঁর আট সন্তানের মধ্যে সাত সন্তানের জননী, যিনি ছিলেন তাঁর সাধনার সহযোগী, চেতনা বিস্তারের সংগ্রামে সহযোদ্ধা। যিনি সকল সম্পদ উজাড় করে দেন তাঁর জন্যে, যিনি নিজের গোত্রীয় মর্যাদা ও সম্পর্কচ্ছেদ করেন তাঁর জন্যে, তিনি চলে গেলেন মর্মন্তুদ কষ্ট ভোগ করে। কিন্তু এসবের কোনো ধরনের উল্লেখ কোরআনে নেই। কোনো কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীর জীবন থেকে যদি এমন জীবনসঙ্গিনী হারিয়ে যেতেন, তাহলে কী পরিমাণ কাব্য, সাহিত্য, গান রচিত হতো তা যে-কেউই অনুমান করতে পারেন। অথচ কোরআনে হযরত ইব্রাহিম (আ), হযরত নূহ (আ), হযরত লূত (আ) এবং ফেরাউনের স্ত্রীর কথা উল্লেখ আছে, কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (স)-এর স্ত্রী খাদিজার (রা) কোনো উল্লেখ নেই। কোরআনে নাম উল্লেখ করে একমাত্র যে নারীর কথা বলা হয়েছে, তিনি হলেন বনি ইসরাইলি নবী হযরত ঈসার (আ) মাতা বিবি মরিয়ম। মনুষ্য রচনা নয়, শুধু ঐশীবাণী হলেই এমনটি সম্ভব।
৪. হযরত মুহাম্মদ (স) তাঁর চোখের সামনে চারটি ছেলের প্রত্যেকের মৃত্যু দেখেছেন। তাঁর চার মেয়ের তিন জনই তাঁর জীবদ্দশায় মারা যান। তাঁর প্রিয়তম চাচা হামজা-র লাশের সাথে পাশবিক আচরণ, তাঁর সাথিদের ওপর ক্রমাগত লাঞ্ছনা, শারীরিক নির্যাতন এমনকি অনেককে হত্যা করা হয়। তাঁর ওপরও চালানো হয় শারীরিক-মানসিক নির্যাতন। একবার তিনি যখন কাবা ঘরের সামনে সেজদারত অবস্থায় ছিলেন, তখন তাঁর ওপর উটের পচা নাড়িভুঁড়ি স্তূপাকারে ফেলা হয়। পরিমাণ এতটাই ছিল যে, তাঁর শরীর মাটির সঙ্গে লেগে যায়। তাঁর কন্যা তাঁর শরীরের ওপর থেকে পচা নাড়িভুঁড়ি না সরানো পর্যন্ত তিনি মাথাই তুলতে পারেন নি। একবার কল্পনা করুন, গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে পচা নাড়িভুঁড়ির স্তূপ ফেলা হলো আপনার শরীরের ওপর, আর তা থেকে নিঃসৃত রস আপনার ঘাড়ে, কাঁধে, কানের দুপাশ দিয়ে নাকে, ঠোঁটের দিকে গড়িয়ে আসছে! পচা নাড়িভুঁড়ির উৎকট দুর্গন্ধের কথা বাদ দিলেও কতটা বিরক্তিকর স্নায়ু-উত্তেজক বিষয় হতে পারে এটা! এরকম ঘটনা কারো স্মৃতিকে বিষণ্ন বিরক্ত না করে পারে না। অথচ এর কোনো উল্লেখ কোরআনে পাওয়া যায় না।
কোরআনে রসুল (স)-এর ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের প্রতিফলনের পরিবর্তে কোথাও কোথাও তাঁর চিন্তাকে পরিমার্জিত করা হয়েছে। যখন রসুল (স) আগ্রহী অন্ধ বৃদ্ধের দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির দিকে মনোযোগ দিলেন, তখন সূরা আবাসায় তাঁর এ-কাজটি যে উচিত হয় নি, তা পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে। রসুল (স) যখন স্ত্রীদের মনরক্ষা করার জন্যে মধু না খাওয়ার শপথ করেছিলেন, তখন সূরা তাহরিমের প্রথম আয়াতে তা সংশোধন করে নিতে বলা হয়। রসুলের (স) দু-একটা ছোটখাটো মানবীয় ত্রুটিকেও কোরআন সংশোধন করে দিয়েছে, যেন এ-কাজটা আল্লাহ-অনুমোদিত কাজ হিসেবে প্রচলিত না হয়ে যায়। যদি কোরআন মানবরচিত হতো, তবে রচনাকারী তার ভুলকে কখনোই প্রকাশ্যে আনতেন না। বরং তিনি যে কত সঠিক, আয়াতে আয়াতে তা-ই প্রমাণ করার চেষ্টা হতো।
শুধু এ কালের সংশয়ীরাই নয়, রসুল-যুগের সংশয়ীরাও প্রথমে বলার চেষ্টা করেছিল যে, হযরত মুহাম্মদ (স) কোরআনের রচয়িতা। এর জবাবে আল্লাহ সত্য অস্বীকারকারীদের চ্যালেঞ্জ দেন, কোরআনের সূরার মতো ১০টি সূরা রচনা করে আনার জন্যে : ‘ওরা কী বলছে? কোরআন তুমি রচনা করেছ? (হে নবী!) ওদের বলো, যদি তা-ই হয়ে থাকে, তবে তোমরা এ ধরনের ১০টি সূরা রচনা করে নিয়ে এসো। আল্লাহ ছাড়া অন্য যাকে পারো সাহায্যের জন্যে ডাকো। যাদেরকে ডাকছ তারা যদি তোমাদের সাহায্য করতে সক্ষম না হয়, তবে জেনে রাখো, আল্লাহর প্রজ্ঞা থেকেই এ কোরআন নাজিল হয়েছে। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। এরপরও কি তোমরা তাঁর কাছে সমর্পিত হবে না?’ (সূরা হুদ : ১৩-১৪)
কিন্তু যখন তারা এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়, তখন আল্লাহ ১০টির জায়গায় শুধু একটি সূরা রচনা করে নিয়ে আসতে বলেন : ‘আমি আমার বান্দার প্রতি ধাপে ধাপে যা নাজিল করেছি, তাতে যদি তোমাদের কোনো সন্দেহ থাকে, তবে এর মতো একটিমাত্র সূরা রচনা করো এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের সব সাহায্যকারীকে ডাকো। যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তাহলে একটি সূরা এনে দেখাও। আর যদি তা না পারো এবং তা তোমরা কখনোই পারবে না, তাহলে সচেতন হও জাহান্নামের আগুন সম্পর্কে, যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর। সত্য অস্বীকারকারীদের জন্যে তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’ (সূরা বাকারা : ২৩-২৪)
সবশেষে আল্লাহ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সত্য অস্বীকারকারীদের চূড়ান্ত ব্যর্থতার ভবিষ্যদ্বাণী করেন : ‘(হে নবী! ওদের) বলো, পৃথিবীর সকল মানুষ ও জ্বীন যদি একযোগে সকল শক্তি দিয়ে প্রচেষ্টা চালায়, তবুও এ কোরআনের মতো আরেকটি কোরআন আনতে পারবে না।’ (সূরা বনি ইসরাইল : ৮৮)
প্রত্যেক নবীকেই আল্লাহ কিছু মোজেজা দেখানোর সামর্থ্য দিয়েছেন; যা সে-স্থান ও কালেই সীমাবদ্ধ ছিল। সে-সময় যারা তা প্রত্যক্ষ করেছে শুধু তারাই বিষয়টি অনুধাবন করার সুযোগ পেয়েছে। আর রসুল (স)-এর প্রতি নাজিল করা কোরআন নিজেই এক মোজেজা অর্থাৎ অলৌকিক নিদর্শন; যার একটি সূরার মতো সূরা আজ পর্যন্ত কেউ রচনা করতে পারে নি এবং কোনোদিনই তা পারবে না। আর এ অলৌকিক নিদর্শন সগৌরবে মূল ভাষায় পূর্ণাঙ্গরূপে বিরাজ করবে কেয়ামত পর্যন্ত। প্রজন্মের পর প্রজন্ম অনন্তকাল ধরে এ থেকে লাভ করবে সঠিক জীবনদৃষ্টি, জ্ঞান, প্রজ্ঞা, প্রাচুর্য ও কল্যাণ। ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সাফল্যে ধন্য হবে তাদের জীবন।
॥ ২ ॥
‘বিশ্বাস’ প্রসঙ্গটি আমরা মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখতে পারি। আমরা সবাই কিছু না কিছু বিশ্বাস করি। এ বিশ্বাস হতে পারে কোনো ধারণায়, কোনো মতবাদে, কোনো ব্যক্তিমানুষে। আমাদের বিশ্বাস গড়ে ওঠে কখনো কোনো ব্যক্তির বক্তব্য শুনে বা চারপাশের মানুষের খণ্ড খণ্ড কথা শুনে, তাদের আচার-আচরণ দেখে।
বিশ্বাস ও অবিশ্বাস আসলে একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। বিশ্বাসের প্রকৃতি ইতিবাচক। আর অবিশ্বাসের প্রকৃতি নেতিবাচক। একটা হাঁ। আরেকটা না। ‘আমি আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করি’—এটা হলো ইতিবাচক বিশ্বাস। ‘আমি আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করি না’ —এটাও একটা বিশ্বাস—তবে নেতিবাচক বিশ্বাস। এটাই হলো অবিশ্বাস, অর্থাৎ বিশ্বাসের অপর পিঠ। এ-ক্ষেত্রে আমরা প্রায়শই তৃতীয় একটা শব্দ শুনি। সেটি হলো সংশয়। আসলে নিজের সহজাত বুদ্ধি-বিবেচনার ওপর আস্থাহীনতার প্রকাশই হচ্ছে সংশয়। সংশয় বা সন্দেহপ্রবণতা আসলে একটি মনোরোগ।
আমাদের বিশ্বাসের শিকড় রয়েছে ডিএনএ-রই গভীরে। তাই প্রতিটি মানুষ বিশ্বাস করে। কেউ স্রষ্টায় বিশ্বাস করে, কেউ করে শয়তানে, কেউ ভালো মানুষে বিশ্বাস করে, কেউ বিশ্বাস করে প্রতারকে, কেউ বিশ্বাস করে সাধুকে, কেউ বিশ্বাস করে ভণ্ডকে। কেউ দেখে অন্তর, কেউ দেখে চাকচিক্য। কেউ দেখে সারল্য, কেউ দেখে জৌলুস। তাই আপনার বিশ্বাসের ভিত্তিটা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি ভিত্তি মজবুত হয়, আপনি তার ওপর প্রাসাদ গড়তে পারবেন। আর যদি তা হয় চোরাবালি, আপনি অতলে তলিয়ে যাবেন। আর বাস্তবতা হচ্ছে, ব্যর্থ হতাশ শোষিত বঞ্চিতরা সত্যের পরিবর্তে মিথ্যাকে, বাস্তবতার পরিবর্তে অলীক কল্পনাকে, সরল সত্যবাদীর পরিবর্তে ধূর্ত বাক্যবাগীশকে, নিখাদ সত্যবাণীর পরিবর্তে শ্রুতিমধুর বাগাড়ম্বরকে বিশ্বাস করে। নির্বোধরা নিজের দায়িত্ব নিজে না নিয়ে অন্যের ওপর ছেড়ে দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এ কারণেই তারা প্রতারিত হয়, দুর্দশায় হাবুডুবু খায়।
এখন আপনার সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে। আপনি কাকে বিশ্বাস করবেন—সত্য না মিথ্যাকে, সদাচারীকে না দুরাচারীকে, সেবককে না শোষককে, উপকারীকে না প্রতারককে? আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে—নিজের দায়িত্ব নিজে নিয়ে সাফল্যের সরলপথে চলবেন, না অন্যের ওপর নিজের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ভাগ্যকে দোষারোপ করে দুর্দশায় হাবুডুবু খাবেন?
ইতিহাসের দিকে তাকান। আরব। ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দ। অবিদ্যা, অনাচার আর অত্যাচার, হিংসা ও হানাহানিতে নিমজ্জিত এক সমাজ। যেখানে নিজের কন্যাশিশুকে জীবন্ত কবর দেয়ার মতো নৃশংসতা ছিল পৌরুষের প্রতীক, সেখানে জন্মগ্রহণ করেন হযরত মুহাম্মদ (স)। পিতৃমাতৃহীন হওয়া সত্ত্বেও নিজ প্রচেষ্টায় তিনি নিজেকে একজন সৎ ও সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। সত্যবাদী হিসেবে তাঁর স্বীকৃতি ছিল সর্বজনবিদিত। সদা সত্যবাদিতার জন্যে তাঁকে আল-আমিন অভিধায় ভূষিত করা হয়।
মানুষের দুঃখ, সামাজিক অনাচার, জুলুম, বঞ্চনা ও নৃশংসতা তাঁকে ব্যথিত করে। এ থেকে মুক্তির উপায় অনুসন্ধানে তিনি নগর থেকে দূরে হেরা গুহায় ধ্যানে নিমগ্ন হতে শুরু করলেন। প্রতি বছর রমজান মাসে তিনি সেখানে ধ্যানে নিমগ্ন থাকতেন। ধ্যানে নিমগ্ন থাকাকালে ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ৪০ বছর বয়সে তাঁর কাছে জিবরাইল (আ)-এর আগমন ঘটে। ঘটনার বর্ণনায় নবীজী (স) বলেন, ‘জিবরাইল বলল, পড়ো!’ আমি জবাবে বললাম, ‘আমি পড়তে জানি না।’ তখন জিবরাইল আমাকে জাপটে বুকে চেপে ধরলে আমার মনে হলো আমি মরে যাচ্ছি। আবার বললাম, ‘আমি পড়তে জানি না।’ এইভাবে তিন বার বুকে চেপে ধরার পর আমি ভয়ে ভয়ে বললাম, ‘কী পড়ব?’ তখন জিবরাইল বলল, ‘পড়ো! তোমার সৃষ্টিকর্তা প্রভুর নামে। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন নিষিক্ত ডিম্ব থেকে। পড়ো! তোমার প্রতিপালক মহান দয়ালু। তিনি মানুষকে জ্ঞান দিয়েছেন কলমের। আর মানুষকে শিখিয়েছেন, যা সে জানত না।’
আমি পড়লাম। জিবরাইল আমাকে ছেড়ে চলে গেল।
নবীজী (স) বলেন, ‘উস্কোখুস্কো কবিদের আমার মোটেই পছন্দ না। আমার মনে হলো, কোরাইশরা সব শুনলে আমাকে ওদের (কবিদের) দলেই ফেলে দেবে। নানা ভাবনায় আচ্ছন্ন হয়ে আমি পাহাড়ের ওপরদিকে উঠতে শুরু করলাম। হঠাৎ ওপর থেকে শুনি শব্দ ভেসে আসছে—‘আমি জিবরাইল। মুহাম্মদ, আপনি আল্লাহর রসুল।’ আমি ওপরদিকে তাকালাম, আমি জিবরাইলকে দেখলাম মানুষের রূপে—পা মাটিতে আর দেহ দিগন্তবিস্তৃত। সে আবার বলল, ‘মুহাম্মদ, আপনি আল্লাহর রসুল। আর আমি জিবরাইল।’ আমি স্থাণুর মতো তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। নড়ার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেললাম। দৃষ্টি ফিরিয়ে অন্যদিকে তাকানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু যেদিকে তাকাই দিগন্তবিস্তৃত তাকেই দেখতে পাই। একসময় সে দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে গেল। আমি ঘরে ফিরে এলাম।’
হযরত মুহাম্মদ (স) গুহা থেকে কাঁপতে কাঁপতে ঘরে ফিরে এলেন। স্ত্রী খাদিজাকে (রা) বললেন, ‘আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও।’ তাঁকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দেয়া হলো। কাঁপুনি থেমে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক অবস্থায় এলে তিনি বিস্ময়ের সাথে খাদিজাকে (রা) জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমার কী হয়েছে?’ পুরো ঘটনা সবিস্তারে বর্ণনা করে তিনি বললেন, ‘আমার ভয় হচ্ছে।’ খাদিজা (রা) উত্তরে বললেন, ‘আপনার ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপনি বিশ্রাম নিন। আল্লাহ আপনার কোনো অমঙ্গল করতে পারেন না। কারণ আপনি সত্যবাদী, দানশীল, অতিথিপরায়ণ ও ভালো কাজে এবং অন্যের প্রয়োজনে সাহায্যকারী। আপনি ঠিক দেখেছেন। আমি বিশ্বাস করছি, আপনি আল্লাহর রসুল।’
এরপর খাদিজা (রা) নবীজীকে (স) নিয়ে মক্কায় বসবাসকারী তখনকার বিশিষ্ট খ্রিষ্টান পণ্ডিত ওরাকা বিন নওফেলের কাছে যান। সব কথা শুনে বর্ষীয়ান ওরাকা বললেন, ‘এই বাণীই মুসার ওপর নাজিল হয়েছিল। বড় ইচ্ছা হয়, আমি যদি তরুণ হতাম তাহলে এই নগরের অধিবাসীরা যখন তোমাকে নগর থেকে বের করে দেবে, তখন আমি তোমার পাশে থাকতাম।’
নবীজী (স) বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘নগরবাসীরা আমাকে বের করে দেবে কেন?’ ওরাকা বললেন, ‘আসলে শত্রুতার মুখোমুখি না হয়ে কোনো নবীই সত্যবাণী প্রচার করতে পারে নি। আমি যদি ততদিন বেঁচে থাকি আমি অবশ্যই তোমাকে সমর্থন করব।’ কিন্তু কিছুদিন পরই ওরাকা মারা যান।
আসলে একজন মানুষ কতটা আন্তরিক ও নিজের কাছে সৎ হলে হেরা পাহাড়ের ঘটনা এত অকপটে বলতে পারেন! বিষয়টি তাঁর কাছেই কত অপ্রত্যাশিত ছিল এবং তিনি কতটা শঙ্কিত ও হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন, তা ঘটনার বিবরণ থেকেই বোঝা যায়। (যদি কেউ নিজেকে নবী ঘোষণার জন্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে কাজ করত, তবে তার নবুয়ত লাভের কল্পিত ঘটনায় নিজের মহত্ত্বকেই নানাভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করত। নিজের মানবীয় দুর্বলতার কথা কখনোই প্রকাশ পেতে দিত না।) আর একজন মানুষ স্ত্রীর কাছে কতটা সৎ ও বিশ্বস্ত থাকলে ১৫ বছর একসাথে ঘর করার পর একমুহূর্ত দ্বিধা না করে স্ত্রী বলতে পারেন যে, ‘আমি বিশ্বাস করছি আপনি আল্লাহর রসুল’, তা-ও আমরা আঁচ করতে পারি।
এই সৎ ও সত্যবাদিতা ঘরে-বাইরে কতটা সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল, তা-ও আমরা বুঝতে পারি এর তিন বছর পরের একটি ঘটনা থেকে। তিন বছর ধরে তিনি সংগোপনে নতুন বিশ্বাসের কথা প্রচার করে আসছিলেন। এরপর তিনি আদিষ্ট হলেন প্রকাশ্যে আল্লাহর বাণী প্রচার করতে। তাই তিনি মক্কার কেন্দ্রে সাফা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে প্রতিটি গোত্রের নাম ধরে তাদের পাহাড়ের পাদদেশে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানালেন। শহরে দ্রুত খবর ছড়িয়ে পড়ল যে, গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেয়ার জন্যে মুহাম্মদ সবাইকে ডেকেছেন। শহরের চারদিক থেকে লোকজন দ্রুত এসে সেখানে সমবেত হলো। সবাই সমবেত হওয়ার পর নবীজী (স) তাদের সামনে প্রশ্ন রাখলেন, ‘যদি আমি তোমাদেরকে বলি যে, এই পাহাড়ের ওপারে বিশাল অশ্বারোহী বাহিনী মক্কা আক্রমণের জন্যে সমবেত হয়েছে, তোমরা কি আমার কথা বিশ্বাস করবে? সবাই একবাক্যে জবাব দিল, ‘অবশ্যই। কারণ আপনি সত্যবাদী, কখনো আপনাকে আমরা মিথ্যা বলতে শুনি নি।’ রসুলের সত্যবাদিতার সাক্ষ্য একসাথে দেয়ার পরও তিনি যখন আল্লাহর নির্দেশের কথা বললেন, তখন বদমেজাজী ধনাঢ্য বিলাসী ব্যবসায়ী আবু লাহাব চিৎকার করে উঠল, ‘তোমার বিনাশ হোক! এই উদ্ভট বিষয় শোনাতে তুমি আমাদের ডেকেছ!’ সমবেত সাধারণ কোরাইশরা শোষক আবু লাহাবের পক্ষ নিয়ে রসুলকে প্রত্যাখ্যান করে গালিগালাজ করতে করতে চলে গেল। রসুল (স) কিছুক্ষণ পর দেখলেন পাহাড়ে তিনি একাই দাঁড়িয়ে আছেন। বুঝলেন আসন্ন সময় হবে কত কঠিন!
