নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সমগ্র বিশ্ব আজ করোনার ভয়াল থাবায় আক্রান্ত। ইতালি স্পেন আজ মৃত রাষ্ট্র। ঘড়ির কাটার চেয়ে ও দ্রুত বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিদিন ই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতম হচ্ছে লাশের মিছিল। আমি যখন এই লেখা লেখছি তখন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা লাখের অনেক উপর ছাড়িয়ে গেছে ইতালিতে মৃত্যের সংখ্যা দশ হাজারের উপর ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন স্পেনের রাজকুমারী মারিয়া তেরেসা। ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ প্রিন্স চার্লস সহ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন করোনায় আক্রান্ত। এ দিকে করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে জিতলেন কানাডা প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্ত্রী সোফি গ্রেগরি ট্রুডো। করোনা ভাইরাস আজ একটি বৈশ্বিক মহা সমস্যায় পরিনত হয়েছে। করোনা যা কোভিড-১৯ নামে চিকিৎসা বিজ্ঞানে পরিচিত। গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম এই কোবিড-১৯ বা করোনায় আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলে। যেহেতু করোনা একটি ছোঁয়াচে ভাইরাস তাই করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাতাসের গতিতে ছড়িয়ে পরে। মাত্র কায়েক দিনে উহানের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে লাশের গন্ধে। আজ ও কোভিট-১৯ অর্থাৎ করোনার কোন প্রতিষেধক আবিস্কার হয় নি। তাই এর চিকিৎসা নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে অনেক চিকিৎসক ও ওনার্স আক্রান্ত হয়েছেন এমন কি মারা ও গিয়েছেন। তার পর ও চীন সরকারের যথাযথ ব্যবস্হা ও সহযোগিতায় খুবই তারাতারি ই চীনের সাধারন মানুষ করোনাকে অনেকটাই পরাজিত করতে সমর্থ হয়েছন। উহানের রাস্তা ঘাট আগের মত মুখরিত হতে যাচ্ছে মানুষের পদচারণায় যা নিঃসন্দেহে একটু ভাল লক্ষন।
আজ করোনায় ভয়াল থাবায় আক্রান্ত হতে যাচ্ছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ আমি যখন এই মুহুর্তে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর তথ্যমতে বাংলাদেশ কোভিট-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৯ আর মৃত্যের সংখ্যা ৫ জন। বিশ্বের অন্যান দেশের মত করোনা আতংকে আমরা ও আতংকিত। ইতোমধ্যে সমগ্র বাংলাদেশে ই চলছে অঘোষিত লকডাউন। করোনা আক্রান্ত বাংলাদেশে মানুষের সেবায় আজ রাস্তায় আছেন আমাদের সশস্ত্র বাহিনী। তবে অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো দেশের এমন ক্রান্তিলগ্নে আমাদের হাসপাতাল গুলির চিত্র পুরোটাই ভিন্ন। দেশের প্রায় প্রতিটি হাসপাতাল ই আজ রোগী শূন্যের মত। আমাদের গ্রামের ভাষায় আছেনা " চাচা আপনা প্রান বাঁচা "। হাসপাতাল গুলিতে চিকিৎসক নার্স ও অন্যান স্টাফেরা আজ নিজেদের জীবন রক্ষাই ব্যস্ত। এই মুহুর্তে যারা আমাদের স্বাস্হ্য সেবায় নিয়োজিত তাদেরকে আমি স্বাস্হ্য সৈনিক হিসেবে আখ্যায়িত করছি। আমাদের স্বাস্হ্য সেবায় যারা নিয়োজিত আছেন আমি মোটেও তাদের কোন দোষ দিতে চাচ্ছিনা। কারন আমাদের এই স্বাস্হ্য সৈনিকদের কোন ভাবেই প্রস্তুত করা হয়নি করোনা মোকাবিলার জন্য। আমাদের অধিকাংশ হাসপাতাল গুলিতেই করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য যথেষ্ট পিপিই পাচ্ছেন না আমাদের স্বাস্হ্য সৈনিকেরা। সবচেয়ে কষ্টের কথা হলো আমাদের করোনায় আক্রান্ত রোগী সনাক্ত করনের জন্য নাই যথেষ্ট পরীক্ষাগার ও পরীক্ষা সামগ্রী । সম্ভাব্য করোনায় আক্রান্ত একজন রোগীকে শুধু মাত্র পরীক্ষার জন্য