নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ও বলতে চাই !

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন

ব্লগিং হউক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার।

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি নির্বাচন ও কিছু লজ্জা !

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৪৬

গত ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ আমাদের দেশে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন । নানা কারনেই বাংলাদেশের জন্য একাদশ জাতীয় নির্বাচন ছিল অনেকটাই গুরুত্বপুর্ন । ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একাদশ জাতীর সংসদ নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহন না থাকায় গেল নির্বচন নিয়ে সমগ্রদেশের মানুষের ভিতর একটা আনন্দের অনুভুতি সবাই লক্ষ্যকরেছি । জীবনের প্রয়োজনে দীর্ঘ দিন প্রবাসে থাকায় সেখানকার অনেক নির্বাচন ই আমি দেখেছি । দেশের জন্য ভোট এর আগে তেমন দেয়া হয়নি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমি যেই এলাকার ভোটার সেখানে প্রতিদ্বন্দী না থাকায় ভোট দেয়ার সৌভাগ্য হয়নি । তাই এবারের জাতীয় নির্বাচনে অনেকের চেয়ে আমার আগ্রহটা ছিল একটু বেশি । তবে সব আনন্দ উৎসাহ ই ঝিমিয়ে পরে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে । নিজ চোখে দেখা ভোট কেন্দ্রের আবস্হা সত্যি নিজেকে মানুষ ও জাতি হিসেবে খুব ছোট মনে হয়েছে । নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে যেয়ে যদি দলীয় সন্ত্রাসীদের চোখ রাঙ্গানী সহ শুনতে হয় ভোট দেয়া হয়ে গেছে আপনার ভোট দেয়ার প্রয়োজন কি । এর চেয়ে লজ্জা আর কি হতে পারে ? তার পর ও প্রতিবাদের মুখে ভোটদানের জন্য ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করে ব্যালট পেপার হাতে নিয়ে ভোট দানের জন্য গোপন কক্ষে যাওয়ার পথে পরতে হলো বাঁধার মুখে তখন তো আর লজ্জার শেষ থাকে না । আমার ভোট আমি দিব তা ও নাকি কোন এক দলের বাহিনীর সমনে প্রকাশ্যে দিতে হবে । লজ্জায় মাথা নীচুকরে ব্যালট পেপার নিয়ে কোন মতে জোর করেই নিজের গনতান্ত্রিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করে লজ্জা আর ভয় নিয়ে বাড়ী ফিরে এসেছি । বাড়ী এসে বিবিসি বাংলার অনলাইন লাইভ দেখতে যেয়ে ভোট নিয়ে নানা ধরনের অপকর্মের খবর নিজের ভিতর কেমন যেন একটা লজ্জা ও ভয়ের অনুভুতি জন্ম নিয়েছে । কোথাও ভোটের অগেই ব্যালট বাক্স ভর্তির খবর কোথায় ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়ার খবর কোথাও ভোট কেন্দ্রে দুপুরের খারের বিরতীর নামে কেন্দ্রবন্ধ রেখে ভোটারদের ভিতরে ঢুকতে না দেয়ায় বাহিরে ভোটারদের বিক্ষোভের খবর কোথাও ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের মারধর করার পর আইনশৃংখলাবাহীনির সাহায্য চেয়ে ও না পাওয়ার খবর কোথাও বা প্রার্থীদের ভোট বর্জনের খবর । যখন দেখলাম তবে একের পর এক যখন ভোট নিয়ে সংঘর্ষে মানুষের খুনের খবর শুনেছি তখন নিজেকেই বিবেক বুদ্ধিহীন এক আসভ্য সমাজের বাসিন্দা হিসেবে মনে হয়েছে । মনে হয়েছে এটা কোন ভোট নয় এটা যেন সেই মধ্যযুগের ই ক্ষমতা দখলের যুদ্ধ ।

