নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আধ্যাত্মিক পুরুষ, ধর্মগুরু; খানকা থেকে বলছি।

মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস

জেড মাহদিন

আমি এতিম, দরিদ্র, মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত এক গন্তব্যের উদ্দেশে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি একটি রাজ্যের মালিক, রাজা। রাজ্য পুনরুদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অর্জনে চেষ্টিত। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।

জেড মাহদিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংকট উত্তরণে সংলাপের বিকল্প নেই

১৪ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭

ঘটনাবহুল ২০১২ সাল পেছনে ফেলে ইতিমধ্যেই আমরা শুরু করেছি আরেকটি নতুন বছর, ২০১৩। বরাবরের মতো এবারও নতুন বছরকে ঘিরে প্রত্যাশার কমতি নেই। কিন্তু বারবার যেন আশাভঙ্গই আমাদের নিয়তি; আশা-প্রত্যাশার মাত্রানুযায়ী না-পাওয়ার বেদনা ও হতাশাবোধ ঘিরে ধরে বারবার। প্রতিবারের মতো এবারও প্রথাগত কল্যাণ কামনা, আশা-প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার বর্ণনায় পত্রিকার পাতাগুলো ছিল ভরপুর; কিন্তু সম্ভাবনাগুলো কিভাবে বাস্তবায়ন হবে তার কোনো ফর্মূলা উল্লেখ নেই। এক্ষেত্রে ‘যদি’ ও ‘হবে’র আশ্রয় নেয়া হয়। তাই পত্রিকার লেখা ও কলামের শেষ বাক্যগুলোতে মীমাংসার প্রশ্নে লেখকগণ ‘যদি করা হয়’, ‘করতে হবে’, ‘দিতে হবে’- এভাবে বলে থাকেন। কিন্তু এই ‘যদি’ বা ‘হবে’টা কিভাবে হবে তা বলেন না। অনেকে আবার দৈবক্রমে দেশ ভাল হয়ে যাক- এমনটা আশা করেন।

প্রকৃতপক্ষে বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০১৩ সাল আমাদের কাছে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা কোনদিকে বাঁক নেবে বলা যায় না। ইতিহাস ও বর্তমান ঘটনাবলী আমাদের বলে, আশার চেয়ে আশঙ্কাই বেশি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতের চোখ দিয়ে ২০১৩ সালকে যেমন দেখা যাচ্ছে তা কেউ লিখতে সাহস করবে না। আর সামগ্রিকভাবে দেখলে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বই আজ ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন; মহাসংকটে নিপতিত। আল্লাহ না করুন, যদি শিগগিরই বিশ্বনেতাদের পারস্পরিক মতানৈক্য ও দূরত্ব কমানোর উদ্যোগ নেয়া না হয়, তাহলে মানবজাতির জন্য সম্ভাব্য এক মহাবিপর্যয় অপেক্ষা করছে।



