নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হলিউড অভিনেত্রী অ্যালিসা মিলানোর এক টুইট বার্তা আজ বিশ্বের প্রতিটি নারীকে প্রতিবাদী হওয়ার স্বপ্ন ও পথ দেখিয়েছে । পুরুষ শাষিত এই বিশ্বে প্রতি মুহুর্তে প্রতি ক্ষেত্রেই নানান ভাবে যৌন হেনস্তে শিকার হচ্ছেন আমাদের নারীরা । নারীর বুক ফেটেছে তো মুখ ফাটেনি আর সেই মুখ ফাটানোর পাথটা দেখিয়েছেন হলিউড অভিনেত্রী অ্যালিসা মিলানো । সমাজকর্মী তারানা ব্রুক ২০০৬ সালে প্রথম শুরু করেছিলেন এই আন্দোলন। প্রভাবশালীর হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া তের বছরের কৃষ্ণাঙ্গ তরুনীকে সাহায্য করতে না পেরে অশ্রুসজল চোখে বলেছিলেন মিটু। হলিউড তারকা মিলানোর টুইট এই শব্দ দুটি পরিণত হয়েছে আজ সারা পৃথিবীর নারীদের মনের কথায়। নিজ বাড়ি থেকে উপাসনালয় কোথাও আমাদের নারীদের নিরাপদ না । তাই গত কয়েক দিন আগে আমার ফেইসবুক দেয়ালে একটা স্টাটাসে বলেছিলাম " বাংলাদেশের নারী গৃহকর্মীরা যদি # মিটু আন্দোলন সম্পর্কে ধারনা পেয়ে এই আন্দোলনে শরিক হয়ে সত্য বলা শুরু করে তা হলে অনেক ভদ্র লোকের ই আন্ডার ওরার নিয়ে টানা টানি শুরু হয়ে যাবে " । এ নিয়ে নানান জনের মন্তব্য দেখেছি । অবশ্য ঐ শ মন্তব্য নিয়ে আমি তেমন মাথা ঘামাই নাই । প্রায় ই আমরা মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত আমাদের অনেক মা বোনের উপর ওখানকার গৃহকর্তাদের নিষ্ঠুর নির্যাতনের কথা শুনে শিউরে উঠি । কিন্তু আমাদের দেশে আজো যে গৃহস্হালীর কাজে নিয়োজিত কত মা বোন যে গৃহস্বামীদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হন এই খবর কয়জনে ই বা রাখি । আমি ছোট্ট একটি ঘটনাই বলি বেশ কয়েক বছর আগে সিরাজগঞ্জের মেয়ে জোস্না ( ছদ্ম নাম ) কাজ করেতেন রাজধানীর মালিবাগে ঢাকার অন্যতম স্বনামধন্য একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এজ শিক্ষকের বাসায় । ঐ শিক্ষকের স্ত্রীর অসুস্হতার কারনে প্রায় ই ভারত যেতেন চিকিৎকার জন্য । এই সুযোগে গৃহস্বামী তাকে ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে দিনের পর দিন যৌন নির্যাতন চালায় ।কিছু দিন পর জোস্না অন্ত্ব:সত্তা হয়ে পরলে গৃহকর্তা তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রামারে বাড়ি সিরাজগঞ্জে পাঠিয়ে দেন । ঘটনাটা যখন জানতেপরি তখন জোস্নার পেট থেকে জন্ম নেয়া মেয়ে শিশুটির বয়স প্রায় আড়াই বছর ।জোস্নাকে যৌন নির্যাতনকরির খোঁজে রাজধানীর মালিবাগে গিয়ে জানতেপারি ধর্ষক ঐ গৃহকর্তা পরিবার নিয়ে তিন বছর আগেই পরিবার নিয়ে কানাডায় পারি জমিয়েছেন ।
শুধু একজন জোস্নাই নয় আজ আমাদের সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রায় প্রতিটি নারীই কোন না কোন ভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন । আমরা শুনেছি দেশের একটি খ্যাতনামা বিনোদন সাপ্তাহিকের সম্পাদক ও নাট্যপরিচালকের দ্বারা এক খ্যাতনামা নাট্যআভিনেত্রীর যৌন হয়বানির কথা শুনেছি খ্যাতনামা ইংরেজী দৈনিকে সিনিয়র সাংবাদিক দ্বারা নারী সহকর্মীকে যৌন হয়রানির কথা ।তবে বাংলাদেশে সম্প্রতি বাংলাদেশী-বংশোদ্ভূত মডেল, অভিনেত্রী ও পাইলট মাকসুদা আখতার প্রিয়তি তার ফেইজবুক রফিকুল ইসলাম নামের একজন ব্যবসায়ী ও মাঝারি গোছের একজন রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেন যা ইতোমধ্যে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশ পায় ।এর পর মুখ খোলেন নারী বিষয়ক পোর্টাল উইম্যান চ্যাপ্টারের ইংরেজি সংস্করণের সম্পাদক শুচিস্মিতা সীমন্তি। ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি জানান এগারো বছর আগের ঘটে যাওয়া ঘটনা। যদিও তিনি নিপীড়কের পূর্ণ নাম ব্যবহার করেন নি, তথাপি (পিএস) সংকেত থেকে উনার পরিচিত মণ্ডলের মানুষেরা বুঝে গিয়েছেন কে সেই ঘৃণিত নিপীড়ক। # মিটু মুভমেন্টকে অনেকেই ধরে নিচ্ছেন পুরুষের বিরুদ্ধে নারীদের আন্দোলন । যারা এমনটি ভবছেন আমি তাদের উদ্দেশ্য বলবো এটা আপনাদের সম্পুর্ন ভুল ধারনা । এই আন্দোলন একজন ধর্ষকের বিরুদ্ধে একজন ধর্ষিতার আন্দোলন । এই আন্দোলন এক জন যৌন নিপীরকের বিরুদ্ধে আন্দোলন । আমরা দেখেছি ভারতে সাংবাদিক প্রিয়া রামানি সহ আরো বেশ কয়েক জন নারী # মিটু আন্দোলনের মাধ্যমে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবরে বিরুদ্ধে পরে প্রবল আন্দলনের মুখে আকবর মন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্যহন ।
#মিটু আন্দোলনের মাধ্যমে হয়তো আমাদের দেশের শিক্ষিত সচেতন নারীরা সাহস করে মুখ খুলে যৌন নিপীড়কের মুখোশ উন্মোচন করতে পারবে । তবে জোস্নার মত লাখো অশিক্ষিত মেয়ে আজো আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন । সমাজ লোকলজ্জা ও সামাজিক প্রভাবের কারনে জোস্নারা আজো তাদের কথা আমাদের কানে পৌঁছাতে পারছে না । আমরা যদি #মিটু আন্দোলনের মাধ্যমে জোস্নাদের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ প্রত্যেক মাধ্যমে প্রচার করে সামাজিক আন্দোলন গড়তে পারি আমি নিশ্চিত জোস্নারা খুব তাড়াতাড়িই নানান ধরনের যৌন নির্যাতনের হাত থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে ।
প্রত্যেক জোস্নাদের #মিটু আন্দোলনে শরিক করা দরকার ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:০০
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: সকল অন্যায়-অবিচার-জুলুমকারী ও করা থেকে আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুক।