নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার জন্য একমাত্র আল্লাহ পাকই যথেষ্ঠ........
গত ১৮ই আগস্ট গিয়ে ছিলাম চট্রগ্রামের CEPZ-এর একটি গার্মেন্টস্ ফ্যাক্টরী পরিদর্শন করতে। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীটি ছিল বিশাল আয়তনের। যতটুকু জেনেছি মালিক বাংলাদেশী কিন্তু ফ্যাক্টরী ম্যানাজমেন্টে আছে বিদেশীরা। আমাদের পরিদর্শনের উদ্দেশ্যটি ছিল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীটির অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নতিকরণ।
পেশায় আমি একজন ইন্টেরিয়র আর্কিট্যাক্ট হওয়ায় এই বিষয়ে আমার ধারণা বা জ্ঞান সীমিত কিন্তু আমার ব্যবসায়ীক পার্টনারের কোম্পানীটি (ইউ,কে প্রোডাক্ট) ছিল অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় খুবই অভিজ্ঞ ও দক্ষ। তবে আমি ছিলাম ব্যবসাটির এ্যাকজিকিউশন টিম লিডার।
যাই হোক, আমরা সকাল ১১টায় মধ্যে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীটিতে পৌছে গেলাম এবং কোম্পানীটির জিএম (বাংলাদেশী)-এর সাথে মিটিং শুরু করলাম। একে একে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার চাহিদার সংশ্লিষ্ঠ সকল বিষয় গুলি তিনি আমাদের বুঝিয়ে বললেন এবং এটাও বললেন কাজ শুরু করার জন্য আমাদের সময় খুবই সীমিত, মাত্র ৩০দিন এবং তাদের আরো ৩টি গার্মেন্টসের ফ্যাক্টরীর কাজ একই সাথে শুরু করতে হবে, যা আমাদের কেন অন্য যেকোন দেশী বা বিদেশী কোম্পানী ক্ষেত্রে মাত্র ৩০দিনে কাজ সম্পূর্ন খুবই দুরূহ ব্যাপার। আমি মনে করি প্রতিটি কাজ সঠিক ভাবে শুরু ও শেষ করতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত সময় ও সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ের উপর সঠিক জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ।
কাজ শুরু ও শেষ করতে সীমিত সময় কেন....?
জানতে চাইলে জিএম সাহেব আমাদের জানালেন "ওয়ালমার্ট" থেকে তাদের কোম্পানীর উপর চাপ আছে, নাহলে তাদের ফ্যাক্টরীর অর্ডার ক্যান্সেল বা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
আরো জানতে পারলাম সম্প্রতি ঘটে যাওয়া তাজরীন গার্মেন্টসে আগুন ও রানা প্লাজা ধ্বসের কারণে "ওয়ালমার্ট" ও ইউরোপের আরো কয়েকটি তেরী পোষাক ক্রেতারা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থায় বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশী ফ্যাক্টরী গুলির উপর চাপ সৃষ্টি করছে আবার অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা হতে হবে "ওয়ালমার্ট"এর গাইড লাইন অনুসারে, অন্যথায় অর্ডার ক্যান্সেল।
পরিদর্শনে আমি যা দেখলাম প্রায় ২৯০০ (একটিতে) পোষাক শ্রমিকের বিশাল আকারের ফ্যাক্টরীর বর্তমান যে অগ্নি নির্বাপন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল ও অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। ফ্যাক্টরীতে আগুন লাগলে কোন স্মোক ও ফায়ার ডিট্যাকশন ব্যবস্থা ও পানি দেওয়ার ব্যবস্থাই কাজ করবে না। যা ভাবতেই চমকে উঠি। এত দিন শুধু শুনতাম আর পত্রিকার পাতায় পড়তাম শ্রমিকদের অনিরাপদ পরিবেশের কথা, আগুন লাগার কথা, মৃত্যুর মিছিলের কথা, আজ নিজ চোখে দেখছি।
গার্মেন্টস্ ফ্যাক্টরীতে সাধারনত আগুন লাগে অনিরাপদ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা এবং অগ্নি ডিট্যাকশন ব্যবস্থা থেকে কিন্তু সঠিক সময়ে যদি অগ্নি ডিট্যাকশন করা যায় তাহলে ফ্যাক্টরীর প্রতিটি ফ্লোর ওয়াইজ ব্যবস্থা নিয়ে বড় কোন দূর্ঘটনা দ্রুত প্রতিরোধ করা সম্ভব।
যাই হোক, একে একে সারাদিন ভরে ৩টি গার্মেন্টস ও ১টি ওয়াসিং প্ল্যান্ট ভিজিট শেষ করলাম। তারপর রাত ১১টার ট্রেন ধরে পরের দিন সকালে ঢাকায় ফিরলাম।
আগে অনেক বার অনেক ফ্যাক্টরী বিভিন্ন কারণে পরিদর্শন করছি কিন্তু এভাবে গার্মেন্টস্ ফ্যাক্টরী পরিদর্শনের অভিজ্ঞতাটি এটাই প্রথম। পরিদর্শনের সময় ব্যবসা ব্যতীত অন্য কিছুই তখন ভাবিনি কিন্তু ঢাকায় ফেরার পর আমার মনে কিছু প্রশ্ন ও ভাবনা উদীত হলো।
যেমন-
১। প্রবেশ পথে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও এতো বড় একটি গার্মেন্টস্ ফ্যাক্টরীর অভ্যন্তরে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা এতো দূর্বল কেন......?
২। ২৯০০(সব ফ্যাক্টরী মিলে হবে প্রায় ৫০০০ শ্রমিক) পোষাক শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তার কি কোনই মূল্য নাই।
৩। এতো এতো শ্রমিকের মৃত্যু কি আমাদের দেশীয় মালিকদের কোন বোধ, বিবেককে জাগ্রত করেনি...?
৪। আমাদের দেশীয় মালিকদের কাছে মুনাফা ব্যাতীত শ্রমিকদের জীবনের কোন মূল্য নিয়ে কি কোন ভাবনাই নেই...?
৫। শ্রমিকরা জানেই না তারা কিভাবে দিনের পর দিন কি পরিমান অনিরাপদ পরিবেশে মৃত্যুকে সাথে নিয়ে কাজ করছে।
৬। ওয়ালমার্টের চাপে তারা শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা তাড়াহুড়া করে গ্রহন করছে শুধু মাত্র তাদের ব্যবসা বা অর্ডার রক্ষার্থে।
৭। বিদেশীদের থাকলেও পোষাক শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশী মালিকদের উপর সরকারের কোন চাপ নেই কেন....?
৮। একটি বিদেশী কোম্পানী (ওয়ালমার্ট ও অন্যান্য) আমাদের পোষাক শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তিত কিন্তু আমাদের মালিক ও সরকার কেন উদাসীন।
আমাদের দেশের সকল ক্ষমাতাসীন রাজনীতিবিদ বা সরকার রাজনীতিতে বিদেশীদের চাপ বা হস্তক্ষেপ ভাল দৃষ্টিতে নেন না বা পছন্দ করেন না কিন্তু আমাদের পোষাক শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তার বিষয়ে বিদেশীদের চাপ বা হস্তক্ষেপ নির্জ্জল ভাবে চুপ থাকেন। এর প্রতিবাদ করে বলে না যে, আমাদের দেশের শ্রমিক ভাই-বোনদের জীবনের নিরাপত্তা আমাদের দেশের সরকারই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে....
অপেক্ষায় থাকলাম এমন মানবীয় ও আসল দেশ প্রেমিক সরকারের জন্য...
ধন্যবাদ সবাইকে।
আমার ডিজাইন করা একটি অফিস ইন্টেরিয়র....পর্ব-৭
Click This Link
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪১
জহির উদদীন বলেছেন: দারুন বলেছেন.....ধন্যবাদ
২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৭
মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: আমাদের জাতিগত সংশোধন জরুরী হয়ে পড়েছে...
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৮
জহির উদদীন বলেছেন: সত্যি তাই.......ধন্যবাদ
৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৪
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: আমাদের জাতিগত সংশোধন জরুরী হয়ে পড়েছে...
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯
জহির উদদীন বলেছেন: মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম ভাই সত্যি কথাটাই বলেছেন...
৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৪
মেহেদী_বিএনসিসি বলেছেন: বিদেশীদের সমালোচনা আমরা আগে করি.........আজও দেখলাম পোশাকশিল্পের নিরাপত্তা নিয়ে ড্যান মজিলা সমালোচনা করায় পাব্লিক কমেন্টে আম্রিকারে ধুইয়া দিছে। এই বায়াররা আছে বইলাই আজ শ্রমিকদের নুন্যতম মজুরী ২৭০০টাকা, বা দেখানোর জন্য হলেও মালিকরা এই অগ্নি নির্বাপন বা দূর্ঘটনা প্রতিরোধে কিছুটা খরচ করেন........। এই কম্প্লায়েন্স যদি বিদেশী ক্রোতারা চাপিয়ে না দিতো.......তবে মালিক বা সরকার কি কখোনো এসব বিষয়ে কখোনে ভ্রুক্ষেপ করতো..........কখোনোই না।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩
জহির উদদীন বলেছেন: এটা একটি গঠন মূলক সমালোচনা.....
এই কম্প্লায়েন্স যদি বিদেশী ক্রোতারা চাপিয়ে না দিতো.......তবে মালিক বা সরকার কি কখোনো এসব বিষয়ে কখোনে ভ্রুক্ষেপ করতো..........কখোনোই না।
সহমত
আসলে আমি এটাই বুঝাতে চেয়েছি......ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪
নতুন বলেছেন: সবাই টাকার পেছনে দৌড়ায়.... মানুষের দিকে কেউই তাকায়না...
দেশের কথা তো কেউ চিন্তা করেনা... পকেটের কথা ভাবে নেতারা...
শ্রমিক নেতারা টাকার ধান্ধায় থাকে... শ্রমিকের নিরাপত্তার চিন্তা করার সময় কই?