সংশয়ী মন এখানেও প্রশ্ন করতে পারে, হাঁ, তিনি সত্যবাদী ছিলেন, ঠিক আছে। কিন্তু এ-ক্ষেত্রে তিনি তো মিথ্যাও বলতে পারেন?
এর উত্তর খুব সহজ। একজন পুরুষ মানুষ সাধারণত পাঁচটি কারণে মিথ্যা বলতে পারে। ১. মিথ্যা বলাটাই তার স্বভাব। ২. অর্থের জন্যে। ৩. ক্ষমতার জন্যে। ৪. নারীর জন্যে। ৫. জীবন বাঁচানোর জন্যে।
প্রথম কারণটা নবীজীর (স) বেলায় পুরোপুরিই অনুপস্থিত। কারণ তিনি কখনো মিথ্যা বলেন নি। তিনি সমাজে আল-আমিন অর্থাৎ বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী অভিধায় ভূষিত হয়েছিলেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় কারণ প্রসঙ্গে সুস্পষ্টভাবেই আমরা বলতে পারি, কোরআনের বাণী প্রচার থেকে বিরত রাখার জন্যে কোরাইশ নেতারা সম্মিলিতভাবে তাঁকে প্রকাশ্য প্রস্তাব দিয়েছিল—যত অর্থ চাও আমরা তোমাকে দেবো, নেতৃত্ব চাও তোমাকে নেতা বানাব, যদি রাজত্ব চাও তোমাকে রাজা বানাব, তুমি শুধু তোমার বাণী প্রচার থেকে বিরত থাকো। নবীজী (স) বলেছিলেন, যদি আমার এক হাতে সূর্য আর অপর হাতে চন্দ্র এনে দাও, তবুও আমি সত্যবাণী প্রচার থেকে বিরত হবো না। তাহলে আমরা দেখছি, দ্বিতীয় ও তৃতীয় কারণও এ-ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। চতুর্থ কারণ প্রসঙ্গে আমরা খুব সহজেই বলতে পারি, স্ত্রী বিবি খাদিজাই ছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাঁর জীবনে সবচেয়ে প্রিয় নারী। পরবর্তী জীবনে অন্য সকল বিয়েই ছিল বিভিন্ন প্রেক্ষাপট পূরণের প্রয়াস। আর পঞ্চম কারণও তাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বরং বলা যায়, কোরআনের বাণী প্রচারের জন্যে তিনি নিজের জীবনকে বিপন্ন করেছেন বার বার।
প্রশ্ন করতে পারেন, কেন তিনি নিজের জীবনকে বিপন্ন করতে গেলেন? তিনি তো খেয়েপরে ব্যবসাবাণিজ্য ঘরসংসার নিয়ে প্রাচুর্যের মধ্যেই ছিলেন। তারপরও তিনি কেন নিজের জীবনকে বিপন্ন করতে গেলেন?
উত্তর একটাই। তা হলো, মানুষের দুঃখদুর্দশা শোষণবঞ্চনার অবসানের জন্যে। নিপীড়িত লাঞ্ছিত সর্বহারা মানুষের মুক্তির জন্যে। অবহেলা-অপমানে জর্জরিত নারীর মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে। দুর্ভাগ্যকে নিয়তির লিখন ভেবে স্বনির্মিত শৃঙ্খলে বন্দি মানুষকে মুক্ত করে তার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের জন্যে। মানুষকে পৃথিবীতে তার যথাযোগ্য মর্যাদায় আসীন করার জন্যে। এককথায় মানুষের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক পরিত্রাণের জন্যে।
নবীজীর (স) নবুয়ত-পরবর্তী ২৩ বছরের জীবন আশাহত সাধারণ মানুষকেও ধ্যানী, জ্ঞানী, কর্মী ও অভিযাত্রীতে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে প্রাণান্ত প্রয়াসের জীবন। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত অনুসারীদের নৈতিক ও আত্মিক উন্নয়ন, গভীর রাতে আল্লাহর ধ্যান ও ইবাদতে নিজেকে নিমগ্ন রাখা আর প্রতিটি কষ্টকর ও শ্রমসাধ্য কাজে নিজে মাঠে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার জীবন। ছোটবেলায় লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত একজন নিরক্ষর মানুষের জীবনও যে কত বৈচিত্র্যময় হতে পারে, তাঁর জীবনই এর জ্বলন্ত উদাহরণ। তিনি একাধারে সংসারী, ব্যবসায়ী, সেবক, ধর্মপ্রচারক, প্রাজ্ঞ শিক্ষক, সমাজ-সংস্কারক, কূটনীতিবিদ, বিচারক, সেনানায়ক এবং রাষ্ট্রনায়ক। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সাফল্যের অনন্য দৃষ্টান্ত। ফলে তিনি এমন এক চেতনার বীজ বপন করে গিয়েছিলেন, যা মধ্যযুগে সৃষ্টি করেছিল এক আলোকোজ্জ্বল সভ্যতা।
তিনি শুধু স্রষ্টাপ্রেমিক ছিলেন না, ছিলেন সৃষ্টির অকৃত্রিম প্রেমিক। সৃষ্টির অধিকারকে তিনি সবার জন্যে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছেন। নদনদী, পাহাড়-পর্বত, গাছপালা, পশু-প্রাণীও এই সংজ্ঞা থেকে বাদ যায় নি। ধর্মবর্ণনির্বিশেষে তিনি প্রতিটি মানুষের জীবন, সম্পদ, সম্মান ও ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারকে নিশ্চিত করেছেন। প্রতিটি মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার সামাজিক দায়বদ্ধতাকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে যে নারী যাপন করত মানবেতর জীবন, সেই নারীকে তিনি প্রথম দিয়েছেন কুমারী-নামে পরিচিত হওয়ার অধিকার। দিয়েছেন জ্ঞানার্জন ও সম্পত্তির উত্তরাধিকার, একা নির্বিঘ্নে চলার অধিকার, নিজস্ব উপার্জন, স্বাধীন পেশা এমনকি সৈনিক হিসেবে যুদ্ধে অংশ নেয়ার অধিকার, বিয়ের ব্যাপারে নিজস্ব মত প্রদান এবং প্রয়োজনে তালাক দানের অধিকার। তিনি জীবদ্দশায় নারীর পরিপূর্ণ মানবিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন।
কোরআন যে আল্লাহর কালাম তা বিশ্বাস করার জন্যে এ সত্যটুকুই যথেষ্ট যে, যাঁর মুখ থেকে এই পবিত্রবাণী নিঃসৃত হয়েছে—তিনি সত্যবাদী ছিলেন, তিনি ন্যায়পরায়ণ ছিলেন, তিনি মজলুমের সমব্যথী ছিলেন। আর তিনি শুধু নিজের ধর্মই প্রচার করেন নি। তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রে (‘মদিনা সনদ’-এ) প্রত্যেক ধর্মের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকারকে সুরক্ষিত করেছেন। মানবজাতির ইতিহাসে তিনিই ছিলেন মানবাধিকারের প্রথম সার্থক রূপকার।
২২ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:০০
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনি চমৎকার লিখেছেন। আপনার লেখার ধরন দেখে মনে হয় সত্যের প্রতি আপনার ভালবাসা আছে, আর ইসলামকে ভালবাসেন এবং এর শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে কথা বলছেন ঠিক সেই কারনে যে কারনে আমিও আপনার মত কথা বলতাম। আমার বিশ্বাস আপনি যদি গোড়াদের মত গোড়ামিত্ব না করে সত্যে অন্বেষনে এগিয়ে চলেন তবে সত্যে আপনাকে ধরা দেবেই।
এবার আপনা যুক্তির সংক্ষিপ্ত জবাব দেই।
আপনি কুরআনের সত্যতা প্রমানে মুহাম্মাদ (সঃ) এর জীবন কাহিনির অংশবিশেষ এবং কুরআন অবতীর্নের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন। মানুষ বিভ্রান্ত হয় এখানেই। আপনি যে প্রমান দিলেন সেটা ইতিহাস যা ১০০% জাস্টিফাই করা সম্ভব না, যার কতটুকু সত্য আর কতটুকু মিথ্যা তা এত শত বছর পর বের করা সম্ভব নয়। সুতরাং প্রথম প্রমান হবে আমাদের সম্মুখে যা আছে তা থেকে, দ্বিতীয় প্রমান হবে ইতিহাস যেটা আপনি তুলে ধরলেন। অর্থ্যাৎ কুরআন যদি নিজেকে স্রষ্টার কিতাব হিসাবে প্রমান করতে পারে তাহলে ঐতিহাসিক দিকগুলোও অবশ্যই সত্যে হবে।
