নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশ নানান প্রতিকুলতার মধ্যদিয়ে জন্ম নেয়া একটি রাষ্ট্রের নাম। স্বাধীনতার আগে বা পরে এই জাতিকে বিভিন্ন প্রতিকুল পরিবেশের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হয়েছে। কখনো অতি ক্ষড়া কখনো বা অতিবৃষ্টি কখনো ঘুর্ণিঝড় বা সাইক্লোন কখনো আবার ভয়াবহ বন্যা এমন কি দুর্ভিক্ষে কড়াল গ্রাসে ও আক্রান্ত আমাদের বাংলাদেশ। দুই দুই বার স্বাধীনতা পাওয়া একটি জাতিকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবে ও অনেক নিপীড়ন সহ্য করতে হয়। বৃটিশদের দুই শত বছর আর পাকিস্হানীদের ২৩ বছর আমরা শুধুই নির্যাতন ও বঞ্চনার ই শিকার ছিলাম। এই বঞ্চনার থেকে মুক্ত হতে স্বাধীন মুক্তচিন্তায় নিজেদের মানবিক ও মৌলিক অধিকার চেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য ই আমাদের অগ্রজেরা জীবন উৎসর্গ করে বাংলাদেশ নামক এই রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছেন। কিন্ত আমাদের যত টুকু পাওয়ানা তা কি আমরা আদৌ কোন ভাবে পেয়েছি? স্বাধীনতার পর একটি ভঙ্গুর রাষ্ট্র নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পথ চলা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ঐ পথ চলাও মোটে মসৃণ ছিল না। সদ্য জন্ম নেওয়া একটি ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে পুণর্গঠন করার যে সার্বিক সহযোগী তা কোন ভাবেই পান নি বঙ্গবন্ধু।
বর্তমান বিশ্ব একটি চরম ক্রান্তিলগ্নে আছে। মরন ভাইরাস করোনা আজ বিশ্বের প্রায় প্রতি রাষ্ট্রকে উল্টা পাল্টা করে ফেলছে। করোনা আতংকে আজ সারা বিশ্বমনব সভ্যবতা তটস্থ। মরন ভাইরাস করোনার প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানের হাতের নাগালে আসে নাই । তাই এর ভয়ংকর থাবা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ ই হলো নিজেকে গৃহবন্দী করে রাখা। আর মানুষকে গৃহবন্দী করার জন্য করোনায় আক্রান্ত প্রতিটি দেশ ই বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছে। কোথাও কারফিউ কোথাও জেল জরিমানা আবার ফিলিপাইন ও নাইজেরিয়ার মত দেশে জরুরী ছাড়া ঘরের বাহিরে বের হলে সরাসরি গুলিকরার নির্দেশ ও দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। ইতোমধ্যে ফিলিপাইনে একজনকে গুলি করে হত্যা ও করেছে সেই দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমাদের দেশে সাধারন মানুষকে জরুরী প্রায়োজন ছাড়া সাধারন মানুষকে ঘর থেকে বের হতে নিরুৎসাহিত করছেন আমাদের সরকার তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমাদের প্রশাসনকে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বিশেষ ভাবে সহযোগিতা করছেন আমাদের দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী। কিন্তু যেই দেশে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের সংখ্যাই বেশি সেখানে সাধারণ মানুষকে ঘরে রাখা খুবই মুশকিল। তার পর ও আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। কথায় আছে পেটের ক্ষুধায় ঘরের প্রেম জানালা দিয়ে পালায়। তাই গত কয়েক দিন ঘর বন্দী আমাদের মধ্য ও নিন্ম বিত্ত পরিবারেরঅনেকের ই ঘরের প্রেম জানালা দিয়ে পালানোর ব্যবস্হা হয়েছে। সরকার যদিও নিন্মবিত্তের মানুষদের খাদ্য ব্যবস্হার জন্য যতসামান্য ব্যবস্হা করছে তাও সঠিক বন্টব্যবস্হার জন্য ঠিক ভাবে পৌছতে পারছে না দরিদ্র মানুষগুলির হাতে। সংবাদ মাধ্যম সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেই খবর গুলি দেখছি তা আমাদের এই ভয়ংক দুর্যোগকে আরো ভয়াবহতায় রুপদিচ্ছে। প্রতি নিয়তই সংবাদ দেখতে হচ্ছে সরকারী দলের অমুক এলাকরা অমুক নেতার বাড়ী থেকে এত টন ত্রানের চাল উদ্ধার। অমুক এলাকার জনপ্রতিনিধি গোডাউন থেকে এত টন ত্রানের চাল উদ্ধার। চার দিক থেকে লোভী মানুষরুেী জানোয়ারদের আত্মসাতের সংবাদ। ত্রানের চাল নিয়ে দুর্নীতির সংবাদ পরিবেশনের জন্য বেশ কয়েক জন সাংবাদিককে সরকারি দলের নেতা বা তাদের সহযোগিদের হাত মাট খেয়ে হাসপাতালে পর্যন্ত যেতে হয়েছে।
আমাদের উপরে আসা প্রতিটি দুর্যোগে সময় ই ত্রান বিতরন নিয়ে আমরা একই চিত্র দেখি। তবে ভেবেছিলাম বর্তমান দুর্যোগের যেহেতু একটা মহামরির দুর্যোগ তাই এই করোনা কাকে আক্রমন করবে কে ই বা করোনার আক্রমনে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে বলা মুসকিল। পৃথিবীর অনেক দেশের ই মন্ত্রী এমপি সহ অনেক ক্ষমতাশীকে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হয়েছে এই মরন ভাইরাস করোনার থাবায়। কিন্তু আমাদের দুর্নীতি গ্রস্হ্য মানুষগুলির মনের ভিতরে মৃত্যুর চেয়ে সম্পত্তির লোভ ই বেশি এটাই তার প্রমান। মৃত্যু মুখে থাকা দেশের এই ভয়াবহ মুহুর্তে ক্ষুধা নিবারনের জন্য দরিদ্র মানুষগুলির মুখের অন্য ও গ্রাস করছে এই নিলজ্জ বেহায়ার দলেরা।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সরলতাকে কাজে লাগিয়ে ছিল তৎকালীন অনেক সুযোগ সন্ধানী এর ই ফলশ্রুতিতে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশেকে মোকাবিলা করতে হয়েছিল এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের । অধিকাংশের মতেই ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ ছিল মানব সৃষ্টি। সত্তর দশকের শুরুতে সারা বিশ্বব্যাপী খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। আর সেই কারনে প্রতিটি দেশ তার নিজ নিজ খাদ্য মওজুদের দিকে যথেষ্ট খেয়াল দিয়েছিল। বিশ্ববাজার খাদ্যশষ্যের দাম ও অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছিল। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সাথে পৃথিবীর অনেক দেশের ই কুটনৈতিক সম্পর্ক পুরোপুরি স্হাপিত হয় নি তখন। তার পর কিউবার সাথে বাংলাদেশের পাট রফতানি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতবিরোধের কারনে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের খাদ্যসাহায্য দিতে অস্বীকৃতি জানায় এমন কি আমার বন্ধু রাষ্ট্র ভারত ও তখন খাদ্য সহযোগিতার হাত বাড়ায় নি আমাদের দিকে। অনেকের মতে ১৯৭৪ সালে স্হানীয় ভাবে আমাদের খাদ্য শষ্যের উৎপাদন ও মওজুদ যথেষ্ট ছিল তার পর ও সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের নব্য নিয়োগপ্রাপ্ত মন্ত্রী এমপি ও সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপক দুর্নীতি, খাদ্যশস্য মজুতের সরকারী অব্যবস্থাপনা, জেলাগুলির মধ্যে খাদ্যশস্য আনা-নেয়ার সীমাবদ্ধ আইন, প্রতিবেশী দেশগুলিতে খাদ্যশস্য চোরাচালান অবৈধ মওজুদারদের দৌরাত্ম্য এবং তথাকথিত বিতরণ ব্যর্থতা। সেই সাথে বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং ব্রহ্মপুত্র নদীতে বিধ্বংসী বন্যা ও এই দুর্ভিক্ষের অন্যতম কারন হিসেবে উল্লেখ করা যায়। সরকারী হিসেব অনুসারে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে ২৭,০০০ মানুষ অনাহারে মৃত্যুবরণ করে। বেসরকারি বিভিন্ন হিসেবে অনুমানিক ১,০০,০০০ বা তর ও বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে মৃত্যুবরণ করে ছিল।
এখানে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা টানার একটা যৌক্তিক কারন হলো বর্তমানে করোনার বৈশ্বিক আঘাত পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশই আক্রান্ত। প্রত্যেকটি রাষ্ট্রই এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বড় বড় অংকের বাজেট করেছে। প্রতিটি রাষ্ট্রের ই শিল্প কারখানা কৃষি প্রায় সবই বন্ধ। আমাদের ও একই অবস্হা। জাতিসংঘ বিশ্বব্যাংক সহ অনেক প্রতিষ্ঠানের বড় বড় অর্থনীতিবিদদের ধারনা করোনার এই প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিকে একটি বড় ধাক্কা দিবে। তাতে অবশ্যই আমাদের মত দেশে উপর ধাক্কাটা আরে জোড়ে লাগার সম্ভবনাই বেশি। ইতোমধ্যে আমাদের রেমিট্যান্সের উপর বিরাট প্রভাব পরতে শুরু করছে। আমাদের রেমিট্যান্স মুল উৎস পোশাক শিল্প ও প্রাবাসী কর্মী। ইতোমধ্যে দুটাতেই এর প্রভাব পরতে শুরু করছে। অনেক পোষাক কারখানার মালিক ই তাদের বিদেশি অর্ডার হারাতে বসেছে। আর প্রবাসী কর্মীদের বেলায় পৃথিবীর অনেক দেশই ইতোমধ্যে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে জানিয়ে দিয়েছে সেখানে অবস্হানরত বাংলাদেশী অবৈধ কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে আনার।। অতএব অদুর ভবিষ্যতে আমাদের জন্য আরো কোন বিপদ অপেক্ষা করছে তা বলা মুশকিল। করোনা মোকাবেলার জন্য আমরা দীর্ঘ প্রায় তিন মাস সময় পেলেও আমাদের কর্তব্যক্তিদের সেই প্রস্তুতি ছিল শুধুই কথায় কিন্তু বাস্তবতায় যা দেখছি তা সত্যি আমাদের আতংকি করছে। তাই করোনা সংকট থেকে পার করতে পারলে ও যদি আমার ভয়াবয় অর্থনৈতিক ও খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হতে হয় তার জন্য আমাদের অগ্রিম প্রস্তুত নিতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্হ্য তেলবাজ লুটেরা কথার উপর আমাদের রাষ্ট্রপরিচালনা করিদের বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নির্ভর করলে হবে না। সাধারন মানুষের দিকে খেয়াল রেখে যোগ্য কর্মঠ মেধাবীদের নিয়ে দলমত নির্বিশেষে সকলকে নিয়েনকাজ করে সংকটকালীন অবস্হা থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হবে।
২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৫৫
গোধূলি বিকেল বলেছেন: ধন্যবাদ, তথ্য নির্ভর এবং অত্যন্ত গোছানো লিখা পোস্ট করার জন্য।
দুর্মর – সুকান্ত ভট্টাচার্য
”একবার মরে ভুলে গেছে আজ
মৃত্যুর ভয় তারা”
”সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী
অবাক তাকিয়ে রয়ঃ
জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার
তবু মাথা নোয়াবার নয়।”
৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: চোর চাটুকাররাই ভালো আছে।
এই জন্য দিনে দিনে নতুন নতুন চোর চাটুকার তৈরি হচ্চে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:০৩
নেওয়াজ আলি বলেছেন: চোর চাটুকার এদের জয় জয়কার