![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি পথিক। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। আবার শূন্যের উপর নির্মাণও করছি। এটাই প্রকৃতপক্ষে জীবন। অথবা- জীবন এমনই। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।
আর কত বিচ্ছিন্ন থাকবেন আপনারা? আপনাদের সীমাহীন বিচ্ছিন্নতা, ক্রমাগত বিভক্তি, পারস্পরিক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার লোভ, পদের লোভ, অর্থ-সম্মানের লোভ- আমাদেরকে চূড়ান্ত ধ্বংসের কালো গহ্বরে নিক্ষেপ করেছে। তবুও আমাদের বিবেক জাগছে না, অন্তরের পর্দা সরছে না। বিশ্বজনীন মানবজাতি হিসেবে মুসলমানরা আজ বিচ্ছিন্ন বিভিন্ন রাষ্ট্রে, বিভিন্ন ধর্মে, ধনী-গরীবে, সাদা-কালোয়; বিশ্বজনীন মুসলিম উম্মাহ হিসেবেও আমরা বিচ্ছিন্ন শিয়া-সুন্নী, আহলে হাদীস-মাযহাবী, আহমদী-দেওবন্দী ইত্যাদিতে।
এমনকি আমাদের এই বাংলাদেশে জাতীয় মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতেও আমরা শতধা বিভক্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-উপদলে, মত ও পথের আড়ালে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ধর্মীয় ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতিক দল-সংগঠনগুলোতে বিচ্ছিন্নতা-বিভক্তির অনুশীলন চলে মহাসমারোহে; বর্তমানে তা ছড়িয়ে পড়েছে মহামারি আকারে। একাধারে তা এক হাস্যকর ও ভয়ংকর পরিস্থিতি, যা আমাদের সবাইকে ধ্বংস করে ছাড়বে।
আমরা মনে করি বড় দলের ‘ছোটনেতা’ হওয়ারচেয়ে ছোট দলের ‘বড়নেতা’ বা ‘আমীর’ হওয়া অনেক মর্যাদার, বড় পত্রিকার লেখক হওয়ার চেয়ে ছোট পত্রিকার ‘সম্পাদক’ হওয়া শ্রেয়, বড় মাদ্রাসার শিক্ষক হওয়ার চেয়ে ছোট মাদ্রাসার ‘মুহতামিম’ হতে পারাটা বিরাট অর্জন ইত্যাদি। চতুর্দিকে বাড়ছে নেতা, বাড়ছে দল, মাদ্রাসা, মিডিয়া এসব। এই অপমানের শেষ কোথায়? কবে হবে আমাদের মন-মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন? আমরা কি অনুভব করব মুসলিম জাতির সীমাহীন দুঃখ-দুর্দশা, এই অধঃপতন? নাকি ক্রমাগত বিচ্ছিন্ন ও বিভক্ত হতেই থাকব?
‘বিচ্ছিন্নতা’ মানুষের এক সহজাত প্রবৃত্তি। প্রশংসাপ্রিয়তা, খ্যাতি, অজ্ঞতা, সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রভৃতি থেকে এর উৎপত্তি। কোরআন-হাদীসে বিচ্ছিন্নতা থেকে বেঁচে থাকার, আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধরার, এক ইমামের (নেতার) অনুসরণ করার যথেষ্ঠ তাকিদ এসেছে। কিন্তু কে শুনে কার কথা? আমরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ কাজ ও মতকে সবচেয়ে সঠিক ও শ্রেষ্ঠতর মনে করি। অপরের সমালোচনায় মুখে খই ফোটে। অথচ কি আশ্চর্য! নিজের মত ও কাজের স্ববিরোধিতা, কপটতা, স্বার্থবাদিতা ও শয়তানী ধরা পড়ে না। এসব নিয়ে আমরা গভীর চিন্তা ও আত্মসমালোচনা করি না, এমনকি অন্যে কি সমালোচনা করল সেটাও গ্রহণ বা নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করি না। করব কিভাবে, আমাদের তো অনেক কাজ। চিন্তা করার সময় কোথায়? অথচ হাদীস শরীফে এসেছে, সামান্য সময় চিন্তা করা ৭০ বছর নফল এবাদতের চেয়েও উত্তম। আমরা সারাদেশে ওয়াজ করে বেড়াই, অথচ যারা সমাজ-রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণ করে তাদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসার সময় নেই। জনসাধারণের ময়দানে একে-ওকে নাস্তিক-মুরতাদ ঘোষনা করি, ইসলাম ‘প্রতিষ্ঠিত’ করে ফেলি। অথচ শিক্ষিত, চিন্তাশীল ও বুদ্ধিজীবীদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পেশ করতে পারি না। তাদের যুক্তি, লেখনী ও থিওরির ভদ্রজনোচিত পাল্টা দিতে পারি না। হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) কি সারাদেশ বা বিশ্ব সফর করেছিলেন? তিনি কি শুধুই জনসাধারণের ময়দানে দাওয়াত পেশ করেছিলেন? তাঁর সময়ে কি বাঘা বাঘা কাফের মুশরেকরা ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেননি?