প্রথমত: কুরআন স্রষ্টার কিতাব তার কোন প্রমান উপাস্থাপন করতে পারে না। স্রষ্টার কিতাব তার প্রমান নেই, এটাই বড় প্রমান যে এটা মানবরচিত। এরপরও আরো বহু প্রমান দেয়া যায় যে এটা মানবরচিত। সে সকল প্রমান থেকে একটি প্রমান এ পোষ্টের বিষয়স্তু। বিশ্বাস এমন বিষয় যেটা জোর করার কিছু নয়, শুধু মিথ্যা ও ভন্ডামি বিশ্বাসের বিষয়ে জোর করে। কুরআন স্রষ্টা প্রদত্ত হলে বিশ্বাসের ব্যপারে জোর করতো না।
কুরআন মানব রচিত পুস্তক তার প্রমান বহন করে এমন বহু বিষয় রয়েছে,তার মধ্যে থেকে কয়েকটি বিষয়ের লেখার লিঙ্ক দিলাম।
http://www.somewhereinblog.net/blog/wise/30146233
http://www.somewhereinblog.net/blog/wise/30145559
http://www.somewhereinblog.net/blog/wise/30143295
১৪| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:৩৩
আহলান বলেছেন: জোর করে বিশ্বাস করতে বলে নাই ... তবে অন্যের বিশ্বাসে আঘাত দিতে বলা আছে .... বাকিটা নিজ দায়িত্বে
২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৩৫
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনার জানা ভূল। মানা ও বিশ্বাস এক জিনিস নয়। কুরআন কি অবিশ্বাসীদের জন্য কঠোর শাস্তি কথা কি বলেনি? এটাই জোর করা। লেখাটি মন দিয়ে পড়ুন, এরপর আরো বিস্তারিত বলব।
ধন্যবাদ।
১৫| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৫৫
Backdated বলেছেন: লেখক ভাই আপনি তো অনেক যুক্তি দিলেন ।আপনি বলছেন কোরআন মানব রচিত ।আপনিও তো মানুষ । তাহলে কোরআনের মত একটি আয়াত রচনা করে দেখান ।আল্লাহ তা'আলা এই এক আয়াত দিয়েই চালেঞ্জ করেছেন । কোরআন যদি মানব রচিত হয় তাহললে তোমরা এর মত একটা বই অথবা একটা সুরা অথবা একটা আয়াত বানিয়ে দেখাও ।পারবেন??? আর মহানবী (সা বলে গেছেন তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কর না । যার যার ধর্ম তাকেই পালন করতে দাও । সো কেউ আপনাকে জোর করে বিলিভ করতে বলেনি । আর ইসলাম জোর করে চার চক্ষু দ্বারা দেখায় না। চক্ষু খুলে দেয় মাত্র।। দেখা না দেখা আপনার দায়িত্ব ।জোর করেই যদি কিছু করা যেত তাহলে আবু লাহাবও মুসলিম হয়ে যেত ।আমি আবার বলছি পারবেন যাকে ইচ্ছা, যার ইচ্ছা হেল্প নিয়ে???
২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:০৮
বিবেক ও সত্য বলেছেন: ভাই, আমি তো যুক্তি দ্বারাা প্রমান করলাম যে এ কিতাব মানব রচিত। এ পর্যন্ত যতজন মন্তব্য করেছে, কেউ কি আমার যুক্তি খন্ডন করতে পেরেছে? বরং এ কথা সে কথ বলেছে, অথচ আমার মুল যুক্তিটি নিয়ে কেউ কথা বলতে পারেনি। দু’একজন দাবি করেছে যে কুরআন বিশ্বাস করতে জোর করে না, আমি যখন চোখে আঙ্গুলি দিয়ে দেখিয়ে দিলাম যে কুরআন বিশ্বাস করতে জোর করে, তখন তারা আর কোন কথা বলেনি। সে যাই হোক।
আপনি কুরআনের অনুরুপ আয়াত রচনা করে দেখাতে বলেছেন, অথচ আপনি নিজেও জানেন না যে কোন কথাটি কুরআনের আয়াতের অনুরুপ হবে না। শুধু অন্ধ বিশ্বাস। আমি নিম্নে কিছু কবিতার লাইন দিচ্ছি, আপনি অনুগ্রহ করে সুনির্দিষ্টভাবে বলবেন যে তা কোন কোন কারনে কুরআনের আয়াতের অনুরুপ হয় না। আমার মতে এ কবিতা কুরআনের আয়াতের কথার মানের চেয়েও উন্নততর। আপনার জবাবের অপেক্ষায়।
গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান,
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,
সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।
‘পূজারী, দুয়ার খোলো,
ক্ষুদার ঠাকুর দাঁড়ায়ে দুয়ারে পূজার সময় হ’ল!’
স্বপন দেখিয়া আকুল পূজারী খুলিল ভজনালয়
দেবতার বরে আজ রাজা-টাজা হ’য়ে যাবে নিশ্চয়!
জীর্ণ-বস্ত্র শীর্ণ-গাত্র, ক্ষুদায় কন্ঠ ক্ষীণ
ডাকিল পান্থ, ‘দ্বার খোল বাবা, খাইনি ক’ সাত দিন!’
সহসা বন্ধ হ’ল মন্দির, ভুখারী ফিরিয়া চলে,
তিমির রাত্রি, পথ জুড়ে তার ক্ষুদার মানিক জ্বলে!
ভুখারী ফুকারি’ কয়,
‘ঐ মন্দির পূজারীর, হায় দেবতা, তোমার নয়!’
মসজিদে কাল শিরনী আছিল, অঢেল গোস্ত-রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটিকুটি!
এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে আজারির চিন্
বলে ‘বাবা, আমি ভুকা-ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!’
তেরিয়া হইয়া হাঁকিল মোল্লা – ‘ভ্যালা হ’ল দেখি লেঠা,
ভুখা আছ মর গো-ভাগাড়ে গিয়ে! নামাজ পড়িস বেটা?’
ভুখারী কহিল, ‘না বাবা!’ মোল্লা হাঁকিল – ‘তা হলে শালা
সোজা পথ দেখ!’ গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা!
আরেকটি কবিতার কিছু লাইন:
‘সে যদি তোমাকে অগ্নিতে ফেলে মারে?’
বিনা চেষ্টায় মরে যাব একেবারে
— ‘সে যদি তোমাকে মেঘে দেয় উত্থান?’
বৃষ্টিতে, আমি বৃষ্টিতে খানখান
— ‘সে যদি তোমাকে পিষে করে ধুলোবালি?’
পথ থেকে পথে উড়ে উড়ে যাব খালি
— ‘উড়বে?– আচ্ছা, ছিঁড়ে দেয় যদি পাখা?’
পড়তে পড়তে ধরে নেব ওর শাখা
— ‘যদি শাখা থেকে নীচে ফেলে দেয় তোকে?’
কী আর করব? জড়িয়ে ধরব ওকেই
বলো কী বলব, আদালত, কিছু বলবে কি এরপরও?
— ‘যাও, আজীবন অশান্তি ভোগ করো!’
আরেকটি কবিতার কিছু লাইন:
আকাশভরা সূর্য-তারা, বিশ্বভরা প্রাণ,
তাহারি মাঝখানে আমি পেয়েছি মোর স্থান,
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান॥
অসীম কালের যে হিল্লোলে জোয়ার-ভাঁটার ভুবন দোলে
নাড়ীতে মোর রক্তধারায় লেগেছে তার টান,
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান॥
ঘাসে ঘাসে পা ফেলেছি বনের পথে যেতে,
ফুলের গন্ধে চমক লেগে উঠেছে মন মেতে,
ছড়িয়ে আছে আনন্দেরই দান,
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান।
কান পেতেছি, চোখ মেলেছি, ধরার বুকে প্রাণ ঢেলেছি,
জানার মাঝে অজানারে করেছি সন্ধান,
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান॥
১৬| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:১৭
পুষ্পজিৎ বলেছেন: আমি কিভাবে বিসসাস কোরবো মানুষের ৪টা চোখ
২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:১১
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনি কিভাবে বিশ্বাস করবেন আপনার দু’ চোখ আছে, আপনার চিন্তা শক্তি আছে?
