নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রায় সব দেশের মত বাংলাদেশ ও ভয়াবহ করোনায় আক্রান্ত। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস অর্থাৎ কোভিট-১৯ আক্রান্ত রোগী সনাক্তের পর প্রতিদিই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। কোভিট-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর জন্য আজো প্রতিষেধক আবিস্কারে বিজ্ঞান ব্যর্থ তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা রাতের ঘুম দিনের আরাম হারাম করে কোভিট-১৯ অর্থাৎ করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিস্করের জন্য নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সমগ্র বিশ্ব আজ এক মৃত্যুপুরী । সবার মনেই মৃত্যুর আতংক। জাতিকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষার জন্য ২৬ মার্চ থেকে আমাদের সরকার সাধারন ছুটি ঘোষনা করে অফিস আদালত মার্কেট গনপরিবহন প্রায় সবই বন্ধ করে দিয়েছে। তবে এই ছুটি ঘোষনা নিয়ে আমার ভিন্নমত আছে। কেন সরকার এই ছুটিকে সাধারন ছুটি বলে আখ্যায়িত করলেন? সাধারন ছুটি ঘোষনা করা হয় কোন উৎসব পার্বনে। কিন্তু এই ছুটি তো আর উৎসব পার্বনের সাধারন ছুটি না, মানুষের জীবন রক্ষার জন্য আপদকালীন ছুটি । কিন্তু আমাদের অসচেতন জনগন এই আপদকালীন ছুটিকে সাধারন ছুটি ভেবে উৎসবে মেতে উঠেছিল বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র সহ বিনোদন কেন্দ্রগুলিতে।
ঈঁদের কেনাকটার জন্য সরকার গত ১০ মে থেকে তথাকথিত স্বাস্থ্য বিধি দিয়ে বিপনী বিতান ও দোকান পাট খোলার অনুমতি দিলেও ঢাকা সহ বড় বড় শহড়ের অধিকাংশ বিপনীবিতান ও দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন কতৃপক্ষ। ঈঁদের এই কেনাকটা নিয়ে আমরা দেখছি নানান অদ্ভুদ কান্ড। ঠাসাঠাসি করে মানুষ তাদের ঈঁদের কেনাকাটা সারছে। কে মানে কার স্বাস্থ্য বিধি। অনেক জায়গায় স্বাস্হ্যবিধি না মানার কারনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও করেছে প্রশাসন। আবার অনেক জায়গার প্রশাসনের ভয়ে বহিরে দোকানের শার্টার বন্ধ রেখেই ভিতরে বেচাকিনি ও চিত্র দেখেছি।
আড়ংয়ে মত জাগার ও একই অবস্হ্যা। এমন গাদি করে কেনাকাটা করতে দেখে মনে হয় কাজ কর্মহীন ভাবে দুই মাস ঘরে বসে থাকা মানুষের কাছে যেন অর্থের কমতি নাই।
দীর্ঘ এই আপদকালীন বন্ধে কাজ কর্মহীন আমাদের সাধারন মানুষের প্রায় সকলেই আজ দিশেহারা। প্রতিদিনই বাড়ছে ক্ষুধার্ত মানুষের আর্তনাদ। সেই আর্তনাদ কতটুকু পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে আমার তথা কথিত কিছু রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের কানে? সরকার দেশের এই আপদকালীন সময়ে নিন্মবিত্তের মানুষের খাদ্য ব্যবস্হার জন্য সামান্য কিছু জরুরী পদক্ষেপ নিলেও তা নিয়ে যা হয়েছে ও হচ্ছে তা সত্যি আমাদের নীতি ও মানবতাকে চরম প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। প্রতি মুহুর্তে করেনার সংবাদের সাথে আমাদের শুনতে হয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রতিনিধি ও স্হানীয় সরকারদলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অসহায় মানুষের ত্রানের চাল চুরি সহ নানান দুর্নীতি ও অনিয়মের কাহিনী। বর্তমান সময়ে আমাদের স্হানীয় সরকার থেকে শুরু করে সাংসদ প্রায় সবই সরকারীদল তথা আওয়ামীলীগের দখলে। নির্বাচনের মাধ্যমে নিজের পছন্দের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার কথা আজ আমরা জনগন প্রায় ভুলতেই বসেছি। জনগন আজ ভোটকেন্দ্র বিমুখ তার প্রমান আমরা গত ঢাকা সিটি নির্বাচন সহ অন্যান নির্বাচন গুলিতে দেখেছি। আজ জনপ্রতিনিধিরা জনগনের চাওয়া পাওয়ার কোন তোয়াক্কাই করেন না। আর করবেন ই বা কেন তাদের চিন্তা যে কোন মুল্যে ক্ষমতাসীন দল থেকে নির্বাচনের জন্য একটা মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ। তার পর আর পায় কে? আজ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পর্যন্ত অঘেষিত ভাবে দলীয় পরিচয়ে নির্বাচিত হচ্ছে। আর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তো দলীয় মনোনয়নের ভিত্তিতে নির্বাচিত হচ্ছে। যাদি দলীয় মনোনয়নে স্হানীয় সরকার প্রতিনিধি নির্বাচনের বিপক্ষে অনেকের মত আমার অবস্হান। কারন আমাদের নির্বাচন ব্যবস্হায় নিজেদের তথাকথিত সুনাম ধরে রাখার জন্য ক্ষমতাশীনরা যে কোন মূল্যে তাদের মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে প্রানপন চেষ্টা করাই আমাদের দেশের নীতিতে পরিনত হয়েছে। এটার প্রমান মাগুরার থেকে ঢাকা-১০ প্রায় সব নির্বাচনেই দেখেছি।
গরীবের ত্রানের চাল সহ করোনার কালে সহায়তা হিসেবে ওএমএস ১০ টাকা কেজি দরের চাল গন্তব্য হয়েছিল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মেম্বার কিংবা স্হানীয় সরকারদলীয় নেতাদের গুদাম বা গোয়াল ঘর এমনকি ঘড়ের ভিটির মাটির গর্ত। আর এখন শুনছি প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ৫০ লাখ পরিবারকে নগদ ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দেয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা নিয়ে ও ঐ চাল চুরির মতই কাহিনী।
প্রথম দিন থেকে ই এ নিয়ে বির্তকের শুরু। তালিকা তৈরিতে রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ। তালিকায় নাম রয়েছে অনেক বিত্তশালীর, জনপ্রতিনিধি, স্হানীয় সরকারদলীয় রাজনৈতিক নেতা কর্মী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের । মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে এই অর্থ দরিদ্র মানুষের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্হা করা হলে ও দেখা যায় কোথাও একই মোবাইল ফোন নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে ২০০ জনের ক্ষেত্রে কোথাও ৪টি মোবাইল নম্বরের বিপরীতে নাম রয়েছে ৩০৬ জনের ইত্যাদি ইত্যাদি। কারন এই তালিকা করার পদ্ধতিতে ই ছিল বড় ধরনের অনিয়ম । আর সেই অনিয়ম যখন বিতরনের ক্ষেত্রে সবার কাছে স্পষ্ট হলো তখনি নতুন করে সংশোধিত তালিকা পাঠাতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিলেন দুর্যোগ ব্যবস্হাপনা ও ত্রান মন্ত্রনালয়। দেখা যাক সংশোধিত তালিকা কত টুকু স্বচ্ছতার প্রমান দেয়।
করোনায় মৃত্যুর ভয়ের চেয়ে আজ আমাদের সাধারন মানুষের ক্ষুধায় মরার চিন্তাই বেশি। পেটের ক্ষুধা মৃত্যুর ভয় মান ইজ্জত অনেক কিছুই দুরে ঠেলে দেয়। বর্তমানেও আমাদের সাধারন মানুষেরা পেটের ক্ষুধায় অনেক কিছুই ভুলে যাচ্ছে। এইতো কয়েক দিন আগের সিরাজগঞ্জের বেলকুচির ঘটনা। পেটের ক্ষুধা সহ্য করতে না পেরে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়ে ছিল সিরাজগঞ্জের বেলকুচির আলম শেখের দশ বছরের কিশোরী কন্যা আফরেজাকে। করোনার লকডাউনের প্রভাব পরেছে আলম শেখের খাবারের হাড়িতে । বেশ কয়েকদিন লক হয়ে আছে আলম শেখের আয় রোজগার। তাই খাবার না পেয়ে বাপের বকুনি খেয়ে মরতে হয় আফরোজাকে। কর্মহীন মানুষ গুলির বোবা আর্তনাদ ক্ষমতাবানদের কানে কখনোই ঠিক ভাবে পৌছে না বা তারা শোনে ও না শোনার ভাব করে থাকেন। আবার অনেকে ই অতি কহনের মাঝে সীমাবদ্ধ।
বর্তমান সরকারদলীয় লোক সহ অনেকের মুখেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স ও সমস্ত অপকর্মে ই বিএনপি জামাতের সম্পৃক্ততা বুলি । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দুর্নীতির ব্যাপারে নিজের জিরো টলারেন্সের কথা বলে যাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে দুর্নীতির রাঘব বোয়ালেরাই দখল করে আছে ক্ষমতার একটি বিরাট অংশ। দুর্নীতির জন্য বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া আর তেমন কাউকেই বিচারের মুখোমুখি হয়ে সাজা পেতে দেখিনি। বিচারহীনতা কারনেই চলছে দুর্নীতির মহোৎসব। মেগা প্রজেক্টের মাঝে মেগা দুর্নীতির কথা আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ শুনে আসছি। বালিশে দুর্নীতি পর্দায় দুর্নীতি রাস্তা ঘাট ব্রীজ কালভাট তৈরিতে দুর্নীতি এমন কি মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী ব্যক্তি ও সংগঠনকে সম্মাননা প্রদানের ক্রেস্টে ও দুর্নীতি। চিকিৎসা খাতে বরাদ্দের সিংহভাগ ই দুর্নীতি বাজদের পেটে। তাই বিপদের এই ভয়াবহ দিনে শুনতে হয় পিপিই ও মাস্ক দুর্নীতির কথা। এমন কি বাজেটের অভাবে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স সহ অন্যান স্বাস্থ্য কর্মীদের অনাহারে থাকার কথা ও আমাদের শুনতে হয়েছে। দুর্নীতির এই টাকা আজ অনেকেই শত কোটি টাকার মালিক। গ্রামের যেই মানুষটির কোন এক সময় নুন আনতে পান্থা ফুরিয়েছে। ঘরের ছিল টুয়া উদাম তারা আজ বিশাল অট্টালিকা কোটি টাকার গাড়ী কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। সবই শুধু একটি মাত্র পরিচয়ে। করোনার থাবার শুরুতে যখন স্হানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ আসছিল সত্যি তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল। যেখানে সবাই মেগা দুর্নীতি নিয়ে ব্যস্ত সেখানে গরীবের জীবন রক্ষার দুই পয়সার চাল নিয়ে কি তারা এমন অপকর্ম করতে পারে? বরং তাদের অবৈধ আয়ের কিছু অংশ ভুখা মানুষদের সাহায্য করে পরকালের কিছু নেকির চিন্তা করবে। তবে কথায় আছে চোরের কাছে নিজের মায়ের নাকফুল ও নিরাপদ না। এই ক্ষেত্রেও এটাই তারা প্রমান করেছেন। বর্তমানে করোনার থাবায় অনেক মেগা প্রকল্প বন্ধ বিধায় মেগা দুর্নীতি ও বন্ধ। করোনার থাবা থেকে জাতি রক্ষা পেলে নতুন নতুন মেগা প্রকল্প চালু হবে আবার মেগা দুর্নীতির সুযোগ আসবে । হয়তো ঐ সময়ের জন্যই তাদের আজকের এই ছোট খাটো চুরি চামারি করে হাত পরিস্কার রাখা। কথায় আছে না অনভ্যাসে বিদ্যানাশ৷
২| ২১ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: একক ভাবে কেউ দূর্নীতি করতে পারে না। এদের বিরাট সিন্ডিকেট আছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:১৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভাসুরের নাম মুখে নিতে মানা