আমি মনে করি আমাদের এতসব ইসলামের ‘খেদমত’, মসজিদে মসজিদে ‘জিকির’, জেলায় জেলায় ‘সমাবেশ’ এখন একটু কমিয়ে দিয়ে পারস্পরিক মতবিনিময় ও আলোচনায় গুরুত্ব দেয়া দরকার, পারস্পরিক অবিশ্বাস ও দ্বন্দ্ব-সংঘাত দূর করা উচিত। পাশাপাশি আমাদের কেন্দ্রীয় ইসলামী নেতৃবৃন্দ জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বগণের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি আলোচনায় বসা দরকার। কারণ অনেকেই আমাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আর মাঠ-পর্যায়ের কাজগুলো ভক্ত-মুরিদগণের মাধ্যমেই চলতে পারে। জনসাধারণের ময়দানে ‘খেদমতে’র নামে এগুলোতে ‘আমীরের’ চরকির মতো ঘুরা না বিচক্ষণতার পরিচয়, না রাজনৈতিক কৌশল, আর না ‘হেকমত’। এই ‘ইসলাম’ সম্পর্কে জনমনে ও যুবসমাজের মধ্যে প্রচণ্ডরকম ভীতি কাজ করে। এর কারণ নিশ্চয় আলেমগণের পক্ষ থেকে ইসলামকে সঠিকভাবে বুঝতে ও উপস্থাপন করতে না পারা। আর আমরা যারা ‘ইসলাম’ ‘ইসলাম’ ও ‘খেলাফত’ ‘খেলাফত’ করছি, আমাদের নিজেদের মধ্যে সর্বপ্রথম এর প্রয়োগ করতে হবে। দেশ ও বিশ্ব-মানবতার সামনে ইসলামের শান্তি-শৃঙ্খলার ‘ক্ষুদ্র মডেল’ উপস্থাপন করতে হবে।
মানুষ এক অনন্য সৃষ্টি। বিপরীতধর্মী শক্তির আধার। একাধারে সর্বাপেক্ষা দুর্বল ও সর্বাপেক্ষা সবল। অনন্ত সম্ভাবনাময়, যদি বিচ্ছিন্ন না হয়ে ‘জমাতবন্দী’ থাকে। এ সূত্রে আমরা আমাদের হাতের দশটি আঙ্গুলের দিকে নজর করতে পারি। কিভাবে প্রতিটি আঙ্গুল সমন্বিত ও স্বতন্ত্র। পাঁচটি আঙ্গুল ভালগুলো গ্রহণ করে এবং পাঁচটি আঙ্গুল খারাপগুলো বর্জন করে। একজন মানুষের মাথা যেমন প্রয়োজন, সর্বনিম্ন অঙ্গ পা-ও তেমনি প্রয়োজন। অন্যান্য সৃষ্টিতে ও মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ঐক্যবদ্ধতার প্রচুর নিদর্শন আছে। এগুলো যেন আমরা খোঁজ করি। আমি নির্দলীয়ভাবে আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের আলেমগণের প্রতি আহ্বান করতে চাই, আপনারা ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করে, বিশেষ কোনো দল ও গোষ্ঠীর নাম না নিয়ে একমাত্র কোরআন ও সুন্নার ভিত্তিতে আমাদের জন্য নতুন একটি ধর্মীয় প্লাটটফরম তৈরী করুন। আমাদের আল্লাহ্ এক, ধর্ম এক, কুরআন এক, হাদীস এক, নবী এক। কিন্তু আমরা কেন এত বিচ্ছিন্ন, হাজারো ভাগে বিভক্ত?
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৪
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: শুধু মসজিদ-মাদ্রাসায় পড়ে থেকে যেমন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয় না, ক্ষমতার লৌহদণ্ডেও ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয় না, হওয়ার অবকাশ নেই। কারণ সেটা ইসলাম। কোনো স্বৈরতন্ত্র বা হঠকারি সমাজতন্ত্র নয়। এমনকি এগুলোও ক্ষমতার লৌহদণ্ড দিয়ে বেশিদিন টিকতে পারে না।
২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০০
নাঈমুল ইসলাম প্রজন্ম ’৭১ বলেছেন: সম্পূর্ণ একমত এজন্যেই তো জামাত রাষ্ট্রিয় পর্যায়ে যতটুকু খেদমতের দরকার ততটুকু করবে আর দাওয়াতী ফিল্ড তো দেওবন্দী ওলামাদের দখলে আছেই, দু পক্ষ কি দু সাইডের খেদমত করতে পারে না ? নাকি অনলী দাওয়াতী কাজ করে গেলেই একদিন ইসলামী হুকুমত কায়েম হয়ে যাবে ?
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১০
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: এ দু'টোর সমন্বয় করতে হলে জামাতের ক্ষমতার মোহ ও ক্ষমতার দর্শনসহ অনেক কিছই ত্যাগ করতে হবে।
অন্যদিকে কওমিদেরও গতানুগতিক চিন্তা থেকে সরে আসতে হবে। এর চেয়েও বড় কথা, পরস্পর পরস্পরকে সম্মান করতে হবে। সেটা কারো মধ্যেই নেই। কারণ ইসলামের ব্যাখ্যা ও জ্ঞান কারও মধ্যেই দেখা যাচ্ছে না এটা বর্তমানে প্রকাশ।
৩| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৭
পাউডার বলেছেন:
এ যুগের মৌলভি নেতারা নিজেরাই ঠিকমত ইসলাম বোঝে না। তারা বোঝে কারে নাস্তিক বলতে হবে, কারে শিরকি-কুফরী বলবে।
ইহুদি-নাসারা-কাদিয়ানি নিয়া পইড়া রৈছে। হেফাজতের বেশিরভাগ দাবির সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্কই নাই।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১২
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: একমত।
৪| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৭
পাউডার বলেছেন:
আর জামাতি রগ কাটা ফিতনা থেকে দুরে থাকা দরকার।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৩
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: হুম!
৫| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৫
নাঈমুল ইসলাম প্রজন্ম ’৭১ বলেছেন: হেফাজতের বেশিরভাগ দাবির সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্কই নাই !
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৮
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: হ্যাঁ, অবশ্যই নাই। এমনকি এই দাবি করাটাই ইসলামে নেই।
দাবি কে কার কাছে করে, কেন করে, কিভাবে করে?
৬| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৯
নাঈমুল ইসলাম প্রজন্ম ’৭১ বলেছেন: কারণ ইসলামের ব্যাখ্যা ও জ্ঞান কারও মধ্যেই দেখা যাচ্ছে না এটা বর্তমানে প্রকাশ
মেহেরবানী করে যদি একটু বিস্তারিত বলতেন ! ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা-জ্ঞান ও কিভাবে ইসলামি হুকুমত কায়েম করা যাবে, এ ব্যাপারে আপনার কাছ থেকে মূল্যবান বক্তব্য কামনা করছি।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৪
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: http://www.zakirmahdin.com
এ ঠিকানায় গিয়ে আমার অনেক লেখা পাবেন।
একটি বইও আছে। সেখানে যতটুকু সম্ভব বলেছি। কিছু পড়ে তারপর প্রশ্ন করুন, আপনার প্রশ্নকে স্বাগত জানাই।
৭| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৮
পাউডার বলেছেন:
কাদিয়ানিরা মুসলিম না অমুসলিম সেইটা আল্লাহ দেখবে।
কে আল্লাহর পেয়ারা বান্দা সেইটা আল্লাহ বিচার করবে। কোনো মানুষ না।
আর হেফাজত সরকারকে বলছে তাদের অমুসলিম ঘোষনা করতে। কত বড় কুফরি!
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৪৪
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: কাদিয়ানিরা কিছু ক্ষেত্রে সীমা লঙ্ঘন করে ও করছে। আমি তাদের এলাকায়ই লেখাপড়া করেছি। তবে হেফাজত বা হুজুররা ইসলামকে সঠিকভাবে ইসলামকে উপস্থাপন করতে পারলে অধিকাংশ জনগণ সত্য মিথ্যা পার্থক্য করতে পারবে, তাই ঘোষণা-টোষণার প্রয়োজন হবে না।
৮| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩৫
আকাশদেখি বলেছেন: জামাত আর হেফাজতের মাঝে অনেক পার্থক্য আছে.। তাই তারা এক হতে পারবে না। কিন্তু এখন এক হইছে শুধু মাত্র সরকারের জন্য
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩২
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: এখনও এক হয়নি, হবেও না।
৯| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৪
রাখালছেলে বলেছেন: হুমমমম....হুমমম....জ্ঞানী পোস্ট
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩২
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩৫
নাঈমুল ইসলাম প্রজন্ম ’৭১ বলেছেন: এ দেশের মুসলিমদের সাথে দেওবন্দী ওলামাদের নাড়ীর টান-আত্মিক বন্ধন। তারাই সিংহভাগ মসজিদের মুরব্বি। তারা যদি জামাতে ইসলামকে সমর্থন করত তবে দু মিনিট লাগত এ দেশে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু তারা আছেন মৌদূদী জিকির নিয়ে। তবে তারা নিজেরা কেন পার্লামেন্টে যাচ্ছেন না ? হেফাজতের পক্ষ্যে কি কখনো সম্ভব হবে ১৩ দফা দাবি আদায়ে ? আর এ ১৩ দফা দাবী বাস্তবায়ন করলেই কি এ দেশ থেকে ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়া-সুশীলদের অস্তিত্ব বিনাশ হয়ে যাবে ? বুদ্ধিবৃত্তিক ময়দান ছেড়ে মাদ্রাসা আর খানকাতেই দাওয়াত আর তাবলিগ সিমাবদ্ধ রাখলে কি এলিট সমাজের কাছে ইসলামের আবদার পৌছবে ? কেন তারা এক হচ্ছেন না ? আর কত ৫ ই মে প্রয়োজন তাদের বোধদয় ঘটানোর জন্য ?