নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ নানা বিতর্ক চলে আসছে অনেকের ই ধারনা রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম হওয়ার কারনে ই এদেশের বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বার বার নানা ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে । আসলেই কি এমন ধারনা সত্য ? যারা মনে করেন শুধুমাত্র রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম হওয়ার কারণেই আমাদের দেশের সংখ্যালঘু গোষ্ঠী নানা ভাবে অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার তা হলে আমি বলবো তাদের ধারনা পুরো পুরি ঠিক না ।আমাদের সংবিধানে ১৯৮৮ সালে তৎকালিন স্বৈরশাসক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ‘ইসলাম' যোগ করেন । এর আগে জিয়াউর রহমান সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের শুরুতে প্রস্তাবনার আগেই বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম (দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করলাম) এই কথাটি সংযোজন করেন । যদিও আমাদের ১৯৭২ সালের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার চারটি মূলনীতি ছিল – ১. জাতীয়তাবাদ, ২. গণতন্ত্র, ৩. সমাজতন্ত্র এবং ৪. ধর্মনিরপেক্ষতা৷ অর্থাৎ সংবিধানের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা । আমি আগেই বলেছি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হওয়ার কারনেই আমাদের দেশের সংখ্যালঘু গোষ্ঠী নানা ভাবে অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে যারা দাবি করছেন তাদের কাছে আমার প্রশ্ন ১৯৮৮ সালের আগে কি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু গোষ্ঠী কি খুব নিরাপদে ছিলেন ? না মোটেও না আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে মূলচেতনা ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা এবং ১৯৭২ সালের সংবিধানে ছিল ধর্মনিরপেক্ষতার কথা তার পর ও ইতিহাস থেকে জানা যায় বিভিন্ন সময় নানা আজুহাত তুলে স্বাধীনতার পর পর ই আমাদের দেশে শুরু সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর উপর নির্যাতন যা আজো বিদ্যমান । আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কথা ই ধরা যাক ভারত বিশ্বের অন্যতম উদার গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র সেখানে রাষ্ট্র ধর্ম বলতে কিছু নেই সেখানকার প্রায় আশি শতাংশ জনগোষ্ঠি ই হিন্দু বাকী বিশ ভাগের প্রায় চৌদ্দ ভাগ ই মুসলিম জনগোষ্ঠী । ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হওয়ার পর ও দিন দিন দেশটিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়েই চলছে । সরকারি হিসেব মতে ২০১৫ সালে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটেছে ৭৫১টি এতে কমপক্ষে ৯৭ জন প্রাণ হারিয়েছে আহত ২,২৬৪ জন ৷বাড়িতে গরুর মাংস রেখে খেয়েছে এমন গুজবে দেশটির উত্তর প্রদেশের কোন এক গ্রামে গত বছর মোহাম্মদ আখলাক নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।এর পর বিভিন্ন সময় মুসলিম সাংসদ থেকে শুরু গরুব্যবসায়ীর উপর হামলার কথা প্রকাশ হয় ভারতের নানা সংবাদ মাধ্যমে । ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গার কথা কারোই অজানা নয় যে দাঙ্গায় নিহত হয়েছিল কমপক্ষে ১২০০ মানুষ, যাদের অধিকাংশই ছিল মুসলমান ৷সেই দাঙ্গার মদদদানের সন্দেহের তীর বরাবর ই ছিল গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকেই যার কারনে দীর্ঘদিন তাঁর ইউরোপ, অ্যামেরিকা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ছিল৷ এর পর ও ভারতের মত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীকে ই বেছে নিয়েছেন ৷আমাদের সংবিধানে যেমন রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম বিদ্যমান তেমনি অন্য ধর্মের সমান অধিকার ও বিদ্যমান । বর্তমান সরকার ও তার দল আওয়ামিলীগ সবসময় ই ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী বলে আমরা জানি তার পরে ও তার তিন বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার পর ও বর্তমানে আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম বিদ্যমান । সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো গত কয়েকবছরে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখতে পাওয়া যায় বেশির ভাগ ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের সক্রিয় সদস্যদের সরাসরি অংশগ্রহণ রয়েছে ৷ এর আগে আমরা দেখেছি বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতায় থাকা অবস্হায় দেশের নানা স্হানে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর উপর নারকীয় হামলার চিত্র । রাষ্ট্রধর্ম ই যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের মূল কারন তা পুরোপুরি সত্য নয় তবে কোন রাষ্ট্রে রাষ্ট্রধর্ম থাকার কারনে সেখানকার সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ধর্মান্ধ অংশ আত্মতুষ্টিতে ভোগে নানা আজুহাতে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নানা অত্যাচার ও নির্যাতন চালায় । আর এই নির্যাতনের মূল কারনই হলো সম্পত্তির লোভ । সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠদের একটি অংশ সুযোগ পেলে সংখ্যালঘুদের সম্পদ আত্মসাতের চেষ্টা চালায় । সেই চেষ্টা স্বার্থক হওয়ার জন্য চাই কোন না কোন বাহানা সমাজের সেই সংখ্যাগরিষ্ঠরা ধর্মকে সেই বাহানা হিসেবে যুগ যুগ ধরে ব্যবহার করে আসছে । আমাদের দেশের আইন এব্যপারে যথেষ্ট শক্তিশালী অথচ আইন প্রয়োগের দূর্বলতা , একশ্রেনীর মানুষের হীনমনতা ও হীন স্বার্থপরতাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের মূল কারণ ।
২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:২৯
ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: Click This Link
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৩
মুসাফির নামা বলেছেন: ভারতে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাগুলো হয় ,তার বেশীর ভাগই ধর্মীয় উস্কানি থেকে অথচ তারা ধর্ম নিরেপেক্ষ। আর আমাদের দেশে দু'একটা যেগুলো হয়, তা হয় রাজনৈতিক অথবা ব্যাক্তিগত স্বার্থ কেন্দ্রিক।বর্তমানে তারা আবার নতুন বাওতাবাজি শুরু করেছে।