বাংলাদেশ যে ইতিমধ্যেই খাদের কিনারে পৌঁছে গেছে এতে সন্দেহ নেই। তাই আমাদের অতীত ও বর্তমানের তিক্ত বাস্তবতা পর্যালোচনা করে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের আশায় দীর্ঘদিন ধরেই বিশিষ্টজনেরা দেশের অপরাপর রাজনৈতিক দল বিশেষত সরকার ও বিরোধীদলকে সংলাপে বসার জন্য চাপ দিয়ে আসছেন। জনগণেরও একই চাওয়া। সাম্প্রতিক সময়ে পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ায় সংলাপের বিষয়টি এক বিশেষ স্থান দখল করেছে। কিন্তু রাজনীতিকগণ যার যার অবস্থানে অটল। এর কারণ কি? রাজনৈতিক দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে হয় সংলাপের কার্যকারিতা অস্বীকার করা হোক, না হয় এর বিকল্প হাজির করা হোক-যে বিকল্প উদ্ভূত সমস্যার সমাধানে সুস্পষ্ট পথ নির্দেশক। পুরো একটা জাতিকে এভাবে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঝুলিয়ে রেখে ক্রমাগত সংঘাতের দিকে ঠেলে দেয়া কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সমস্যা যত গভীরই হোক এবং এর মাত্রা যে সীমায়ই পৌঁছে থাকুক, বিরুদ্ধবাদী শক্তির সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদী মুখোমুখি বৈঠক ও উন্মোক্ত আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভবÑএটা আমাদের উপলব্ধিজাত বিশ্বাস ও পরীক্ষিত সত্য। যারা ব্যক্তিগত, গোষ্ঠীগত, দলীয়, জাতীয় ও ধর্মীয় অবস্থান থেকে বিভিন্নমুখি ও পরস্পরবিরোধী মত-পথের অনুসারী এবং সবাই যার যার মত-পথ ও দাবির ওপর দৃঢ়; তাদের মধ্যে প্রতিনিধিত্বের স্তরে দীর্ঘমেয়াদি পর্যায়ে সংলাপ আহ্বান, অংশগ্রহণ ও উন্মোক্ত প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে সমন্বয় ও মীমাংসার পথ অনুসন্ধানের বিকল্প নেই। এর দ্বারা হয়ত এমন ব্যক্তিগণ বেরিয়ে আসবেন যারা স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সর্বস্তরের সমস্যার সন্তোষজনক সমাধান পেশ করতে সক্ষম। সুতরাং এ সূত্রে জ্ঞানগত চ্যালেঞ্জ প্রদান ও চ্যালেঞ্জ গ্রহণে বাধা কোথায়? সারা দেশের হাজার হাজার মত-পথের অনুসারী ও প্রতিনিধির মধ্যে কি কিছু সংখ্যক এমন ব্যক্তিত্ব নেই যারা উত্তম পন্থায় চ্যলেঞ্জসহ নিজ নিজ দল ও মতের প্রতিনিধিত্ব করবেন? নাকি এক্ষেত্রে যোগ্য লোক বাছাইকরণের অভাব? সবাই যদি যার যার সংকীর্ণ মত-পথের সীমানা ও গণ্ডিতে আবদ্ধ থেকে জ্ঞানগত চ্যলেঞ্জ প্রদান ও গ্রহণের কথা বলেন, তাহলে এর অবস্থান কোথায়?



প্রতিদিন একাধিক সংবাদপত্রে দুই নেত্রীর সংলাপের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে স্থান পাচ্ছে। গত ০৮.০১.২০১৩ যুগান্তরে বিশিষ্ট কলামিস্ট এম আবদুল হাফিজ ‘আপস নিষ্পত্তির কোন বিকল্প নেই’ শিরোনামে খুবই সুন্দর ও অত্যন্ত মূল্যবান একটি কলাম লিখেছেন। এছাড়া ০৪.১২.২০১২ কালের কণ্ঠের সম্পাদক, জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন তার পত্রিকার প্রথম পাতায় বিশেষ সম্পাদকীয় লিখেছেন ‘দেশের মানুষ চায় দুই নেত্রীর সমঝোতা’ শিরোনামে। ২৭.১২.২০১২ কালের কণ্ঠে বিশিষ্ট কবি ও কলামিস্ট আহমদ রফিক ‘সংঘাতের রাজনীতি নয়, সমঝোতার সংলাপই সঠিক পন্থা’ এবং একই সংখ্যায় এম আব্দুল হাফিজ ‘সম্ভাব্য সংকটের মুখে কিছু দেশচিন্তা’ শিরোনামে কলাম লিখেছেন। এ লেখাগুলোতে আমাদের রাজনীতির সংকট আরো করুণভাবে ফুটে উঠেছে এবং শ্রদ্ধেয় এ তিনজনই দুই নেত্রীর সংলাপে বসার প্রতি জোর দিয়েছেন।



