![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী একটি অত্যন্ত বিতর্কিত অথচ প্রভাবশালী দল। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে দলটির ভূমিকা, পরবর্তীতে এর পুনরুত্থান এবং বিভিন্ন সরকারের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্ক বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতি পথকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। সত্তরের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী পূর্ব পাকিস্তানে কোনো আসনে জয়লাভ না করলেও ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত বিতর্কিত ও সমালোচিত। দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার তীব্র বিরোধিতা ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করে। সেই লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের সহযোগিতায় রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসের মতো পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগী বাহিনী গঠন করে । এসব বাহিনী গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ আছে। যদিও বুদ্ধিজীবীদের হত্যার জন্য অনেকেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে অর্থাৎ ১৯৭২ সালের ৯ই ডিসেম্বর, "রাজনৈতিক দল (নিবন্ধন ও কার্যকলাপ নিষিদ্ধকরণ) অধ্যাদেশ, ১৯৭২" এর অধীনে তৎকালীন শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার সকল ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করে। এর ই ফলশ্রুতিতে জামায়াতে ইসলামী আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ হয়। এরপর জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান, আবার অনেকে আত্মগোপনে চলে যান। একই বছরের ১৮ই ডিসেম্বর এক গেজেটের মাধ্যমে তৎকালীন জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম আযমসহ ৩৩ জনের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। তবে জামায়াতে ইসলামী ঠিকই গোপনে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে সক্ষম ছিল।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বড় পটপরিবর্তন আসে। আর এই পটপরিবর্তন ই জামায়াতে ইসলামীর জন্য রাজনীতিতে ফেরার পথ খুলে দেয়। ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের ফলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে আসেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে উদারীকরণ নীতি গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকলের জন্য রাজনৈতিক দরজা উন্মুক্ত করে হয় । এর ফলশ্রুতিতে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো নতুন করে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পায়। এই সুযোগে জামায়াতে ইসলামী ১৯৭৯ সালে 'জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ' নামে পুনরায় রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করে। এর প্রতিষ্ঠাতা আমির হন গোলাম আযম, যিনি স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন এবং নাগরিকত্ব বাতিল হওয়ার পর দীর্ঘকাল সৌদি আরবে অবস্থান করেন । রাজনীতি উদারীকরণ নীতির কারনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই তাকে বাংলাদেশে ফিরে আসার সুযোগ দেন।
১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আইডিএল) জোটের ব্যানারে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। সেই নির্বাচনে মাওলানা আবদুর রহিম, মাওলানা আবদুস সুবহান এবং অ্যাডভোকেট সা'দ আহমদসহ ৬ জন জামায়াতে ইসলামীর নেতা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর এটাই ছিল স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে 'জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে মুক্তভাবে পথচলা। এরপরই জামায়াতে ইসলামী দ্রুত নিজেদের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করে। তারা মসজিদ, মাদ্রাসা এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাধ্যমে তাদের আদর্শ প্রচার শুরু করে। ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্রীদের জন্য ইসলামী ছাত্রী সংস্থা, পেশাজীবীদের জন্য ইসলামী আইনজীবী পরিষদ, ইসলামী চিকিৎসক পরিষদ ইত্যাদি সহযোগী সংগঠনগুলো তাদের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেন তৎকালীন সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। পরবর্তীতে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থার চাপে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৮৬ সালের ৭ই মে নামকাওয়াস্তে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করেন। যেই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলেও আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করে। এমনকি জামায়াতে ইসলামী প্রথম বাংলাদেশের মাটিতে নিজেদের নামে ও প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায় এবং ১০টি আসনে জয়লাভ করে। আর ঐ সংসদের ৭৬টি আসন নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে ছিল। পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে বিএনপি-সহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল যখন শক্ত অবস্থানে চলে আসে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে আন্দোলনের ডানা শক্ত করে বাঁধতে থাকে। সেই সকল আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী প্রধান বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়। আশ্চর্যজনকভাবে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো ধর্মনিরপেক্ষতার প্রবক্তা দলগুলোর সাথে জামায়াত একই প্ল্যাটফর্মে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়। ১৯৯০ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে তিন জোটের রূপরেখায় জামায়াতও স্বাক্ষর করে, যা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে তাদের অংশগ্রহণকে বৈধতা দেয়। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের পতন হয়।
১৯৯১ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারীর পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ১৮টি আসনে জয়লাভ করে। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ১৪০টি আসনে জয়লাভ করলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় বিএনপিকে জামায়াতে ইসলামীর দ্বারস্থ হতে হয়। সেই সময় বিএনপি জামায়াতে ইসলামীর সাথে জোটবদ্ধ হয়ে সরকার গঠন করলেও সরকারের অংশীদার হিসেবে ছিলেন না জামায়াতে ইসলামী। আর তারা তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতাকে আরও সুসংহত করতে সমর্থ হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে মাগুরা উপনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে, যা তৎকালীন বিএনপি সরকারের অধীনে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি এবং অন্যান্য ছোট দলগুলো নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনে আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতে ইসলামী একই মঞ্চ থেকে হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ আন্দোলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। ১৯৯৪, ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে তারা সম্মিলিতভাবে মোট ৯৬ দিন হরতাল, অবরোধ এবং অসহযোগ কর্মসূচি পালন করে, যার মধ্যে ৭০ দিন ছিল হরতাল-অবরোধ এবং ২৬ দিন অসহযোগ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি: মূলত জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির গোলাম আযম আশির দশকে প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণা প্রস্তাব করেন। পরে এই দাবিটি আওয়ামী লীগ গ্রহণ করে এবং এটি একটি জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়। এরপর নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯৬ সালের ১২ই জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী মাত্র তিনটি আসনে জয়লাভ করে। আর আওয়ামী লীগ ১৪৬ আসন নিজেরা পেয়ে সাথে পরে জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সহযোগিতায় সরকার গঠন করে। আর ১১৬টি আসন নিয়ে বিএনপি বিরোধী দলের আসনে অধিষ্ঠিত হয়।
এরপর বিএনপি তাদের রাজনৈতিক জোট শক্তিশালী করতে ১৯৯৯ সালের ৬ই জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি, ও ইসলামী ঐক্যজোটের সমন্বয়ে চারদলীয় জোট গঠন করে। যা পরবর্তীকালে বিএনপি-জামায়াত জোট হিসেবে দেশবাসীর কাছে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে ২০০১ সালের ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় জোট অর্থাৎ বিএনপি-জামায়াত জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে। এর ফলে বিএনপি এককভাবে ১৯৩টি আসনে জয়লাভ করে আর বিএনপি-জামায়াত অর্থাৎ চারদলীয় জোট জয়লাভ করে ২১৪টি আসনে। এই নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা পায়। জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীকে শিল্পমন্ত্রী এবং সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই প্রথম জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় সরাসরি অংশ নেয়। এর ফলে দলটি আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং তাদের প্রভাব বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল করতে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে নানান ধরনের অতিরঞ্জিত কাহিনী তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, যা আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতের ষড়যন্ত্রেরই অংশবিশেষ।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার' অঙ্গীকার করে ক্ষমতায় আসে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে। এই বিচার প্রক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের অভিযোগ আনা হয়। এই বিচার প্রক্রিয়া জামায়াতে ইসলামীর জন্য ছিল এক অস্তিত্বের সংকট। দলটির প্রায় সকল শীর্ষ নেতাকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। এদের মধ্যে অনেকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং আব্দুল কাদের মোল্লা, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান প্রমুখের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। দলের প্রধান নেতা গোলাম আযমও সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে মারা যান। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ আরও কয়েকজনের যাবজ্জীবন বা দীর্ঘমেয়াদী কারাদণ্ড হয়। এমনকি এই একই অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়। আব্দুল আওয়াল মজিদ ও মাওলানা রশিদুজ্জামানের মতো অনেকেই সাজাপ্রাপ্ত হন।
রাজনৈতিক নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে, যার ফলে দলটি আর নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। এই রায়কে অনেকেই জামায়াতের রাজনৈতিক কফিনে শেষ পেরেক হিসেবে দেখেছিল। এমনকি পালানোর আগ মুহূর্তে ১লা আগস্ট ২০২৪ শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের নির্বাহী আদেশকে কাজে লাগিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। কিন্তু শত নির্যাতন সহ্য করেও জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক মাঠের খেলা বন্ধ করেনি। শেখ হাসিনার শাসনামলে বিএনপির প্রায় তিন হাজার নেতাকর্মীর পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীরও ৭৩০ জন গুম-হত্যার শিকার হন।
২০২৪ সালের জুলাই- আগস্টের গনঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী হাসিনার পতন ও ভারতে পলায়ন জামায়াতে ইসলামীর জন্য একটি নতুন রাজনৈতিক সুযোগ তৈরি করে। দীর্ঘ সময় রাজনীতিতে কোণঠাসা থাকার পর এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে খুনি হাসিনার পতনের পর দলটি পুনরায় রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পায়। এই আন্দোলনকে জামায়াতে ইসলামী নিজেদের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের একটি উপায় হিসেবে দেখেছে এবং আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের পাশে দাঁড়িয়ে জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছে। একই সাথে, তাদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, নিজেদের দলীয় প্রতীক পুনরায় ফেরত পাওয়া সব কিছু মিলে জামায়াতে ইসলামী বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। এরই মধ্যে গত ১৯শে জুলাই বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মহাসমাবেশ করে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক আলোচনার ঝড় তুলেছে। ইতোমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বিভিন্ন সময় তাদের বক্তব্যে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন, রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং গণহত্যার বিচারের মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব দিচ্ছেন। তারা নিজেদের আদর্শিক অবস্থানকে সামনে রেখে জনগণের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার জন্য তারা নতুন নতুন কৌশল গ্রহণ করছে। সব কিছু মিলে নানা বিতর্ক, ঘাত-প্রতিঘাতের মাঝেও স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী তাদের রাজনৈতিক বিচক্ষণতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজ নিজেদেরকে সম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে।
২| ২১ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১:৩৮
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: জামাতের ফাদার নাকি জেনারেল জিয়া ।
৩| ২১ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:৫০
মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ বলেছেন: এমনই মেধাবী ও সাহসী যারা নিজ যোগ্যতায় নিজস্ব কোন আন্দোলনের জন্ম দিতে পারেনি। বরাবরই সফল আন্দোলনের রূপকার বড় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বের সাথে আপোষ রফা করে রুটি হালুয়ার কিছু অংশ নিজেদের কপালে জুটিয়েছে।
৭৫ পরবর্তী সরকারের পক্ষ থেকে পুনর্বাসন ও আনুষাঙ্গিক সহায়তা পাওয়ার পরও এরা কোন জীবনমুখী রাজনৈতিক প্রোডাক্ট/চেতনা তৈরি করতে পারেনি। আর তা আম জনতাকে গেলানো তো আরও দূরের কথা। এদের এজেন্ডা বরাবরই থাকে গুপ্ত, রহস্যের আবরণে আবৃত। ফলে সর্বস্তরের জনগণের কাছে এরা থেকে যায় আগাগোড়াই দুর্বোধ্য। আবার সাধারণ জনগণের চাওয়া পাওয়ার কোন তোয়াক্কাও এই সকল কথিত ইসলামী মূল্যবোধের ধারক ও বাহকেরা। সে কারণে পাকিস্তান না চাইতে এরা পেল পাকিস্তান আর বাংলাদেশ না চাইতে পেয়ে গেলো বাংলাদেশ। পাকিস্তানের জন্মের পরপরই সেখানে কাদিয়ানিদের সাথে দাঙ্গা লাগিয়ে অসংখ্য মানুষের মৃত্যুতে এরা অবদান রেখেছিল। পরবর্তীতে যেমন অবদান রেখেছিলো ৭১ এ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সময় ঘটে যাওয়া গণহত্যায়। মোটা দাগে এ পর্যন্ত এই হলো সমাজে এদের রাজনৈতিক অবদানের ইতিহাস।
এদিকে নব্বুই পরবর্তী অন্যান্য প্রচলিত প্রথার রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক চেতনা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিক্রি বাট্টা করে দিব্যি নিজেদের আখের গুছিয়ে নিলো।
৪| ২২ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১২:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: জামাতের মতো সুসংগঠিত কোন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে নেই।
জামাতের জন্য শুধু ঘৃণা।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১:০৬
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: জামাতের মতো সুসংগঠিত কোন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে নেই।