নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অত্যন্ত ভালো ছেলে

মোঃজাহিদুল ইসলাম সবুজ

অন্ধকারের পথ হারিয়ে যে প্যাঁচা ডাকতে ভুলে গেছে।

মোঃজাহিদুল ইসলাম সবুজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর এলোমেলো স্বপ্নরা

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৬

লোকাল বাসে চড়ে দুইদিন স্টুডেন্ট ভাড়া দিয়ে চলাচল করে মনে হচ্ছিল আমি সাহসী হয়ে ওঠেছি। এটা নিয়ে রাতে রিয়েল ভাইদের সাথে আলাপও করেছি যে স্টুডেন্ট ভাড়া দিলে দেখা যাচ্ছে ইদানীং বাস কন্টাক্টাররা তেমন ঝামেলা ঝুমেলা করছে না। রাসেল ভাই বলল, তুমি আরও পঞ্চাশ বছর চাইলেও স্টুডেন্ট ভাড়া দিতে পারবা। এটা বলার কারণ হয়তো আমার সঠিক বেড়ে না ওঠাই দায়ী। কপালে চুল কম ছাড়া আমার তেমন বয়স আসলেই বোঝা যায় না। আমার যে বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেছে চুলগুলো লম্বা হলে আর ক্লিন শেভ করলে খুব কম মানুষই সম্ভবত ধরতে পারবে।

আমি অত্যন্ত নিরীহ এক মানুষ যে কীনা ঢাকার এইসব কন্ট্রাক্টরদের সাথে গরিব হয়েও তর্ক করার সাহস অর্জন করতে পারি নাই। যার কারণে জীবনে খুব কমই স্টুডেন্ট ভাড়া দিতে পেরেছি। দুইদিন টানা এই স্টুডেন্ট ভাড়া দিতে পেরে কালকে রাতে কেমন জানি নিজেকে সাহসী সাহসীই লাগছিল, যেন এখন থেকে পারবো।

পরে এই নিয়ে ফাপরীয় সময় কাটার পর যখন ঘুমাই তখন এক ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখি৷ আমি দেখলাম যে আমি তুরাগ বাসে করে আমার গ্রাম থেকে ঢাকা ফিরছি। ছোট বাস হওয়ার বাসটা অচেনা গ্রামের রাস্তা দিয়ে শহরে আসছে। মাঝেমধ্যে বাঁশের আলোছায়ার মধ্যে আধো আলো আধো অন্ধকারে ছেয়ে যাচ্ছে বাস৷ আমি দাঁড়িয়ে আসছিলাম। দেখছিলাম কয়েকজন আলু চাষী আলু তুলছে, আর একটা মহিলা ছাগলের বাচ্চা একটা কোলে নিয়ে ছাগল নিয়ে খেতের আইল ধরে ফিরছ কোথাও হয়তো ঘরে। মনে হচ্ছিল বিকেলের দিকে যাচ্ছে দিন।

এরমধ্যে ঘটে গেল অঘটন। আমি বাসের গেটের কাছাকাছি থাকায় কন্টাক্টর আমার পেটে একটা চিমটি কেটে বলল ভাই পিছনে আসেন। আমি ব্যথা পেয়ে যাই আর রাগে হেল্পারের পেটেও জোরে চিমটি দিয়ে চেতে বললাম পেটে মোচড় দিয়ে ডাক দিতে হয় চুদির পোলা। কন্টাক্টরও ব্যথা পেয়ে আমার দিয়ে বসে ঘুষি। আমি হতভম্ব হয়ে যাই। আর আতঙ্কিতও। কী করবে বুঝে ওঠার আগেই দেখি আমাদের গ্রামের ছেলে বাবু( যার সাথে বছর দেড়েক ধরে কথা বলি না) কন্টাক্টরের চোখে বসিয়ে দেয় ঘুষি। ওমনি চোখ ফুলে ঢোল হয়ে যায়।

কন্টাক্টর হেল্পারের সাথে আলোচনা করে আমাদের উত্তরা নামার সময় মারবে। আমি ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে যায়। ভায়োলেন্স আমার পছন্দ না তাই একটু পা কাঁপাকাঁপি অবস্থা।

বাবুকে বললাম যে, উত্তরা লোক রেডি রাখতে। ও বলল টংগির কাছে আছে এক গ্রাম গাওয়াইর ওখানে নামবো৷ ওখানে পরিচিত আমার কিছু সন্ত্রাস আছে। ঢরের কিছু নাই। দীপু আমারই গ্রামের ছেলে। যাদের সাথে ছোটবেলা গোল্লাছুট, আর রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা খেলা খেলতাম। ও বলল যে, ফতেয়ারচর নামবো নে ওখানে বেশ্যাদের একটা দল আমার পরিচিত। ওরা খুব ডেঞ্জারাস আর পাওয়ারফুল। ওখানেও আমাদের বিপদ হবে না। দীপু যে পুলিশ তখন আমার মনে পড়লো। তখন বললাম তুমি তো পুলিশ। তুমি কেন একটা পাওয়ারফুল সমাধান করছো না। ও বলল আমার পদবী ছোট আমি ভায়োলেন্স করলে চাকরি থাকবে না।

এরমধ্যেই দেখি আমি আছি প্রধানমন্ত্রীর এক অনুষ্ঠানে। বাঁশের যে নিরাপত্তা বেস্টনি থাকে আমি ওখানে দাঁড়িয়ে শুনতে চেষ্টা করলাম প্রধানমন্ত্রীর কী বলছে। আমি বাঁশে হেলান দিতে বাঁশ নড়ে গেল আর বাতি আর সাউন্ড বন্ধ হয়ে গেলো। একজন ধমক দিয়ে ওখান থেকে সরে যেতে বলল। আমি সরে যেতেই আবার সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেল।

সরে যেয়ে আমি একটা খালি চেয়ারে বসতেই সিভিল পোশাকের এক পুলিশ আমার কাঁধে হাত রাখলো। আমি বুঝতে পারলাম আমার এবার খবর আছে। চেকচুক করে আজকে নিশ্চিত আমার অণ্ডকোষকেই এরা বোমা হিসেবে প্রমাণ করে জেলে ঢুকিয়ে দিবে। কিন্তু পুলিশ ওইসব সন্দেহ আর জিজ্ঞাসাবাদ না করে কুশল বিনিময় করলো। বলল যে, 'ভাই কেমন আছেন'।
আমি ভালো আছি বলেই স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। মনে হচ্ছিল ডিম থেরাপি দেওয়ার আগে একটা রোমাঞ্চ আনতেই এমন হাবিজাবি করছে। পরে আবার ভয়ঙ্কর প্রশ্ন করে বসল যে, আপনি প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা দেয়ার সময় গান গাচ্ছিলেন কেন? আমি বললাম আসলেই গান গাচ্ছিলাম কি না মনে নাই।
তবে মনে হলো গুনগুনিয়ে তো প্রায়ই গাই। তবে গেয়েছিলাম বোধহয়। তবে গোপন করে বললাম গান গাচ্ছিলাম না। আমি আসলে প্রধানমন্ত্রীর কথাগুলোও বিড়বিড়িয়ে রিপিট করছিলাম। এটা আমার একটা মুদ্রাদোষ বলতে পারেন। ও বিশ্বাস করলো না। বলল দাঁড়ান আমি সফটওয়্যার আনছি। যেখানে আপনার ওই সময়ের ক্লিপ থেকে বের করবে আপনার ঠোঁট নাড়াচাড়া করার সময়কার অবস্থান। আপনি কি করছিলেন তার সবকিছু৷ এবার সত্যি সত্যিই ভয়ে পেয়ে যাচ্ছিলাম।

পরে দেখলাম হেসে দিলো। আর বলল ডোন্ট ওরি। জাস্ট ফান। এনিওয়ে আপনি যদি সত্যিই গান গাইতে পারেন তবে চলেন এই ঝামেলাপূর্ণ এলাকা থেকে আমরা বের হই। আমি বললাম আপনার এখানকার দায়িত্ব কে দেখবে। সে বলল, দায়িত্বের মাইরে বাপ। দেখবেনে কেউ৷ আমি তাঁর সাথে উঠে দাঁড়ালাম। ও একজন মেয়েকে ডাকলো সে এলো না। সম্ভবত মেয়েটা তার গার্লফ্রেন্ড বা কেউ৷ কিন্তু আমাদের সাথে অন্য একটা মেয়ে চলে এল। আমাকে দিলো রিচার্জেবল বড় মাইক। পুলিশ যেটা দিয়ে রাস্তায় ঘোষণা টোষণা দেয়। আমি গান গাইতে পারছিলাম না। সুর এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল। মাইকের আওয়াজটা বিশ্রি লাগছিল। তবু সুর দেয়ার চেষ্টা করছিলাম যে, বন্দি হইয়া মনুয়া বধু হাইরে কী জানি কী করে। দেখলাম একটা ভ্যানে চড়ে অচীন গ্রামে। যেখানে সবে ধান কেটে কৃষক খেতেই দাঁড়িয়ে আছে কাস্তে হাতে। ধান কাটা রেখে আমার গান শোনার চেষ্টা করছে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: ঢাকা শহরে বাসের ভাড়া ২০ টাকা বা সব্বোর্চ ৫০ টাকা। এই কয়টা টাকার জন্য হাউকাউ ভালো লাগে না। যারা হাউ কাউ করে তাদেরও আমার পছন্দ না।

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯

মীনক্ষোভাকুল কুবলয় বলেছেন: আমি একদিন শাহবাগ থেকে ধানমন্ডি যাওয়ার পথে একজন ২ টাকার জন্য তুমুল ঝগড়া লাগিয়ে দিয়েছিলো হেল্পারের সাথে ।
চুদির ভাইরা প্রেমিকার সাথে হাজার টাকা ফোনে কথা বলে,আর গরীব মানুষরে দুইটা টাকা বেশি দিতে পারেনা ।
শালারা বাচ্চারা ।

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সব কিছুর দাম বেশী । এইটা নিয়ে ঝগড়া করে লাভ কি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.