নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ও বলতে চাই !

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন

ব্লগিং হউক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার ।

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি আপেলের জন্য.......

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:০৭

আমরা জানি আপেলের অনেক গুণ । আপেলে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই। এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোনিউট্রিএন্টস। এটি হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কাজ করে। তবে বর্তমান ফরমালিন যুগে অনেকেই জীবন বাঁচাতে আপেল খাওয়ার আগ্রহবোধ হারিয়ে ফেলেছে।আমি আজ আপেলের দোষ-গুন নিয়ে বলতে আসনি । আজ আমি বলবো মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু সাইদুলের আপেল খাওয়ার পর নির্যাতনের কথা । সাইদুল গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের জাকিরের মোড় এলাকার কৃষি শ্রমিক আবদুল মিয়ার ছেলে বয়স সবে মাত্র দশ ।জন্ম থেকেই সৃষ্টিকর্তা সাইদুলকে ঠকিয়েছেন সাইদুল মানসিক প্রতিবন্ধী । একটি আপেলের যে কি মজা তা হয়তো সাইদুলের চেয়ে বেশি আর কেউ জানে না । পেটের ক্ষুধায় রাস্তার পাশের ফলের দোকান থেকে একটি আপেল হাতে নিয়ে দৌড়দেয় সাইদুল । ফলের দোকানদার হানিফ শেখ ও তাঁর সহযোগী কাছে সাইদুলের পেটের ক্ষুধার চেয়ে আপেলের গুরুত্বই ছিল বেশি । তাই তারা সাইদুলকে একটি আপেল চুরির দায়ে কত ধরনের শাস্তি ই না দিয়েছে ।

সংবাদ মাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় বাজারে হানিফের ফলের দোকান থেকে সাইদুল একটি আপেল নিয়ে দৌড় দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ফলের দোকানদার হানিফ ও তাঁর সহযোগী সিএনজি চালক পিন্টু এবং মাইক্রোবাসের চালক মজনু সাইদুলকে ধরে ফেলে।এর পর সাইদুল কে ধরে নাইলনের দড়ি দিয়ে মসজিদের গ্রিলের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে চড়-থাপ্পড় মারাসহ জুতা দিয়ে পেটান।এমন কি কেউ কেউ হাতে লোহার রড, কাঠের বাটাম নিয়ে সাইদুলকে পেটাতে উদ্যত হয়। পরে স্থানীয় দুজন সংবাদকর্মীর উপস্থিতি টের পেয়ে নির্যাতন বন্ধ করলেও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। পৌর শহরের বাজারের ভরাসময়ে একটি ক্ষুধার্ত মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুকে শত শত মানুষের সমানে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করলো অথচ কেউ এর প্রতিবাদ না করে দাড়িয়ে দড়িয়ে উপভোগ করলো কেউ আবার নিজের মোবাইল ফোনে ছবি তোলতে বা ভিডিও করতে ব্যস্ত হয়ে পরলো ।

স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন এত শত তথা কথিত মানুষের ভিড়ে দুই একজন মানুষ কি পাওয়া গেল না যারা শিশু সাইদুলের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করেতে পারলো না ? কেন দুই জন সাংবাদিককে অনেক পরে এগিয়ে এসে পুলিশকে খবর দিতে হলো শিশু সাইদুরকে উদ্ধারে জন্য ? আমরা নাকি ক্রমানয়ে মধ্যম আয়ের দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি ডিজিটাল , ডিজিটাল বলে চিৎকার করে গলা ফাটিয়ে ফেলছি কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ ও আমাদের মানসিকতা কেন যানি সেই মধ্য যুগেই পরে আছে । তা না হলে একটি আপেল চুরির জন্য ক্ষুধার্ত মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুর হাতে পায়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করলো শিশুটি যখন কেঁদে কেঁদে বলছিল বাবা এসে আপেলের টাকা দিয়ে দিবে তখনো তার ওপর নির্যাতন চালায় মানুষরূপী ওই দুর্বৃত্তরা । তাদের অন্তর একটু ও কাপেনি ক্ষুধার্ত মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুকে নির্যাতন করতে ।

সিলেটের রাজন খুলনার রাকিবের চেয়ে সাইদুলের ভাগ্য অনেকটাই ভাল যে সাইদুল প্রানে বেঁচে গেছে । এর আগে সিলেটে মিথ্যা চুরির অভিযোগ এনে প্রভাবশালী প্রতিবেশীদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে জীবন দিতে হয়েছিল শিশু সামিউল আলম রাজনকে । গ্যারেজ মালিকের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার অপরাধে খুলনার শিশু রাকিবের শরীরে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছিল । যদি ও এই হত্যাকাণ্ড গুলিতে সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠার পর হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি কারতে বাধ্যহয়েছিল সরকার । কিন্তু প্রায় প্রতিদিন ই সংবাদমাধ্যমের সংবাদ হয় কোথাও না কোথাও শিশু নির্যাতন বা খুনের ঘটনা ।

আজ আমরা এমন একটি সমাজ তথা রাষ্ট্রে বাসকরি যেখানকার মানুষ " শক্তের ভক্ত নরমের যম " । তা না হলে আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যাংক থেকে ভুয়া কাগজ দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋন নিয়ে ভাগলপুরে পারি জমাচ্ছে প্রভাবশলীরা দূর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত লক্ষ কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করছে । শেয়ার বাজার থেকে অসহায় লক্ষ মানুষের লক্ষ কোটি টাকা চুরি করে যারা আজ দরবেশ সেজে আছে তাদের বিরুদ্ধে একটি টু শব্দ ও করার সাহস পাচ্ছি না । অথচ একটি ক্ষুধার্ত মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুকে একটি আপেল চুরির জন্য কতই না উল্লাস করে সাজা দিতে পারি । আমি কোন চুরিকেই সমর্থন করি না বা করতে পারি না । হউক সেটা কোন এক শিশুর আপেল চুরি কিংবা প্রভাবশলীদের পুকুর চুরি । শিশু সাইদুলের আপেল চুরি ও সমর্থন যোগ্য নয় । তবে কিছু কিছু ঘটনাকে মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে অবশ্যই আমাদের দেখতে হবে । শিশু সাইদুলের প্রতি যে নির্যাতন হয়েছে তার জন্য তার কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আমাদের আর কোন পথ নেই আমাদের রাষ্ট্র আমাদের প্রশাসন আমাদের আইন কোন কিছুই পারেন সাইদুলদের নির্যাতনের হাত ঠেকে রক্ষা করতে । ধিক্কার জানাই ওই নরাধমদের যারা কারনে অকারনে সাইদুলদের প্রতি অমানুষিক নির্যাতন চালায় । দাবী জানাই রাষ্ট্র ও আইনের প্রতি যারা সাইদুলদের নির্যাতন করছে তাদের বিচারের মাধ্যমে যথাযথ সাজা দিয়ে সাইদুলদের নির্যাতন বন্ধের যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ।


মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩৫

ওমেরা বলেছেন: আল্লাহ যা জানেন আমরা তা জানি না ,আল্লাহ যা করেন মানুষের ভালর জন্য করেন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.