নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ও বলতে চাই !

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন

ব্লগিং হউক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার ।

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পঙ্গু সমাজের একজন মনোরঞ্জন হাজং!

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৪

রাষ্ট্রের সব নাগরিকই আইনের কাছে সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। আমাদের সংবিধানও নাগরিকের সে অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে।আমাদের সংবিধান বলছে, আইনের কাছে সমান আশ্রয় লাভের অধিকার শুধু অধিকারই নয়, মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভূক্ত।মৌলিক অধিকার হচ্ছে এমন অধিকার যা রাষ্ট্র তার নাগরিকদের প্রদান করতে আইনত বাধ্য। রাষ্ট্র যে শর্তহীনভাবে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তা ২৭ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট। ২৭ অনুচ্ছেদ নাগরিকের আইনের অধিকার লাভের মৌলিক অনুচ্ছেদ, যেখানে বলা হয়েছে, সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। আর্ন্তজাতিক আইনেও বিষয়টি নানাভাবেই স্বীকৃত হয়েছে। ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সর্বজনীন সনদে আইনের আশ্রয় লাভের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর প্যারিসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এই ঘোষণা প্রদান করা হয়। ওই সনদের ৩ অনুচ্ছেদও বলছে, প্রত্যেকেরই জীবন-ধারণ, স্বাধীনতা ও ব্যক্তি নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে৷ যদিও আমি আইনের ছাত্র না বা আইন সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না তার পর ও কিছুটা লেখা পড়া করে যতটুকু জানতে পেরেছি তার কি কিছু উপস্হাপনের চেষ্টা করলাম। তবে আমাদের আইন ও সংবিধানে মানুষের মৌলিক অধিকার নিয়ে আরো অনেক কিছুই নলা আছে যা আমাদের আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা আরো ভাল করে বিশ্লেষণ করতে পরবেন। তবে আমাদের আইন ও সংবিধানে আমাদের প্রাপ্য বিভিন্ন অধিকার নিয়ে যত টুকু বলা আছে তার কি কিঞ্চিৎ আমরা ভোগ করতে পরি? আমাদের দেশে আইনের প্রয়োগ কি সবার জন্য ই সমান? যদি নলি হ্যা তা হলে আপনরাই আমাকে উন্মাদ পাগল আরো অনেক বিশেষনে বিশেষায়িত করবেন। তাই আমি দ্যার্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই না বাংলাদশের আইনের প্রয়োগ সবার জন্য সমান নয়। কখনো কখনো বিভিন্ন ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির কাছে আইনের প্রয়োগ ভিন্ন হয়। যা আমাদের সংবিধানের সম্পুর্ন পরিপন্থী। যদি আইন তার নিজস্ব গতিতে চলতো আইনের প্রয়োগ যদি সবার জন্যই সমাম হতো তা হলে মহুয়া হাজংকে এত দিন কাঠঘড় পোড়াতে হগো না মামলা করা জন্য। মহুয়া হাজেংর পুতা মনোরঞ্জন হাজং গাড়ী চাপায় পা হারিয়ে হাসপাতালে বিছানায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। নেত্রকোনার কলমাকান্দার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্য মনোরঞ্জন হাজং। জীবনের অনেকটা সময় ই পার করেছেন দেশের অস্তিত্ব রক্ষা জন্য। বিজিবির একজন হাবিলদার হয়ে চাকরি থেকে অবসর নিয়ে জীবন জীবিকার প্রয়োজনে পরিবারকে একটু স্বাচ্ছন্দ্যে রাখার জন্য চাকুরি করতেন একটি বেসরকারি সিকিউরিটি কোম্পানিতে। গত ২ ডিসেম্বর রাতে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ী সড়কে বিচারপতির রেজাউল হাসানের ছেলে সাইফ হাসানের বেপরোয়া গাড়িচাপায় আহত হন বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত এই সদস্য। সেই সময় গাড়ীতে আরো ছিলেন সাইফের স্ত্রী অন্তরা আর বন্ধু রোয়াদ। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন বিচারপতির সেই ছেলে সাইফ হাসানকে তার বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫-৪৯০৬) গাড়ী ওম গাড়ীতে থাকা তার স্ত্রী ও বন্ধু সহ বনানী থানায় পাঠায়। আর আহত মনোরঞ্জন হাজংকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় পঙ্গু হাসপাতালে। সেখানে ৯ দিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি ঘটলে তাঁকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে গুরুতর অবস্থায় তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন।

