নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় যার জন্ম ।যুগ যুগ ধরে এ দেশের নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষের একই ঘটের জল খেয়ে বেড়ে উঠেছে একে অপরের সুখ দুঃখের সঙ্গী ও হয়েছে । একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ও ধর্ম বর্ণের বিভেদ ভুলে দেশমাতৃকার অস্তিত্ব রক্ষায় কাধে কাধ মিলিয়ে জীবন বাজি রেখে সবাই ঝাপিয়ে পরে ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে । এর ই ফলশ্রুতিতে আমারা পেয়েছি একটি লাল সবুজের পতাকা, পেয়েছি বিশ্বমানচিত্রে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব । তবে যে অসাম্প্রদায়িক চেতনার মাধ্যমে আমরা আমাদের স্বাধীন মাতৃভূমি পেয়েছি সেই অসাম্প্রদায়িক চেতনা কেন জানি আজ ও ধুকে ধুকে মরছে । ব্যক্তি স্বার্থের পাশাপাশি রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্যই অসাম্প্রদায়িক ও সাম্প্রদায়িক চেতনাকে কাজে লাগানো হচ্ছে । কোন কোন রাজনৈতিক গোষ্ঠি সাম্প্রদায়িকতা তথা ধর্মকে পূজি করে নিজেদেরকে রাজনৈতিক ময়দানে প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় লিপ্ত আবার কেউ অসাম্প্রদায়িকতা কে । বর্তমান ক্ষমতাশীন দল আওয়ামীলিগ যাদের নেতৃতে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে বরাবাই আমারা জেনে আসছি তারা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী । কিন্তু বাস্তবতা আমাদের বিশ্বাস থেকে অনেক দুরে ।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্হ্যায় বরাবরই সাম্প্রদায়িকতা প্রাধান্য পেয়ে আসছিল । কোমলমতি শিশুদের পাঠ্য বই ই সাম্প্রদায়িকতার মূল শিকার । শিশুদের পাঠ্য বইয়ে আমরা যেমন দেখেছি " ঋ " তে ঋষি বাক্য শিরধার্য " ঈ " তে " ঈশ্বর কে বন্দনা করো তেমনি দেখছি " ও " তে ওড়না চাই
" ঈ " তে ঈদ ইত্যাদি । যেখানে আমদের মুক্তিযুদ্ধ তথা স্বাধীনতার মূল চেতনাই ছিল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া সেখানে কেন অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধুকে ধুকে মরছে ? শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর দাবি মেনে নিয়ে পাঠ্যপুস্তক থেকে অমুসলিম ও প্রগতিশীল লেখকদের লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে । যার প্রমান সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো হেফাজতে ইসলামের বিবৃতি থেকে । হেফাজতে ইসলামের বিবৃতিতে বলা হয় তাদের দাবি মেনে স্কুলের পাঠ্যবই থেকে ‘নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দু তত্ত্বের বিষয়বস্তু’ বাদ দেওয়া হয়েছে এই জন্য তারা সরকারের প্রশ্রংসায় মঞ্চমুখ ও । তাদের দাবি সরকার মেনে নেয়ায় নাকি ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠীর গায়ে জ্বালা ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির আমির শাহ আহমদ শফী।এখানে ইসলামবিদ্বেষী বলতে হেফাজতে ইসলামের আমির বিশেষ ভাবে দেশের প্রগতিশীল শক্তিকে ই বুঝিয়েছেন যারা বরাবই সাম্প্রদায়িকতা তথা ধর্মীয় উগ্রবাদের ঘোর বিরোধী ।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজ একটি মহা শক্তি হিসেবে দাড়িয়ে আছে । ২০১৩ সালে ৫ মে সমগ্র ঢাকা শহরে এক নাড়কীয় তান্ডবের মাধ্যমে তাদের শক্তি পরীক্ষা দেখিয়েছেন । যদি ও সেদিন সরকার সু-কৌশলে হেফাজতে ইসলামকে তাড়াতে পেরেছেলেন কিন্তু তাদের সেই তান্ডবের ভয় সরকার আজ ও মন থেকে মুছতে পারেনি । সেদিন হেফাজতে ইসলাম সরকারের কাছে ১৩ দফা সম্বলিত একটি দাবি নামা দিয়েছিলেন । সরকার ক্রমানয়ে তাদের সে দাবি পুরনের দিকে ই এগিয়ে যাচ্ছে বলে অনেকের মত আমার ও ধারনা । আমাদের রাজনৈতিক দল গুলির কাছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাই বড় নিয়ামক । যে কোন মূল্য দেশ ও জাতীর স্বার্থ বির্সযন দিয়ে তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকতে ই হবে । তাই আমরা নানা সময় জাতীয় নির্বাচনের পর ক্ষমতা হারানো রাজনৈতিক দল গুলির কাছ থেকে শুনেছি ওমুকের ওমুক দাবি আমরা পূরন করিনি বলে সূক্ষ কারচুপির মাধ্যমে আমাদের ক্ষমতা থেকে হিয়ে দেওয়া হয়েছে । এমন কি আমাদের বৃহৎ রাজনৈতিক দল গুলিকে নানা সময় তাদের সমস্যা গুলি নিয়ে ক্ষমতাধর বিদেশী রাষ্ট্র গুলির কর্তাব্যক্তিদের কাছে নালিশ ও করতে দেখেছে অথচ তারা মুখে শিকার করছেন আমরা জনগন ই নাকি সকল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার উৎস ।
