নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ও বলতে চাই !

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন

ব্লগিং হউক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার।

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপরাজনীতি ই আমাদের রাজনীতির মূলমন্ত্র

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:৫৩

অপরাধী যেই হউক তার কোন দল নাই অপরাধীর একটি ই পরিচয় অপরাধী ই। এটাই অতীত সত্য কিন্তু বর্তমান সময়ে এই কথাটি সম্পুর্ন ভাবে ভুল প্রমানিত হচ্ছে । অপরাধীর ও দল আছে আর দলীয় ক্ষমতার প্রভাবেই তারা অপরাধ করছে এবং অপরাধ করে কোন না কোন ভাবে পার পেয়ে যাচ্ছে। এই মুহুর্তে বাংলাদেশে প্রায় অপরাধের সঙ্গেই বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল কিংবা বা অঙ্গসংগঠন বা সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মী কোন না কোন ভাবে সম্পৃক্ততা খুজে পাওয়া যায়। ধর্ষণ থেকে খুন টেন্ডারবাজি থেকে চাঁদাবাজি যে কোন ঘটনায় ই সম্পৃক্ততার পর পর ই ক্ষতাশীনদের কাছ থেকে বিবৃতি আাসে " অপরাধী যেই হোক তাদের ছাড় দেওয়া হবে না, অপরাধীরা আওয়ামিলীগ তা তার সহযোগী সংগঠনের কেউ না, তারা অনুপ্রবেশকারী, বা সেখানে কোন কমিটি নেই, এর পর সাময়িক বহিস্কার। আবার কোন নতুন ঘটনার নীচে চাপা পরে শেষ হয়ে যায় পুরোনো ঐ ঘটনা।

আমাদের রাজনীতিতে ছাত্রলীগের জন্ম ও ইতিহাস ছিল এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের মাধ্যমেই ছাত্রলীগের জন্ম যা ১৯৫৩ সালে ছাত্রলীগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সহ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রলীগের ছিল বিশেষ অবদান কিন্তু সময়ের পরিবর্তন ও নিলজ্জ ক্ষমতার লোভ ছাত্রলীগ সহ বর্তমান আওয়ামী রাজনীতি বাংলাদেশের মানুষের জন্য এক মূর্তিমান আতংকের নাম হয়ে দাড়িয়েছে। অবশ্য এর সুত্রপাত যে গত কয়েক বছরেই হয়েছে তেনটি নয় আমরা হয়তো অনেকেই ভুলে গেছি জসিমউদ্দিন মানিকের কথা ১৯৯৮ -৯৯ সালে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক পদের অধিকারী ছিলেন যে নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে মিষ্টি খাইয়ে আলোড়ন তৈরি করেছিল। প্রথম যদি ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ঘটনাকে মোটে ও স্বীকার করতে চায় নি। পরে বাম ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রচন্ড আন্দোলনের মুখে মানিক সহ ১৩ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে বাধ্য হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র ও রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্হা মানিকের বিচার না করে বরং তাকে বিদেশে যেতে সহযোগিতা করে। এর পর ১৯৯৯ সালের থার্টি ফার্স্ট নাইটে টিএসসিতে শ্লীলতাহানির শিকার হন শাওন আক্তার বাঁধন নামের এক ফ্যাশন ডিজাইনার । সেই রাতে হাজারো মানুষের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল শাখার ছাত্রলীগের তৎকালীন সহসভাপতি ফজলুল হক রাসেল ও তার অনুসারীরা টানা-হেঁচড়ার মধ্যে বিবস্ত্র করে ফেলে বাঁধনকে। যে চিত্র শতাব্দীর নতুন দিনে বিভিন্ন সংবাদ পত্রের শিরোনাম হয়ে হাজির হয় জাতির সামনে। লজ্জায় দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন বাঁধন। তবে এর আগে চিহ্নিত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। দীর্ঘ ১০ বছর ৮ মাস ঝুলে থাকার পর ২০১০ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর এ মামলার রায়ে বেকসুর খালাস পেয়ে যান আসামিরা। এর ও আগে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সন্ত্রাসী ক্যাডার সীমান্ত একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে অপহরণ ও লাঞ্চিত করলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপে না নিতে পারায় ঐ ছাত্রীকে লেখাপড়া পাঠ না চুকিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করতে হলে ও আমাদের রাষ্ট্র যন্ত্র সীমান্তের বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে সীমান্ত ডিগ্রিনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ত ত্যাগ করে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেট নগরীর টিলাগড় এলাকায় এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের একটি কক্ষের সামনে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে আসা এক সদ্যবিবাহিত তরুনীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে। স্বামীকে গাড়ীতে আটকে রেখে স্ত্রীকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে তথাকথিত মানুষরুপী জানোয়ারের যারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার কারনে কলেজ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রাবাসের রুম দখল করে নানান অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিল। যদিও ইতোমধ্যে ছাত্রলীগের ঐ ছয় ধর্ষককে বিভিন্ন স্হান থেকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে তবে পরবর্তীতে তাদের বিচারের ব্যবস্হা কত টুকু সুষ্ঠ হবে সেটা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন আছে। ধর্ষণ উল্লাসে শুধু ছাত্রলীগ ই নয় বর্তমান আওয়ামিলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের অনেই উল্লাসিত হচ্ছে। গত সপ্তাহে শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মমিনুল আজমের (আজম খসরু) বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন একই সংগঠনের পল্লবী থানার এক নেত্রী এমন কি তিনি আজম খসরুর বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় একটি সাধারন ডায়েরি ও করেন। গত জুন মাসে সৎ মেয়েকে ধর্ষনের দায়ে আশুলিয়া থানা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজা মোল্লাকে গ্রেফতার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। উদাহরন টানতে গেলে আমার লেখার শেষ কোথায় হবে তা বলা মুশকিল। তবে বাস্তবতা হলো কোন দল বা গোষ্ঠী রাষ্ট্র বা সমাজ পরিচালনার জন্য একক ভাবে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে স্বার্থক হয় তখন ই রাষ্ট্র বা সমাজের বাসিন্দারা নানান অন্যায় অবিচার ও ব্যভিচারের শিকায় হয়। তার যথেষ্ট প্রমান আমরা যুগে যুগে দেখেছি।

আমাদের রাজনীতি সন্ত্রাসের আধিপত্য ঠিক স্বাধীনতার পর থেকেই । ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি অংশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল গঠন করে, যার নেতৃত্বে ছিলেন সিরাজুল আলম খান । দলটি একটি সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছিল। ফলস্বরূপ, গণবাহিনী গঠিত হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্রভাবে অবস্থান নেয়। ১৯৭৪ সালে হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র গনবাহীনির কর্মী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুহাম্মদ মনসুর আলীর বাড়িতে আক্রমণ করে, মন্ত্রীর নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা সশস্ত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিরোধে সেটি গণহত্যায় গড়ায়। পরবর্তীতে অগণিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ সদস্যকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয় গনবাহীনি আর তৎকাল রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে আনা হয় হাজার হাজার গনবাহিনী তথা জাসদ কর্মী হত্যার অভিযোগ ।

এরই মধ্য আমার মনে চলে আসলো বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক মরহুম হুমায়ুন আহমেদ এর " দেয়াল " গ্রন্থের কথা তিনি ঐ বইয়ের কোন এক জায়গার " আ্যান্হনী ম্যাসকার্নহাস " এর লেখা গ্রন্থ " এ লিগ্যাসি অব ব্লাড " এর কিছু অংশ তুলে ধরেছেন এই ভাবে, যে ১৯৭৪ সালের কোন এক সময় মেজর নাসের নামের এক সেনা অফিসার টঙ্গীতে তিন ব্যক্তিকে আটক করেন। এরা তিনটি খুনের আসামী ছিলো। নব বিবাহিত দম্পতি তাদের গাড়ীতে টঙ্গী যাবার পথে মোজাম্মেল নামের এক দুর্ধষ আওয়ামী লীগার ও তার সহকর্মীরা তাদের উপর হামলা চালায়। গাড়ীর ড্রাইভার আর আরোহী স্বামীকে খুন করে মেয়েটির উপর ধর্ষন চালায়। তিন দিন পর মেয়েটির লাশ টঙ্গী ব্রীজের নিচে পাওয়া যায়। মোজাম্মেলকে গ্রেফতারের পর ই মোজাম্মেল মেজর নাসের কে তিন লাখ টাকা ঘুষের বিনিময় ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিলে মেজর নাসের ক্ষিপ্ত হয়ে মোজাম্মেল কে আদালতে সোপর্দ করেন। কিছু দিনের মধ্যেই মোজাম্মেল জেল থেকে মুক্তি পায় আর মেজর নাসেরকে টঙ্গী এলাকার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আনা হয়। যদি ও কে এই মোজাম্মেল তা নিয়ে বর্তমান সময়ে কিছুটা বির্তক আছে। এ ঘটনার সাথে সিলেটের এমসি কলেজের ধর্ষনের ঘটনার প্রায় অনেকটা ই মিল রয়েছে।

আশির দশকে বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে সন্ত্রাসের প্রবল উপস্থিতি কথা আমরা শুনেছি প্রতিটি ছাত্র সংগঠনের নেতারা ছিল দাপুটে সন্ত্রাসী তাদের বিরুদ্ধে নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কাহিনী শুনলে কোন ছাত্রী বা নরীর প্রতি যৌন নিপীড়নেরন কাহিনী শোনা যায় নি। শুধু মাত্র গোলাম ফারুক অভির বিরুদ্ধে পরবর্তীতে মডেল কন্যা তিন্নিকে ধর্ষনের পর হত্যার অভিযোগ আসে যার ভিত্তিতে এখন ও দেশ ছাড়া অভি।

বাংলাদেশের ইতিহাসে আওয়ামিলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আমাদের স্বাধীনতা এই দলের নেতৃত্বে ই পেয়েছি । বর্তমান সময়ে দীর্ঘদিন দিন ক্ষমতা আকঁড়ে রাখার কারনে এবং ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যে নানান অপশক্তি আশ্রয়স্থল হয়ে দাড়িয়েছে আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগী সংগঠন গুলি। জাতির জনকের প্রিয় মজিব কোট আজ অনেক অপরাধীদের আত্মরক্ষার ইউনিফর্ম হয়ে উঠেছে । এর কোন দায় ই আওয়ামীলীগের নেত্রীবৃন্দ চাইলে এড়াতে পারবেন না। তবে দলে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে দলের ভিতর আশ্রয় নেয়া কাউয়াদে বিচারের মুখোমুখি করে সাজার ব্যবস্হা করে দেশে সুষ্ঠ গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারা ও গনমানুষের বাক স্বাধীনতার অধিকার ফিরিয়ে অবশ্যই আওয়ামীলীগ তার পুরোনো ঐতিহ্য ফিরে পাবে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



দেশে সুখশান্তির জন্য বর্তমান সরকার কি কি রাজৈতিক পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?

২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:৩২

রাকু হাসান বলেছেন:

মন্দের ভাল লীগ।উন্নয়ন হচ্ছে এক সরকার থাকার কারণেই।ইচ্ছা থাকলে রাজনীতিতবে আসুন।ভাল লোক দরকার।

৩| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৫:২৩

জগতারন বলেছেন:
আমি রাকু হাসান-এর সাথে সহমর্মিতা পোষণ করি।

বকর বকর লিখিয়া এবং মুখ দিয়াও করা যায়।
তাই এই ব্লগ লেখক ওয়াসি ফারুক হ্যাভেন বেশী বকর বকর
না করিয়া জনাব চাঁদগাজী সাহেবের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া উচিত।
এই ব্লগ লেখক তাহার চিন্তাশীল মনের কথা আমাদের পাঠক ও
পাঠীকাদের জানাইতে পারেন কি দিয়া কি করিলে আমাদের দেশ
থেকে অপরাজ নিতী বা দুর্নিতী দূরীক্রিয়মাণ জসগাইয়া উঠানো যায়।

৪| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৬:৪৯

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: অপরাধ করতে শক্তি লাগে,অপরাধ দুর করতেও শক্তি।যেটাই করতে চান আগে শক্তিশালী হতে হবে।

৫| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: অপরাধ করতে শক্তি লাগে,অপরাধ দুর করতেও শক্তি।যেটাই করতে চান আগে শক্তিশালী হতে হবে।



সহমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.