১৭| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:০০
কানিজ রিনা বলেছেন: আপনি আসলে নাস্তিক, বিবেক সত্য নয়
আপনি বিবেক হীন। বিশ্বের কোটি কোটি
মুসলিমের বিশ্বাসের উপর অবিশ্বাস উপস্থাপন
করাটাই বিবেকহীনতার পরিচয়। সেখানে
আবার মহা সমন্ব্যয় যোগে মজাযোগীয়
আরষ্ঠ। জন্ম অন্ধের মহাষস্ঠি। আপনি
যদি বুঝাতে চান কোরআন আসমানী কিতাব
নয়। তাহলেই আপনি নাস্তিক। তাই আর
বেশি কিছু নাবলে শুধুই বলব আপনি
এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া যার আভরন
এতই শক্ত কোনও এন্টোবায়টিক কাজে
দেয়না। আপনারা আল্পকিছু লোক সমাজের
ব্যাকটেরিয়া সমাজকে ভেঙে দেওয়াই উদ্দেশ্য
যে ভাঙে সে গড়তে পারেনা।
২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৩৮
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনি নাস্তিক ও বিবেকহীনতা শব্দের নতুন সংজ্ঞা দিলেন, সম্ভবত স্বরচিত সংজ্ঞা।
আপনি যদি আমার কোন কথা ভূল পান তাহলে যুক্তি দ্বারা খন্ডন করে সত্যে উদ্ভাসিত করবেন সেটাই সত্যেপন্থিদের কাজ। আপনি তা না করে কিছু গালিগালাজ করলেন, চমৎকার আপনার আদর্শ!!
আপনার কথার দৃষ্টান্ত সেই লোকের মত- যিনি বললেন গরুর মাথার উপর পৃথিবী, কোন বুদ্ধিমান মানুষ যখন ব্যখ্যা ও প্রমান দ্বারা তার মুর্খতা ধরিয়ে দিতে আসল তখন সে বলতে লাগল যারা গরুর মাথার উপর পৃথিবী কথা না মানবে তারা বিবেকহীন, নিকৃষ্ট এবং -----।
১৮| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৫:২৮
তনম্য় বলেছেন: May Allah give you hadya ameen
২২ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৪৩
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আমার দেয়া যুক্তি খন্ডন করুন, হেদায়েত তো নিশ্চয়ই অন্ধত্ব নয়।
১৯| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৫:৩৫
তনম্য় বলেছেন: মন দিয়ে শুনুন কিছু বলার আগে!!!! আপনি রসাতলে গেলে আমার কিছু করার নাই!!!! মাআসসালাম
২০| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:২৯
Backdated বলেছেন: আমার কমেন্টের রিপ্লাই দিলেন না কেন লেখক সাহেব?????
২২ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৫৯
বিবেক ও সত্য বলেছেন: সময় পায়নি, শিঘ্রই উত্তর দিব।
২১| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৫
মধ্য রাতের আগন্তক বলেছেন: আপনার লেখাটা পড়লাম। কমেন্টগুলোও । মন্তব্যে আপনি বারবার বলেছেন, আপনার যুক্তি খন্ডন করা হয়নি। বিশাল কিছু লিখে ফেলেছেন ভেবে বেশ ফুলে ফেঁপে আছেন। কিন্তু আদৌ কি আপনি কোন যুক্তি দেখাতে পেরেছেন। আপনি তো আপনার লেখায় ঢালাওভাবে কিছু গতানুগতিক বিষয় আওড়ে গেছেন, জুঁত করতে না পেরে এখনকার নাস্তিকরাও যেগুলো আর চাবায় না। আপনি কোরআন থেকে বিশেষ কোন আয়াত তুলে আনুন এবং প্রমান করুন যে এটা কি কারণে মানবসৃষ্ট । আমার মনে হয়না, আপনি কোরানের কিয়দংশ কখনো পড়ে দেখেছেন। আগে আপনি এটা নিশ্চিত করেন যে, আপনি স্রষ্টায় বিশ্বাস করেন কি না। যদি না করেন, তবে এই অবিশ্বাসের পেছনে কি যৌক্তিকতা, সেটি তুলে ধরুন। তারপর, কোরআন মানবরচিত না কি ঐশীগ্রন্থ , সেটার আলোচনা পরে হবে। মনে রাখবেন, কিছু মানুষ যেমন চোখ মুখ বুঁজে বিশ্বাসের কারনে গোঁড়া, তেমনি কিছু মানুষ চোখ কান বন্ধ করে সব কিছুকে অস্বীকার করার কারনে ও গোঁড়া। (আমি আবার ফিরব।)
২২| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:৩০
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনার লেখার শেষের লাইনটি অত্যান্ত সুন্দর। চোখ বন্ধ করে বিশ্বাসই করুক আর অবিশ্বাসই করুক সবটিই গোড়ামি।
১। আপনি কুরআনের আয়াত এনে প্রমান করতে বলেছেন যে আমি প্রমান করবো কুরআন মানব রচিত কিনা। আমি একটি বই এনে আপনাকে যদি বলি এটা সৃষ্টিকর্তার বানীতে পূর্ণ বই, তখন আমার দাবী সত্য না মিথ্যা তার প্রমান দেয়ার প্রথম দায়িত্ব দাড়াই আমার, নয় কি? কুরআন নিজেকে স্রষ্টার কিতাব হিসাবে দাবি করে অথচ তার পক্ষে কোন প্রমান উপাস্থাপন করতে পারেনি, এটাই তো কুরআন মানব রচিত হওয়ার বড় প্রমান।
২। আমি আমার লেখায় কুরআনের রেফারেন্স সরাসরি আনিনি। এর কারন কুরআন মানুষকে বিশ্বাসের জন্য আহ্বান করে, এ বিষয়ে শত শত আয়াত রয়েছে। যারা অবিশ্বাসি তাদের জন্য কঠোর শাস্তি রয়েছে, এ ধরনের বানিতে কুরআন পূর্ন। এটা অতি সাধারণ মুসলমানও অস্বিকার করবে না। এ কারনে আমি রেফারেন্স দেয়নি। কুরআনের বিশ্বাস সংক্রান্ত আয়াতকেই প্রমান করতে চেয়েছি যে মানব রচিত বলে। বিশ্বাস করতে আহ্বানের বিষয় নয়, এটা হয় স্বত:স্ফূর্ত। আমার লেখার এ অংশটুকু আরেকবার মন দিয়ে পড়ুন:
বিশ্বাস/অবিশ্বাস হয় স্বত:স্ফুর্তভাবে।মানুষ তার ৪ চক্ষু দ্বারা কোন কিছু দেখে তা বিশ্বাস করে। কেউ যদি কোন কিছু অবিশ্বাস করে তার অর্থ হল সে তার ৪ চক্ষু দ্বারা উহাকে দেখতে পাচ্ছে না। সুতরাং না দেখে বিশ্বাস সম্ভব নয়।যা চার চক্ষুর কোন চক্ষু দ্বারা না দেখে বিশ্বাস করা হয় তা চরম মুর্খতা, অজ্ঞতা।কেউ যখন কোন কিছু তার চার চোখের কোন এক চোখ দ্বারা কোন কিছু দেখতে পায়, তখন সে স্বাভাবিকভাবেই তাতে বিশ্বাস করে।বরং যা সে দেখল তা অবিশ্বাস করানোই অতি কঠিন।
তাই আপনি কাউকে কোন কিছু বিশ্বাস করাতে হলে তাকে চার চক্ষুর কোন এক চোখ দ্বারা দেখান, সে এমনিতেই বিশ্বাস করবে।যারা সত্যে ও সঠিকের পক্ষে থাকে তারা আপনাকে কখনও কোন কিছু বিশ্বাস করতে জোর করবে না, বরং সে তার সঠিকত্ব আপনার কাছে প্রমান করবে যুক্তি ও বাস্তবসম্মত প্রমান দ্বারা।
কারা বিশ্বাস করতে জোর করে
যা মিথ্যা, অসার, ভন্ডামি তা কাউকে বিশ্বাস করাতে হলে তখন যুক্তিকে এড়িয়ে জোর করতে হয়।কারন যুক্তির কাছে গেলে মিথ্যার অসারতা ও ভন্ডামি ধরা পড়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা।
৩। এ লেখায় কুরআন মানবরচিত হওয়ার পক্ষে মাত্র একটি প্রমান দিয়েছি। কুরআন মানবরচিত হওয়ার পক্ষে শত শত প্রমান আছে। তার কয়েকটি নিয়ে আলোচনা করেছি যার লিঙ্ক এখানে দিচ্ছি। আপনি একটু নিরপেক্ষভাবে লক্ষ্য করলে দেখবেন আমার লেখার কোন যুক্তি কেউ খন্ডন করতে পারেনি। দু’একজন কিছু প্রশ্ন বা আপত্তি করলেও আমার দেয়া জবাব পেয়ে আর কোন কথা বলেনি।
আল কুরআনের আলোকে নারী অধিকার (সত্য উম্মোচিত)/আল কুরআন মানব রচিত নাকি স্রষ্টার তার বিচারের দায় পাঠকের বিবেকের উপর
ইসলামের নামে এত দল, মুল দোষ কার?