ধরনা দিতে হচ্ছে এখানে ওখানে। যেমন ধরুন মিরপুরের টোলার বাগে কোভিট-১৯ আক্রাম্ত হয়ে মৃত্যু ব্যক্তির কথা। তার পুত্রের ফেইসবুক স্ট্যাটাস থেকে আমরা জানতে অবশেষে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সহযোগিতায় তার পিতার করোনা পরীক্ষা করানো হলেও রিপোর্ট আসার আগেই তার পিতার মৃত্যু হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নার্স আজিজা সুলতানা ও অনেক কাঠঘড় পুরিয়ে নিজে করোনা আক্রান্ত কি না তা পরীক্ষা করতে সক্ষম হয়েছেন৷ যদিও আজিজার ফলাফল নেগেটিভ। যাদি ও বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্থার থেকে বার বার বলা হচ্ছে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পীক্ষার কোন বিকল্প নাই। তার পর ও আমাদের যথাযথ কতৃপক্ষ কেন জানি করোনা পরীক্ষার ব্যাপারে উদাসীন। যদি ও আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয়ের কাছ থেকে জানতে পারলাম দেশের আরো কয়েকটি স্হানে নাকি করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য পরীক্ষাগার স্হাপনের ব্যবস্হা করা হয়েছে।
আমার মনের ভিতর সবচেয়ে কস্ট হচ্ছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় করোনা ভাইরাস উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিকে নিয়ে। ঐ যুবক জ্বর সর্দিকাশি শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে ও তার স্ত্রী দিনের অর্ধেক সারা রাত চেস্টা করে ও স্বাস্হ্য বিভাগ সহ কারোই কোন সহযোগিতায় না পেয়ে বিনা চিকিৎসায় মরতে হয় তার পরের কাহিনী আরো করুন। মৃত্যুর পরের শেষকৃত্যে ও বাঁধা হয়ে দাড়ায় এলাকার মানুষ। পরে প্রশাসনের বিশেষ ব্যবস্হায় মৃত্যদেহ শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। যদিও সরকার করোনায় আক্রান্তদের দাফনের জন্য রাজধানীর খিলগাঁও তালতলার একটি কবর স্হানকে নির্ধারন করা হয়েছে। সেখানে ও এলকার মানুষের বিপত্তি।
বাংলাদেশে করোনা বিস্তারের জন্য আমাদের সরকার সহ অনেকেই আমাদের প্রবাসীদের দায়ী করছেন। আমাদের প্রবাসীরা কি ভিনগ্রহের কেউ? তারা আমাদের ই জীবন জীবিকার প্রয়োজনে তারা প্রবাসী। আমাদের অর্থনীতিতে তাদের অবদান অনেক। তাই যেই কোন মুহুর্তে যেই কোন প্রয়োজনে তারা দেশে আসবেন ই। বিশ্বের অনেক দেশ যখন করোনা আক্রান্ত তখন প্রবাসীরা প্রয়োজনে হউক আর ভয়ে হউক তারা তাদের নিজ দেশে এসেছেন। এটা বাংলাদেশের বেলাই না সংবাদ মাধ্যমে দেখলাম বাংলাদেশে বসবাসরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের এই বিশেষ মুহুর্তে বিশেষ বিমানে তাদের ঘড়ে ফেরার ব্যবস্হা করেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। আর আমাদের প্রবাসীরা তো এসেছেন নিজেদের পকেটের পয়সা খরচ করে ই। আমাদের বিমানবন্দর সহ বিভিন্ন বন্দর গুলিতে কি সরকার করোনায় আক্রন্তদের সনাক্ত করনের জন্য নুন্যতম ব্যবস্হা করেছিলেন? কোয়ারেন্টিন কোয়ারেন্টিন বলে আমরা মুখে ফেঁনা তুলি ফেলছি আসলে কোয়ারেন্টিন কি কিভাবে করতে হবে তা কি বিমানবন্দর থেকে কোন প্রবাসীকে বুঝিয়ে বলা হয়েছে? বরং আমরা দেখলাম ইতালি ফেরতদের কোয়ারেন্টিন নিয়ে লংকা কান্ড। আজ প্রবাসীদের টর্চলাইট দিয়ে খোঁজ করছেন প্রশাসন। সরকার চাইলে আগে থেকে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসীদের সুষ্ঠ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্হা করতে পারতেন। তা হলে করোনার আতংক অনেকাংশেই কম থাকতো।
