নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

হরিপদ কেরানি

বিবাড়িয়া বাতায়ন

ভণ্ডামি আজ জাতির পতাকা খামচে ধরেছে

বিবাড়িয়া বাতায়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এবার উঠে এসেছে টাঙ্গাইলের পতিতাপল্লী

২২ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১২:০৬

আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এবার উঠে এসেছে টাঙ্গাইলের পতিতাপল্লীর সুখ-দুঃখ। তাতে বলা হয়েছে, কিভাবে খদ্দের আকৃষ্ট করে যৌনকর্মীরা গরু মোটাতাজাকরণ ট্যাবলেট খেয়ে তাদের শারীরিক বাহ্যিক পরিবর্তন আনছে। কত কম রেটে তারা নিজেদের শরীর বিকিয়ে দিচ্ছে। বিনিময়ে তারা কি পাচ্ছে। এমনই একটি ফিচারধর্মী রিপোর্ট গতকাল প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।



এতে বলা হয়েছে, ঢাকা থেকে কয়েক ঘণ্টার পথ উত্তর-পূর্বের জেলা টাঙ্গাইল। সেখানকার কান্দাপাড়া পতিতাপল্লীর নাম কম-বেশি সবাই জানে। কান্দাপাড়া পতিতাপল্লীতে রয়েছে প্রায় ৯০০ নারী যৌনকর্মী। তাদের মুখে ভারি মেকআপ দেয়া, টিনেজ মেয়েগুলো বেশ খাটো, তাদের শরীরে আটোসাটো ব্লাউজ আর লম্বা পেটিকোট। তারা ওই পতিতাপল্লীর সংকীর্ণ গলিপথে জমিয়ে আড্ডা দেয়, গল্প করে। আর সবচেয়ে বড় টার্গেট থাকে খদ্দের ধরা। তবে এই পতিতাপল্লীতে খদ্দেরের তেমন অভাব নেই। এলোমেলো গলিপথে লোহার গেট দেয়া। এখানে যৌনকর্মীদের রেট ৫০ টাকার মধ্যে।



যুক্তরাষ্ট্রে যার মূল্যমান ৬০ সেন্ট। এত কম রেটে শরীর বিকিয়ে দেয়ার কারণ একটাই- তাহলো যত বেশি সম্ভব খদ্দের আকৃষ্ট করা। আর এই খদ্দের ধরতে গিয়ে তারা শুধু রেটই কমায়নি, একই সঙ্গে মারাত্মক এক ঝুঁকিপূর্ণ পথে এগিয়ে চলেছে। তারা শরীরটাকে নাদুস-নুদুস বা আকর্ষণীয় বানাতে স্টেরয়েড ব্যবহার করছে। এমনই এক যৌনকর্মী হাসি। তার বয়স মাত্র ১৭ বছর। তার যখন বয়স ১০ বছর তখন তাকে এক পাচারকারী কান্দাপাড়া পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। তারপর থেকেই তাকে বাধ্য হতে হচ্ছে এই ব্যবসা চালাতে। প্রথমে তার শরীর ছিল অপুষ্টিতে ভোগা, দেখতে রোগা। কিন্তু তাতে খদ্দের আকৃষ্ট হয় না। তাই হাসি বলে- আমার ছোটবেলার শরীর আর এখনকার শরীরের মধ্যে রাতদিনের পার্থক্য। আগের চেয়ে আমি এখন অনেক বেশি মোটা হয়ে গিয়েছি।



