নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশ নামক ব-দ্বীপের রাষ্ট্রটাকে অচল করে দেয়া খুব ই সহজ কাজ । ক্ষমতা আর জোর থাকলেই অচল করে দেয়া যায় । অচল হয়ে পরলে রাষ্ট্রের সাধারন মানুষ গুলির অবস্হা কি হবে তা নিয়ে কেউ ই মাথা ঘামান না । সবার ই প্রয়োজন জোর আর ক্ষমতার বলে সাধারন মানুষকে জিম্মি করে নিজস্বার্থ হাসিল হউক সে কোন রাজনৈতিক সংগঠন হউক শ্রমিক সংগঠন । যে যত বেশি মানুষকে জিম্মিকরে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারে তাকেই ততো বেশি ক্ষমতাধর বলে বিবেচনা করা হয় । এই মুহুর্তে বাংলাদেশের কোন নিরীহ সাধারন মানুষকে যদি প্রশ্ন করা হয় বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে ক্ষমতাধর সংগঠন কোন বিনাদ্বিধায় সবাই একবাক্যে উচ্চারন করবেন পরিবহন শ্রমিকদের সংগঠন । সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তির নাম জানতে চাইলে বলবেন বর্তমান সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান সাহেবের নাম বলতে কেউ ভুল করবেন না । শাজাহান খান সাহেব সংসদ সদস্য ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকার পরও তিনি একাধারে সড়ক-পরিবহন, গার্মেন্টস সেক্টর,হরিজন সম্প্রদায় , মুক্তিযোযোদ্ধা সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন । সবার ই তার এক আঙ্গুলের তুরিতে নাকি দেশে অচল হওয়া মুহুর্তের ব্যাপার । এই ধারনা অবশ্য কোন ভাবেই মিথ্যা না । আমরা আতীতে ও বর্তমানে তাই দেখছি । পরিবহন শ্রমিকদের পরিবহন ধর্মঘটের নামে প্রায়ই জাতি কে পোহাতে অশ্য যন্ত্রনা । ভাড়া বৃদ্ধি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা সহ নানান ই্যসুকে সামনে এনে একেক সময় ধর্মঘটের ডাকদেয় পরিবহনশ্রমিকেরা । একটি সভ্য রাষ্ট্রে প্রতি যানবাহনের যথাযথ ফিটনেস থাকবে চাকলদের লাইসেন্স থাকবে নির্ধারিত বাস্তবসম্মত ভাড়া থাকবে এটাই স্বাভাবিক । অথচ আমাদের বাংলাদেশে পরিবহন সেক্টরে আদৌ এর কোন কিছু মানা হয় কিনা সেটা আর প্রশ্ন করাে উপায় রাখে না । অনেক দিন আগে বিটিভির কোন এক ম্যগাজিন অনুষ্ঠানের কৌতুকে দেখেছিলাম ভদ্রকোক যখন বাসে উঠে দেখেন বাসের কোন কিছুই ঠিক নাই তখন তিনি ড্রাইভার সাহেব কে প্রশ্ন করেন আপনি আপনার গাড়ির গতি কত কিভাবে বুঝেন তখন ড্রাইভার সাহেব উত্তর দেন যখন আমার সারা শরীর নড়ে এবং সব কিছু কিছুটা অপরিস্কার দেখি তখন ধরেনেই আমার গাড়ির গতিবেগ ঘন্টায় আশিমাইলের উপর । আর সড়কপরিহন শ্রমিকদের নেতা ও বর্তমান সরকারে নৌপরিবহন মন্ত্রী জনাব শাজাহান ড্রাইভারদের ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা নিয়ে বলতে গিয়ে বলেছিলেন রাস্তায় ডান বাম আর গরু ছাগল চিনলেই ড্রাইভার হওয়া যায় । যদি ও প্রথম টি ছিল টিভিতে প্রচারিত একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের শুধুই কৌতুক দ্বিতীয়টি কিন্তু সরকারে দায়িত্ব প্রাপ্ত একজন কর্তাব্যক্তির বক্তব্য ।
সম্প্রতি " সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮" জাতীয় সংসদেপাশ হওয়ার প্রতিবাদে বাংলাদেশ সড়কপরিবহন শ্রমিকদের ডাকে সারাদেশে পার হলো ৪৮ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট । শ্রমিকদের এই পরিবহন ধর্মঘট একদিকে জাতিকে যেমন ভোগান্তি দিয়েছে অপর দিকে করেছে চিন্তিত ও লজ্জিত । শ্রমিকদের যেমন নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য ধর্মঘট ডাকার আধিকার আছে তেমনি মানা বা নামানার আধিকার ও মানুষের আছে । কিন্তু এই ধর্মঘটের নামে পরিবহন শ্রমিকরা সারা দেশে যে নৈরাজ্য কায়েম করে ছিল তা ছিল সত্য লজ্জা ও আশ্চর্যজনক । পরিবহন শ্রমিকরা প্রথমত যে অন্যায় টি করেছে তা হলো কোন শ্রমিক যদি ধর্মঘট অমান্য করে রাস্তায় গাড়ি নামিয়েছে তাকে মারধর সহ মুখমন্ডল সহ সারা শরীর পোড়ামবিল দিয়ে কালো করে দিয়েছে । তাদের এই নিষ্ঠুর আচরন থেকে রক্ষাপায়নি ব্যক্তিগত গাড়ির সহ রিক্সা ভ্যান এমন কি এলাকার ছোট ছোট পরিবহন ও এর চালকেরা । সবচেয়ে আশ্চর্য করেছে যে সারা বিশ্বের কে না জানে আ্যাম্বুলেন্স
মৃত্যুর পথ যাত্রীকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়ার বাহন ।যুদ্ধরত অবস্হায় ও আমরা দেখো হর্নবাজিয়ে আ্যাম্বুলেন্স চলে । কিন্তু আমাদের পাশান্ড পরিবহন শ্রমিকরা সেটা ও বুঝেনাই । মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় পরিবহন শ্রমিকরা ধর্মঘট চলাকালে একটি অ্যাম্বুলেন্স আটকর রাখে । এসময় অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকায় সাত দিন বয়সী এক নবজাতকের মৃত্যু হয়। স্বাভাবিক ভাবেই এই মৃত্যুকে সাধারন মৃত্যু হিসেবে চালিয়ে দেওয়া যাবে না । এটা অবশ্য একটি হত্যা আর এই হতয়ার দায় পরিবহন শ্রমিক নেতা সহ প্রশাসন ও সরকারকে অবশ্যই নিতে হবে । মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় আরো যেই ঘটনাটি ঘটে তা হলে পরিবহন শ্রমিকদের হাতে বিয়ের বরযাত্রীদের উপর হামলা এই হামলায় বর-কনে সহ বেশ কয়েকজন বরযাত্রী গুরুতর হয় । নরায়নগঞ্জে অসভ্য পরিবহন শ্রমিকেরা কলেজগামী বাচ্চা মেয়েদের কালেজের গাড়ি থামিয়ে শরীরে ও মুখে মেখে দেয় কালো পোড়া মবিল । সংবাদমাধ্যম সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঐ ছবি গুলে দেখে মনে হয়েছে কলেজগামী বাচ্চাদের পোড়ামবিলে মখা কালো চেহারা যেন সমগ্র বাংলাদেশের মুখে বাংলাদেশে সভ্যতার মুখে কালি লেপন করে দিয়েছে ।
সড়ক দুর্ঘটনা আজ বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারণ করেছে এটা বাস্তব প্রতিদিন ই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে মানুষ । অদক্ষ চালকদের দিয়ে গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন না মানা, রুট পারমিট না থাকা লক্কর ঝক্কর বাস-ট্রাক রাজপথে নামানো, যেখানে সেখানে যাত্রী উঠানো-নামানো, বাস-গাড়ি চালানোর সময় চালকদের মাঝে অহেতুক রেষারেষি-পাল্লাপাল্লি ইত্যাদি কারণগুলো যে প্রাণঘাতি দুর্ঘটনাগুলোর জন্য দায়ী তা অনেক গবেষণাতে চিহ্নিত হয়েছে একাধিকবার।তবে দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্হা আজ পর্যন্ত কোন সরকাই ই নেতে পারে নি । তার মুল কারন হিসেবেই গন্য করা হয় প্রত্যেক সরকারে সময় ই ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে থাকেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা সেই সাথে বিভিন্ন সময়ের সরকার ও চেয়েছে পরিবহন শ্রমিকদের হাতে রাখতে । সরকার কখনোই চায় নি সাধারন মানুষকে এই পরিবহন মাফিয়াদের হাত থেকে মুক্ত করতে । আর এই কারনেই আমাদের পরিবহন সেক্টর থেকে আজ পর্যন্ত নৈরাজ্য দুর করা সম্ভব হয়নি । তবে আমরা চাইবো সরকার যেমন পরিবহন শ্রমিকদের ন্যায় সঙ্গত দাবি থাকলে তা মেনে নিবেন । তেমনি সাধারন জনগনকে যাতে পরিবহন শ্রমিকরা সাধারন অযুহাতে ধর্মঘটের নামে জিম্মিকরতে না পারে সেই ব্যবস্হা ও নিতে হবে ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: সব জাগায় নৈরাজ্য চলছে।
কয় নৈরাজ্য বন্ধ হবে?