কুরআনের আইন কি সৃষ্টিকর্তার আইন?
আমি ’ইসলাম’ নামক ধর্ম খুজছি, এখনো পায়নি। কেউ কি পেয়েছেন?
২৩| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৩
বিবেক ও সত্য বলেছেন: মধ্য রাতের আগন্তক, আপনি স্রষ্টা সম্পর্কে আমার বিশ্বাস জানতে চেয়েছিলেন। এর জবাব নিম্নের লিঙ্কে দেয়া আছে:
স্রষ্টার অস্তিত্ব:একটি নিরপেক্ষ বিশ্লেষন (আস্তিক-নাস্তিক উভয়ের প্রশ্নের সঠিক সমাধান)
২৪| ২৪ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:৫১
মধ্য রাতের আগন্তক বলেছেন: বিলম্বের জন্য দুঃখিত,খুব ব্যস্ত ছিলাম।
আমি আপনার বিশ্বাসের ব্যাপারে সরাসরি উত্তর আশা করেছিলাম। কিন্তু আপনি লিঙ্ক দিয়েছেন, যেটি পড়ার মতো যথেষ্ঠ সময় আমার কাছে নেই। আপনি যদি আস্তিক হতেন, তাহলে নিশ্চয়ই আপনি কোন ধর্মগ্রন্থকে ঐশী গ্রন্থ হিসেবে বিশ্বাস করেন। তখন কোরান এবং আপনার ঐ ধর্মগ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করা যেত। যাইহোক,আমি ধরেই নিচ্ছি আপনি বিশ্বাসী নন।
আপনার প্রথম পয়েন্টটা ছিল এরকম’ না দেখে বিশ্বাস করা যায় কি না? দেখেন, আমার কিন্তু অনেক কিছুই না দেখে বিশ্বাস করি, যেমন ধরেন- বাতাস। আপনি কি আপনার অন্তঃচক্ষু দিয়া বাতাসের আকৃতি কল্পনা করতে পারবেন?আপনি আপনার চক্ষু বা অন্তঃচক্ষু দ্বারা কল্পনা করতে পারছেন না বলে, বায়ূ অলীক বস্তু হয়ে যাওয়ার কোন কারণ নেই। আপনি লিখেছেন, ‘কেউ আপনার কাছে টাকা ধার চাইলে আপনার টাকা তাকে দেয়া না দেয়া নির্ভর করে আপনি তাকে কতটুকু বিশ্বাস করেন'। । এ বিশ্বাস/অবিশ্বাস নির্ভর করে আপনি তাকে কতটুকু চেনেন ও তার পূর্বের কার্য্যাবলি পর্যালোচনা করে। আপনি অন্তচক্ষু দ্বারা তার অতীত কার্যাবলী বিশ্লেষণ করে উপরে উল্লেখিত ৪ প্রকারের এক প্রকার বিশ্বাস আপনি করেন’। আপনার এই যুক্তির উপর আপনার যদি আস্থা থাকে, তাহলে পবিত্র কুরান যে ঐশীগ্রন্থ সেটি মেনে নিতে আপনার কোন আপত্তি থাকা উচিৎ নয়। কারণ নবী মুহাম্মদ (সঃ) তাঁর অসাধারণ সত্যবাদিতার কারণে তৎকালীন অগ্নিপূজক,মূর্তিপূজক আরববাসীর নিকট আল-আমীন বা বিশ্বাসী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।একটা মানুষ যিনি তাঁর জীবনে চল্লিশ বছর পর্যন্ত নিরঙ্কুশ সত্যবাদী এবং আমানতদার হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিলেন, তিনি হঠাৎ করে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর আদিষ্ট বাণী প্রচারের জন্য মিথ্যাবাদী হিসেবে গন্য হবেন !?ইতিহাস পাঠের ব্যাপারে আপনার আগ্রহ থাকলে এরকম একটি ঘটনা আপনার জেনে থাকার কথা। আবু সুফিয়ানের নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই। আবু সুফিয়ান ছিলেন সেই সময়কার মুশরিক,কুরাইশদের খুব বড় নেতা। তিনি যখন কুরাইশদের এক কাফেলা নিয়ে গিয়েছিলেন, হিরাক্লিয়াস(তৎকালীন রোম সম্রাট) তার কাছে এক সংবাদবাহক পাঠালেন। তারা শাম দেশে (সিরিয়া, প্যালেস্টাইন, লেবানন, জর্ডান) ব্যবসা করছিলেন, এবং সেই সময়ে আল্লাহর রাসূলের সাথে আবু সুফিয়ান ও কুরাইশদের সন্ধি চুক্তি ছিল।
অতএব আবু সুফিয়ান ও তার সঙ্গীরা ইলিয়াতে (জেরুসালেমে) গেলেন হিরাক্লিয়াসের সাথে দেখা করতে। হিরাক্লিয়াস তাকে দরবারে ডেকে পাঠালেন যেখানে সব উচ্চ পদমর্যাদাররাজপুরুষেরা ছিল।
তিনি তার দোভাষীকে ডেকে পাঠালেন, যে হিরাক্লিয়াসের প্রশ্ন শুনে তাদেরকে শোনাল:“তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তির সবচেয়ে নিকটাত্মীয় কে যে নবী বলে দাবী করেছে?”
আবু সুফিয়ান উত্তর দিলেন: “আমি তাঁর নিকটাত্মীয়।”
হিরাক্লিয়াস আদেশ দিলেন: “একে আমার কাছে আন এবং তার সঙ্গীদের তার পিছনে দাঁড় করিয়ে দাও।”
হিরাক্লিয়াস তার দোভাষীকে বললেন আবু সুফিয়ানের সঙ্গীদের বুঝিয়ে দিতে যে, তিনি ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে আমাকে কিছু প্রশ্ন করবেন, যদি আমি মিথ্যা বলি তাহলে সঙ্গীরা যেন তার প্রতিবাদ করে।
আবু সুফিয়ান আরো যোগ করলেন: “আল্লাহর কসম, যদি আমি আমার সঙ্গীরা আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে এই ভয় না করতাম, নবী সম্পর্কে আমি মিথ্যা বলতাম।”
প্রথম যে প্রশ্ন তিনি তাঁর সম্পর্কে আমাকে( আবু সুফিয়ান) জিজ্ঞাসা করলেন তা ছিল: “তোমাদের মাঝে তাঁর বংশ মর্যাদা কিরূপ?”
আমি উত্তর দিলাম, “তিনি আমাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান।”
হিরাক্লিয়াস আরো জিজ্ঞাসা করলেন: “তোমাদের মধ্যে থেকে তাঁর পূর্বে আর কেউ কি নবুওয়াতের দাবী করেছে?”
আমি উত্তর দিলাম: “না।” তিনি বললেন: “তার পূর্বপুরুষের কেউ কি রাজা ছিল?” আমি বললাম: “না।”
হিরাক্লিয়াস জিজ্ঞাসা করলেন: “তাঁর অনুসরণকারীরা কি ধনী না দরিদ্র?”
আমি উত্তর দিলাম: “দরিদ্ররাই তাঁর অনুসরণ করে।”
তিনি বললেন: “তার অনুসারীদের সংখ্যা বাড়ছে না কমছে?”
আমি উত্তর দিলাম: “তারা বাড়ছে।”
তিনি তখন জিজ্ঞাসা করলেন: “তার ধর্ম গ্রহণকারীদের কেউ কি এই ধর্মে অখুশী এবং পরে পরিত্যাগ করেছে?”
আমি উত্তরে বললাম: “না।” হিরাক্লিয়াস বললেন: “তোমরা কি তাঁর দাবীর পূর্বে তাঁকে কখনওমিথ্যার দায়ে অভিযুক্ত করেছো?” আমি বললাম: “না।” হিরাক্লিয়াস বললেন: “তিনি কি তাঁর প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন?” আমি উত্তর দিলাম: “না। আমরা তাঁর সাথে চুক্তিবদ্ধ, তবে আমরা জানি না এ ব্যাপারে তিনি কি করবেন।”
আমি তাঁর বিরুদ্ধে বলার কোন সুযোগ পাইনি তখন ছাড়া যখন হিরাক্লিয়াস জিজ্ঞাসা করলেন:“তোমরা কি তাঁর সাথে যুদ্ধ করেছ কখনো?” আমি উত্তর দিলাম, “হ্যাঁ।”
তখন তিনি বললেন, “এই যুদ্ধের ফলাফল কি ছিল?” আমি বললাম, “কখনো তিনি জিতেছেন, কখনো আমরা।”
হিরাক্লিয়াস বললেন, “তিনি তোমাদের কি করতে বলে থাকেন?”
