কাল্পনিক সেই রাত

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৯

-খবরদার বিছানায় উঠবেন না।এদিক দিয়ে আসেন।আমার পাশে দাঁড়িয়ে দোয়াটা পড়ুন।কপালে হাত রাখুন।
-লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জোয়ালিমীন।
-এই? এইটা কোন দোয়া?
-বিপদ থেকে উদ্ধারের দোয়া।
-আপনি তো আচ্ছা...থাক কইলাম না।বিয়ের প্রথম রাতে কি দোয়া পড়া লাগে আপনি জানেন না?
-ভুইলা গেছি মনে হয়।যে ছেলের ভাগ্য এমন ডাইনী বউ পড়ে তার নিজের নামই তো মনে থাকার কথা না।
-কি আমি ডাইনী?
-খালি ডাইনী না। একটা পেত্নী।
-ই ই ই ই...আমাকে রাগাবেন না।আমি রাগলে কিন্তু...
-রাগলে মেয়েদেরকে অনেক সুন্দর লাগে।
-কি?তার মানে আপনি আমার আগেও আরও...ছি ছি ছি...
শিশির চুপ হয়ে যায়।রুম থেকে বারান্দায় চলে আসে। আজ পূর্ণিমা। নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হয় শিশিরের।আল্লাহ তাআলা তাকে চাঁদের চেয়েও মিষ্টি একটা বউ দিয়েছে।আকাশের চাঁদের যেমন পূর্ণিমা হয় তার দুনিয়ার চাঁদটা রাগলেও তার হৃদয় রাজ্য পূর্ণিমা নেমে আসে।

রকিং চেয়ারে চোখ বন্ধ করে ভাবছে শিশির।আচমকা কয়েকফোটা জলের স্পর্শে তার চিন্তা জগতে বিচ্ছেদ ঘটে।তার ঘরের চাঁদটা তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।দু চোখ দিয়ে তার টপ টপ করে জল পড়ছে।
-কাঁদছ কেন?
-আমাকে আপনার পছন্দ হয় নি তাই না?আমি একটু কেমন যেন। ছেলেমানুষী আর অত্যধিক রাগ কোনটাকেই আমি ছাড়তে পারি না।
-হুমম...কি আর করা।পছন্দ না হলেও তোমাকে নিয়েই তো সংসার করতে হবে।
শিশির সুপ্তার হাতে হাত রাখে।সুপ্তার চোখের জলের পরিমান ইতিমধ্যই আরও বেড়ে গিয়েছে।শিশির আদর করে সুপ্তার চোখের জল মুছে দেয়।
-এভাবেই মাঝে মধ্য রাগ করবে আর কাঁদবে কেমন?আমি সারাজীবন এভাবেই তোমার চোখের জল মুছে দিতে চাই। আরে পাগলি,তুই তো আমার ঘরের চাঁদ।তোকে ভাল না লাগা কি সম্ভব?
সুপ্তা শিশিরের হাত শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।এখনও তার কান্না থামে নি।
-তাহলে কথা দিন যখনই আমি কাঁদব তখনই আপনার এই দুটো হাতের স্পর্শ নিয়ে আপনি আমার পাশে থাকবেন!
চাঁদটা এখন আর বারান্দা থেকে দেখা যাচ্ছে না।সুপ্ত আকাশ থেকে চোখ নামিয়ে আনে।কি দরকার আর বৃথা আকাশের চাঁদ খোজার?

৬ টি +০/-০