গাড়ী চাপা দেওয়ার পর সাইফ হাসানকে তার স্ত্রী ও বন্ধু সহ আটক করলেও পরে কাউকে কিছু না জানিয়ে গাড়িসহ (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫-৪৯০৬) ছেড়ে দেয় পুলিশ। আর মনোরঞ্জনকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁর একটি পা কেটে ফেলেন। পঙ্গু হাসপাতালে ৯ দিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি ঘটলে তাঁকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে গুরুতর অবস্থায় তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে মনোরজ্ঞন হাজেেংর দুর্ভাগ্য যে চিরজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরন করতে হয়েছে তাকে। মনোরঞ্জন হাজেংর মেয়ে মহুয়া হাজং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সেন্ট্রাল কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের কর্মকর্তা। মনোরঞ্জন একজন সাবেক বিজিবি সদস্য ও তার মেয়ে মহুয়া একজন পুলিশ অফিসার হওয়া স্বত্ত্বে ও সঠিক আইনের সহযোগিতা তাদের ভাগ্যে জুটে নি। বনানী থানা পুলিশ বিচারপতি পুত্র সাইফ হাসানকে থানায় নেওয়ার কিছুক্ষণের ভিতর ই গাড়ী সহ ছেড়ে দেন। আর মনোরঞ্জন হাজেংর মেয়ে পুলিশ অফিসার মহুয়া হাজংকে পিতার হত্যাচেষ্টার মামলা করতে অনেক কাঠঘর পোড়াতে হয়। দীর্ঘ ১৩ দিন পর নানান সমালোচনা কে মাটি চাপা দিতে গাড়ির ধাক্কায় অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য ও একজন পুলিশ অফিসারের বাবা গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা নিয়েছে পুলিশ। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সব কিছু জানা শোনার পর ও প্রামনাদি সব কিছু ঠিক থকার পর ও মুহুয়া হাজং কতৃক দায়ের করা মামলায় আসামী হলেন অজ্ঞাতনামা। পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়ার মামলা না নেওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার আসাদুজ্জামান যমুনা টেলিভিশনকে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বলেছেন , ‘‘বিষয়টা আমাদের সদস্যের৷ আমাদের একটা সিনিয়র কমান্ড আছে, অথরিটি আছে, সবই আছে৷ আমার তো মনে হয় যে এটা গণমাধ্যমে যাওয়ার কোনো দরকার ছিল না৷ আমাদের সহকর্মী মহুয়ার মামলা না করতে পারার তো কোনো কারণ নেই৷ এটা তদন্ত হচ্ছে, তদন্তের পরেই আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব৷’’ তবে আশ্চর্য করার বিষয় হলো মহুয়া হাজেংর মামলা নেওয়ার ২ দিন আগেই তার পিতা মনোরঞ্জন হাজংয়ের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তাকে চাপা দেওয়া বিএমডব্লিউ গাড়ির সেই প্রভাবশালী চালক সাইফ হাসান । এতে দুর্ঘটনার জন্য ভুক্তভোগীকেই পুরো দোষ দেওয়া হয়েছে। এমনকি এই ঘটনায় মনোরঞ্জন হাজংকে আসামি হিসেবে মামলা করা উচিত ছিল বলেও জিডিতে উল্লেখ রয়েছে। দুর্ঘটনার পর পর্যাপ্ত আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে বলেও দাবি জিডি করা ব্যক্তির। সাইফ হাসান তার জিডিতে আরো অনেক বিষয় যোগ করেই নিজেকে নির্দোষ প্রমানের যথেষ্ট চেস্টা করছে। হয়তো কোন এক সময় আমরা শুনবো সাইফ হাসান হয়তো আইনের কাছে নির্দোষ ই থাকবে সমস্ত দোষ এসে বর্তাবে আজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরন করা অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মনোরজ্ঞন হাজং ও তার মেয়ে মহুয়া হাজেংর উপর। জানা গেছে, অভিযুক্তের পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার খরচসহ অন্যান্য সহায়তা করার মাধ্যমে আপসের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আপস করতে নারাজ মনোরঞ্জন হাজংয়ের পরিবার। মেয়ে মহুয়া নানা প্রতিকূলতার মাধ্যে পার করছেন তার বর্তমান সময়। একদিকে কর্মক্ষেত্রের চাপ অপর দিকে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা বারা সু চিকিৎসা। মহুয়া তার পর ও মামলা করতে পরেছেন। মহুয়ার এজাহারে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর ৯৮ ও ১০৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর ৯৮ ধারায় বেপরোয়া গতি ও নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গাড়ি চালানোর অপরাধে চালকের অনধিক তিন বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৩ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। আর ১০৫ ধারায় দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বা কেউ মারা গেলে অনধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান আছে। জানিনা মহুয়ার এত ত্যাগের ফসলের বিচার কি পান মহুয়া ও তার পরিবার?



