![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি এতিম, দরিদ্র, মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত এক গন্তব্যের উদ্দেশে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি একটি রাজ্যের মালিক, রাজা। রাজ্য পুনরুদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অর্জনে চেষ্টিত। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।
১৩-১২-১২
ম্যাজিক ডে ১২-১২-১২ উপলক্ষে বিশ্বব্যাপী একটা ঝড় বয়ে গেল গতকাল। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের মাঝে। এই ‘তিন-১২’র জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিশেষ এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বিশ্বের হাজার হাজার তরুণ-তরুণী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া আরও অনেক কিছু। কেননা এ তিনটি জোড় সংখ্যা আবার একত্রিত হবে ১০০ বছর পর!! সে পর্যন্ত বাঁচার আশাও করি না, বাস্তবতা তো পরের কথা। তবুও এসব সংখ্যাতাত্ত্বিক কুসংস্কারে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। শুধু ডায়রিতে এ দিন দু’চার লাইন লেখার ইচ্ছে ছিল। শেষ মুহূর্তে তাও ভুলে গেছি। অবশ্য অনিচ্ছাকৃত অথবা কাকতালীয়ভাবে গতকাল এমন একটি উদ্যোগের অংশীদার হয়েছি- ‘লিখে রাখার মত ইতিহাস’ বটে।
“প্রজ্ঞা” নামে একটা সাহিত্য সাময়িকী ২০১৩’র জানুয়ারী থেকে বের হবে আশা করি। এতে নিয়মিত লেখা যেতে পারে।
২০-১২-১২
হরতাল-অবরোধে জনজীবন বিপর্যস্ত। হামলা-মামলা-ভাঙচুর, প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি। দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া, শীতকালেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট, বেকার সমস্যা ইত্যাদির কথা নাইবা বললাম। এসবের একমাত্র ভুক্তভোগী প্রান্তিক শ্রেণীর জনগণ। বিশেষত একটা শ্রেণী খুব সহজেই এ থেকে মুক্ত থাকে। এর জন্য দায়ী কারা? এক কথায় বলতে গেলে সবাই। তবে শর্ত হল, গণনাটা শুরু করতে হবে উপর থেকে। উপর থেকে নীচ- রাজনীতিক, আমলা, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক- এভাবে। আশা করি শেষ পর্যন্ত যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। অবশ্য অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েই দায়মুক্তি ঘটে না। তাই আমি নিজেকেই এজন্য দায়ী করছি; আর আমার পাঠকদের, যাদের পর্যন্ত আমি পৌছুঁতে পেরেছি।
আজকের এ অবস্থার জন্য সরকার দায়ী করে মিডিয়া, বিরোধী দল ও মৌলবাদকে। আর এরাসহ সমস্ত জনগণ দায়ী করে সরকারকে। শিক্ষক দায়ী করেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষাব্যবস্থাকে; কিন্তু সচেতন সমাজ দায়ী করেন শিক্ষকদের। এভাবে পরস্পরকে দায়ী করে নিজেদের দায়িত্ব অস্বীকার করা- এটা যেন আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও মিডিয়ার ভাষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিপক্ষকে কড়া ভাষায় আক্রমণ ও গালাগাল ছাড়া কোনো রাজনৈতি বক্তব্য কল্পনা করা যায়? কঠোর সমালোচনা ছাড়া কোনো লেখনী পাঠক পড়বে? এ মনোভাব ও অপসংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমার এ লেখাগুলোও উক্ত গতানুগতিক ধারা থেকে মুক্ত নয়। দেখি সামনের লেখায় সেই ধারা থেকে বেরুতে পারি কি না।
২৩.১২.১২
গত ২১ ডিসেম্বর মায়া ক্যালেণ্ডারের শেষ দিন ছিল। তাদের মতে এ দিন পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার কথা। পত্রিকাগুলো বছরের শুরুতে প্রচার করেছিল মায়া সভ্যতার অনেক ভবিষ্যদ্বাণীই অতীতে ফলেছে। সুতরাং এ দিনটিও আশঙ্কার দাবি রাখে। কিন্তু আশ্চর্য! ২০০৫ সালের ‘কেয়ামত তত্ত্বের’ মত তা আলোড়ন তুলতে পারেনি। অবশ্য পত্রিকাঅলারা এর অসম্ভাব্যতাও যত্নের সঙ্গেই উপস্থাপন করেছে। এ দিনটি নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ-উদ্দীপনা না থাকলেও একেবারে ছিল না তা বলছি না। এর আগের দিনও দিনটির কথা স্মরণ করেছি। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ব্যস্ততার কারণে দিনটি কখন চলে গেল টেরই পাইনি। পরের দিন পত্রিকা দেখে হুঁশ ফিরেছে।
১৯ ডিসেম্বর রাত ১০টায় আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক হাফেজ মোবাশ্বের খান সাহেব ইন্তেকাল করেছেন। তার সান্যিধ্যের ছোটবেলার স্মৃতিগুলো ভুলতে পারি না। এখনও স্বপ্নে অতীতে ফিরে যাই, দেখি তার কাছে পড়ছি, ভয়ে জেগে উঠি। অথচ শেষ জীবনে তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল। কিছুটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠেছিল। ছোটবেলা তাকে বড় বেশি ভয় পেতাম। আমার শিক্ষকদের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে ‘ভয়ানক’।
২৪.১২.১২
ঠাণ্ডায় জমে যাচ্ছি। চারদিন পর গতকাল সামান্য সময় উত্তাপহীন বৃদ্ধ সূর্যকে দেখা গিয়েছিল। আজ আবার মামার সেই লুকোচুরি খেলা। সূর্যকে ‘বৃদ্ধ’ ও ‘মামা’ (বৃদ্ধাবস্থায় নানা হবে) বলায় কেউ আবার পুরুষতন্ত্রের গন্ধ খুঁজে বেড়াবেন না আমার মধ্যে। যেহেতু আল্লাহকে পুরুষবাচক বিভিন্ন অভিধায় ভূষিত করায় তথাকথিত নারীবাদীদের অভিযোগের অন্ত নেই। সারাদেশ থেকে ঠাণ্ডায় মানুষের মৃত্যুর খবর আসছে সংবাদপত্রে। হে আল্লাহ, আমরা আপনার সাহায্য ভিক্ষা চাই।
©somewhere in net ltd.