আহমদ রফিক তার এ লেখায় উল্লেখ করেছেন, ‘মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ থেকে দলনিরপেক্ষ অর্থনীতিবিদ, পেশাজীবী, রাজনীতিমনস্ক বিশিষ্টজন সবাই একনাগাড়ে বলে চলেছেন রাজনীতিতে সহিষ্ণুতা, যুক্তি ও সৌহার্দ্যরে সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য। এমনকি দলবিশেষের কোনো কোনো জ্যেষ্ঠ সমর্থকও বলছেন : না, এ অবস্থা চলতে পারে না। দেশের স্বার্থে দুই প্রধান দলের মধ্যে সৌহার্দ্য না হোক অন্তত সহিষ্ণু সৌজন্য গড়ে তোলা জরুরি। এতে দুই দলেরই দায়িত্ব রয়েছে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘‘মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা’ থেকে আইনজীবীদের বিশিষ্টজনও একই কথা বলছেন। তাঁদের মধ্যে দুই প্রধান দলের সমর্থকও রয়েছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তাঁদের এক সম্মেলনে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক এবং বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাও একই সুরে কথা বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য : যেকোনো মূল্যে ‘সংঘাত এড়াতে দুই নেত্রীর সংলাপের বিকল্প নেই।’ ব্যারিস্টার হক বলেছেন, ‘প্রয়োজনে এমন জনমত বা পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে তাঁরা বসতে বাধ্য হন।’ এরপর জনাব রফিক আক্ষেপ করে বলেন, ‘সাধু প্রস্তাব। এমন কথা বেশ কিছুদিন থেকে নানাজনের মুখে শুনে আসছি। কিন্তু এ পর্যন্ত কিছুই হয়নি, কোনো সুফল মেলেনি। স্বভাবতই প্রশ্ন : দুই নেত্রীকে সংলাপে বসতে বাধ্য করবে যে জনমত সে জনমত তৈরি করবে কে বা কারা? এ ব্যাপারে জনাব হক কিছু বলেননি। তিনি আক্ষেপ করে আরও বলেন, ‘মতৈক্য দূরে থাক, সেখানে পৌঁছতে যে প্রাথমিক বৈঠক বা আলোচনা দরকার সেই মূল জায়গাটিতেই তো পৌঁছা যাচ্ছে না-মতামতের ঐক্য-অনৈক্য দূরস্থ। আর এ লক্ষ্যে পরামর্শ, প্রস্তাবও কম আসছে না। কিন্তু কোনোদিকেই বরফ গলছে না, গলতে শুরুই করছে না। সবকিছু অনড়, জমাট হিমশিলার মতো।’

এম আব্দুল হাফিজ অন্য এক লেখায় বলেছেন, দুই নেত্রীর সংলাপে বসার আন্দোলনে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক একজন নিঃসঙ্গ সৈনিক। প্রকৃতই দুই নেত্রীর সংলাপে বসার প্রসঙ্গটি সামনে এলে সর্বগ্রে যে নিঃসঙ্গ মানুষটি আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠেন তিনি আর কেউ নন, সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ব্যারিস্টার রফিক-উল হক।

সংলাপের বিষয়টি যদিও বর্তমান প্রধান দুই দলের দুই নেত্রীর উপরই নির্ভর করে, বিশেষ করে প্রথম উদ্যোগ সরকারের তরফ থেকেই আসা উচিত এবং সম্ভবত সাংবিধানিক দায়িত্বও, তবুও আমি মনে করি সংলাপের প্রেক্ষাপট, বিষয়বস্তু, কার্যকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা কেবল এঁদের বা এ দুই দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সংলাপ এক আপরিহার্য বিষয়। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এর চর্চা করি না বলেই বিরোধী শক্তির সঙ্গে সংলাপে বসা আজ আমাদের জন্য এত কঠিন। এখন যদি নিজেরা চর্চা শুরু করে দিতে পারি, তাহলে সবকিছু সহজ হয়ে আসবে আশা করা যায়।

আজকাল সংলাপকে মিডিয়া যেভাবে রাজনৈতিক আদল দিচ্ছে তা কাম্য নয়। কেননা শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, মানবজীবনের সর্বক্ষেত্রেই সমন্বয় ও মীমাংসার প্রথম স্টেজ এই সংলাপ। প্রায় প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজ নিজ ক্ষেত্র ও পরিসরে ক্ষমতাবান আবার দুর্বল। মানবজাতির সামনে বিপরীতধর্মী অবস্থা ও পরিবেশ ছাড়া একমুখি কোন ক্ষেত্র নেই-এটা সৃষ্টিগত সত্য। আমরা যারা দুই নেত্রীকে সংলাপের আহ্বান জানাচ্ছি, আমরা নিজেরা যদি ব্যক্তিজীবনে, পরিবারে, সমাজে, পার্টিতে, শিক্ষাঙ্গনে, কর্মক্ষেত্রে, অফিস-আদালতে এর চর্চা শুরু করি তাহলে রাজনীতির সামনে প্রচুর দৃষ্টান্ত হাজির হবে। যার আলোকে চলমান হিংসাত্মক ও সাংঘর্ষিক রাজনীতির ধারা ও সংস্কৃতিরও পরিবর্তন ঘটতে পারে।

যে বিষয়টা আমরা সবাই চাই অথচ হচ্ছে না, সেই না হওয়ার কারণগুলো কি কি তা আমাদের খুঁজে বের করা সবচেয়ে জরুরি। আমি মনে করি সৃষ্টিগত সত্যের জ্ঞান এবং বিশ্বব্যাপী মানবজাতিগত অখণ্ড চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গির অভাবও এক্ষেত্রে অন্যতম মৌলিক কারণ। প্রকৃতি আমাদের কি শিক্ষা দেয়? সৃষ্টির কোন শক্তি এককভাবে ক্রিয়াশীল? দুর্বল ও সবলের সমন্বয় ছাড়া কি তৃতীয় শক্তির উদ্ভব ঘটতে পারে? সুতরাং যদিও বিপরীত মত ও চিন্তার অধিকারি কারও সঙ্গে খোলা মন নিয়ে বসা খুব সহজ ব্যাপার নয়, কিন্তু এছাড়া মীমাংসার পথও নেই।

আকাশ বিশাল, প্রশস্ত; কোন সংকীর্ণতা নেই। সংকীর্ণতা নেই সাগরেও। পাহাড়েও নেই কোন সংকীর্ণতা। কিন্তু মানুষের মস্তিষ্ক অতি সংকীর্ণ। সংকীর্ণ আমাদের মন বা হৃদয়ও। আমরা আকাশ, সাগর ও পাহাড়ের বিশালতা দেখে নিজেদের বক্ষ সম্প্রসারণ করতে শিখিনি। সমগ্র বিশ্বের অখণ্ডরূপ দেখেও ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে মানবজাতিগত অখণ্ড কল্যাণ চিন্তা ও কর্ম প্রচেষ্টায় অংশ নিতে পারছি না। এক একটা হৃদয় যেন উত্তপ্ত মরুভূমি। কী ক্ষতিটা হয় যদি অন্যকে একটু সম্মান করি, কতটুকু সমস্যা বাড়বে যদি বিপরীত মতের অধিকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সংলাপে বসি! আমরা কি আজও কিছু শিখিনি!! কোনদিনও শিখব না!!!



বিশেষ দ্রষ্টব্য: এ লেখাটি প্রায় তিন মাস আগের। মাঝখানে দুই নেত্রীর সংলাপের আওয়াজটি চাপা পড়ে গিয়েছিল। তাই এতদিন এটি প্রকাশ করিনি। এখন আবার এ আওয়াজটি শুনা যাচ্ছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.