আমাদের বিশ্বাস ছিল আইন সবার জন্য সমান’–কিন্তু এখন বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন ঘটনায় তা মানতে অনেকটাই কষ্ট হয়। আইন সবার জন্য সমান হলে বিচারপতির ছেলেকে বিচারের আওতায় আনতে কেন আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরনকেননএত গড়িমসি? ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্য হলেও মনোরঞ্জন হাজং একজন সাকেন বিজিবি সদস্য তার মেয়ে একজন পুলিশ অফিসার তার পরও আমাদের আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের কাছে আজ বড়ই অসহায়। এমন টা যদি আমাদের মত সাধারন মানুষের ক্ষেত্রে ঘটে তা হলে যে কি হবে তাতো বলর আর আর কোন পথ রাখে না। আজ মনোরঞ্জন হাজং একটি পা হারিয়ে তাহলে কি প্রমান করতে স্বার্থক হলো যে আমাদের আইনব্যবস্থার পা দুটো আসলেই ভেঙে গেছে? আইনের প্রতি আমাদের এখনো সম্পুর্ন শ্রদ্ধা ও আস্হা আছে বলে বিশ্বাস করি। তবে তার প্রমান হবে যথাযথ সুষ্ঠু প্রয়োগের মাধ্যমে। মনোরঞ্জন হাজং কখনোই আর সুস্হ জীবনে ফিরতে পারবেন না। আমাদের এই আবেগ হয়তো তার জন্য সাময়িক তবে তার পঙ্গুত্ব আজীনের। মনোরঞ্জন তার পা ফিরে না পেলেও আইনের মাধ্যমে পা হারানোর সুষ্ঠ বিচার পাবেন এটাতো প্রত্যাশা করতে পারি!!

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫০

নতুন বলেছেন: আমাদের সমাজ ভন্ডদের দখলে, সমাজপতিরা মুখে ধর্ম আর নৈতিকতার কথা বলে কিন্তু কাজে নিজের সার্থেই কাজ করে।

তাইতো ক্ষমতাশালীরা আইন মানে না। মানুষ বিচার পায় না। :(

২| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৩

সোবুজ বলেছেন: আমাদের রাষ্টে আইনে সবার সমান অধিকার নাই।নারী আর পুরুষে, মুসলমান আর অন্য ধর্মের লোকদের সমান অধিকার নাই।আল্লাহ পাকের চোখে সবাই সমান।

৩| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৪

তানীম আব্দুল্লাহ্ বলেছেন: হয়তো সমঝোতার টাকা পয়সা নিয়ে প্রবলেম ছিলো । হয়তো ভাগাভাগির টাকায় কমবেশীর কারণে পুলিশে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল ।
শুধু একজন মানুষ পঙ্গুত্ব নিয়ে বাকি জীবন কাটাবে !

৪| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১:০০

রাজীব নুর বলেছেন: আমার ধারনা এখন যারা কারাগারে আছে, তাদের ক্ষমতা ও টাকা নেই বলে কারাগারে আছে। যাদের প্রচুর টাকা আছে তাঁরা অপরাধ করে কিন্তু কারাগারে যেতে হয় না।

৫| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:১৫

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: রাজীব নুর ভাই আপনার ধারনা শত ভাগ ই সঠিক। আজ আমাদের সমাজকে সমাজপতিরা অর্থের মানদন্ডে নির্ধারন করে। অর্থ ই যেন আজ সমাজের মুল চালিকা শক্তি। অর্থ ই আজ সম্মান ও ক্ষমতার মুল উৎস। তবে এই অর্থ আয়ের উৎস সম্পর্কে কারোই কোন মাথাব্যথা নেই। আর এটাই আমাদের সমাজ পচনের মুল কারন। ধন্যবাদ ভাইয়া

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.