এখন আমি দিনে অনেক খদ্দেরকে সার্ভিস দিতে পারি। কোন কোন দিন ১৫ জন খদ্দেরের মনোরঞ্জন করতে পারি। হাসি যে ছোট্ট রুমটিতে থাকে সেখানে আছে একটি বিছানা। রান্নার জন্য একটি স্টোভ। আর চার দেয়ালে টেপ দিয়ে লাগানো বলিউড তারকাদের পোস্টার। হাসির মতো অনেক কম বয়সী মেয়ে আছে এই কান্দাপাড়ায়। তাদের অনেকেরই বয়স ১২ বছর। তারা এক বিভীষিকাময় জীবন অতিবাহিত করছে সেখানে। অধিক উপার্জনের আশায় তারা সেবন করছে মোটাতাজাকরণ ট্যাবলেট ওরাডেক্সন। কিন্তু এতে তাদের জীবনের ওপর মারাত্মক সাইড ইফেক্ট বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। এই ওষুধটির নাম ডেক্সামিথেসোন, ওরাডেক্সন। এটি কৃষকরা তাদের গরু মোটাতাজা করতে ব্যবহার করে থাকে।



বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা বলছে, কান্দাপাড়া পতিতাপল্লীর শতকরা ৯০ ভাগ যৌনকর্মী এই ওষুধ ব্যবহার করে। শুধু কান্দাপাড়ায়ই নয়, দেশের আরও যে ১৪টি বৈধ পতিতালয় আছে সেখানেও একই চিত্র। ওই রিপোর্টে বলা হয়, পতিতাপল্লীতে মেয়েদের প্রথমে তার সর্দারণী ওরাডেক্সন খেতে বাধ্য করে। এতে তাদের ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত খাবার খেয়ে তাড়াতাড়ি তাদের ওজন বেড়ে যায়। একপর্যায়ে অপুষ্টির শিকার মেয়েগুলোকে দেখতে স্বাস্থ্যবতী ও পরিণত বয়সী দেখায়। এতে তাদের দেখে আকৃষ্ট হয় খদ্দেররা। এর ফলে পুলিশি উৎপাত থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। কারণ, পুলিশকে সর্দারণী বলতে পারে- তার অধীনে যেসব মেয়ে আছে তারা সব পরিণত বয়সী। বাংলাদেশে দেহ ব্যবসার জন্য আইনি বৈধ বয়স ১৮ বছর।



ফলে ওই ট্যাবলেট খাওয়া মেয়েদের ১৮ উত্তীর্ণ দেখায়। এ অবস্থায়ও তারা অব্যাহত রাখে ওরাডেক্সন খাওয়া। কারণ, তাতে তাদের স্বাস্থ্য পুষ্ট দেখায়। হাসি বলেছে, আমার সর্দারণী আমাকে ওই ট্যাবলেট খেতে বাধ্য করেছে। শুরুতে যখন আমি এ ট্যাবলেট খেতে চাইতাম না তখন সর্দারণী আমাকে প্রহার করতো। খাবার দিতো না। সে আমাকে নানা হুমকি দিতো। তার কাছে আমার যে ঋণ আছে বার বারই সে কথা স্মরণ করিয়ে দিতো। হাসির ৪ বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। সে তার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে থাকে। ২ বছর অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে হাসি তাকে দেখে না।



সে বলেছে, এই পতিতাপল্লীতে খদ্দেররা সব সময় স্বাস্থ্যবতী মেয়েদের খোঁজে। তাই আমি ওরাডেক্সন সেবন করি। এর কারণ, আমার অনেক খদ্দেরের দরকার। তা দিয়ে আমার সব বিল ও ঋণ শোধ করতে হবে। একদিন খদ্দের না পেলে আমাকে পরের দিন অনাহারে থাকতে হয়। তারপরও আমার ছেলের জন্য কিছু অর্থ জমা করার চেষ্টা করি। কান্দাপাড়া পতিতাপল্লীর প্রায় সব টিনেজ যৌনকর্মীরই কাহিনী এক রকম। তাদেরকে অজান্তে গ্রামের অভিভাবকরা প্রায় ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে পাচারকারীর কাছে বিক্রি করে দেয়। তারপর দালালরা তাদের নিয়ে যায় সর্দারণীর কাছে। ব্যস শুরু হয়ে যায় অন্ধকার জগতের এক করুণ জীবন।



পতিতাপল্লীতে দেহব্যবসা করতো এমন যৌনকর্মীই হয়ে যায় সর্দারণী। সেই টাকা দিয়ে কিনে নেয় তাদের। টিনেজ যৌনকর্মীরা বলেছে, তাদেরকে প্রতিদিন প্রায় ১৫ জন খদ্দেরের মনোরঞ্জন করতে হয়। তা থেকে যে টাকা আসে তার প্রায় পুরোটাই চলে যায় সর্দারণীর হাতে। এই কান্দাপাড়ায় অনেক মেয়ে বছরের পর বছর রয়েছে। তারা অশিক্ষিত। এজন্য তারা হিসাব রাখতে পারে না- তাদের ঋণ শোধ হয়েছে নাকি। অধিকার সম্পর্কেও তারা জানে না। এক সময় যখন তাদের বয়স বেড়ে যায় অথবা তাদের কাছে খদ্দের আসে না তখন সর্দারণীই তাদের ত্যাগ করে। এ অবস্থায় তারা আর বাড়ি ফিরে যেতে পারে না। সমাজে ফিরতে পারে না। তারা মুখ দেখাতে পারে না বাইরের দুনিয়াকে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, ওরাডেক্সন মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াশীল ওষুধ। এর কারণে হতে পারে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চুলকানি, মাথা ব্যথা এবং এটি প্রচণ্ড নেশা জাগায়। এর ফলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে।



এতে রোগীর অবস্থা রোগা রোগা থাকে। কান্দাপাড়ায় এই ট্যাবলেটটি সহজলভ্য। কোন চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই চায়ের দোকান ও সিগারেটের দোকানে ১০টি ট্যাবলেটের এক পাতা বিক্রি হয় মাত্র ১৫ টাকায়। বাংলাদেশের আরেকটি পতিতালয় হলো ফরিদপুরে। সেখানে যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করেন মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী শিপ্রা গোস্বামী। তিনি বলেন, স্টেরয়েড যেমন জীবন রক্ষা করে তেমনি তা জীবন ধ্বংস করে। অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ করিব বলেন, এ জাতীয় ওষুধ সেবনের নেতিবাচক দিক তুলে ধরে অনেক প্রচারণা হয়েছে। কিন্তু পতিতাপল্লীর মালিক, সর্দারণী এবং দালালরা তার কোন তোয়াক্কা করছে না। তাই এ ধরনের ওষুধ বিক্রির ওপর কঠিন নিষেধাজ্ঞা আসা উচিত। এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে সরকার ও রাষ্ট্র।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১২:১৩

কথাফাজিল বলেছেন:
তবে ছবিটা অনেকের কাছে বিব্রত হবার কারণ হতে পারে।

২| ২২ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১২:১৫

নয়ামুখ বলেছেন: কি কইলেন ভাই! আমাদের জাতীয় সংসদের কথা ফাঁস হইয়া গিয়াছে।

৩| ২২ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১২:১৭

জাহাঙ্গীর আকবর শাকিল বলেছেন: অমানবিক! অসহায় হাসিদের রক্ষা করবে কে ?

৪| ২২ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১২:২১

সবুজ মানব বলেছেন: বাংলাদেশে দেহ ব্যবসার জন্য আইনি বৈধ বয়স ১৮ বছর।
বাংলাদেশে কি দেহ ব্যবসা বৈধ?

৫| ২২ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১২:২৩

রিফাত হোসেন বলেছেন: এত কপি পেষ্ট করেন কেন ?

যতদ্দূর উঠে নাই ততদ্দূর ফ্লাডিং করছেন । বুঝলাম তো পতিতা পল্লীর কাহিনী উঠছে যেমন উঠছে বিডি দুর্নীতির একের পর এক কাহিনী যার কোন সুরাহা হয় নাই হবেও না ।

৬| ২২ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১২:৩২

নয়ামুখ বলেছেন: আমার মন্তব্যটি মুছে দোলেন কেনোরে ভাই। নাকি আপনার কেউ নিয়মিত সংসদে যান।

৭| ২২ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১২:৩৪

আবদুল্লাহ্‌ আল্‌ মামুন বলেছেন: মায়া লাগল.....আফসোস...!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.