গত ডিসেম্বরে চায়নার ইউহানে যখন করোন আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয় এর পর ই কয়েক দিনে মহামারি রুপে করোনার আবির্ভাব। বিশ্ব সাস্হ্য সংস্হা করোনার আক্রমনকে মহামারি ঘোষনা করলেও আমাদের সরকারে কর্তাব্যক্তিরা শুধু মাত্র মুখের কথায় ই যথেষ্ট প্রস্তুতির কথা বলেছেন। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখলাম করোনার এই মহামারি নিয়ে আমাদের সরকারী ও ব্যক্তগত পর্যায়ের কোন প্রস্তুতি ই ছিল না। আমরা আমাদের স্বস্হ্য সৈনিকদের জন্য কোন পিপিই র বয়বস্হা করতে পারিনি করোনা পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট কিটের ব্যবস্হা করতে পারিনি পরীক্ষাগারের টেকনিশিয়ানদের করোনা পরীক্ষার জন্য যথাযথ প্রশিক্ষনে ব্যর্থ হয়েছি। আজ ও শোনা যাচ্ছে দেশে অনেক হাসপাতালেই নাকি পিপিই এর পরিবর্তে পাঠানো হচ্ছে রেইন কোর্ট। আজো খবর আসছে অন্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ও বিনা চিকিৎসায় মরতে হচ্ছে বীর মুক্তিযুদ্ধা আলমাছ উদ্দিনদের।
এমনকি দেশের একটি দুর্যোগময় অবস্হায় দেশের স্বল্প আয়ের মানুষদের ঘড়ে রাখতে হলে তাদের যেই খাদ্যটুকুর প্রয়োজন তার ও ব্যবস্হা করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছি। নিজেকে রক্ষার জন্য মাস্ক বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার তো বাজার থেকে উধাও। বাজারে যাও আছে তা কত টুকু কার্যকর এাটও একটা বড় প্রশ্ন। কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়া সরকারের হুট করে দশ দিনের সাধারন ছুটির ঘোষনায় ও আমরা দেখলাম বিশৃঙ্খলা। প্রথমে ছুটির ঘোষনা তার পরদিন গণপরিবহন বন্ধের ঘোষনা। আমাদের নগরবাসী ভাসমান মানুষেরা এটা কেউ কেউ ঘড়ে ফেরার ছুটি হিসেবে বেছে নিলেন। আর নিবেন ই না বা কেন কারন যারা স্বল্প আয়ের মানুষ তাদের অধিকাংশই মেছ বাড়ীতে বা বস্তি ঘড়ে কোন মতে রাত্রিযাপন করেন। তাদের এই দশ দিন ঢাকায় পেট বাঁচানো মুশকিল ভেবেই তারা গ্রামে পারিজমিয়েছেন।
করোনা মোকাবেলার প্রস্তুতির জন্য আমরা দীর্ঘসময় পেলেও সেই সময় ও সুযোগ হাত ছাড়া করে পেলেছি। আজ আমরা সচেতন হয়েছি। আমাদের কর্তাব্যক্তিদের সুখনিদ্রা ভেঙ্গেছে। আজ দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে করোনা মেকালায় বিভিন্ন বিত্তবানেরা এগিয়ে এসেছেন এটা একটা শুভলক্ষন। ইতোমধ্যে চায়নার জ্যাক মা ফাউন্ডেশন আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। সরকার হয়তো এই মুহুর্তে এসে করেনার ভয়াবহতা কিছুটা হলেও অনুভব করতে সক্ষম হয়েছেন। আমার আক্রান্ত হবার পর ধীরে ধীরে করোনা প্রতিরেধে কিছুটা হলে সচেতন হচ্ছি। আর এই সচেতনতা ই হয়তে করোনার ভয়াল থাবা থেকে আমাদের জাতিকে রক্ষা করবে।
২| ৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: পাকিস্তানে জামাতে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ৪৩ জন ইমামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজে জামাতের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার অভিযোগে দেশটির সিন্ধু ও পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে গতকাল পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
৩| ৩১ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:১৭
ইমরান আশফাক বলেছেন: করোনা তো প্লেগের চেয়েও দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে। আর আমাদের তথাকথিত নির্বাচিত সরকারের কার্যক্রম দেখলে.......... কি আর বলবো। আসলে একটা শক্তিশালী বিরোধী দলের অস্তিত্ব সংসদীয় গনতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। যাই হোক, আমাদের ব্যাক্তিপর্যায় সচেতন থাকার কোন বিকল্প নেই আপাতত:। তবে এই দেশে সেটা কতদূর সম্ভব সেটা প্রশ্নস্বাপেক্ষ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:০৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন: