নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Saif Samir | Winner of the Best of Online Activism Awards (2013) by Deutsche Welle (DW) | www.saifsamir.com

সাইফ সামির

মুভি ক্রিটিক ব্লগ

সাইফ সামির › বিস্তারিত পোস্টঃ

**মুভি রিভিউ** দেবদাস থেকে দেব. ডি

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:৫৮

শরৎবাবুকে যদি কোন জাদুমন্ত্রে পরলোক থেকে এই ইহলোকে ফিরিয়ে আনা যেত, বসিয়ে দেয়া হতো দেব. ডি চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনীতে -- নির্ঘাৎ তিনি ভ্যাবাচেকা খেয়ে যেতেন! এমা, একি দেখছি! এ কোথায় এলুম! এ জাতীয় শব্দ বেরিয়ে আসতো বিংশ শতা‍‌ব্দীর বিখ্যাত এই লেখকের মুখ থেকে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস 'দেবদাস' অবলম্বনে ইতোপূর্বে অনেক চলচ্চিত্র হয়েছে। বরাবরই শরৎচন্দ্র দেবদাসে চরিত্রগুলো যেভাবে দেখিয়েছিলেন অনেকটা সেভাবেই পর্দায় উঠে এসেছে। মুভির প্রয়োজনে কখনও হয়তো সামান্য পরিবর্তন হয়েছে চরিত্রে কিংবা গল্পে। অসামান্য পরিবর্তন আমার দেখলাম অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত অভয় দেওল, মাহি গিল, কল্কি কচলি অভিনীত ২০০৯ সালের হিন্দি মুভি দেব. ডিতে।



সে এক দিন বদল বটে! ভালবাসা তার মেদ-চর্বি বা আবরণ-বোরখা ছাড়িয়ে (বা হারিয়ে) দৈহিক কামনা বা 'আসল ফল' লাভের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এখানে ভালবাসা মানে শুধু 'লাভমেকিং'! মুভির ট্যাগ লাইনেই তো বলা হয়েছে, 'কাম ফল ইন লাস্ট'! বেচারা শরৎবাবু! ইন্ডিয়ার হালের প্রেম-পীরিতের এই চিত্রায়ন দেখে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে আবার যে পরলোকগামী হতেন সে কথা আর বলতে!



দেব. ডিতে দেব (অভয়) আছে, পারু (মাহি) আছে, চন্দ্রাও (কল্কি) আছে। নেই শুধু নিখাদ প্রেম, বদলে যৌনতা। পটভূমি বড়ই আধুনিক। দেব থাকতো ইউকেতে। পারুর সঙ্গে চ্যাটিং হতো অনলাইনে। কথা হতো ফোনে। পারুকে দেব তার নগ্ন ছবি পাঠাতে বলে। পারু শুনে 'তুমি কি পাগল হয়েছ?' বললেও পরে ঠিকই মেইল করে দেবের কাঙ্খিত ছবি। ওদিকে ছবি পেয়ে তো দেব বাবু ফিদা! পারুকে তৎক্ষণাৎ ফোন, 'পারু, আমি আসছি!!'! পারু তো খুশিতে আটখানা। দেবকে কাছে পাবে। কষ্ট করে আর ছবি তুলে মেইল করতে হবে না! দেব দেশে ফেরে। মুভির মূল কাহিনী শুরু এখান থেকে।



কাহিনী বলতে দেব-পারুর মিলিত (দৈহিক) হবার হরেক প্রচেষ্টা। দেবের মতি বিভ্রম, দেব-পারুর বিভেদ, পারুর অবজ্ঞা, চন্দ্রার 'চন্দ্রা' হয়ে ওঠা, দেবের মাদকাসক্তি, দেব-চন্দ্রা সম্পর্ক ইত্যাদি। দেবদাসের গল্প আমাদের জানাশোনা হলেও অনুরাগের গল্প বলায় একটা বিশেষ ঢঙ আছে। চিত্রনাট্যের বৈশিষ্ট্য হলো একাধিক ছোট গল্পকে সমান্তরাল গতিতে এগিয়ে নিয়ে একই বিন্দুতে মিলিয়ে দেয়া। কুশীলবদের অভিনয়ও উপভোগ্য। চিত্রগ্রাহক রাজিব রাভি ও শিল্পনির্দেশকরা তাদের সেরা কাজটাই করেছেন। আর অমিত ত্রিবেদীর মিউজিক তো রীতিমতো 'ইমোশনাল অত্যচার'! উহুঁ, নিন্দে নয়, প্রশংসাই করা হলো! অমিতের অসাধারণ মিউজিক মুভিটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। আর তার সাফল্যে জুটেছে দ্বিতীয় অ্যালবামেই জাতীয় পুরষ্কার।



অভয় দেওল যথারীতি ভালো অভিনয় করেছেন। কিন্তু চরম মাদকাসক্ত দেবকে যতোটা বিপর্যন্ত দেখানো উচিত ছিল অভয়ের চেহারায় বা এক্সপ্রেশনে ততোটা ফুটে ওঠেনি। অন্যদিকে, দুই নবাগতা মাহি গিল ও কল্কি কচলিনের অভিনয় রীতিমতো প্রশংসনীয়।



নতুন আঙ্গিকের দেবদাস কিছু সত্য তুলে এনেছে, অনেকটা কড়া ভাবেই। কিন্তু বিশ্বাস করুন, দেব. ডিয়ের দেবের জন্য চোখ একটুও ছলছল করলো না, যেমনটা হৃদয় কেঁদেছিল উপন্যাসের দেবদাস বা পর্দার অন্য দেবদাসদের জন্য। কেন তেমনটা হয়নি? কারণ পরিচালক চাননি। দেবকে ট্র্যাজিক হিরো বানানো তার উদ্দেশ্য ছিল না।



চর্বিত গল্পের এই জাতীয় প্রজেক্টে আমার নজর থাকে গল্প বলার স্টাইল আর সমাপ্তির ধরণের দিকে। দুই দিক থেকেই দেব. ডি উতরে গেছে দারুণভাবে। দেবের শেষ পরণিতি তো একেবারে মনের মতো। পুরো মুভি দেখার একটা তৃপ্তি এনে দেয়। শেষটা সত্যিই আকর্ষণীয়। পরিচালক তার বার্তা পৌঁছাতে পেরেছেন। বিপর্যস্ত দেবকে দিয়ে আশার বাণী শুনিয়েছেন যুবসমাজকে। যা মুভিটি দেখলে বুঝতে পারবেন।



রেটিং: ৪/৫

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১৭/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:১৫

স্বল্পজ্ঞানী বলেছেন: আচ্ছা দেইখা ফালাই। সিনেমাটা পিকচারের মত হবে তো !!! :P

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:৩৪

সাইফ সামির বলেছেন: Truly Moving Picture!

২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:১৯

কাউসার রুশো বলেছেন: রিভিই খুবই ভালো হয়েছে সেজন্য + :)
মুভিটার বেশ প্রশংসা শুনে আসছি মুক্তি পাবার পর থেকেই। এখনো দেখা হয়ে উঠলো না।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:৩৮

সাইফ সামির বলেছেন: ধন্যবাদ রুশো। মুভিটি সময় করে দেখে নিয়েন।

৩| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:২৪

শিবলী বলেছেন: ফিনিশিং টা দেখি নাই। মুভিটা একবার এমটিভি তে দিছিল। শেষেরটুকু মিস করেছি লোডশেডিং এ। কি হয়েছিল?

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:১০

সাইফ সামির বলেছেন: আমি বলার চেয়ে দেখলেই ভালো হয়! :)

৪| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:৩০

শেখ আমিনুল ইসলাম বলেছেন: হিন্দী ছবি এম্নিতেই দেখা হয় না। রিভিউ ভালো লাগল। শুভেচ্ছা

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:১২

সাইফ সামির বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা!

৫| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:৫২

রাকীব হাসান বলেছেন: দারূন একটা মুভি ++++
লেখককে +++++++++++++++

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:২৫

সাইফ সামির বলেছেন: ধন্যবাদ রাকীব!

৬| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:৫২

আতিকুর রহমান সুমন বলেছেন: ছবিটা ভালো।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:০৮

সাইফ সামির বলেছেন: দেখেছেন তাহলে।

৭| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:৫৩

েপচাইললা বলেছেন: দেখেছি....বিস্মিত হয়েছি ওদের কল্পনা আর কল্পনার চিত্রায়ন দেখে...

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১২:৪৪

সাইফ সামির বলেছেন: হুম!

৮| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:০৭

আসিফ মুভি পাগলা বলেছেন: হিন্দি দেখিনা সাধারনত । তবে রিভিউটা ভাল লাগল ।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:১৭

সাইফ সামির বলেছেন:

মাঝে মাঝে ভালো কিছু হিন্দি মুভি দেখা যায়।
রিভিউ ভালো লেগেছে জেনে খুশী হলাম। ধন্যবাদ।

৯| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:১০

জোবায়ের আসাদ বলেছেন: কোন লিংক দিতে পারবেন?

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:২৪

সাইফ সামির বলেছেন: আমি ডিভিডিতে দেখেছি।

১০| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:১৩

লাল দরজা বলেছেন: ছবিটা মজার।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:৩৭

সাইফ সামির বলেছেন: ইন্টারেস্টিং।

১১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:৪৯

নাঈম_নাজিউর বলেছেন: হিন্দি সাধারণত কম দেখি কিন্তু এইটা দেইখা ভালো লাগছে । বড় মুভি কিন্তু পরিচালকের একটার পর একটা সিকোয়্যান্স বসিয়ে রাখে পর্দার সামনে । হিন্দি নাচ-গান-থিমছাড়া-আবাল মার্কা মুভি বাদে এইটা আর
"রান্গদে বাসন্তি" বসিক মুভি ।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ২:০১

সাইফ সামির বলেছেন:

Rang De Basanti তো আরও ভালো মুভি। আবোল-তাবোল মুভি ছাড়াও ভালো মুভি হয় ওখানে।

১২| ২১ শে জুন, ২০১২ দুপুর ১:০৭

অসহায় নাগরিক বলেছেন: রিভিউ ভাল হয়েছে +

হিন্দি হলেই দেখা যাবে না এমন কোন কথা নেই। হিন্দি অনেক ভাল ছবি আছে, অগুলর রিভিউ লিখবেন আশা করি।

২৭ শে জুন, ২০১২ দুপুর ২:৪২

সাইফ সামির বলেছেন: রিভিউ মূল্যায়নের জন্য ধন্যবাদ।

... আমিও আশা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.