একটি গনতান্ত্রিক সমাজে ক্ষমতা পরিবর্তনের মুলই হলো নির্বাচন যেটা হতে হবে অবশ্যই সবার উপস্হিতি ও অংশগ্রহনের মাধ্যমে তবে লজ্জার বিষর হলো এবারের নির্বাচনে দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহন থাকলেও ভোট কেন্দ্রে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী এজেন্ট ছিলনা বললেই চলে । এর পর থেকে সোস্যাল মিডিয়ায় বিকেল চারটা পঁচিশ মিনিটে একজন প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীর দেয়ালে তার নির্বাচনী এলাকার দুইটি কেন্দ্রের ফলাফল প্রথম দেখলাম মনের ভিতর কেমন যেন একটি অশান্ত অনুভুতির জন্ম । এর পর একে একে যখন নানান দিকের ভোটের ফলাফল প্রকাশ হতে লগলো তখন আমি হাসবো না কাঁদবো সেটা বুঝে উঠতে পারছিলাম না । বাংলাদেশে স্বাভাবিক ভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দল বা জোট বলতে যাদের বুঝায় তাদের যে এমন করুন অবস্হা তা কোন ভাবে উপলব্ধি করতে পারিনি । লজ্জাজনক ভবে বুঝতে বাকীরহিলনা এবারের সংসদ
ও আবার একটি গৃহ পালিত বিরোধী দল পেতে যাচ্ছে । যাদেরকে নানান ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ের সকল রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে হয়ে ছিল । যাদের হাত বাসুনিয়া, দীপালি , নুরহোসেন , জেহাদ, ডাঃ মিলনের মত অনেকের রক্তে রাঙ্গানো ।

আমাদের রাজনীতি এতটাই ক্ষমতাকেন্দ্রিকযে ক্ষমতার লোভে রাজনৈতিক দলগুলি নীতি নির্বাসনে পাঠিয়ে ক্ষমতার লোভে একবারেই ক্ষমতান্ধ হয়ে পরেন । আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী নষ্ট পচা জামাত-ই- ইসলামের কদর এখনো কমে নি । বিএনপি সেই কবে থেকে ক্ষমতার জন্য ওদের সাথে জোট করেছে আওয়ামী লীগ ও ওদের নিয়ে ক্ষমতার জন্য জোটগত আন্দোলন করেছে ডঃ কামাল হোসেন ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ও ক্ষমতার লোভে ওদের ছাড়তে পারলো না । এটা আমাদের জাতির জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের জন্য সত্যি লজ্জা ও কলংকজনক ।

প্রত্যেকটি জাতীয় নির্বাচন ই একটা জাতির জন্য গুরুত্বপুর্ন তবে এবারের একাদশ জাতীয় নির্বাচন অনেক অর্থেই অনেক গুরুত্ব বহন করছিল । যার মধ্যে অন্যতম ছিল সবদলের অংশগ্রহনে একটি দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্হায় নির্বাচন । আমরা ভেবেছিলাম বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির যে তত্বাবধায়ক সরকার দাবী তা হতো এবারের নির্বাচনের পর সাধারন মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্যতা হারাবে । কিন্তু একদশ জাতীয় নির্বাচন সে দাবীকে নতুনকরে সমানে আনার পথকে অনেটাই উন্মোচন করেছে । আমাদের ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনেক দিক থেকেই প্রথম ৷এবারের নির্বাচনে টানা তিনবার কোনো রাজনৈতিক দলের রাস্ট্রীয় ক্ষমতায় আসা ৷ দলীয় সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হওয়া ৷একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জাতীয় নির্বাচন এমনটি হয় এটাও এর আগে আমাদের নতুন প্রজন্ম ভাবে নি ৷সব মিলে একটি নির্বাচন নিয়ে এত আশা এত লজ্জা এর আগে কখনো ই পাই নি ।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৫১

এম এস এ সোহাগ বলেছেন: ইভিএমে ভোট হওয়া খুলনা-২ আসনে ৪৯.৪১ শতাংশ, ঢাকা-৬ আসনে ৪৫.২৬ এবং ঢাকা-১৩ আসনে ৪৩.০৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম-৯ আসনে ৬২.৮৭, রংপুর-৩ আসনে ৫২.৩১ এবং সাতক্ষীরা-২ আসনে ৫২.৮২ শতাংশ।
গড়ে ইভিএমে ভোট হয়েছে ৫০.৯৫শতাংশ
নির্বাচনী কর্মকর্তার হাতে ২৫.০০ শতাংশ ভোট দেয়ার ক্ষমতা
সুতরাং প্রকৃত পক্ষে ভোটার ভোট দিয়াছে ২৫.৯৫ শতাংশ
যেখানে ভোটার ভোট দিচ্ছে ২৫.৯৫ শতাংশ, সেখানে আমাদের মত সাধারণ জনগন দেখতে পারছি ৮০ শতাংশ প্লাস মাইনাস। অর্থাৎ ৫৫ শতাংশ ভোট কে দিলো? আমরা জেনেও জানার বাইরে রাখলে আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের জন্য সুফল বয়ে আনবে!!!

২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:১১

সাইন বোর্ড বলেছেন: কার কাছে বলবেন এ কথা আর কেইবা শুনবে তা ।

৩| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৫৭

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: এখন আবার সরকারের তরফ থেকে নূতন খেলা শুরু হয়েছে। বেছে বেছে বিএনপির দুর্বৃত্তদের নির্বাচনী সহিংসতার কারনে গ্রেপ্তার এবং দন্ড দেয়া হচ্ছে। জাতির সামনে এটা বোঝানোর জন্যে যে তাদের অপকর্মের কারনে আজ তাদের এ বেহাল অবস্থা। ভাগ্যিস বিএনপি মাঠে ছিল না। নতুবা এই জাতীয় খবর পত্রিকায় আরো বেশী পড়তে হত। যা আমাদের জন্য হত কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা।আওয়ামী পক্ষ নিজে পুলিশ ক্যাডার দিয়ে সব দখল করে রেখেছে যাতে মানুষজন কোনভাবে ভোটকেন্দ্রে না যায়। অন্যদিকে বিএনপির কেউ উচু গলায় কথা বললেও সেটা নিয়ে রন হুংকার।

আজ দেখলাম নির্বাচন নিয়ে মিথ্যা খবর প্রকাশের জন্য এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কি জঘন্য। বিএনপি আমলে যখন এরকম ঘটনা একবার ঘটেছিল তখন আওয়ামী ঘরানার সাংবাদিকরা কত সমালোচনা করেছিল। এখন তাদের সুর উল্টো হয়ে গিয়েছে "শহিদুল মিথ্যা বলে আদিলুর মিথ্যা বলে তাই তাদের নির্যাতন জায়েজ।" আরে! মিথ্যা কি আদৌ ধোপে টেকে নাকি! শেষতক সত্যেরই জয় হয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের তরফে প্রচার করা হয় ৪০% ভোট পড়েছে। কই, সেটি তো আদতে টিকতে পারেনি। রিপোর্ট ছাপতে গেলে ভুল ভাল হতেই পারে। তথ্যে ভুল থাকলে তার জন্য পরবর্তীতে দুঃখ প্রকাশ করে সংবাদ উইথড্র করা যায়। ভুলের জন্য কাউকে ধরে বেধে মারধোর করা রীতিমত অন্যায়। সেইটা বিএনপিই করুক কিংবা আওয়ামীরাই করুক না কেন। অন্যায় সবসময়েই অন্যায়।

৪| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:২৪

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: পত্রিকায় দেখলাম ড:কামাল হোসেন চাইছেন যে ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিতরা যাতে শপথ নেয়। হায় আল্লাহ, এটা কেমন মানসিকতা। সাধারন মানুষের সাথে প্রতারনা করে যে সংসদ যে সংসদের সংসদীয় সুযোগ সুবিধা নিতে চান! উনার কি বিবেক বলতে কিছু নেই? ৪৭ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে কলংকময় নির্বাচনকে সামান্য বৈধতা দেবার প্রচেষ্টাও গ্রহনযোগ্য নয়।

৫| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৩৬

শরীফ আতরাফ বলেছেন: আওয়ামীলীগের অধিনে কেমন বাংলাদেশ পেতে যাচ্ছেন তার কিছু নমুনা ৪৮ ঘন্টার।

- ভোটারের চেয়ে বেশি ভোট কাস্টিং এর রিপোর্টার গ্রেফতার।
- ধানের শীষে ভোট দেয়ায় চার সন্তানের মা কে গণধর্ষণ। উনি এখন মৃত।
- ফেইসবুকে বিএনপির পক্ষে স্ট্যাটাস দেয়ায় ইতালি প্রবাসীর মা কে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া। ছেলেকে পায় নি তাই মাকে গ্রেফতার।
- ভোটের পর সংবাদ সম্মেলনের পরই বিএনপি নেতার বাড়ি ভাংচুর।
- বিএনপি সমর্থকের দুটি গরু জবাই করে আওয়ামী নেতার ভূড়িভোজ।
- ফরিদপুরে আওয়ামী নেতার সংখ্যালঘুদের শতাধিক বাড়িতে হামলা।

৬| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: নির্বাচনে কারচুপি টা হলো কিভাবে?
কি রাতের বেলায়ই ছিল মেরে দিসে?

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫২

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: যত টুকু যেই ভাবে করা যায় সব টুকুই রাতের আধারে দিনের আলোতে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.