আমি বললাম, “তিনি আমাদের শুধুমাত্র এক আল্লাহর ইবাদাত করতে বলেন, তাঁর সাথে আর কাউকে ইবাদাতে শরীক করতে নিষেধ করেন, এবং আমাদের পূর্বপুরুষেরা যা বলেছেন তা সবই পরিত্যাগ করতে বলেন। তিনি আমাদের সালাত আদায় করতে বলেন,সত্য কথা বলতে, পবিত্র থাকতে ও আত্মীয়স্বজনের সাথে ভাল ব্যবহার করতে বলেন।”
হিরাক্লিয়াস দোভাষীকে বললেন পরবর্তী বক্তব্য আমাকে জানিয়ে দিতে: “আমি তোমাকে তাঁরবংশমর্যাদা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি, তুমি বলেছ যে তিনি অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত বংশের সন্তান। আসলে প্রত্যেক নবীই নিজ জাতির সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকেই হয়ে থাকেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি তোমাদের মধ্যে আর কেউ এ দাবী করেছে কিনা, তোমার উত্তর ছিল না বোধক। যদি উত্তর হ্যাঁ বোধক হতো, আমি সন্দেহ করতাম যে এই লোকটি তার পূর্বের লোকের দাবীর অনুসরণ করছে।
তারপর আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি যে তার পূর্বপুরুষেরা রাজা ছিল কিনা। তোমার উত্তর না বোধক ছিল ; এবং যদি তা হ্যাঁ বোধক হতো, আমি মনে করতাম সে তার রাজত্ব ফিরে পেতে চাইছে। আমি আরো জিজ্ঞাসা করেছি তার দাবীর পূর্বে কখনো সে মিথ্যাবাদী হিসাবে অভিযুক্ত হয়েছে কিনা। এবং তোমার উত্তর ছিল না বোধক। সুতরাং আমি অবাক হচ্ছি কিভাবে একটি লোক আল্লাহর সম্পর্কে মিথ্যা বলতে পারে যে কখনো মানুষের সম্পর্কে কোন মিথ্যা বলেনি।
আমি তারপর তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি তাকে ধনীরা বা দরিদ্ররা, কারা অনুসরণ করে। তুমি বলেছে দরিদ্ররাই তাঁর অনুসারী, এবং আসলে নবীদের অনুসরণকারীরা দরিদ্র শ্রেণী থেকেই হয়ে থাকে। তারপর আমি জিজ্ঞাসা করেছি তাঁর অনুসারীরা সংখ্যায় বাড়ছে না কমছে, তুমি উত্তর দিয়েছ বাড়ছে, এবং সত্য হচ্ছে যে এটাই সত্য বিশ্বাসের লক্ষণ,যতক্ষণ না তা সবদিকে পরিপূর্ণ হবে। আমি আরো জিজ্ঞাসা করেছি এমন কেউ আছে কি না, যে তাঁর ধর্ম গ্রহণ করে অখুশী হয়ে তা পরিত্যাগ করেছে। তোমার উত্তর ছিল না বোধক, এবং আসলে এটাই সত্য বিশ্বাসেরই লক্ষণ, যখন তার আনন্দ অন্তরে প্রবেশ করে এবং তা সম্পূর্ণভাবে সত্তায় মিশে যায়।
আমি জিজ্ঞাসা করেছি তিনি কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন কিনা, তুমি না বোধক উত্তর দিয়েছ এবং সত্যিই নবীরা কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করেন না। তারপর আমিতোমাকে জিজ্ঞাসা করেছি তিনি তোমাদের কি করতে বলেন। তুমি উত্তরে বলেছ যে তিনি তোমাদেরকে শুধুমাত্র এক আল্লাহর ইবাদাত করতে বলেন এবং তাঁর সাথে কোন কিছু শরীক করতে এবং মূর্তিপূজা করতে নিষেধ করেন এবং সালাত আদায় করতে, সত্যবলতে, অবৈধ উপায়ে ব্যভিচার না করতে বলেন।
যদি তুমি যা বলেছ তা সত্যি হয়,তিনি খুব শীগগিরই আমার পায়ের নীচের এই ভূমি দখল করবেন এবং আমি কিতাব থেকে জানি যে তাঁর আসার সময় হয়েছে, তবে আমি জানি না যে তিনি তোমাদের মধ্য থেকে আসবেন, এবং আমি যদি নিশ্চিত হতে পারতাম যে আমি তাঁর কাছেই যাচ্ছি, তাহলে আমি এখনি তাঁর সাথে সাক্ষাতের জন্য যেতাম এবং যদি আমি তাঁর সাথে থাকতাম, আমি নিশ্চয়ই তাঁর পা ধুয়ে দিতাম।”
অর্থাৎ, নবুয়াত লাভের পরেও তারা মুহাম্মদ (সঃ) কে সত্যবাদী,আমানতদার হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছেন। সুতরাং তিনি যখন বলছেন, এটি সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর বানী, তাহলে কেন আমি তাকে অবিশ্বাস করবো ? তাছাড়া নবী মুহাম্মাদ প্রচলিত অর্থে নিরক্ষর ছিলেন এবং তিনি কবি,সাহিতিকও ছিলেন না। সুতরাং তাঁর পক্ষে আল-কুরানের মতো গ্রন্থ রচনা করা অসম্ভব ছিল ।কষ্ট করে এই লিঙ্কে গিয়ে ভিডিওটি দেখে আসলে কিছুটা সমাধান পাবেন এ ব্যাপারে ।https://www.youtube.com/watch?v=lSf2dRcNR_U
আপনার দ্বিতীয় যে পয়েন্টটা ছিল, ‘বিশ্বাস পরিবর্তন করা কি খারাপ?’ এটি সাধারণ আলোচনা,সুতরাং খন্ডানোর কিছু নেই।এবং আমিও এই জায়গায় আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত ।আমিও বিশ্বাস করি,সঠিক-ভুল নির্ণীত হয়ে যাওয়ার পরেও ভুল জিনিসকে আঁকড়ে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয় । আমি বিশ্বাস করি , জ্ঞান পিপাসুদের বিশ্বাস পরিবর্তন হতে পারে,কিন্তু একসময় তা অবশ্যই সত্যের সাথে মিলে যাবে।অথবা একজন জ্ঞানী- গবেষক প্রথম থেকেই সত্যের উপর থাকেন, তাহলে সত্যানুসন্ধানের মাধ্যমে তাঁর বিশ্বাস আরো মজবুত হবে। কারণ ভুল,মিথ্যার বিপরীতে সত্য বিষয় তো অবশ্যই থাকতে হবে।
আপনি লিখেছেন,কুরআন বিশ্বাসের জন্য জোর করে। আপনি বিষয়টা যথার্থ শব্দে প্রকাশ করেননি। কুরআন আপনাকে বিশ্বাসের জন্য জোর করছেনা বরং আপনাকে পরিনতির কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। ধরেন, আপনার একজন শিক্ষক যদি আপনাকে বলে যে , বাবা ভালো করে পড়াশোনা কর, তাহলে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারবে, আর পড়াশোনা না করলে পরীক্ষায় ফেল করবে। এখন আপনি যদি পড়াশোনা না করার কারণে সেই শিক্ষকের বিষয়ে ফেল করে বসেন, তাহলে দোষটা কি শিক্ষকের?
পবিত্র কোরআনে, কেন আপনি আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য করবেন, কেন তাঁর ইবাদত করবেন, সেই ব্যাপারগুলোর ব্যাখ্যায় অনেক আয়াত আছে। এখানে কোনরকম গোঁজামিলের আশ্রয় নেয়া হয়নি। সুরা মুলকের এই আয়াতগুলো পড়ে দেখুন...
‘’ তারা কি লক্ষ্য করে না, তাদের মাথার উপর উড়ন্ত পক্ষীকুলের প্রতি পাখা বিস্তারকারী ও পাখা সংকোচনকারী? রহমান আল্লাহ-ই তাদেরকে স্থির রাখেন। তিনি সর্ব-বিষয় দেখেন।
রহমান আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত তোমাদের কোন সৈন্য আছে কি, যে তোমাদেরকে সাহায্য করবে? কাফেররা বিভ্রান্তিতেই পতিত আছে।
তিনি যদি রিযিক বন্ধ করে দেন, তবে কে আছে, যে তোমাদেরকে রিযিক দিবে বরং তারা অবাধ্যতা ও বিমুখতায় ডুবে রয়েছে ।
যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখে ভর দিয়ে চলে, সে-ই কি সৎ পথে চলে, না সে ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরলপথে চলে?
বলুন, তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং দিয়েছেন কর্ণ, চক্ষু ও অন্তর। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
বলুন, তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে বিস্তৃত করেছেন এবং তাঁরই কাছে তোমরা সমবেত হবে।
বলুন, এর জ্ঞান আল্লাহ তা’আলার কাছেই আছে। আমি তো কেবল প্রকাশ্য সতর্ককারী।
যখন তারা সেই প্রতিশ্রুতিকে আসন্ন দেখবে তখন কাফেরদের মুখমন্ডল মলিন হয়ে পড়বে এবং বলা হবেঃ এটাই তো তোমরা চাইতে।
বলুন, তোমরা কি ভেবে দেখেছ-যদি আল্লাহ তা’আলা আমাকে ও আমার সংগীদেরকে ধ্বংস করেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তবে কাফেরদেরকে কে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?
বলুন, তিনি পরম করুণাময়, আমরা তাতে বিশ্বাস রাখি এবং তাঁরই উপর ভরসা করি। সত্ত্বরই তোমরা জানতে পারবে, কে প্রকাশ্য পথ-ভ্রষ্টতায় আছে।
বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভের গভীরে চলে যায়, তবে কে তোমাদেরকে সরবরাহ করবে পানির স্রোতধারা?’’