আমাদের দেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট রাষ্ট্র হওয়ায় প্রত্যেক রাজনৈতিক দলই চায় ইসলামিক রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠিকে যে কোন মূল্যে খুশি রাখতে । এই জন্য বিএনপি যেমন স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবির সহ বেশ কিছু ইসলামিক রাজনৈতিক গোষ্ঠির সাথে জোট বেধেছে তেমনি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আওয়ামিলীগ ও আল্লামা আজিজুল হকের সাথে এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল যদি ও পরে সেই চুক্তি আর বাস্তবায়ন হয় নি । এর পর আওয়ামীলিগ হেফাজতে ইসলামকে খুশি রাখতে রেলের জমি সহ নানা কিছু দিয়ে প্রানপন চেষ্টা করছেন হেফাজতে ইসলামকে খুশি রাখতে । এই মুহুর্তে আমাদের দেশে সহ সারা বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশের ই অন্যতম সমস্যার একটি হলো জঙ্গিবাদ তথা ধর্মীয় উগ্রবাদ । আমাদের সরকার ও তার আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী জীবন বাজি রেখে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্হান নিয়েছে ।হেফাজতে ইসলাম সহ বিভিন্ন ইসলামিক দল ও গোষ্ঠির দাবি অনুযায়ি সরকার শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে সহজপাঠের নামে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় বৈষম্যমূলক বিষয় অন্তর্ভুক্তি ও সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর অপকৌশল লিপ্ত হয়েছে বলে ই মনে হচ্ছে । আমরা চাইবো আমাদের শিশুরা উদার, মানবিক ও অসাম্পদ্রায়িক মানুষ হিসেবে বড় হবে । যদি তাদেরকে ছোটবেলা থেকেই পাঠ্য বইয়ের মাধ্যমে ধর্মীয় বৈষম্যে শিক্ষা দেয়া হয় তা হলে তা হলে আমাদের শিশুরা কখনো ই অসাম্প্রদায়িক উদার মনোভাব নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধে বড় হতে পারবেনা ।
২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪৪
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: তবে যে অসাম্প্রদায়িক চেতনার মাধ্যমে আমরা আমাদের স্বাধীন মাতৃভূমি পেয়েছি সেই অসাম্প্রদায়িক চেতনা কেন জানি আজ ও ধুকে ধুকে মরছে । ব্যক্তি স্বার্থের পাশাপাশি রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্যই অসাম্প্রদায়িক ও সাম্প্রদায়িক চেতনাকে কাজে লাগানো হচ্ছে ।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বিভিন্ন কারণে; শাসন তান্ত্রিক বৈষম্য, অর্থনৈতিক শোষণ, শেখ মুজিব কে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা, দমনপীড়ন, নির্যাতন, বাঙালি জাতীয়তাবাদ কে অস্বীকার করা প্রবূতি কারণে। সেখানে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ছিল খুবই ক্ষীণ। কারণ, তখনকার কৃষক, জেলে, মজুর’রা সাম্প্রাদায়িক আর অসাম্প্রাদায়িকের সংজ্ঞা জানত না। যারা সাম্প্রাদায়িক চেতনার সংজ্ঞা যারা জানত তারা ভারতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পিকনিক করেছে। আর এদেশের সাধারণ মানুষ বাঁচতে চেয়েছিল, তারা নির্যাতনমুক্ত হতে চেয়েছিল, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল সেই জন্য তারা মুক্তিযুদ্ধে যাপিয়ে পড়েছিল অর্থাৎ সমষ্ঠিগত কারণে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল।
অসাম্প্রাদায়িক চেতনা চেতনা করে যারা এত দিন ফায়দা লুটছে তাদের ব্যবসা এখন লসের দিকে, তাদের ভাওতাবাজী জনগণ এখন বুঝে গেছে, তাই তারা আবার সাম্প্রাদায়িকতায় ঝুঁকছে। কারণ, তারা ব্যবসা করতে চায়, ব্যবসা। চেতনা ব্যবাস আর সাম্প্রাদায়িকতার জিগির। এই ব্যবসা করতে গিয়ে তারে জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:১৬
একজন সত্যিকার হিমু বলেছেন: আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িকতার আড়ারে আসলে সবচেয়ে বড় ধর্মপন্থী দল এরাই ।