সুরা ‘আনকাবুত’ এর বিশ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,( হে বার্তাবাহক )আপনি বলুন, তোমরা যমীনে ভ্রমণ কর, অতঃপর দেখ কীভাবে তিনি সৃষ্টির সূচনা করেছিলেন, তারপর আল্লাহই আরেকবার সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’’।
এবার আমি উদাহরণ দেই । ধরেন, আপনি কোন একটা দেশের নাগরিক।একজন সুনাগরিক হিসেবে দেশ আপনার কাছে কি আশা করে ? দেশ আপনার কাছে আশা করে, আপনি সেই দেশের সংবিধান মেনে চলুন, যে সব আইন-কানুন রয়েছে সেসব মেনে চলুন। আর যদি আপনি কোন আইন-কানুন ভঙ্গ করেন, তাহলে এই এই সাঁজা।এখন আপনি যদি মনে করেন, দেশ আমাকে তাঁর আইন মানার জন্য শাস্তির হুমকি দিচ্ছে, আমার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে, তাহলে তো সমস্যা !
সুতরাং যেই সৃষ্টিকর্তা আপনাকে এত নিখুঁত করে সৃষ্টি সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন,আপনাকে অসঙ্খ্য নেয়ামত,অনুগ্রহের দ্বারা বেষ্টন করে রেখেছেন, আপনি তাঁর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করবেন না?
যেই সৃষ্টিকর্তা আপনাকে অতি বিস্ময়কর ক্ষমতাসম্পন্ন বিভিন্ন অংগ-প্রতঙ্গের সমন্বয়ে এমন সুন্দর একটা শরীর ‘দান’ করেছেন, বেঁচে থাকার জন্য প্রতিনিয়ত হিসেবছাড়া প্রয়োজনীয় অক্সিজেন আপনার জন্য ‘ফ্রি’ করে দিয়েছেন, আপনি কি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন না?
সর্বশেষ, আপনি ফ্যান-গরুর যে গল্প ফেঁদেছেন, সেটি সম্পর্কে বলবো। হ্যাঁ, বোধহয় ইহা একটি অতি উচ্চতর উদাহরণ, যা এই অধমের বোধগম্য নয়।আমি যদ্দুর জানি, কোন উদাহরণ টানতে গেলে অন্তত দু’টি বিষয় মাথায় রাখতে হয়, এক হচ্ছে, উদাহরনটি প্রাসঙ্গিকভাবে শেষ করা, আরেক হচ্ছে, আপনি যে বিষয়টি প্রমাণ করতে চাচ্ছেন,সেটির সাথে আপনার উদাহরণটির প্রাসঙ্গিক সম্পর্ক তৈরি করে দেয়া। আমার মনে হয় আপনি কি বোঝাতে চেয়েছিলেন , সেটা আপনার নিজের কাছেও পরিস্কার না। শেষের দিকে এসে আপনি আপনার সেই ‘গরুমার্কা’ উদাহরণ টেনে বলেছেন যে, যৌক্তিকতা চিন্তা করাই মহাপাপ’। আপনি যদি এই বিষয়টি পবিত্র কুরআনের প্রতি ইঙ্গিত করে বলে থাকেন, তাহলে বলি , পবিত্র কুরানে সৃষ্টিজগত নিয়ে, সৃষ্টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করাকে শুধুমাত্র উৎসাহিতই শুধু করা হয়নি বরং ইবাদত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। কুরআন এমন গ্রন্থ নয় যে, সেটি ব্রাহ্মন ছাড়া অন্য কেউ ধরতে বা পড়তে পারবেনা। আপনাকে কিছু উদাহরণ দেই।
“তোমার প্রতিপালক মৌমাছিকে তার অন্তরে ইঙ্গিত দ্বারা নির্দেশ দিলেন পাহাড়ে, বৃক্ষে ও মানুষের ঘরের চালে গৃহ নির্মাণ কর।” (১৬:৬৮)
“এরপর প্রত্যেক ফল থেকে কিছু কিছু আহার কর, অতঃপর তোমার প্রতিপালক তোমার জন্য যে পদ্ধতি সহজ করেছেন তা অনুসরণ কর, তার উদর থেকে নির্গত হয় বিবিধ বর্ণের পানীয়। এতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীল মানুষের জন্য রয়েছে নিদর্শন।” (১৬:৬৯)
“অবশ্যই পশুর মধ্যে তোমাদের জন্য শিক্ষা রয়েছে। তাদের উদরস্থিত জিনিস হতে গোবর এবং রক্ত হতে নিঃসৃত পরিচ্ছন্ন দুগ্ধ আমি তোমাদেরকে পান করাই; যা পানকারীদের জন্য বিশুদ্ধ ও সুস্বাদু।” (১৬:৬৬)
নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে এবং নদীতে নৌকাসমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহ তা' আলা আকাশ থেকে যে পানি নাযিল করেছেন, তদ্দ্বারা মৃত যমীনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম জীব-জন্তু। আর আবহাওয়া পরিবর্তনে এবং মেঘমালার যা তাঁরই হুকুমের অধীনে আসমান ও যমীনের মাঝে বিচরণ করে, নিশ্চয়ই সে সমস্ত বিষয়ের মাঝে নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্যে। [সুরা বাকারা: ১৬৪]
বলুন, ভেবে দেখ তো, আল্লাহ যদি দিনকে কেয়ামতের দিন পর্যন্ত স্থায়ী করেন, তবে আল্লাহ ব্যতীত এমন উপাস্য কে আছে যে, তোমাদেরকে রাত্রি দান করতে পারে, যাতে তোমরা বিশ্রাম করবে ? তোমরা কি তবুও ভেবে দেখবে না ? [সুরা কাসাস: ৭২]
আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ। অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কর্মে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক আবর্তন করে। তিনি সকল বিষয় পরিচালনা করেন, নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা স্বীয় পালনকর্তার সাথে সাক্ষাত সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাসী হও। [সুরা রা’দ: ২]
নিশ্চয়ই রাত-দিনের পরিবর্তনের মাঝে এবং যা কিছু তিনি সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীনে, সবই হল নিদর্শন সেসব লোকের জন্য যারা ভয় করে। [সুরা ইউনুস: ৬]
তারা কি তাদের সামনের ও পশ্চাতের আকাশ ও পৃথিবীর প্রতিলক্ষ্য করে না? আমি ইচ্ছা করলে তাদের সহ ভূমি ধসিয়ে দেব অথবা আকাশের কোন খন্ড তাদের উপর পতিত করব। আল্লাহ অভিমুখী প্রত্যেক বান্দার জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। [সুরা সা’বা: ৯]
এরকম আরো অসঙ্খ্য আয়াত রয়েছে, যেখানে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টিজগত নিয়ে চিন্ত-ভাবনা প্রতি উৎসাহিত করেছে।
ভাই , পৃথিবীর সব মানুষ যদি আল্লাহ-বিদ্রোহী হয়ে যায় কিংবা সব মানুষ যদি স্রষ্টার অনুগত্য স্বীকার করে নেয়,তাহলে আল্লাহ তায়ালার কোন ক্ষতি বা লাভ হবেনা। কিন্তু যেহেতু আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে অত্যন্ত শখ করে সৃষ্টি করেছেন, সেহেতু মানুষ অকৃতজ্ঞ হউক,অন্য মানুষের ক্ষতি করুক,পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করুক তা তিনি কামনা করেন না। আল্লাহ চান না এসব করে তাঁর প্রিয় বান্দারা জাহান্নামে পুড়ুক।
অথচ প্রত্যেককে তাঁর কর্ম অনুযায়ী ফল ভোগ করতে হবে।
২৫| ২৫ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৩৫
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনি কুরআনের সত্যতা প্রমানে মুহাম্মাদ (সঃ) এর জীবন কাহিনির অংশবিশেষ । মানুষ বিভ্রান্ত হয় এখানেই। আপনি যে প্রমান দিলেন সেটা ইতিহাস যা ১০০% জাস্টিফাই করা সম্ভব না, যার কতটুকু সত্য আর কতটুকু মিথ্যা তা এত শত বছর পর বের করা সম্ভব নয়। সুতরাং প্রথম প্রমান হবে আমাদের সম্মুখে যা আছে তা থেকে, দ্বিতীয় প্রমান হবে ইতিহাস যেটা আপনি তুলে ধরলেন। অর্থ্যাৎ কুরআন যদি নিজেকে স্রষ্টার কিতাব হিসাবে প্রমান করতে পারে তাহলে ঐতিহাসিক দিকগুলোও অবশ্যই সত্যে হবে।
প্রথমত: কুরআন স্রষ্টার কিতাব তার কোন প্রমান উপাস্থাপন করতে পারে না। স্রষ্টার কিতাব তার প্রমান নেই, এটাই বড় প্রমান যে এটা মানবরচিত। এরপরও আরো বহু প্রমান দেয়া যায় যে এটা মানবরচিত। সে সকল প্রমান থেকে একটি প্রমান এ পোষ্টের বিষয়স্তু। বিশ্বাস এমন বিষয় যেটা জোর করার কিছু নয়, শুধু মিথ্যা ও ভন্ডামি বিশ্বাসের বিষয়ে জোর করে। কুরআন স্রষ্টা প্রদত্ত হলে বিশ্বাসের ব্যপারে জোর করতো না।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৩২
বিদ্যুৎ চমক বলেছেন: আপনার এ কথাও বানোয়াট,আপনার এ কথার জবাবে পবিত্র কুরআন বলছে যার যার ধর্ম তার তার কাছে, আপনি না মানলেও সৃষ্টিকর্তার কোন ক্ষতি নেই। আপনার কর্মের জন্য আমি বা আপনার কর্মের জন্য আমি জিজ্ঞাসিত হবো না।
[link||view this link]